![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যখন আয়নার সামনে দাঁড়াই,
আমি কেবল নিজের মুখটা দেখি না—
দেখি শতাব্দীর পর শতাব্দী,
মায়ের চোখ, বাবার হাসি,
দাদুর কুঁচকানো হাত,
সেই হাতে লেখা অগণিত গল্পরাশি।
এই কপালের রেখায় লুকিয়ে আছে
প্রাচীন নদীর গতিপথ,
যে নদী বয়ে গেছে
আমার পূর্বপুরুষের স্বপ্নের ভেতর দিয়ে।
এই চোখের তারায় ভাসে
সেই তারকার আলো
যা দেখেছিল আমার আদি মাতা
প্রথম ভালোবাসার রাতে।
আয়নায় যে মুখ দেখি,
সে তো আমার নয়—
সে হাজার বছরের সংকলন,
অগণিত জীবনের সারাংশ।
আমার ঠোঁটে মিশে থাকে
মাটির গন্ধ, বৃষ্টির স্বাদ,
আর সেই প্রথম কান্নার অনুরণন
যা শোনা গিয়েছিল
জন্মের সেই আদিম মুহূর্তে।
কখনো কখনো মনে হয়,
আমি আমি নই, আমরা—
আমার ভেতরে বাস করে
এক অদৃশ্য জনপদ।
প্রতিটি নিঃশ্বাসে
জেগে ওঠে কোনো পূর্বজের আত্মা,
প্রতিটি হৃদস্পন্দনে
বেজে ওঠে প্রাচীন কোনো যুদ্ধের দামামা।
আয়নার ওপারে যে মুখ,
সে জানে এমনসব কিছু
যা আমি ভুলে গেছি—
সে জানে কীভাবে পাখি হতে হয়,
কীভাবে মেঘ হয়ে ভেসে যেতে হয়,
কীভাবে ফুল হয়ে ফুটতে হয় নীরবে।
সময় যেন একটি চক্র,
আর আমি তার কেন্দ্রবিন্দু—
অতীত থেকে ভবিষ্যতে
বয়ে চলেছে অনন্ত স্রোত।
আমার প্রতিটি কাজে
লুকিয়ে আছে পূর্বপুরুষের শপথ,
আমার প্রতিটি স্বপ্নে
জেগে আছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আশা।
আয়নায় তাকিয়ে বুঝি,
আমি একা নই কখনো—
আমি যেন একটি নদী,
যার উৎস অজানা
আর মোহনা অসীম।
আমি যেন একটি গান,
যা গাওয়া শুরু হয়েছিল
সৃষ্টির প্রথম দিনে,
আর শেষ হবে
শেষ তারকা নিভে যাওয়ার পরে।
তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
আমি মাথা ঝুঁকে সম্মান জানাই
সেই অসংখ্য মুখের উদ্দেশ্যে
যারা আমার ভেতরে বেঁচে আছে,
যারা আমাকে দিয়ে গেছে
এই অমূল্য উপহার—
একটি জীবন, একটি চেতনা,
একটি অনন্ত সম্ভাবনা।
২৯ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯
MAANHAC বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:০৬
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: সুন্দর কবিতা।