নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মাকসুদুর রহমান

মোঃ মাকসুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

নরেন্দ্র মোদি’র রাজনৈতিক উত্থাণ কেবল হিটলারের সাথেই তুলণীয়

২৬ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬

বর্তমান বিশ্বে গত এক সপ্তাহ যাবৎ সর্বাধিক আলোচিত ব্যক্তিটির নাম হচ্ছে ভারতের ১৬তম লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী বিজেপি নির্বাচনী কমিটির প্রধান ও আজ ২৬মে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব নিতে যাওয়া ১৫তম প্রধাণমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ।গত বছর বিজেপির নির্বাচনী প্রচার কমিটির প্রধান হিসেবে তাকে ঘোষনা দেয়ার পর থেকেই বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় বয়ে যায়। এমনকি বিজেপি’র আজকের উত্থাণের পিছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি এবং শুধু তাই না, আজকের মোদিকে যিনি আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে বর্তমান অবস্থায় নিয়ে এসেছেন সেই এলকে আদবানী পর্যন্ত চরম বিরোধিতা করেছিলেন বিজেপির পরবর্তী প্রধাণমন্ত্রী হিসেবে মোদির নাম প্রস্তাবের।কিন্তু তত দিনে গঙ্গার জল অনেক দূর গড়িয়ে ভারত মহাসাগরের স্রোতধারার সাথে মিলিত হয়েছে । বিজেপির মুল তাত্ত্বিক ও মুরুব্বি সংগঠন আরএসএসের কাছে ৯০ দশকের রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবীতে রথযাত্রা’র আয়োজন করে সারা ভারতীয় রাজনীতিতে চরম হিন্দুত্ববাদী বিষবাষ্প রচনা করে ধর্মীয় ভাবধারার রাজনীতির উত্থাণ ঘটিয়ে ছিলেন সেই এলকে আদবানীও অপাংক্তেয় হয়ে পড়েছেন ততদিনে। কারণটাও খুব পরিস্কার ইতিমধ্যে ২০০২ সালে গুজরাটে মুসলিম নিধণে নেতৃত্ব প্রদান করে আরএসএস , বিএইচপি’র আস্থা অর্জন করে ফেলেছেন এককালের এলকে আদবানীর ভাবশিষ্য নরেন্দ্র মোদি ।আরএসএস বুঝতে পারে নরেন্দ্র মোদিই হতে পারেন এক মাত্র দ্বিধাহিনচিত্তে তাদের বহু আকাংখিত হিন্দু রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার অন্যতম সোপাণ হতে।তাই বিজেপির বাঘা বাঘা নেতৃবৃন্দের বাধা উপেক্ষা করে আরএসএস নরেন্দ্র মোদিকেই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রধাণ সেনাপতি হিসেবে নির্বাচন করে।তারপরের ইতিহাস তো এক কথায় রূপকথার গল্পকেও হার মানায় ।নরেন্দ্র মোদি ২০১৩সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিজেপির পক্ষ থেকে প্রধাণমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হবার পর তার ছোড়া বহুমুখী বাণে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কংগ্রেসের ১২৮ বছরের রাজনৈতিক সাম্রাজ্য তছনছ হয়ে গেছে। মাত্র ৪৪জন কংগ্রেস সৈনিক কোন মতে তাদেরকে রক্ষা করতে পেরেছেন ‘নরেন্দ্র মোদি’ নামক বিধবংসী সুনামির আঘাত হতে। মোদির আঘাত যে কতটা ভয়াবহ তা শুধু একটি উদাহরণ দিলেই পরিস্কার হবে ,ভারতের সর্বাধিক জন অধ্যুষিত রাজ্য উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস এবারকার নির্বাচনে মাত্র দুটি আসন লাভ করেছে তাও তাদের চিরাচরিত তালুক হিসেবে পরিচিত আমেথি ও রায়বেরিলিতে রাহুল ও তার মা সোনিয়া গান্ধী । সারা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যম , ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশ্লেষনধর্মী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দিস্তা দিস্তা কাগজ ব্যয় হচ্ছে নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক উত্থাণের উপাখ্যান রচনা করতে । রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সমাজবিজ্ঞানীরা ‘নরেন্দ্র মোদি’র এ অভাবিত রাজনৈতিক উত্থাণকে কেবলমাত্র অ্যাডলফ হিটলারের রাজনৈতিক উত্থাণের সাথেই তুলনা করেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।তাই আজকে আমরা বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ংকর মানব দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ সৃষ্টির নায়ক ‘এডলফ হিটলার’ ও ২০০২ সালে গুজরাটে মুসলিম নিধণে প্রধান মদদদাতা হিসেবে চিহ্নিত ‘নরেন্দ্র মোদি’ এ দুজনের শৈশব থেকে শুরু করে রাজনীতিতে তাদের উত্থানের একটি তুলনা মুলক চিত্র পর্যালোচনা করার চেষ্টা করব।

এডলফ হিটলার

--------------

(২০শে এপ্রিল, ১৮৮৯ - ৩০শে এপ্রিল, ১৯৪৫) অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত জার্মান রাজনীতিবিদ যিনি ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। হিটলার ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সে দেশের ফিউরার ছিলেন।



কৈশোর ও যৌবনকাল

--------------------

হিটলারের বাবা Alois’র বৈধভাবে (সমাজ সাপেক্ষে) কোনো জাত ছিলেন না। এক কথায় বলতে গেলে জারজ ছিলেন। তিনি জীবনের অনেকটা সময় শেষ নাম হিসেবে মায়ের নাম (Schicklgruber) ব্যবহার করেছিলেন। ১৮৭৬ সালেই Alois প্রথম হিটলার নামটি গ্রহণ করেন। তার ছেলে অ্যাডলফ-ও কখনও হিটলার ছাড়া অন্য কোন নাম ব্যবহার করেননি।

সরকারী কাস্টম্‌স এর চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণের পর হিটলারের বাবা সপরিবারে আপার অস্ট্রিয়ার লিন্‌ৎস শহরে চলে যান। এখানেই হিটলারের বাল্যকাল অতিবাহিত হয়। এ কারণে সারাজীবন তিনি লিন্‌ৎসকে ভালবেসে গেছেন, অন্য কোন শহরকে তার মনের গহীনে এর উপরে স্থান দিতে পারেননি। বাবাকে হিটলার খুব একটা পছন্দ করতেন না বরং ভয় করতেন। কিন্তু মায়ের তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কোন কমতি ছিল না। ১৯০৩ সালে হিটলারের বাবা মৃত্যুবরন করেন । বাবার রেখে যাওয়া পেনশন ও সঞ্চয়ের অর্থ দিয়েই তখন তাদের সংসার কোনমতে চালাতে হতো। অনেক ভোগান্তির পর ১৯০৭ সালে মাকে হারিয়ে হিটলার একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। পড়াশোনায় তিনি বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। মাঝখানে কিছু দিনের জন্যে তিনি ভিয়েনায় যান, কিন্তু চিত্রশিল্পী হবার স্বপ্ন নিয়ে আবার লিন্‌ৎসে ফিরে আসেন। আবার ভিয়েনায় যান, সামান্য যা ভাতা পেতেন তা দিয়ে ভিয়েনার মত শহরে বসবাস তার জন্য বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। একজন চিত্রশিল্পী হিসেবেই নিজেকে ভবিষ্যতে তিনি দেখতে চেয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যে অস্ট্রিয়ার "একাডেমি অফ ফাইন আর্টস"-এ ভর্তি পরীক্ষা অংশ নেন কিন্তু তাতে তিনি সুযোগ পাননি।

অগত্যা বেশ ক'বছর তাকে একাকী ও বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করতে হয়। এ সময় পোস্টকার্ড ও বিজ্ঞাপনের ছবি এঁকে সামান্য কিছু উপার্জন করতেন। এই অর্থ দিয়ে ভিয়েনার এক হোস্টেল থেকে আরেক হোস্টেলে বাস করতে থাকেন। এ সময় তার মধ্যে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা গিয়েছিল যেগুলো তার পরবর্তী জীবন সম্বন্ধে আমাদের কিছু ধারণা পেতে সাহায্য করে। যেমন: একাকীত্ব, গোপনীয়তা, প্রাত্যহিক অস্তিত্বের বোহেমীয় ভাব (ছন্নছাড়া জীবন-যাপন), কসমোপলিটানিজ্‌মের প্রতি ঘৃণা এবং ভিয়েনার বহুজাতিক অবস্থার প্রতি বিতৃষ্ণা।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদান

---------------------

১৯১৩ সালে হিটলার মিউনিখ গমন করেন। ১৯১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রীয় সামরিক বাহিনীতে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেন। স্বাস্থ্যগত কারণে সৈনিক হিসেবে সামরিক বাহিনীর জন্য তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জার্মান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। হিটলার ছিলেন ১৬তম বাভারিয়ান রিজার্ভ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টে। যুদ্ধের পুরোটা সময় জার্মান সেনাবাহিনীকে সেবা দিয়ে গেছেন। ১৯১৬ সালের অক্টোবরে আহত হওয়ার আগ পর্যন্ত যুদ্ধের পুরোটা সময় জার্মান বাহিনীর সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিলেন তবে মাঝখানে তিনি বেশ কিছুদিন বিশ্রামে ছিলেন। এছাড়া যুদ্ধের বাকিটা সময় তিনি যুদ্ধের ময়দানে সক্রিয়ভাবে উপস্থিত ছিলেন। অধিকাংশ সময়ই তিনি সম্মুখ সারিতে থেকে হেডকোয়ার্টার্স রানার হিসেবে কাজ করেছেন। যুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯১৪ সালের ডিসেম্বরে ‘সেকেন্ড ক্লাস আয়রন ক্রস’ লাভ করেন এবং ১৯১৮ সালের আগস্টে তাকে ‘ফার্স্ট ক্লাস আয়রন ক্রস’ প্রদান করা হয় হয়। একজন ‘করপোরাল’ হিসেবে এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। হিটলার খুব উৎসাহের সাথে যুদ্ধ করেছেন, তার কাছে এটা ছিল বেসামরিক জীবনের উদ্দেশ্যহীনতা ও হতাশা থেকে মুক্তির সবচেয়ে বড় মাধ্যম। মুলতঃ যুদ্ধক্ষেত্রে সক্রিয় অংশ গ্রহণের মাধ্যেমে তিনি কমরেডশিপ ও নিয়মানুবর্তীতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করেন। সেই সাথে যুদ্ধ ক্ষেত্রের নায়কোচিত গুণের উপরও তিনি তখন থেকেই আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।

রাজনীতিতে প্রবেশ

-----------------

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি হেরে যায়। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে হিটলার রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯১৯ সালের মে-জুনের দিকে জার্মানির বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে মিউনিখের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুরোপুরি সক্রিয় হন তিনি । সেপ্টেম্বরে মিউনিখের ক্ষুদ্র দল "জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি"-তে সামরিক রাজনৈতিক এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯২০ সালে তাকে এই দলের প্রচারণার দায়িত্ব দেয়া হয়। দলের ভেতরে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করার জন্য তিনি সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন। এই বছরই দলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় National-sozialistische Deutsche Arbeiterpartei (নাৎসি পার্টি)। জার্মানির তৎকালীন পরিস্থিতিতে এ ধরনের একটি রাজনৈতিক দলের উত্তরণের বেশ ভাল সম্ভাবনা ছিল। কারণ যুদ্ধের বিভীষিকা এবং ভার্সাই শান্তি চুক্তিতে জার্মানির বিশাল পরাজয়ের কারণে জনমনে অসন্তোষ দানা বেধে উঠেছিল। এর সাথে ছিল অর্থনৈতিক অস্থিরতা, বাভারিয়াতে এই অবস্থা ছিল আরও বিরূপ। সেখানে বার্লিনের প্রজাতন্ত্রী সরকারের তীব্র বিরোধিতা প্রকাশিত হতে শুরু করে। হিটলারও বাভারিয়ার মিউনিখ শহরেই তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯২০ সালে একটি ডানপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বার্লিনে সামরিক অভ্যুত্থান করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই অভ্যুত্থান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।



অভ্যুত্থান করতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁর পাঁচ বছর জেল হয় কিন্তু তাকে ৯ মাস জেল খাটতে হয়েছিল। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে হিটলার তার মোহনীয় বক্তৃতার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ, ইহুদি বিদ্বেষ ও সমাজতন্ত্র বিরোধিতা চারিদিকে ছড়াতে থাকেন। এভাবেই এক সময় হিটলার জার্মানির অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতায় পরিণত হন।১৯৩৩ সালের ৩০ সে জানুয়ারী হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলর হন| শুরু হয় বিরোধী দলের প্রতি নাৎসিদের ব্যাপক অত্যাচার। নাৎসিরা তাদের বিরোধী পক্ষের অনেককেই হত্যা করেছিল তখন, তবে রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন তিনি , সামরিক বাহিনীকে নতুন নতুন সব অস্ত্রশস্ত্রে ব্যাপকভাবে সজ্জিত করা হয়েছিলো এবং সর্বোপরি একটি সমগ্রতাবাদী ও ফ্যাসিবাদী একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়। হিটলার এমন একটি বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করেন যাতে সকল "লেবেনস্রাউম" (জীবন্ত অঞ্চল) দখল করে নেয়ার কথা বলা হয়।ভার্সাই চুক্তিকে (যে চুক্তির মাধ্যমে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসান হয়) অমান্য করে এবং কোনো রকম গোলাগুলি ছাড়াই ১৯৩৮ সালে অস্ট্রিয়াকে জার্মানির অন্তর্ভুক্ত করেন তিনি| ১৯৩৯ সালে জার্মানরা পোল্যান্ড অধিকার করে এবং ফলশ্রুতিতে ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ।

যুদ্ধে অক্ষ শক্তি তথা জার্মান নেতৃত্বাধীন শক্তি ইউরোপ ,আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু অবশেষে মিত্র শক্তি বিজয় লাভ করে। ১৯৪৫ সালের মধ্যে জার্মানি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। হিটলারের রাজ্য জয় ও বর্ণবাদী আগ্রাসনের কারণে লক্ষ লক্ষ নীরিহ মানুষকে অকালে প্রাণ হারাতে হয়। ৬০ লক্ষ ইহুদিকে পরিকল্পনামাফিক হত্যা করে হিটলারের নাৎসি বাহিনী। ইহুদি নিধনের এই ঘটনা ইতিহাসে হলোকস্ট নামে পরিচিত।

১৯৪৫ সালে যুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে হিটলার বার্লিনেই ছিলেন। রাশিয়ার রেড আর্মি যখন বার্লিন প্রায় দখল করে নিচ্ছিল ঠিক সে রকম একটা সময়ে ২৯ এপ্রিল হিটলার তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তিনি ফিউরারবাংকারে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন।শেষ হয় মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর ও মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষ হিটলার অধ্যায়ের।

নরেন্দ্র মোদি

------------

জন্ম ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৫০

ভারতের ১৫তম প্রধাণমন্ত্রী(২৬ মে -২০১৪- )



পুরো নাম নরেন্দ্র ভাই দামোদরদাস মোদি। উত্তর গুজরাটের মেহসানা জেলার প্রান্তিক শহর ভদনগরের সন্তান। জন্ম ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৫০। পিতার নাম দামোদরদাস মুলকচন্দ মোদি ও মা হীরাবেন। চার সন্তান সোমা, প্রহ্লাদ, পঙ্কজ আর নরেন্দ্রকে নিয়ে মোদি দম্পতির নিম্নবিত্ত, ভূমিহীন পরিবার। চার ছেলেই স্কুলের পড়ুয়া। ভদনগর স্টেশনে একটি ছোট্ট চায়ের দোকানের আয়ে তাদের সংসার চলতো। উপার্জনের দ্বিতীয় কোনো সংস্থান ছিল না । স্কুল থেকে এসে, কখনো বা কাকভোরে বড় ভাই প্রহ্লাদের সঙ্গে মোদিও দূর-দূরান্তের রেলযাত্রীদের নিকট চায়ের কেটলি আর ভাঁড় হাতে ছুটতেন।

কৈশোর ও যৌবনকাল

--------------------



১৯৬২ তার বয়স কেবল যখন ১২ তখনি শুরু হয় ভারত-চীন যুদ্ধ।দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে দেশপ্রেমের জোর হাওয়া,এই হাওয়া এসে লাগে কিশোর মোদির হৃদয়ের মানষপটেও,জাতীয়তাবাদী চেতণায় উত্তেজিত উদ্বুদ্ধ বালক মোদির আবেগও ছুটতে থাকে সীমান্তের দিকে ছুটতে থাকা দেশপ্রেমিক সৈন্যদের সঙ্গে। এরপর আসে ১৯৬৫ সাল শুরু হয় পাক-ভারত যুদ্ধ।নরেন্দ্র মোদির বয়স তখন মাত্র ১৫, গুজরাটের আকাশ বাতাস বিদীর্ণ করে যুদ্ধবিমান ছুটে চলেছে শত্রুর দুর্গে হানা দিতে। ভদনগর স্টেশন দিয়ে দলে দলে সৈন্যরা সীমান্তের দিকে ছুটে যাচ্ছে। কখনো বা সামান্য সময়ের জন্যে স্টেশনে ট্রেন থামে, ছুটে যায় কিশোর মোদি , আহত সেনাদের সেবায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। আত্মনিষ্ঠ এই বালকের দুঃসাহস, আত্মত্যাগের দৃঢ়তা হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন আরএসএস-এর চোখও তা এড়িয়ে গেলনা। তার সাংগঠনিক ক্ষমতায় তারা খুঁজে পেলেন সাহসী গুজরাটী জাতি চিন্তার পরিচয় ও সাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। হাত বাড়িয়ে দিলেন তার দিকে আরএসএস এবং তাদের কঠিন সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হলো তাকে ।



অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের শক্তি তখন ধীরে-ধীরে বাড়ছে, বিশেষ করে ভারত-চীন আর ভারত-পাক যুদ্ধ তাদের সামাজিক ভিতকে শক্তিশালী করতে তাদের ইতিমধ্যে অনেক সাহায্য করেছে।রাজ্যের কংগ্রেস সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তির বিস্তার রুখতে চরমভাবে ব্যর্থ । বরং জাতপাতের ভেদাভেদ আর অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে সাম্প্রদায়িক উস্কানিকে পরোক্ষভাবে ইন্ধন জুগিয়েছে তারা। তাছাড়া তখন প্রায়ই আহমেদাবাদ ও অন্যান্য শহরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে , কখনো বা তা আয়ত্তের বাইরেও চলে যায়। পরিস্থিতির এই সুযোগটি লুফে নেয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। আড়ালে এবং প্রকাশ্যে তাদের শক্তির বিস্তার ঘটাতে থাকে। ঠিক এরকম অস্থির পরিস্থিতিতেই কলেজ ছাত্র নরেন্দ্র বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিবিপি) প্রথম সারির ছাত্রনেতা হয়ে উঠলেন।মুলতঃ এখান থেকেই মোদির আনুষ্ঠানিক রাজনীতির হাতেখড়ি।এরপরে পর্যায় ক্রমে তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে পড়াশুনা আর প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যেমে সেবক সংঘের যুবনেতা হিসেবে আবির্ভুত হন।

রাজনৈতিক ব্যস্ততায় তখন তাঁর সাথে বাড়ির যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন, হূদয়ে শুধুই আত্মত্যাগের উত্তাপ-মস্তিষ্কে কর্মযজ্ঞের দীক্ষায় তিনি পরিপুর্নভাবে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন এবং সর্বার্থে সেবক সংঘের সার্বক্ষণিক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন । তারই ধারাবাহিকতায় সংঘের প্রথমে প্রচারক, পরে দক্ষ সংগঠক-জীবনযাপনে প্রায় সন্ন্যাসী হয়ে রাজ্যের নানা প্রান্তে নতুন সদস্য সংগ্রহে ছুটে বেড়ান।

মুলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ

--------------------------



১৯৮০ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসলে জনতা দল ছেড়ে বেরিয়ে যখন সেবক সংঘের নেতারা ভারতীয় জনতা পার্টি গঠন করলেন, ঠিক তখনই রাজনীতির মূলস্রোতে নরেন্দ্র মোদির প্রবেশ করেন এবং ১৯৮৭ সালে বিজেপির গুজরাট শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয় । যা তাকে রাজ্যের সব প্রান্তের দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে সহায়তা করে। তার প্রতি তখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থা বাড়তে থাকে, বিশেষ করে লালকৃষ্ণ আদভানির ভাবশিষ্যে পরিনত হন তিনি । অটলবিহারী বাজপেয়ির দৃষ্টি অর্জনেও সক্ষম হন। বুদ্ধিদীপ্ত রাজনৈতিক কৌশল রচনার দক্ষতা ও রামমন্দির আন্দোলনের প্রবক্তা হিসেবে আদভানীর অন্যতম সহযোগীতে পরিণত হন তখন মোদি।

১৯৮৯ সালের নির্বাচনে গুজরাটে দলের অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জনে তার ব্যাপক ভূমিকা সবার নজর কাড়তে সক্ষম হন। এখানে বিশেষভাবে বলা দরকার, স্বাধীন ভারতের রাজনীতিতে ধর্মীয় ভাবাবেগের ব্যবহার আর নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক উত্থানের বয়স প্রায় সমান। '৮০-র দশকে অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মান জন্য ‘রথযাত্রা’, দশকের মাঝামাঝি সময়ে শাহাবানু মামলাকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক আলোড়ন, বন্ধ বাবরি মসজিদের দরজা উন্মোচন, উত্তরপ্রদেশে ভোটারের ধর্মীয় মেরুকরণ, বাবরি মসজিদ ধ্বংস-এরকম প্রতিটি ঘটনা ও ঘটনার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে গুজরাটি জাতিসত্তা আর ধর্মীয় সত্তার মিশ্রণ নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক উত্থান একাকার হয়ে আছে। তার গুজরাটি বিরাদরি আর শিবসেনার বাল ঠাকরের মারাঠি জাতিসত্তার উত্স প্রশ্নহীন ভাবেই এক এবং অভিন্ন, এক্ষেত্রে দুজনেরই আদর্শ শিবাজি। আর্য সভ্যতা নিয়ে গৌরবরোধ উভয়েরই অবলম্বন। উনিশ শতকের বাংলার ধর্মীয় পুনরুত্থানের চিন্তা যেভাবে বাঙালির শহুরে নেতৃত্বকে বিভ্রান্ত করে জাতিসত্তার স্বাধীন বিকাশের প্রবল বাধা হয়ে ওঠে, ঠিক তেমনি গুজরাটি ও মারাঠি জাতিচিন্তাকে তার নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে দূরে সরিয়ে রাখে ওই সনাতনপ্রথা। নরেন্দ্র মোদি অথবা বাল ঠাকরের চিন্তায় ভারতীয় চেতনা যতোটা দুর্বল, ততোটাই প্রখর ধর্মীয় ভাবপ্রবাহ লক্ষ্যণীয়। এখানে মিশ্র সংস্কৃতির জায়গা নেই। জায়গা নেই বহুত্ববাদী ঐতিহ্যের। ধর্ম নিয়ে গৌরব আর এর সঙ্গে গুজরাটি জাতিসত্তার একমুখী স্রোত মোদির ভাবাবেগকে ব্যবহারিক রাজনীতিকে সব সময় খোরাক জুগিয়েছে। তার ধারাবাহিক, পতনহীন, উত্তরণের এটাই সবচেয়ে জোরদার আশ্রয়। সম্ভবত এজন্যই তিনি অপকটে বলতে পারেন-আমি একজন জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক। আজন্ম হিন্দু, আমি হিন্দু জাতীয়বাদী, তার মানে, জাতীয়তাবাদের চেয়ে ‘হিন্দুত্ব’কেই অগ্রাধিকার দিতে চান তিনি? উন্নয়ন, প্রগতিশীলতা, কর্মনেশার সঙ্গে এই চিন্তার বিরোধ নেই-এই অকপট স্বীকারোক্তির কারণ কী? এর অর্থ কি এই দাঁড়ায়। যিনি জন্মসূত্রে হিন্দু নন, হিন্দু জাতীয়তাবাদী নন, তিনি তার উন্নয়নের, উন্নয়নমুখী মানচিত্রের বাইরে থেকে যাবেন? ভারতীয় মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ ও অন্যান্য সম্প্রদায়কে নিয়ে তার রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান জানার সুযোগ কিন্তু আজো কারো হয়নি।

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গুজরাটের ভাগ্যবিধাতা নরেন্দ্র মোদি ও ২০০২ সালের ভয়াবহ দাঙ্গাঃ

------------------------------------------------------------------------------

২০০১ সালে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাই প্যাটেলকে সরিয়ে দিল্লি অফিসের এক নাম না জানা পদাধিকারী নরেন্দ্র মোদিকে দায়িত্ব দিয়েছিল বিজেপি। এই নিয়োগের পিছনে অবশ্য সক্রিয় ভুমিকা ছিল তার রাজনৈতিক গুরু লালকৃষ্ণ আদভানির ।মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হন ২০০১ সালের সাত অক্টোবর৷ চার মাস পরেই ‘গোধরা’ স্টেশনে ৫৯ জন তীর্থযাত্রী ট্রেনে আগুন লেগে পুড়ে মারা যান৷ কোনো সুনির্দষ্ট তথ্য–প্রমাণ ছাড়াই মোদি বলে বসেন, এটা পাকিস্তানের মুসলমানদের ষড়যন্ত্র৷ তিনি রাজ্যব্যাপী হরতাল ডেকে বসেন৷ আর আগুনে পোড়া তীর্থযাত্রীদের মরদেহ নিয়ে মিছিল করেন৷ উত্তেজক বক্তৃতাও দেন তিনি৷যার পরের ইতিহাস তো আমাদের সকলের জানা

শুরু হয় ভয়াবহ মুসলিম নিধণ কর্মযজ্ঞ ।সে সময় দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার মুসলিম সাম্প্রদায়িক হামলায় মৃত্যুবরণ করেন৷ আরও প্রায় দুই লাখ মুসলিম ঘরছাড়া হয়৷ অনেক মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়, পুরুষদের কেটে টুকরো টুকরো করা হয় এবং কেরোসিন দিয়ে বা জ্বলন্ত টায়ারে পুড়িয়ে মারা হয়৷ অন্তঃসত্ত্বা নারীদের পেট চিরে তাঁদের চোখের সামনে ভ্রূণ হত্যা করা হয়৷ মোদি নিজের ব্যবহারিক প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে গর্ব করলেও তাঁর বিরুদ্ধে ২০০২ সালের দাঙ্গা সংঘটিত হতে দেওয়ার ব্যাপকভাবে অভিযোগ আছে৷ এমনকি দাঙ্গাবাজদের গ্রেপ্তার না করার জন্যও নাকি তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যদিও এ অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন৷ এছাড়া ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত গুজরাটে কয়েক ডজন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে৷ এর মধ্যে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত অন্তত ২০ জনের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ ২০০৪ সালে পুলিশ চারজনকে গুলি করে হত্যা করে এই অভিযোগে যে, তাঁরা মোদিকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন৷ এর মধ্যে ১৯ বছরের তরুণী ইশরাত জাহানও ছিলেন৷ সাক্ষ্য-প্রমাণের আগেই মোদি প্রকাশ্যে ওই তরুণীকে খুনি বলেছিলেন৷ কিন্তু পরে সিবিআই তদন্তে ধরা পড়ে যে ,পুরো ঘটনাই ছিল সাজানো৷ যদিও মোদি এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন৷

এবারের নির্বাচনী প্রচারনায় হিন্দুত্ববাদী মোদিঃ

----------------------------------------

এবারের নির্বাচনী প্রচারেও মুসলিম ইস্যুতে পরিস্কার কোনো ধারণা প্রদান করেননি, বরং পরোক্ষ ভাবে তিনি একটি সংকেত সবাইকে দেয়ার চেষ্টা করেছেন তা হচ্ছে,উত্তর প্রদেশে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে কোনো মুসলিম নেতাকে মনোনয়ন প্রদান না করে। এর মাধ্যেমে এক অর্থে একটি মেসেজ সবাইকে দিতে চেয়েছেন তিনি, তা হচ্ছে হিন্দুত্ববাদী আদর্শ হতে এক চুল পরিমাণ জায়গাও নড়বেন না। কাকতলীয়ভাবে হলেও সত্যি ভারতে ১৭৭ মিলিয়ন মুসলিম জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় জনতা পার্টির ২৮২ জন নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যের মধ্যে একজনও মুসলিম সদস্য নেই।

উপরে আমরা হিটলার ও নরেন্দ্র মোদি দুজনের ব্যক্তিগত ,সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবন নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করে তাদের দুজনের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে অত্যাধিক মিল খুঁজে পেয়েছি। তাদের মধ্যে যে বিষয়গুলোর মধ্যে তীব্র মিল খুজে পেয়েছি তাঁর একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করছিঃ

১।হিটলার ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে সবচেয়ে বড় মিল হচ্ছে তারা দুজন খুব সাধারণ পরিবার থেকে এসেছেন,আরো পরিস্কার করে বললে তারা নিম্নবিত্ত থেকে রাজনীতর সিড়ি বেয়ে ক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে এসেছেন।

২।কিশোর বয়সে হিটলার ও নরেন্দ্র মোদি আর দশটা শিশুর মতো শুধুই লেখা পড়ায় খুব বেশি মনোযোগ দিতে পারেন নি। হিটলারের পিতার ইচ্ছা ছিল সে বড় হয়ে তার মতো সরকারী কর্মচারী হবে,কিন্তু হিটলারের ইচ্ছা সে বড় হয়ে একজন চিত্র শিল্পী হবে, এর মধ্যে মাত্র তেরো বছর বয়সে পিতার মৃত্যু তাকে গভীর সংকটের মধ্যে ফেলে দেয়। তার বছর দুই বাদে মাকেও হারিয়ে সম্পুর্ণ একা হয়ে পড়েন হিটলার, যা পরবর্তীতে গভীর সংকটের মধ্যে কিভাবে সমস্যাকে মোকাবেলা করতে হয় তা তিনি তার কৈশোরের এই বাস্তব সমস্যা থেকেই শিক্ষা লাভ করেন।মুলতঃ সেই কিশোর বয়স থেকেই তিনি ছিলেন প্রচন্ড রকমের জাতীয়তাবাদী ।

পক্ষান্তরে, ভদনগর স্টেশনে ছোট্ট চায়ের দোকানের আয়ে মোদির পিতার সংসার চলতো। উপার্জনের ছিলোনা কোনো দ্বিতীয় পথ, তাই স্কুল থেকে ফিরে মোদিকেও, কখনো কাকভোরে দূর-দূরান্তের রেলযাত্রীদের কাছে চায়ের কেটলি আর ভাঁড় হাতে ছুটতে হতো।তাই খুব ছোট থেকেই শিক্ষার পাশাপাশি পরিবারের অন্য সবার সাথে জীবন যুদ্ধে অংশ নিতে অনেকটা বাধ্য হন মোদি। তবে কিশোর অবস্থায় তার কঠিন জীবন সংগ্রাম পরবর্তী রাজনৈতিক জীবনে ২০০২ সালের মতো চরম রাজনৈতিক সংকটময় সময় মোকাবেলা করতে তাকে সাহায্য করে বলে অনেকেই মনে করেন।

৩।তাদের মধ্যে আর একটি জায়গায় খুব বেশি মিল। দুজনেই ছিলেন অসম্ভব রকমের জাতীয়তাবাদী চেতনার অধিকারী।প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হিটলার জার্মান বাহিনীতে যোগ দেন।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিন পর্যন্ত হিটলার জীবনের ঝুকি নিয়ে সৈন্যদের সেবা করে গেছেন।ঠিক তেমনি মোদির বয়স যখন ১২ তখন ১৯৬২ সাল শুরু হয় ভারত-চীন যুদ্ধ । দেশ জুড়ে দেশপ্রেমের জোর হাওয়া বয়ে চলেছে চারিদিকে, এসময় কিশোর মোদিও অনেকটা না বুঝেই জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পড়েন।এরপর এলো ১৯৬৫,শুরু হলো পাক-ভারত যুদ্ধ,নরেন্দ্র'র বয়স তখন ১৫। গুজরাটের আকাশ ফাটিয়ে যুদ্ধবিমান উড়ে চলেছে পাক সীমান্তে । ভদনগর স্টেশন দিয়ে দলে দলে সেনা কনভয় সীমান্তের দিকে এগোনোর সময় কখনোবা স্টেশনে ট্রেন থেমে গেলে ছুটে যান মোদি , আহত সেনা সদস্যেদের সেবায় স্বেচ্ছায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।

৪। তাদের দুজনের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় দলের প্রচারক ও দলের ষ্ট্রাটেজি ঠিক করার মধ্যে দিয়ে , যদিও পরবর্তীকালে ইহাই তাদের সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়ায় ।

৫।হিটলার ও মোদির মধ্যে আর একটি জায়গায় খুব বেশি মিল রয়েছে । তা হচ্ছে ব্যক্তি জীবনে তারা দুজনেই সৎ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। উগ্র রাজনৈতিক ধর্মান্ধ নেতা হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ থাকলেও তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও আজ পর্যন্ত তাদের ব্যক্তিগত সততা নিয়ে কোনো অভিযোগ তোলেনি।

৬।তারা দুজনেই চরম উগ্র ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী।খুব ছোট সময় থেকেই হিটলার ছিলেন তীব্র ইহুদী বিদ্বেষী, যার চরম বহিঃপ্রকাশ তিনি ঘটান ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রায় ৬০ লাখ ইহুদী নিধণের মাধ্যেমে।যা ইতিহাসে আজো হলোকস্ট নামে পরিচিত।

আর ২০০২ সালে মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি যে মুসলিম নিধনে প্রত্যক্ষ জড়িত ছিল তার বহু দলিল রয়েছে। সেই সময় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা সঞ্জিব ভাট ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের কাছে তার হলফনামায় বলেছিল, ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরা কান্ডের পর নরেন্দ্র মোদি পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন, হিন্দুরা মুসলমানদের প্রতি যেন তাদের ক্ষোভ মেটাতে পারে, পুলিশকে সে ব্যবস্থা করে দিতে হবে। ভাট এক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদির নির্দেশ সরাসরি তুলে ধরেন যাতে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী মোদি বলেছিলো, “মুসলমানরা যাতে পুনরায় এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেজন্য তাদেরকে উচিত শিক্ষা দেয়ার এটি মোক্ষম সময়।”এ বক্তব্যের পর ২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০০২ তারিখে পুলিশ কন্ট্রোল রুমের মাত্র ৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১৫০ জন মুসলমানকে আগুনে জ্যন্ত পুড়িয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে উগ্র হিন্দুরা। আর দাঙ্গায় মূল প্রাণহানী প্রথম কয়েকদিনে হলেও, প্রায় তিন মাস ধরে চলে, যার ফলে লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে হত্যা, ধর্ষণ ও বাস্তুচ্যুত করা হয়।গুজরাটের গোধরা দাঙ্গার প্রথম দিনেই (২৮ ফেব্রুয়ারী ২০০২) যখন শহরের বিভিন্ন স্থান আগুনে পুড়ছিল, মারা যাচ্ছিল শত শত মুসলিম, তখন রাজ্যের CMO পি কে মিশ্র দাবী করেন “শহর একেবারে স্বাভাবিক!” তাকে যখন বলা হয় প্রাক্তন কংগ্রেস এমপি এহসান জাফরি এই দাঙ্গায় নিহত হয়েছেন তখনও তার উত্তর ছিল যে, এরকম কিছুই ঘটেনি।এখানে আর একটি সেদিন সংঘটিত একটি ঘটনা উল্লেখ করতে চাই যাতে পরিস্কার হয় মোদি পুরোপুরি এর সাথে জড়িত ছিলেন,-’’সেদিন জঙ্গী হিন্দুদের একটি বিশাল দল যখন নানা রকম অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গুজরাটের অভিজাত মুসলিম আবাসিক এলাকা গুলবার্গের সামনে জড়ো হয় তখন কংগ্রেসের সাবেক সাংসদ এহসান জাফরি পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা দেখে আতঙ্কিত হয়ে সাহায্যের জন্য সরাসরি মোদির কাছেও ফোন করেন । তাঁর সঙ্গে কথা বলে জাফরি নিরাশ হয়ে পড়েন৷ জাফরির বিধবা স্ত্রী জাকিয়ার ভাষ্য অনুসারে, ‘’মোদি তাঁর স্বামীকে বিদ্রূপ করে বলেন, জাফরি এখনো বেঁচে আছেন শুনে তিনি বিস্মিত৷’’এর কিছুক্ষণ পরেই জাফরির স্ত্রী ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আতঙ্ক নিয়ে দেখেন, দাঙ্গাবাজরা তাঁর স্বামীকে উলঙ্গ করে টেনে হিচরে রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছে৷ তাঁর চোখের সামনেই তারা জাফরিকে মাটিতে শুইয়ে দিয়ে একে একে তাঁর আঙুল, হাত, পা, মাথা কেটে টুকরো টুকরো করছে৷ তারপর জাফরির মৃতদেহকে তারা একটি উন্মুক্ত চিতায় স্থাপন করে৷’’

পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেও কিছু করেনি৷ এমনকি জাফরিকে পুলিশ বলে, ‘আপনাকে বাঁচানোর ব্যাপারে আমাদের ওপর কোনো নির্দেশ নেই৷’ পরবর্তীকালে একটি ম্যাগাজিনের তদন্তে কয়েকজন দাঙ্গাবাজকে ক্যামেরার সমানে বলতে শোনা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী এই আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছেন৷ মোদি আমাদের তিন দিন সময় দিয়ে বলেছেন, এর মধ্যে যা পার করো’, দাঙ্গাবাজদের একজন গর্বভরে বলেন৷ এরপরও কি আমরা বিশ্বাস ররবো মোদি এ দাঙ্গার সাথে জড়িত ছিলেন না, তিনি নির্দোষ।

মোদী যদিও সবসময় বলে আসছিল যে গুজরাটের হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গাটা ছিল তাৎক্ষণিক, কিন্তু দেখা গেছে এতে তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এর মহিলা ও শিশু উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী কোদনানীকে আদালত ২৮ বছর জেল দেয় দাঙ্গায় উস্কানি দেয়ার জন্য, যাকে মোদী পুরূষ্কার স্বরূপ ক্যাবিনেট মিনিস্টার হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ।সুতরাং নরেন্দ্র মোদি কোনো ক্রমেই গুজরাটে মুসলিম নিধণের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না।উল্লেখ্য , নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে গুজরাটে বিজেপি শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধেই নয়, খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে গীর্জা জ্বালিয়ে দেয়া সহ নানাভাবে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আর এসব কারণেই নরেন্দ্র মোদিকে একবিংশ শতাব্দীর হিটলারের প্রেতাত্মা হিসেবে অভিহিত করা হয়। নরেন্দ্র মোদির চরম সাম্প্রদায়িক উগ্রতার জন্যে ২০০৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দিতে অস্বিকার করে। যদিও প্রধাণমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এখন তার উপর থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে।

৭।হিটলার ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আর একটি বিষয়ে মিল পরিলক্ষিত হয়েছে তা হচ্ছে, দেশ , জাতি ও রাজনীতিতে ব্যাপক সময় দেয়ার কারণে তারা দুজনেই অনেকটাই সন্ন্যাস জীবন যাপন করেছেন।যদিও মোদির জীবনীগ্রন্থ রচয়িতা নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের মতে, খুব কম বয়সে বিয়ে করেন মোদি। তবে বিয়ে করার বিষয়টি তিনি কখনো প্রকাশ করেননি , ধারণা করা হয় এর পেছনে একটি বড় কারণ ছিল হিন্দু উগ্রবাদী সংগঠন স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) ‘প্রচারক’ পদ প্রাপ্তির তীব্র বাসনা । আর এ পদ পেতে গেলে অন্যতম শর্ত হচ্ছে তাকে চিরকুমার থাকতে হবে সন্ন্যাস জীবন যাপন করতে হবে। গোপনীয়তা বজায় না রাখলে হয়তো ওই পদে কোনোদিন আসীন হতে পারতেন না মোদি।

৮।সর্বশেষ যে বিষয়টি তাদের মধ্যে সম্পুর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়ে মিল খুঁজে পাওয়া গেছে তা হচ্ছে,রাশিয়ার রেড আর্মি যখন বার্লিন প্রায় দখল করে নিচ্ছিল সে রকম একটা সময়ে তার দীর্ঘদিনের প্রেমিকা ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করেন হিটলার ।এর পিছনে তাঁর যে দর্শন তাকে এ সিদ্ধান্ত নিতে উদ্ধুদ্ধ করেছিলো বলে অনেকেই মনে করেন তা হলো মৃত্যুর পরে যাতে কেউ বলতে না পারে প্রেমিকা ইভা ব্রাউন শুধুমাত্র তার একজন রক্ষিতা ছিলেন। যদিও বিয়ের ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই তিনি ফিউরারবাংকারে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন।

পক্ষান্তরে নরেন্দ্র মোদি ইতিপুর্বে তার স্ত্রী ‘যশোদাবেন’কে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান না করলেও জীবনের সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধের মুখোমুখি হয়ে তিনি তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে স্ত্রীকে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। এর অবশ্য দুটি ব্যাখ্যা দাড় করানো সম্ভব।

প্রথমতঃ তিনি হিটলারের মতো জীবনের সবচেয়ে কঠিন নির্বাচনী যুদ্ধে অংশ নেয়ার সময় নৈতিকতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করতে গিয়ে তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নিতে উদ্ধুদ্ধ করেছে। কারণ মোদি ভাল করেই জানতেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক যুদ্ধে যদি তিনি বিজয়ী হতে না পারেন, তবে চিরতরে ভারতীয় রাজনীতির বৃহত্তর পরিসরে তার রাজনৈতিক মৃত্যু অনিবার্য ।

দ্বিতীয়তঃ তিনি রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হিসেবেও তিনি এর আগের কোনো নির্বাচনী হলফনামায় স্ত্রী হিসেবে ‘যশোদাবেনে’র নাম উল্লেখ না করলেও আধুনিক নির্বাচনী যুদ্ধের প্রচারণা কৌশলের অংশ হিসেবেও এটা করে থাকতে পারেন। কারণ এতে একদিকে প্রচার মাধ্যম ‘মোদি’র স্ত্রী ইস্যুতে তাঁর দিকে বাড়তি মনোনিবেশ করবেন এবং নারী ভোটারদেরকে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট করতে এটা এক ধরনের বাড়তি আবেগ সৃষ্টিতে সাহায্য করবে।

মোদি কি তাহলে সত্যিই যোগ্য হিটলারের উত্তরসুরী হতে যাচ্ছেনঃ

-----------------------------------------------------------

এতক্ষন আমরা হিটলার ও নরেন্দ্র মোদি’র তুলনামুলক রাজনৈতিক বিশ্বাস, উগ্র ধর্মান্ধতা ও ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্টয় সমুহ নিয়ে আলোচনা করেছি। দীর্ঘ ৭০ বছ র পরে কেন আমরা বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ংকর মানব হিটলারের সাথে বর্তমান বিশ্বের বৃহত্তর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মসনদে যিনি অধীষ্ঠিত হতে যাচ্ছেন সেই নরেন্দ্র মোদি’র সাথে তুলনা করছি।অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে মোদিকে নিয়ে আতংকের খুব কি বেশি কোনো কারণ আছে ? ভারতের শাষনব্যবস্থায় মোদির একচ্ছত্র উগ্রতা প্রদর্শনের সুযোগ কোথায়? তার উত্তরে আমাদের বলতে হচ্ছে অবশ্যই ভয়ের সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না , একজন হিটলারের ব্যাক্তিগত উচ্চাভিলাষ , ধর্মীয় উন্মাদনা ও জাত্যাভিমানের কাছে সারা বিশ্ব জিম্মি হয়ে পড়েছিলো, যার অবধারিত পরিণাম ছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যার ফলে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বিপর্যের সম্মুক্ষীণ হয়ে ছিলো পুরো পৃথিবী , যার অভিশাপ এখন অবধি জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসিকার নাগরিকরা বয়ে বেড়াচ্ছে।ভুল নেতৃত্ব শুধু একটি দেশ,জাতি নয় এর প্রভাবে দীর্ঘ ক্ষতির সম্মুক্ষীণ আশপাশের দেশসহ একপর্যায়ে সারা বিশ্বও হতে পারে, নিকট অতীতে এর উদাহরণ আমাদের সামনেই আছে। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ (জুনিয়র) বুশ , সাদ্দাম হোসেন, গাদ্দাফির মতো যুদ্ধংদেহী নেতৃত্বের কুপ্রভাবে বিশ্বকে কতটা মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে , শুধু তাই না বর্তমানে যে অর্থনৈতিক রিসেশনের মধ্যে পড়ে, ইউরোপের একের পর এক রাষ্ট্র দেউলিয়ায় পর্যবসিত হয়েছে তার মুল কারণ ছিলো কিন্তু এই ভুল নেতৃত্বের প্রভাবে বিভিন্ন সময়ে অযাচিত যুদ্ধ।

ঠিক এ কারণেই নরেন্দ্র মোদি’র রাজনৈতিক উত্থানকে আমাদেরকে হিটলারের রাজনৈতিক উত্থাণের ইতিহাসকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।এখানে আর একটি বিষয়কে সামাজিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে , ভারত এই মুহুর্তে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তাই এই মুহুর্তে ভারতের উদীয়মাণ প্রজন্মের মধ্যে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার জন্যে আগের চেয়ে অনেক বেশি আঞ্চলিক ও বিশ্ব নেতৃত্ব দেয়ার মানসিকতা গড়ে ঊঠেছে।যা আমরা দেখতে পাই ‘উই আর আমেরিকান’ এই অহংকার সম্বলিত আমেরিকান নাগরিকদের মধ্যে। যার প্রভাব বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আমেরিকার খবরদারি অব্যাহত রাখার মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয়।সাম্প্রতিক বছর গুলিতে ভারতের নাগরিকদের মধ্যেও এই প্রবণতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপ্রাসংগিক ভাবে আমরা রাজনীতির বাইরের ‘ভারতের ক্রিকেট কুটনীতি’র বিষয়টিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে চাই, শুধুমাত্র ভারতের নব্য সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার বলি হয়ে বিশ্ব ক্রিকেট আজ বিসিসিআইয়ের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ভারতের ব্যাবসায়িক সাম্রাজ্যের এই নব উত্থানের ঢেউ এসে এখন রাজনীতির ময়দানেও এসে হানা দিয়েছে। যার প্রভাব এবারের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির প্রচারণায় পরিলক্ষিত হয়েছে।বিভিন্ন পরিসংখ্যানে জানা গেছে ‘মোদি’কে রাজনৈতিক ব্রান্ড হিসেবে সাধারণ জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্যে কর্পোরেট হাউসগুলো ১০০০০কোটি রুপি ব্যয় করেছে। আর আমাদের ভয়ের মুল কারণটাও এখানেই নিহিত। এই ধরনের বৃহত্তম কর্পোরেট গ্রুপগুলো যখন নির্বাচনী রাজনীতির খেলায় নিজেদের জড়িয়ে ফেলে আর কেন্দ্রবিন্দুতে যদি থাকে ‘নরেন্দ্র মোদি’র মতো চরম ধর্মীয় ভাবধারায় বিশ্বাসী ও যুদ্ধবাজ নেতার উপস্থিতি তখন শুধু ভারতের মুসলিম বা অন্যান্য সংখ্যালঘু নাগরিকরাই নয় আঞ্চলিক ক্ষুদ্র রাষ্ট্র সমুহের জন্যেও তা মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়ায়।বিশেষ করে, যার বিরুদ্ধে গুজরাটেরর দাঙ্গায় মদদের সরাসরি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে,হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, মোদির প্রশাসন এই হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করেছে৷ ‘এটা ছিল পরিকল্পিত আক্রমণ’৷ ওই প্রতিষ্ঠানের একজন জ্যেষ্ঠ গবেষক বলেছেন, ‘এটা সংঘটিত হয়েছে পুলিশ ও রাজ্য সরকারের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায়৷’

মোদিকে নিয়ে মুসলিমদের এখনও ভয়ের কি কারণ আছে? মোদি’র ধর্মান্ধতা কি কমেছে ?

-------------------------------------------------------------------------------------

একটি ঘটনার উল্লেখ করলেই আমরা বুঝতে পারব মোদি আব তার দলের মুসলমান বিরোধিতা একটুও কমেনি: ২০০২ সালের দাঙ্গার শিকার ৫০ হাজার মানুষ এখনো অতিদারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে, উদ্বাস্তু হয়ে, তারা ৮৩টি ‘শরণার্থী শিবিরে’ এখনো পচে মরছে৷ মোদি একবার এসব শিবির পরিদর্শন করলেও তিনি তাচ্ছিল্যভরে এসব শিবিরকে মুসলিম ‘শিশু উৎপাদন শিবির’ বলে আখ্যায়িত করেন৷ তাছাড়া দাঙ্গায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে

মোদি বেশ কয়েকটি আনুষ্ঠানিক তদন্তের মুখোমুখি হলেও তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো রায় হয়নি৷ এমনকি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাদানে তাঁর সরকার ব্যর্থ হলেও তিনি কখনোই আজ পর্যন্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেননি বা তাঁর মধ্যে কোনো বিন্দু মাত্র অনুশোচনাও দেখা যায়নি৷ বরঞ্চ এ বিষয়ে গত বছর তিনি রয়টার্সের কাছে এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন, ‘একটি কুকুরছানা গাড়ি চাপা পড়লে’ আমি যেমন দুঃখিত হতাম, দাঙ্গায় মুসলমানদের দুর্দশায় ঠিক তেমন কষ্ট পেয়েছি৷’ একবার তিনি দাঙ্গাবাজদের কর্মকাণ্ডকে আংশিকভাবে যৌক্তিক ও আরও একবার এর চেয়েও শীতল কণ্ঠে তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছিলেন: ‘কেন ২০০২ সাল নিয়ে এত কথা হচ্ছে?... এটা অতীত, এর কী তাৎপর্য আছে?’ নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেছিলেন, তাঁর একমাত্র আক্ষেপ হচ্ছে, তিনি মিডিয়াকে সামলাতে পারেননি৷

সবশেষে, আমরা ভারতের দি আউটলুক ম্যাগাজিন থেকে নেওয়া ভারতীয় অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র পরিচালক নন্দিতা দাসের মোদি সম্পর্কে তাঁর ব্যক্তিগত উপলব্দি হুবহু তুলে ধরতে চাই, ’’শুরু করা যাক বহুকথিত ও প্রতিশ্রুত ‘উন্নয়নের’ মডেল নিয়ে৷ অভিজাত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ‘গুজরাট মডেল’ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে৷ বিষয়টি মাথায় রাখার জন্য বলছি, এই রাজ্যটি ভারতের অন্য রাজ্যগুলোর তুলনায় উদ্যোগবান্ধব, সমৃদ্ধও বটে৷ বিগত দশকে অর্থনীতির সাধারণ সূচকেই মহারাষ্ট্র, বিহার ও তামিলনাড়ু গুজরাটের তুলনায় ভালো করেছে৷

যা-ই হোক, অর্থনৈতিক অগ্রগতিই সফলতার একমাত্র মাপকাঠি নয়৷ ভারতের বিপুলসংখ্যক মানুষ দেশের মূল স্রোতের বাইরে অবস্থান করে৷ নানাভাবেই তারা দুর্গতি ভোগ করে৷ করপোরেট নীতি দ্বারা পরিচালিত অর্থনৈতিক মডেলে কি এই মানুষগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণ হবে? সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য কি কোনো সামাজিক কর্মসূচি থাকবে? উন্নয়ন কি সবার কপালে জুটবে?

আমাদের ২০০২ সালের দাঙ্গার ভয়াল স্মৃতি ঝেড়ে ফেলতে বলা হলেও দেশভাগের বা তারও আগে বাবরের যুগের স্মৃতিচারণা করতে কোনো সমস্যা নেই৷ আমার ভয় হচ্ছে, ২০০২ সালের দাঙ্গার ব্যাপারে কোনো অনুশোচনা তো দেখা যাচ্ছে না, উপরন্তু এ-বিষয়ক একধরনের পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাব এবং এমনকি এটাকে বৈধতা দেওয়ারও চেষ্টা চলছে৷ নির্বাচনে প্রচারাভিযানের সময় একধরনের উগ্র ধর্মীয় আবেগ জাগানোর চেষ্টা স্পষ্টতই লক্ষ করা গেছে৷

এই ‘উন্নয়নের’ গল্পের ভেতরে এক বিভাজনের রাজনীতি আছে৷ মুজাফফরনগরে অমিত শাহর বক্তব্য, মোদির কিস্তি টুপি (মুসলমানদের ব্যবহৃত টুপি) পরতে অস্বীকৃতি—যদিও তিনি আর অন্য সব টুপি–পাগড়ি পরতে দ্বিধা করেননি৷ প্রাভিন টোগাডিয়ার তো মুসলমানদের ‘হিন্দু এলাকা’ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বিভাজনের রাজনীতিকে আরও উসকে দিয়েছে৷ এগুলো নমুনা মাত্র, আরও অনেক রয়েছে৷’’

‘’কিন্তু আমার সবচেয়ে বড় তাৎক্ষণিক ভীতি হচ্ছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ হতে পারে৷ গণতন্ত্র ভিন্নমতকে প্রকাশের সুযোগ দেয়৷ এ কারণে জনগণ তাদের মত পরিবর্তন করতে পারে, সরকারও পরিবর্তন করতে পারে৷ গণতান্ত্রিক ও সভ্য পন্থায় তাঁদের অসন্তুষ্টির কথা বলতে পারে৷ বিজেপি ও তার সমর্থকেরা সব সময় সমালোচনা স্তব্ধ করে দিতে চায়৷ তা হোক সেন্সরশিপ আরোপ বা বল প্রয়োগ করে, যখন যেটা সুবিধাজনক৷ কিন্তু আমি কখনোই দেখিনি যে ধর্মনিরপেক্ষ দলকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানালেও মোদি সমর্থকদের আক্রোশের শিকার হতে হয়৷ আজ আমার ভিন্নমত ধারণকারী একটি টুইটবার্তার প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, ‘বাচ্চাদের নিয়ে পাকিস্তান চলে যান!’ এর ভেতরের অর্থ ভয়ংকর৷’’ শিল্পী হিসেবে আমি বিপন্নবোধ করছি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায়৷ এই প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের স্ব-আরোপিত সেন্সরশিপ কী জিনিস, আমি তা বুঝতে পারছি৷ নিজেকে বিপদমুক্ত রাখার জন্য গণমাধ্যম এ কাজ করছে৷ এ থেকে বোঝা যায়, সামনের দিনগুলোতে কী ঘটতে পারে৷

এই নীরবতা ভীষণ রকম কান ফাটানো৷ ভিন্নমতের মানুষের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে যাবে৷ তাই আজ আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করি, আমার ভয়গুলো কি ভিত্তিহীন?

এখানে সম্প্রতি সংঘটিত একটি ঘটনার উল্লেখ করতে চাই,’’ ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা ‘কিং খান’ হিসেবে পরিচিত শাহরুখ খানের একটি ভুয়া টূইট বার্তাকে কেন্দ্র করে তার পোষ্টারে দিল্লীতেআগুন দেয়া হয়েছে।‘এখন প্রশ্ন হচ্ছে শাহরুখ খানের মতো বিশ্ব বিখ্যাত ‘সেলিব্রেটি’র মত প্রকাশের ক্ষেত্রে যদি মুখে লাগাম দিতে হয়, নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হতে হয়,এরপরও কি আমরা বলব ‘মোদি’কে নিয়ে ভয়ের কোনোই কারণ নেই।

তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় মুসলমানরাই শুধু নয় , উদার হিন্দুরাসহ এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র রাষ্ট্র সমুহও নিরাপদ বোধ করবে না । তাদের মধ্যে কি একবিংশ শতাব্দীতে এসে হিটলারের ভুত তাড়িয়ে বেড়াবে না ? যাই হোক, আমরা আশাকরি আমাদের আশাংকা যেনো শুধু আশাংকাই থাকে, বাস্তবে যেনো আর কোনো গুজরাটের মতো পরিস্থিতির সম্মুক্ষীণ হতে না হয়।আর যেনো কোনো ‘এহসান জাফরি’র স্ত্রীর চোখের সামনে উলঙ্গ অবস্থায় টুকরো টুকরো হয়ে পুলিশের সামনে চিতার আগুনে জ্বলতে না হয়। আমরা আশা করব ‘নন্দিতা দাস’ নির্ভয়ে সৃজনশীল কাজের মাধ্যেমে নিজেকে তুলে ধরতে পারবেন, আমরা আশা করি আর কোনো নিরাপরাধ ইশরাত জাহানকে মরতে হবে না।আমরা চাই না , আর কোনো হিটলারের প্রেতাত্মা যেনো এই পৃথিবীতে জন্ম নেয়। আমরা আশা করি শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে একজন মায়ের বুকও যেনো আর খালি না হয়।

স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার জনগণের আছে,তবে হিটলারের মতো চরম ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী মোদির উত্থানের দায় হতে ভারতের জনগণও কিন্তু দায় এড়িয়ে যেতে পারে না।‘মোদি’র মতো নেতাকে দিল্লীর মসনদে বসিয়ে ভারতীয়রা কী হারাল, সেটা তারা ভবিষ্যতে হাড়ে হাড়ে টের পাবে।

( তথ্যসূত্রঃসিএনএন, রয়টার্স,প্রথম আলো,উইকিপিডিয়া)

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৬

ঢাকাবাসী বলেছেন: মোদিকে মূল্যায়নের সময় এখনো আসেনি। ওয়েট। গুজরাটে তার অবদান ঈর্ষনীয়! মোদি নিয়ে লিখতে গিয়ে এক আজদাহা প্রবন্ধ লিখে ফেলেছেন।

২| ২৬ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৫

মোঃ মাকসুদুর রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ।অবদান বলতে কি আপনি শুধু অর্থনীতিকে বুঝাচ্ছেন, তবে আপনার সাথে আমি একমত, হিটলারও ঠিক এই ধরনের উন্নয়ন জার্মানিতে ঘটিয়েছিলো, তার প রের ইতিহাস তো সবার জানা। তেমনি ২০০২সালের দাঙ্গায় সরাসরি মদদের ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না।

৩| ২৬ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২১

কীর্তনখোলা তীরে বলেছেন: আমি লেখকের সাথে একমত । একজন নেতার সফলতা শুধু অর্থনৈতিক সফলতার উপরে নির্ভর করে না । তাই অবশ্যি আমাদের ২০০২ গুজরাটের দাঙ্গায় মোদির ভুমিকার কথা ভুলে যেতে পারি না।

৪| ২৬ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তথ্য ষুত্র হিসাবে অবশ্যই শোকেসে।

এখন অপেক্ষা।

যদিও শাস্ত্রই ভলে ইল্লত যায়না ধুলে, খাসলত যানা ম'লে!!!!

দেখা যাক, বিশ্ব এবং উপমহাদেশের ভাগ্যে কি আছে!!

৫| ২৭ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:৪৩

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: @ঢাকাবাসী, লেখক মোদীকে এখানে মূল্যায়ন করেন নি, বরং মোদী অতীতে কি কি করেছে তারই বিবারন দিয়েছেন। আর এ মহা পাপী সামনে কি কি করতে পারে তার কিনচিত ধারনা দিতে চেষ্টা করেছেন।
সংক্ষেপে - তুমি ভবিষ্যতে কি কি করতে চাও তা নিরভর করে তুমি অতীতে কি কি করেছ তার উপর।

সুতারং সাধু সাবধান!!!!

৬| ২৭ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৪০

দারুচিনির দ্বীপ বলেছেন: মোদি'র বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত রিজার্ভেশন হচ্ছে, এ ধরনের লোকের এক সময়ে সমগ্র রাজনীতির জন্যে ফ্রাংকেনষ্টাইন হিসেবে আবির্ভুত হবার সমুহ সম্ভাবনা থাকে।

৭| ০১ লা জুন, ২০১৪ রাত ৩:২৮

দারুচিনির দ্বীপ বলেছেন: ++++++++++++দারুন লিখেছেন ।আমি আপনার সাথে একমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.