![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার যা কিছু ভাললাগা তা জানাতেই এই ব্লগে আসা।
আমি আবার পড়াশোনা ও চাকুরীতে ফিরলাম। সাধারনত মেয়েরা বিয়ের পড় পড়াশোনা ছেড়ে দেয়।বিয়ের পড় চাকুরী করলেও বাচ্চা হওয়ার পড় চাকুরী করতে কষ্ট হয় বলে আমার অনেক বান্ধবী চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ঘড় সংসার করছে।
আমি পড়াশোনা শেষ না করেই বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের পড় পড়ই চাকুরীতে যোগ দেই। পড়াশোনা , চাকুরী আর বাচ্চা পালা সব একসাথে। আমার বড় মেয়ে এখন ক্লাস টেনে পড়ে আর ছোটোটা ক্লাস এইটে।
আমার দুটো বাচ্চাই নরমাল ডেলিভাড়ী। বড়টার সময় তিনদিন আর ছোট্টার সময় দুইদিন ধরে ব্যাথা নিয়ে ছিলাম। ছোটটার সময় ডাঃ হাফিজ এসে সন্ধ্যায় বলল আজকে রাতের মধ্যে যদি বাচ্চা নরমাল ডেলিভাড়ী না হয় আমি কিন্তু আর অপেক্ষা করব না। কিছুক্ষন পড় পড় বাচ্চার হার্ট বিট পরীক্ষা করা চলছে। ১০ই জুন ১৯৯৮। রাত ৮টার দিকে আমার বাবা বসে আছে কেবিনে। বললাম “আব্বা তুমি বস, আমি একটু লেবার রুম থেকে আসি”। দুদিন ধরে সমানে হাটা হাটি করছি। ঘুরে ঘুরে পেইন আসছে আর যাচ্ছে, কিন্তু লেবার পেইন হচ্ছিল না। কিন্তু ৮ টার পড়ে মনে হলো এবার বোধ হয় সময় হয়ছে, আগের অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান থেকে। স্বামী তখন ঢাকা ইউনির্ভারসিটি আই.বি.এ থেকে এম.বি.এ করছে। পরীক্ষা চলচ্ছিল।
রাত ১০টার দিকে ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবলের উদ্ভোধনি অনুষ্টান শুরু হয়েছে, আমারও পেইন শুরু হয়েছে। সবাই অনুষ্টান দেখা নিয়ে ব্যস্ত। নার্সরা খুবই বিরক্ত আমার পেইন শুরু হওয়ার কারনে । একজন বলল আমি শুনলাম। “ পেইন ওঠার আর সময় পেলো না !” ফলশ্রতিতে বেশ কিছু সেলাই পড়লো। রক্ত পীঠের দিকে ওঠে এসেছিল। রক্তশুন্যতার ফলে পুরো শরীর বিশেষ করে মুখ ফুলে উঠলো। আমি খুশী , দুইজন বাচ্চাকে এই পৃথিবীতে এনেছি স্বাভাবিক প্রসব বেদনার মাধ্যমে।
অনেক খরচ হয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন ধরনের মনিটরিং এর জন্য কিন্তু সাধ্য মতন চেষ্টা করেছি বিভিন্ন সময়ে চাকুরীর প্রয়োজনে প্রজেক্টের কাজে মাঠ পর্যায়ে, সেমিনার কিংবা ওয়ার্কসপে যা বলেছি তা মানতে।
সব সময় চাকুরীরত ছিলাম কিন্তু বাচ্চা হওয়ার পড় পড়ই চাকুরী ছেড়ে দেই। এক্সক্লুসিভ ব্রেষ্ট ফিডিং এর পাশাপাশি ২ বছররেরও বেশী বুকের দুধ খাইয়েছি। চাকুরী ছেড়ে দিয়ে সব সময় আগের চেয়েও ভাল চাকুরীতে যোগ দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে কোনো সমস্যা হয়নি। আমার ইর্ষনীয় ভাল বস ছিল বিধায় আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল চাকুরি চালিয়ে যাওয়া। তার মধ্যে সফিকুজ্জামান স্যারের (মার্কেটিং ডাইরেক্টর, কোটস বাংলাদেশ) কথা না বলে পারছি না। উনি আমাকে পিতৃতুল্য ভালবাসা দিয়েছেন। আমার বাচ্চাকে ছয় মাসের পড়েও বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য দুপুর তিনটার দিকে ছূটি দিয়ে দিতেন। বাচ্চার এক বছর বয়স পর্যন্ত আমাকে এই সুবিধা দিয়েছিলেন। আমার অফিসের রুমের দরজায় নিজে লিখে রাখতেন কেউ যাতে আমাকে পড়াশোনার সময় ডির্ষ্টাব না করে। আমার তখন মার্ষ্টাস পরীক্ষা চলছিল।
এর পড়ে যাদেরকে পেয়েছি, ড. কেয় মিণ্ট জনি (চিফ,হেলথ এন্ড নিউট্রিশন, ইউনিসেফ), ড. ইয়াসমিন আলী হক (টিম লিডার, হেলথ এন্ড নিউট্রিশন, ইউনিসেফ) , ড কায়োডে ওয়েগবাইট (চিফ,হেলথ এন্ড নিউট্রিশন, ইউনিসেফ), ড. শাহজাহান (ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার, মাইক্রোনিঊট্রিন ইনিশিয়েটিভ), ড. জ়েবা (ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাইক্রোনিঊট্রিন ইনিশিয়েটিভ ) এবং সর্বশেষে ড. হালিদা হানুম (ডাইরেক্টর জেনারেল, এফপিএবি)। আমি প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাকে নিজের মনে করে হাতে ধরে কাজ শেখাবার জন্য।
আমার মেয়েরা এ যুগের মেয়ে । ওদের সাথে অনেক সময় আমার মতের মিল হয় না। ওদের ব্যাবহারে আমি মাঝে মাঝেই অনেক কষ্ট পাই। কিন্তু ওদের দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যাবে আমার দোষই অনেক বেশি।
আমার মেয়েরা এখন আমাকে দেখে রাখে। ওরা এতো মজার যে ওদের ব্যাবহারে আমি যে মাঝে মাঝে কষ্ট পাই সেটা ভুলে যাই।
ছোটাটা খুবই ঘুমাতে ভালবাসে আর অংককে ভয় পায়। জ্যামিতি আগে বর্ননা লেখে পড়ে ছবি আঁকে। পরীক্ষার সময় মানুষ জ্যামিতি প্রাকটিস করে আর ওকে দেখি কয় লাইন আছে সেটা চেক করে। বাসায় একদম পড়াশোনা করে না। স্কুলে যা পড়ায় তা অবশ্য মনোযোগ দিয়ে শোনে। তাই পরীক্ষায় সব বিষয়েই কানের পাশ দিয়ে ভাল রেজাল্ট করে।
আমরাও কখনো ওকে খুব ভাল রেজাল্টের জন্য তাগাদা দেই না। কিন্তু এইবার ক্লাস এইটে বোর্ডের পরীক্ষা দিবে। সবাই দোয়া করবেন ওর জন্য।
আমার বড় মেয়ে চাপে পড়লে নিজের থেকেই পড়ে । অংকে ওস্তাদ। কিন্তু প্রাক্টিসের অভাবে ওস্তাদি ফলাতে পারে না। ডিবেটে সক্রিয়। বিভিন্ন সময়ে পোষ্টার প্রেজেণ্টেসনে পুরুষ্কার নিয়ে এসেছে। আমি একবার রেসিডেন্টসিয়াল কোর্সে ঢাকার বাইরে যাই ১ বছরের জন্য। ওদেরকে একটি স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম, নাচ, গান, এবং ছবি আকাঁ শেখার জন্য।
ভেবেছিলাম যখন চাকুরী জীবনে প্রবেশ করবে এই যোগ্যতাগুলোকে কাজে লাগাবে, কিন্তু আমার বড় মেয়েটা এখন বিশেষ করে পড়াশোনাকে পাশে রেখে স্কুলের সব অনুষ্টানে নিরবিচ্ছিন্নভাবে নিজেকে এইসব বিষয়ে নিবেদন করে যাচ্ছে। দুই মাস প্রায় শেষ। সাইন্সে পড়ে। কি হবে না ভেবে… আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছি। আর আজকে আপনাদের কাছে দোয়া চাচ্ছি আমাদের পরিবারের জন্য। চাকুরীতে যাচ্ছি বলে যে একেবারে বিচ্ছিন্ন হচ্ছি তা নয়। যখনই নতুন কিছু পাব অবশ্যই সময় বের করে আপনাদের মাঝে আসব।
আপনারা সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন এই কামনা সর্বক্ষনের।
http://www.worldschildrenonline.org/?p=65
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩০
লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন:
প্রিয় উত্তর দাতা,
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।ভাল থাকবেন সবসময়।
আল্লাহ সকলের সহায় হউন।
২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪০
ঘাসফুল বলেছেন:
সাহসী যোদ্ধাদের সবসময় শ্রদ্ধা করি-
আপনাদের প্রতি রইলো অন্তর থেকে...
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩২
লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন: আপনাদের ভাল লাগাই আমার একান্ত কাম্য। চলার পথের পাথেয়।
৩| ০১ লা মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭
একটু স্বপ্ন বলেছেন:
সাবলীল জীবন গাথা ভাল লাগলো।
ইউনিসেফের হেল্থ এন্ড নিউট্রিশন সেকশনে কি এখনও কাজ করছেন? একটা সময় ছিলাম ওই সেকশনে.. মীরা দি এখনও আছেন, তাইনা?
ভাল হোক আপনার, আপনাদের।
০১ লা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৭
লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মন্ত্যবের জন্য। আমি ছিলাম এক সময় ২ বছর । মীরা দি তখন এডুকেশন সেকশনে ছিল । এখন মীরা দি হেল্থ এন্ড নিউট্রিশন সেকশনে আছে। ভাল থাকবেন। যোগাযোগ রাখবেন।
৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৩
শ্রাবণ জল বলেছেন: শুভকামনা আপনাদের জন্য।
অনেক ভাল থাকুন।
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:২২
লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন: অনেকদিন পর ব্লগে ঢুকে দেখি তোমার একটি কমেন্ট পড়ে আছে। এই বিদেশে এটা যে কত বড় পাওয়া, যে পায় সেই অনুধাবন করতে পারে। তোমার কমেণ্ট পড়ার পড়েই কিছু লেখা আর কবিতা পড়লাম । আর মনটা ভাল হয়ে গেল। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে কমেন্ট করার জন্য।
৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৫২
শ্রাবণ জল বলেছেন: ওখানে একা বলে মন খারাপ করবেন না, আপু।
আমরা আপনার পাশেই আছি।
দেশে ফিরে কিছু ছবি শেয়ার করবেন অবশ্যই।
ভাল থাকুন।
৬| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:২৫
লুবনা ইয়াসমিন বলেছেন: বিদেশে অফিসের কাজে। কাজ করতে করতে খুবই টায়ার্ড। তারপড়েও দেশের জন্য খারাপ লাগে। মন খারাপ হয়ে যায়।বাচ্চাদের জন্য খারাপ লাগে। তবে খুব শিগ্রই দেশে ফিরব। তবে পহেলা বৈশাখ বি্দেশেই কাটাতে হবে। এই দুঃখ মনেই থাকবে। প্রকাশের আর ব্যাবস্থা নেই।
৭| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:০৮
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
জীবন যুদ্ধে টিকে থাকাটাই সুখের পরশ পাথর। দোয়া রইল আপনার এবং আপনার পরিবারের প্রতি।
৮| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
লাবনী আক্তার বলেছেন: আপনার কাছ থেকে সাহস পেলাম এবং শিখলাম আপা । যদিও এখনো বিয়ে হয়নি। আমারও ইচ্ছে বিয়ের পর জব করা।
শুভকামনা থাকল আপা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১৯
বোকামন বলেছেন: সম্মানিত লেখক,
আল্লাহ আপনার সহায় থাকুক ।
আপনিও ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন এই কামনা সর্বক্ষনের....
আস সালামু আলাইকুম