![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি, আঁকাআঁকি করি। কখনো কোন লেখা সংবাদ, কখনো কবিতা-গল্প, কখনো পাণ্ডুলিপি হিসেবে গণ্য হয়। কোনটির বাণিজ্যিক গুরুত্ব আছে, কোনটির সামাজিক। এর একটিও আমার নিজের বলে মনে হয় না।
ঘটনা-১
স্ত্রী বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে। বাসায় তিনি একা। পুরো বাড়িটাই কাগজ ও বইপত্রের অরাজকতা। পুরনো হাড়িকুড়ি জমে যেন এক জঞ্জালে পরিণত হয়েছে ঘরটা। বাইরে হাঁক ছাড়ছেন কাগজঅলা। সপ্তাহের ভালো কাজটি করার এই সুযোগ। এক্কেবারে কুড়িয়ে সব কাগজপত্তর, যেখানে যা অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে তুলে দিলেন কাগজওলার ঝুড়িতে।
আচ্ছা কাগজ অলা পুরনো হাড়িকুড়ি কি নাও ? - হ হ নিই।
যাক্ মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। আজ বাচ্চা নিয়ে ও ফিরতে ফিরতে ঘরটি পরিণত হবে একদম হোয়াইট হাউসে। বাড়িঅলাকে ভেতরে নিয়ে উপরে স্টোরে এদিক সেদিক ছড়িয়ে থাকা পুরনো কালিমাখা হাড়িকুড়ি সব বিকোনো শেষ। ঘর পরিস্কার। বাজিমাত ! মাঝখান থেকে শ’ চারেক টাকা উপার্জন। দিনটা ভালোই যাবে মনে হচ্ছে।
স্ত্রী ফিরলেন। ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন দেখে অবাকই হলেন। কলার ঝাকিয়ে স্বামী বললেন, এতদিন এই কাজটি করতে পারো নি। দ্যাখো, পনের মিনিটে এক্কেবারে ফকফকা। পাছায় কালিলাগা ওপরে তোলা হাড়িকুড়িও দিয়েছি নিষ্ক্রান্ত করে।
শুনে স্ত্রী অজ্ঞান! সত্যি সত্যিই অজ্ঞান। শুরু হলো দৌড়। বুয়া, পানি ঢালা। ডাক্তার ডাকা ইত্যাদি।
কারণটি হলো, চোর ডাকাতের ভয়। টেলিভিশনের খবরাখবর দেখে স্ত্রী তার সাড়ে বোরো ভরি গহনা রেখেছিলেন পাছায় কালিলাগা পুরনো হাড়ীর ভেতর একটি কৌটায়।তুলে রেখেছিলেন ওপরে।
ঘটনা-২
বাসায় শোকের ছায়া। বিয়ের গহনা, উপহারের গহনা, স্বামীর কাছ থেকে বায়না ধরে আদায় করা গহনা সব মিলিয়েই হয়েছিল সাড়ে বারো ভরি। আজকালকার বাজার বলে কথা। সারাজীবনেও এই ক্ষতি পুরণ করা সম্ভব হবে না।
বেজে উঠলো কলিংবেল। নিশ্চয়ই আশপাশের বাসার কেউ। কোনভাবে খোঁজ পাওয়া গেল কি-না ওই কাগজঅলার ? পুলিশ কতদূর কি করলো- এসব জানতে গত দুদিন কত যে মানুষ আসলো হিসাব নেই।
দরজায় লুঙ্গি পরা একজন।
- সাহেব আছেন? বলেন, একজন কাগজঅলা আইছে।
হ্যা এই সেই কাগজঅলা। ব্যাগের ভেতর থেকে বের করলেন গহনার সেই কৌটাটি। যেটি হাড়ির মধ্যে রাখা ছিল সাবধানে। বললেন, বেচতে গিয়া হাড়ির মধ্যে পাইছি। খুইল্যা তো মাথা নষ্ট। হন্নি হইয়া বাসা খুঁজছি, এই গলিত যাই, সেই গলিত যাই। বাসা মিলাইতে পারি না। তয়, কাউরে কই নাই। জানি, চাইরকান করলে ইমান রাখা দায়।
পৃথিবীতে এমন মানুষও আছে? প্রায় সাত লাখ টাকার গহনা ফেরত দিতে এসেছে? একেবারে জরাজীর্ণ পোশাকের এই সাধারণ মানুষটি। বাসার ড্রয়ার, এদিক সেদিক খুঁজে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা নগদ বের করে সাধা হলো তাকে। আপনি যে উপকার করেছেন, তার জন্য এই সামান্য ক’টি টাকা রাখুন। লোকটা বলে, পাগল হইছেন নাকি? আপনেরে এইডা ফেরত দিয়া আমি জানে বাইচা গেছি। আমার শরীরের কাঁপন থামছে।
আইচ্ছা, আমারে হাজার দুয়েক ট্যাকা দ্যান, কোন দাবি রাইখেন না। কিছু না দিলে আপনাগো মনটা আনচান করবো তো তাই......
২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৫০
পে পোঁ কইরেন না, যান। বলেছেন: অবাক করা ঘটনা। এত ভাল মানুষ দুনিয়াতে এখনও আছে?
৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৫৩
খেয়া ঘাট বলেছেন: সশ্রদ্ধ সালাম লোকটাকে।
ইনারা আছেন বলেই পৃথিবী এখনো এতো সুন্দর।
৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১৫
রাফা বলেছেন: এরাই আমাদের বাংলাদেশ।এরা আছে বলেই আমরা আজো বেচে আছি।
এ-ঘটনা ছিলো বাংলাদেশের নিত্ত নৈমত্তিক ঘটণা।অথচ এখন রুপকথা মনে হয়।
ঐ কাগজওয়ালাই হোচ্ছে প্রকৃত মানুষ।তাকে জানাই শ্রদ্ধা।
ধন্যবাদ,শেয়ার করার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৬
মাক্স বলেছেন: