নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মাকসুদুর রহমান

মোঃ মাকসুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দকে সংযতভাবে বক্তব্য,বিবৃতি ও আচরণ করতে হবে।

১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ২:২৯



ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পুর্বেই ব্যাপকভাবে ধারণা ছিলো ‘মোদি’ হাওয়ায় কংগ্রেসের গত ১০ বছরের সাম্রাজ্য তছনছ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে পরিস্কার হয়ে গেছে বিজেপি নির্বাচনে বিশাল বিজয় অর্জন করেছে। এবারের লোকসভা নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনীতিতেও ব্যাপক আলোরন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে বিরোধী দল বিএনপি ভারতের নির্বাচনকে গভীর আগ্রহের সাথে পর্যবেক্ষন করেছে, তাই নির্বাচনী ফলাফল পুর্নাঙ্গ ভাবে প্রকাশ হওয়ার আগেই বিএনপি নেত্রীর পক্ষ থেকে ‘মোদি’কে অভিনন্দন জানানো হয়েছে,যা স্বাভাবিকভাবে বিএনপির মতো বারবার দেশ পরিচালনাকারী দলের অত্যন্ত দক্ষ কুটনৈতিক সৌজন্যতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আমরা দেখতে চাই। কিন্তু বিএনপিকে খুব সতর্কতার সাথে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি সম্পর্কে উচ্ছাস, উৎকন্ঠা ও মন্তব্য প্রদান করতে হবে। এর মুল কারন হলো, বাস্তবিক অর্থে বিএনপি এখন পর্যন্ত বৈদেশিক কুটনীতিতে গভীরভাবে কারো সাথেই সম্পর্ক তৈরী করতে পারেনি। আর একটি বিষয় খুব পরিস্কার ,সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির খুব একটা পরিবর্তনের চেষ্টা রাজনৈতিক দল গুলো কখনই করেনি ।তাছাড়া ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো এক ধ রনের কনভেনশন মেনে চলে, তা হচ্ছে তাদের অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক বিষয়ের উপরে কেউ নাক গলাবে তা তারা বরদাস্ত করে না। সুতরাং বিএনপি ভারতের নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত বিষয়ে উত্তেজিতভাবে যেনো কোনো ভাবেই কংগ্রেস সম্পর্কে কুটনৈতিক ভাষা বহিঃর্ভূত মন্তব্য না করে ফেলে । কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে কংগ্রেস ভারতের সবচেয়ে পুরাতন রাজনৈতিক দল , তারা যদি ক্ষমতায় নাও থাকে তারপরও ক্ষমতার প্রভাব বলয়ে একটি শক্তিশালী অবস্থান সবসময় তাদের বিদ্যমান। বিশেষভাবে আমাদের মতো প্রতিবেশী দেশের ক্ষেত্রে সম্পর্ক নির্ধারণে যারা ভুমিকা রাখে, সেই গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর প্রভাব বলয়ে কংগ্রেসের প্রভাব অত্যন্ত সুস্পষ্ট । রাজনৈতিক রেশারেশি থাকলেও ভারতে কংগ্রেসকে এখনো রাজনৈতিক দল হিসেবে ‘ন্যাশনাল হেরিটেজে’র অংশ হিসেবে দেখা হয়।

তাছাড়া আর একটি গুরুত্বপুর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, বিএনপি’র কিন্তু ভারতীয় প্রভাবশালী কোন রাজনীতিকের সাথে ব্যাক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই ,যার মাধ্যমে বিএনপি ভারতের সাউথ ব্লকের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে ভুমিকা রাখতে পারে।বিএনপি’র সামনে সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র বিজেপি’র তোষণনীতি অব্ম্বলন না করে এই প্রথম কংগ্রেসের সাথেও সম্পর্ক উন্নয়নের আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে, কারণ এই মুহুর্তে কংগ্রেস দলীয় রাজনীতির সবচেয়ে দুঃসময় অতিক্রম করছে, সাইকোলজিক্যালি দুঃসময়ে যে কারো সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন অত্যন্ত সহজ হয়। শুধু তাই না বিএনপি যদি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির উপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়, তাহলে তাদেরকে অবশ্যই পশ্চিমবাংলার রাজনীতিবিদদের সাথেও সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে। কারণ আমরা দেখেছি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময় থেকে ‘দিল্লী সরকার’ বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় যেকোনো সমস্যা সমাধানে পশ্চিমবাংলার সরকার বা রাজনৈতিক নেতাদের উপর সর্বাধিক নির্ভর করে।

আর একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে নির্বাচনী বৈতরণী পার করার জন্যে মোদিকে যেভাবে ব্রান্ডিং হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে , সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে ‘মোদি’ সেভাবে একচ্ছত্রভাবে ‘গুজরাটে’র ন্যায় ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না , কারণ সেক্ষেত্রে তাকে দলের একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ যেমন – এল কে আদভানি, সুসমা স্বরাজ, রাজনাথ সিং, অরুন জেটলি , নীতিন গডকাড়ি, মুরোলি মোহন যোশি, কে সুব্রামানিয়াম, সর্বোপরি আরএসএস প্রধাণ মোহন ভাগবতদের আস্থায় নিয়ে সরকার পরিচালনা করতে হবে। এর বাইরে আছে বিভিন্ন রাজ্য সরকার ও জোটের প্রভাবশালী নেতারা।তাই বিএনপি’র উচিৎ হবে শুধুমাত্র সাময়িক স্বার্থ হাসিলের জন্যে কারো সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের চিন্তা না করে বাস্তবিক অর্থে সবচেয়ে বৃহৎ প্রতিবেশি রাষ্ট্রের প্রধাণ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক উন্নয়নের সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা । এজন্যে বিএনপি মাঝে মাঝে তার দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দকে ভারতে পাঠিয়ে সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সাথে সাথে মত বিনিময় কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে একটি সেল গঠন করতে পারে । যা ভবিষ্যতে সরকার পরিচালনার সময় অনেক সমস্যা সমাধানে বিএনপিকে সাহায্য করবে।

তবে সর্বপ্রথম বিএনপিকে আন্তজার্তিক ক্ষেত্রে ব্যাপক জ্ঞানের অধিকারী একজন টেকনোক্রেট ব্যাক্তিত্বকে ( গওহর রিজভীর মতো, শমসের মুবিনের মতো প্লেবয় নয়) খালেদা জিয়ার 'কার্যকরী বৈদেশিক উপদেষ্টা' নিয়োগ দিতে হবে ,যার প্রধান যোগ্যতা থাকতে হবে পৃথিবীর ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গের সাথে ব্যাক্তিগত সম্পর্ক(গওহর রিজভীরআছে)।

কিন্তু এসব কিছুই মুল্যহীন হবে বিএনপি যদি দেশে তাঁর সাংগঠনিক শক্তি কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে, তাই বিজেপি’র বিজয়ে অতিরিক্ত উল্লাস প্রকাশ না করে বিএনপির উচিৎ হবে,

১, দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যার দিকে নজর দেয়া,

২,অবিলম্বে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে এক ছাতার তলে আনা,

৩,দলের বৃহত্তর স্বার্থে যেসকল নেতৃবৃন্দ এখনো দলের বাইরে নিস্ক্রিয় অবস্থায় আছেন তাদের সবাইকে সক্রিয় করা

এবং অতিসত্বর পরবর্তী আন্দোলন কর্মসুচী গ্রহণ করতে হবে ,যাতে সরকার অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেশে পুনরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য হয়।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ৩:১৬

ভুয়া প্রেমিক বলেছেন: বিএনপি কে কি করতে হবে সেটা বলার আপনি কে? আপনাকে কে উপদেষ্টা রাখছে? আপনার চেয়ে অনেক --ছিড়া লোকজন বিএনপি তে আছে

২| ১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ৩:৩৮

মোঃ মাকসুদুর রহমান বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি একেবারে ঠিক ব লেছেন আমি কেউ না। আমি অতি ক্ষুদ্র একজন সাধারণ মানুষ ,কিন্তু সংবিধানের কোনো ধারায় লেখা আছে বিএনপিকে নিয়ে লেখা যাবে না?

৩| ১৮ ই মে, ২০১৪ ভোর ৫:১২

মিতক্ষরা বলেছেন: বিএনপিকে ভারতের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।

তবে এই দেশে নির্বাচন হবে কি হবে না তার নির্ধারনী ফ্যাক্টর হল বাংলাদেশের জনগন। আমার বিশ্বাস এবারে আবার আন্দোলন শুরু করলে তা সফল হবে। যেহেতু তাড়া নেই, তাই হরতাল অবরোধের মত বিধ্বংসী জন বিমূখ আন্দোলন কম হলেই ভাল।

৪| ১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:০৪

মোঃ মাকসুদুর রহমান বলেছেন: মিতক্ষরার সাথে আমি ১০০ভাগ একমত। ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপি নেতারা যদি আন্দোলনের মাঠে উপস্থিত থাকে তবে অবশ্যই সেই আন্দোলন সফল হবে।

৫| ১৯ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৮

কীর্তনখোলা তীরে বলেছেন: আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দেশের জনগণের উপর আস্থা রাখতে হবে ।মোদিকে কিন্তু আমরা যেয়ে ভোট দিয়ে ক্ষ ম তায় বসাইনি।ভারতের জনগণের ভোটেয় তিনি বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.