নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মাকসুদুর রহমান

মোঃ মাকসুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের ‘’চাণক্য কুটনীতি’’তে লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দাবার গুটি হিসেবে ব্যাবহৃত হলো বাংলাদেশেরাজনৈতিক দল গুলো!!

১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ২:২৬



গতকাল ১২মে ছিলো ভারতের নয় পর্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের শেষ দিন। এবারের নির্বাচন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আলোচনা , সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। শুধুমাত্র ভারতেই নয়, এর উত্তাপ বাংলাদেশের সরকার ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিট করেছে। যার প্রমান হচ্ছে বিরোধী দল বিএনপি এই প্রথম হঠাৎ করে গত ২২ এপ্রিল ‘তিস্তা অভিমুখে লংমার্চে’র আয়োজন করে। দেশি –বিদেশি রাজনৈতিক বিশ্লেকষরা মনে করেন, ভারতে যখন লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপি কেনো এই সময়কে তিস্তা অভিমুখে লংমার্চের জন্যে বেছে নিলো, এর সাথে কি ভারতের লোকসভা নির্বাচনে প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ দলের হিসেব নিকেশ জড়িত আছে। তাছাড়া বিএনপি এর আগে কোন সময় নিজেকে এ ধরনের বাম ঘরানার আন্দোলনের সাথে খুব একটা জড়িত করেনি।তাহলে কি ধরে নেয়া যায়, লংমার্চ ভারতের উগ্র বাংলাদেশ বিরোধী দলগুলোকে ভোটের রাজনীতিতে সহযোগিতার অংশ হিসেবে বিএনপি এই কর্মসুচি নিয়েছিলো।কারণ বিএনপি যদি এই কর্মসুচীর বিষয়ে আন্তরিক থাকত তাহলে সে অবশ্যই এই কর্মসুচী ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পরে অর্থ্যাৎ ১৮ বা ২০ মে দিতে পারত। তার পুর্বে বিএনপি এই বিষয়ে ভারতের সকল রাজনৈতিক দলের নিকট ‘তিস্তা সমস্যা’ সমাধাণের দাবী জানিয়ে সমন্বিত প্রস্তাবনা সহকারে ‘ডেট লাইন’ দিয়ে একটি খোলা চিঠি দিতে পারত। তাতে করে ভারতীয় জনতা পার্টির মতো উগ্র সাম্প্রদায়িক দলগুলো বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য দিয়ে হিন্দু ভোটারদের উপর প্রভাব বিস্তার করার প্রয়াস পেতো না।অবশ্য বিএনপি’র এই ‘তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ’ এখানে শুধু বিজেপি নয়, মমতার দল তৃনমুলও অতি জাতীয়তাবাদী সেজে ভোটারদের প্রতি প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে। তাছাড়া বিএনপি যদি এ আন্দোলন নিয়ে আন্তরিক হতো তাহলে তো তাদের ফলোআপ কর্মসুচী প্রদান করার কথা। আমাদের জানামতে সে ধরনের জোরালো কোনো ফলোআপ কর্মসুচী বিএনপি’র পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি।

কিন্ত সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে গত ১১মে রোববার ভারত-বাংলাদেশের তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি ঝুলে থাকায় এই প্রথম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সরাসরি সমালোচনা করলেন৷ আর তিনি সমালোচনা করলেন এমন একটি সময়ে, যখন পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের শেষ দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে তার পরদিনই– উত্তরপ্রদেশ, বিহারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেরও ১৭টি আসনে৷ তাই শেখ হাসিনা এমন এক সময় মমতা ব্যানার্জির সমালোচণা করলেন যখন ‘মোদি’ ঝড়, ‘সারদা’ কেলেংকারী তৃনমূলকে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।তবে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের ধারণা, মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী অত্যন্ত সচেতন ভাবে পশ্চিমবঙ্গের ১৭ টি আসনের নির্বাচনের আগে মমতা ব্যানার্জির সমালোচণা করলেন যা ভোটের রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারন এই ১৭ টি আসনের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার তিস্তা নিয়ে মন্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এখন রাজ্যের স্বার্থে নিজেকে অবিসংবাদিত জাতীয়তাবাদী নেত্রী হিসেবে ভোটারদের কাছে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছেন।২০০৯ সালের নির্বাচনে এই ১৭টি আসনের ১৪টিতেই জিতেছিল দলটি মমতার দল ৷ তবে গতবার তৃণমূল ও কংগ্রেস একসাথে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করেছিলো। এবার অবশ্য তৃণমূল একাই লড়ছে, ফলে ক্ষমতাসীন দলের লড়াইটা আগের তুলনায় কিছুটা হলেও কঠিন। তৃণমূল নেত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় রাজনীতিতে নিজের গুরুত্ব বাড়াতে উদগ্রীব৷এটা বুঝেই মমতা এবার নিজের রাজ্য থেকে অন্তত ৩০টি আসন জিততে চান৷ শেষ দফার ১৭টি আসনের মধ্যে যত বেশি সম্ভব আসন জিততে মরিয়া তৃণমূল।বাংলাদেশের প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মমতা ব্যানার্জীর মধ্যে একটি বিষয়ে খুব মিল, তারা দুজনেই ক্ষমতার স্বার্থে যেকারো সাথে হাত মিলাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেন না। তাই এই প্রথম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সমালোচনা করে ভোটযুদ্ধে মমতা যাতে তিস্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের সমালোচনা করে বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন সেই পথ পরিস্কার করে দিয়েছেন। কিন্তু কুটনৈতিক ম হ লের অভি মত হচ্ছে , একটি স্বাধীন দেশের প্রধাণমন্ত্রী হিসেবে অন্য দেশের সামান্য একটি প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে সমালোচনা করা রাষ্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদকে হেয় করার শামিল।জাতি হিসেবে প্রধাণমন্ত্রীর এই মন্তব্য আমাদেরকে লজ্জিত করেছে। কারন তাকে আবেগের উর্দ্ধে উঠে অবশ্যই ভারতের প্রধাণমন্ত্রীর সাথে যেকোনো সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে কোনো ক্রমেই একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে । তবে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই,এবারের ভারতের লোকসভা নির্বাচনে তাদের দীর্ঘদিনের চানক্য কুটনীতির থাবায় বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক গুলোও দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।যদিও এটাই বর্তমানে আমাদের দেশের রাজনীতির সবচেয়ে বড় দৈন্যদশার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.