![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Demon prince Beelzebub aka Baal; lord of the flies, driver of the plague, representer of immense hunger.
অনেক আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। কাহিনী ছিল এরকম, শত্রুর আক্রমণে রাজ্যহারা তিন রাজকুমার আশ্রয় নিয়েছে এক সরাইখানায়। রাতে খাবার টেবিলে বসে তিন ভাই আলোচনা করছে। বড় ভাই বলল, “অর্থই সব। একদিন আমি দুনিয়ার সেরা ধনী হয়ে রাজ্য পুনুরুদ্ধার করবো।” বলে সে পুব দিকে চলে গেল। মেজো ভাই বলল, “ক্ষমতাই আসল। আমি একদিন দুনিয়ার সেরা যোদ্ধা হয়ে রাজ্য পুনরুদ্ধার করবো।” বলে সে চলে গেল পশ্চিম দিকে। ছোট ভাই কোথাও গেল না। সরাইখানায় চাকরী জুটিয়ে সেখানেই থেকে গেল।
দশ বছর পর। পুব দিক থেকে এক বণিক তার বহর নিয়ে সরাইখানায় হাজির হল। আর পশ্চিম দিক থেকে এক বলিষ্ঠ চেহারার ব্যক্তি ভয়ংকর সৈন্যবাহিনী নিয়ে সরাইখানায় আসলো। এরা আসলে সেই দুই ভাই। আর মালিকের মৃত্যুর পর তার মেয়েকে বিয়ে করে ছোট ভাই এখন নিজেই সরাইখানার মালিক। অনেক দিন পর ভাইদের দেখা পেয়ে সে ভীষণ খুশি। তবে বড় দুইজনের মনে তখন অন্য চিন্তা। বড় ভাই ভাবছে টাকা দিয়ে মেজোর সৈন্যবাহিনী কিনে নিজেই রাজা হবে। আর মেজো ভাই ভাবছে তার বাহিনী নিয়ে বড় ভাইয়ের সম্পদ লুট করবে। দুজনেই গোপনে ছোট ভাইকে নিজেদের মনোবাসনা জানিয়ে তার সমর্থন কামনা করল। সব শুনে ছোট ভাই দুইজনকে বলল,
- তোমরা কার বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাচ্ছ? দুষ্ট রাজাকে বহু আগেই জনগণ উৎখাত করেছে। আমাকে রাজা হবার জন্য চাপাচাপি করেছিল। রাজি হইনি। তাদের মধ্য থেকেই একজনকে রাজা বানিয়ে দিয়েছি।
- বোকা ভাই, তুমি নিজে রাজা হলে না কেন?
- কারণ আমার যা আছে তাই নিয়েই আমি ভালো আছি। তোমরা বলেছিলে অর্থ আর ক্ষমতাই সব। তা অর্জন করার পরেও তোমাদের মনের অভাব দূর হয়নি। জীবনের আসল জিনিস হচ্ছে আত্মসন্তুষ্টি। এটা ছাড়া কখনো তোমরা সুখী হতে পারবে না।
ছোট ভাইয়ের কথা শুনে বড় দুইজন তাদের ভুল বুঝতে পারল। সরাইখানাতেই তিন ভাই মিলেমিশে বসবাস করতে লাগল।
আজকাল এই আত্মসন্তুষ্টি জিনিসটা ক্রমেই বিলুপ্ত হচ্ছে। এর অভাবে মানুষ হয়ে যাচ্ছে লক্ষ্যহীন। সারা জীবন এক অলিক মোহের পেছনে ছুটে জীবন শেষ হচ্ছে। একটার পর একটা চাহিদা সামনে আসে আর সেই চাহিদা পূরণেই আমরা ব্যস্ত। না পারছি জীবনকে উপভোগ করতে না পারছি পরকালের জন্য নিজেকে গোছাতে। এভাবেই যৌবন শেষ করছি। আশা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উন্নত জীবনের স্বাদ দেয়া, বার্ধক্যে নাতিপুতি নিয়ে আরাম আয়েসে থাকা। কিন্তু যৌবনে অতিশ্রমে মাঝবয়সেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বার্ধক্যটা বিষময় হয়ে উঠে।
মধ্যবিত্তদের মাঝে আত্মতুষ্টি মনে হয় সবচেয়ে কম। উচ্চবিত্ত হবার তীব্র বাসনায় জীবনের সুখশান্তি সব তারা জলাঞ্জলি দিচ্ছে। সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ থেকে পাশ করে ভাল চাকরি করেও সন্তুষ্ট না। সারাদিন অফিস শেষে বাসায় ফিরে আবার পড়ার টেবিলে বসে পড়ছেন। একটা প্রফেশনাল ডিগ্রি না হলেই নয়, বেতনটাকে আরেকটু উপরে নিয়ে যেতে হবে, আরও নামী প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে হবে, এই প্রফেশনে দেশসেরাদের একজন হতে হবে হেনতেন। সারা জীবন সম্পদের পিছনে ছুটে গেলে সম্পদ ভোগ করবেন কখন? সন্তানের জন্য সম্পদ বানাচ্ছেন? আপনার অতিব্যস্ততার কারণে সঙ্গবঞ্চিত সন্তান হয়তো আপনাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর চিন্তা করছে, বর্তমানে কিন্তু এই প্রবণতা অনেক বেশি। যতটুকু গিলতে পারবে তার চাইতে বেশি কামড়ে নিতে গিয়ে এককালের শান্তির নীড় মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি থেকে সুখ-শান্তি বিদায় নিচ্ছে।
মানুষ নিজেই নিজের জীবনকে কঠিন করে তুলছে। আরও সুন্দরী একটা বউ পেলে ভালো হতো, আরও ভালো চাকরি করা একটা জামাই থাকলে ভালো হতো, বাচ্চাকে আরও ভালো একটা স্কুলে ভর্তি করা দরকার, আরও ভালো এলাকায় আরও ভালো ফ্ল্যাট চাই – আত্মসন্তুষ্টির অভাবে এই ‘আরও ভালোর’ দেখা কখনোই মিলছে না। মানুষ কি তাহলে উন্নতির জন্য কাজ করবে না? অবশ্যই করবে কিন্তু ব্যক্তি জীবনকে বিসর্জন দিয়ে নয়। নিজের সামর্থ্য, সীমাবদ্ধতা, চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিতে হবে। কখন থামতে হবে তা জানতে হবে। নিজের কর্মফলের সুবিধা যে ভোগ করতে পারে না তাকে বলা হয় কলুর বলদ। কলুর বলদ হলে বাড়ি-গাড়ি সব থাকার পরও “জীবনে কিছুই পেলাম না” এই আক্ষেপ নিয়েই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হবে। জীবন একটাই, জীবনকে উপভোগ করতে শিখুন।
২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪১
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানবেন
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৯
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: ভালোলাগা রেখেগেলাম।
সুন্দর++
প্রিয়তে