নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদৃশ্য আগুনে তীব্র দহনে জ্বলে যাই.....!!!

মঈনউদ্দিন

“অলৌকিক আনন্দের ভার, বিধাতা যাহারে দেন, তার বক্ষে বেদনা অপার”

মঈনউদ্দিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইন্টারনেট বন্ধ ও ধীরগতি: অর্থনীতি ও জনজীবনে গভীর প্রভাব

৩১ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৬


কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট সংঘর্ষ ও সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে যে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল, তা ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আরও গভীর হয়েছে। টানা ১০ দিন ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ রাখার নজির বিশ্বের বুকে একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হিসেবে রয়ে গেছে।

চাপের মুখে সরকার ইন্টারনেট চালু করলেও, তা নামমাত্র। বর্তমান ধীরগতির ইন্টারনেট অনলাইনকেন্দ্রিক সব কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। যেখানে মানুষের প্রতিদিনের কাজ ইন্টারনেটনির্ভর, সেখানে এই ধীরগতির ইন্টারনেট কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করার পর সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সরঞ্জাম স্থাপন করা একটি ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে পরে দেখা গেল, সেই ভবনে কোনো আগুন লাগেনি। পাশের একটি ভবনের তার পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় ১০ দিন ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হলো। এছাড়া, ওই ভবন থেকে মাত্র ২০ শতাংশ ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করা হয়। তাহলে মুঠোফোন ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ব্যাখ্যা কী?

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের একের পর এক বক্তব্য জনগণের কাছে হাস্যকর লেগেছে। সরকার ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং একের পর এক অসত্য ভাষ্য দিয়ে যাচ্ছিল। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির করুণ অবস্থায় এটি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট চালু করা হলেও ধীরগতির ইন্টারনেট কার্যত কোনো সুফল দিচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কেন্দ্র করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের যে জোয়ার তৈরি হয়েছিল, তা থমকে গেছে। অনলাইন যোগাযোগের অভাবে ভোক্তাশ্রেণি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন উদ্যোক্তারা।

প্রযুক্তি খাতে ফ্রিল্যান্সিং কার্যক্রমও বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের তরুণেরা ফ্রিল্যান্সিং করে যে বৈদেশিক মুদ্রা এনেছেন, তা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ইন্টারনেট–সেবার করুণ দশা তৈরি করে সেই খাতকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রযুক্তি খাতের সংগঠকেরা বলছেন, ডেটা সেন্টার পুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ হয়েছে, এই কথা বিদেশি ক্রেতারা বিশ্বাস করছেন না, ফলে তারা বাংলাদেশের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন।

সরকার সহিংসতা ও নাশকতায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করলেও, ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির কোনো উল্লেখ করেনি। ১০ দিন ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ফলে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির যে ক্ষতি হয়েছে, তার মূল্য অনেক। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সতর্ক করে বলেছেন যে, নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্যতা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ এখন মানুষের মৌলিক অধিকার। ইন্টারনেট বন্ধ ও ধীরগতির করে রাখা সেই অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। সরকারের এই আচরণ পুরোপুরি অগণতান্ত্রিক। এখন আর কোনো অজুহাত ও সময়ক্ষেপণ নয়। দ্রুত স্বাভাবিক গতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট চালু করে মানুষের স্বাভাবিক যোগাযোগ, দৈনন্দিন কার্যক্রমসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সচল করা প্রয়োজন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.