![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মর্নিং শোজ দ্যা ডে, ভারতের নবনির্বাচিত নরেন্দ্র মোদি সরকার সম্পর্কে কথাটি এখন বলাই যায়। কারণ জম্মু ও কাশ্মীর বিশ্বের সবচেয়ে স্পর্শকাতর যুদ্ধপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মোদি সরকার তা জানে না , তা ভাবার কোনো অবকাশ নেই।একদিকে মোদি তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাক প্রধাণমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এ অঞ্চলে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিতে চাচ্ছেন।আবার শুরুতেই বিতর্কিত রাজনৈতিক ইস্যু জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদি সরকার, বিষয়টাকে ঠিক মেলাতে পারছেন না অনেকেই। এটা কি অনিচ্ছাকৃত না সুপরিকল্পিত, তা নিয়ে এখন ভারতসহ আন্তজার্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে চুলচেরা অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। বিজেপি বরাবরই জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের প্রবল বিরোধী।গত মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরই খোদ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের (পিএমও) প্রতিমন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়ে দিলেন, ‘বিতর্কিত’ অনুচ্ছেদটি বাতিল করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে সরকার।
ভারতের সীমান্ত রাজ্যটিকে বিশেষ মর্যাদা সুনিশ্চিত করতে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের।একই দেশে কেন একটি রাজ্যের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, এই প্রশ্ন তুলে বিলটির বিরোধিতা করে আসছে বিজেপি শিবির। এই বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ করে এদিন সাংবাদিকদের পিএমও-র প্রতিমন্ত্রী, তথা জম্মুর উধমপুর থেকে লোকসভার এমপি হওয়া জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।আমরা এ নিয়ে ইস্যুটির সঙ্গে জড়িত, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।বিজেপি জম্মু ও কাশ্মীরে অর্ধেকের বেশি আসন জিতেছে এবারের লোকসভা নির্বাচনে । তিনি বলেন একে কি ‘৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিজেপির অবস্থানের জয় বলে ধরা উচিত নয়’?
তবে তাঁর এই ন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম টুইটারে তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য 'অজ্ঞানতাপ্রসূত এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন। আমার কথা মনে রাখুন এবং এই টুইট লিখে রাখুন, মোদি সরকারকে বুঝতে হবে, ৩৭০ অনুচ্ছেন না থাকলে কাশ্মীর আর ভারতের অংশ থাকবে না।'
আবদুল্লাহর এই টুইটের পরপরই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, '৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক ভিত্তিহীন।' তবে সরকারের এ অবস্থান মানতে নারাজ ওমর আবদুল্লাহ। এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করার আহ্বান জানান তিনি।
এরই জবাবে গতকাল বুধবার আরএসএসের জাতীয় নির্বাহী সদস্য রাম মাধব প্রশ্ন করেন, 'জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অংশ থাকবে না? ওমর কি মনে করেন এই রাজ্য তাঁর বাপের তালুক? ৩৭০ থাক বা না থাক কাশ্মীর সার্বভৌম ভারতের অংশ হিসেবেই থাকবে।' তিনি আরো বলেন, 'মন্ত্রী দলীয় অবস্থানের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি ৩৭০ অনুচ্ছেদের কার্যকারিতা নিয়ে বিতর্কের আহ্বান জানিয়েছেন। এ নিয়ে অহেতুক রাজনৈতিক বিতর্কের চেষ্টা অর্থহীন।'তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান ওই রাজ্যকে ৩৭০ ধারার মাধ্যমে যে সুবিধা দিয়েছে, তাতে রাজ্যের লাভ হচ্ছে না ক্ষতি, তা তো দেখা যেতেই পারে। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মির যে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই, আমি তো বলব মুখ্যমন্ত্রী এখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মতো কথা বলছেন।’’ প্রসঙ্গত ক্ষমতাসীন বিজেপির পরামর্শদাতা সংগঠন হচ্ছে আরএসএস।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মির একটি ব্যতিক্রমী রাজ্য - কারণ প্রতিরক্ষা-পররাষ্ট্র বা যোগাযোগের মতো কয়েকটি বিষয় ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সেখানে ভারতের কোনো আইন প্রয়োগ করতে গেলে রাজ্য সরকারের সম্মতিও জরুরি।
নাগরিকত্ব, সম্পত্তির মালিকানা বা মৌলিক অধিকারের প্রশ্নেও এই রাজ্যের বাসিন্দারা বাকি দেশের তুলনায় বাড়তি কিছু সুবিধা ভোগ করেন, আর ৩৭০ ধারাই তাদের সে অধিকার দিয়েছে।
বিজেপি বরাবরই এই ধারা বিলোপের পক্ষে, তবে সংবিধান সংশোধনের মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকায় আগে কখনওই তারা সেই উদ্যোগ নিয়ে এগোতে পারেনি।
কিন্তু এখন নরেন্দ্র মোদির জোট সরকার লোকসভায় অন্তত দুই তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার বেশ কাছাকাছি, আর সরকারের প্রথম দিনেই ৩৭০ ধারা নিয়ে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন সরাসরি মোদির অধীনে কাজ করা প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং।
তবে বিজেপি বা আরএসএস যা-ই যুক্তি দিন, ভারতের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ কিংশুক চ্যাটার্জি কিন্তু মনে করিয়ে দিচ্ছেন ৩৭০ ধারার ভিত্তি নিহিত আছে ভারতের সঙ্গে কাশ্মিরের সংযুক্তিকরণের ইতিহাস, ফলে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টাও মোটেই সহজ নয়।
ড: চ্যাটার্জি বলেছেন, ‘‘ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাকসেসন-য়ে সই করেছিল কাশ্মির ও ভারতের সরকার, দুটো স্বাধীন স্বতন্ত্র সত্তা – তার মাধ্যমেই কাশ্মির ভারতে সংযুক্ত হয়েছিল।’’
‘‘যে শর্তের ভিত্তিতে সেই চুক্তি সই হয়েছিল, ভারত সরকার একতরফাভাবে বলতে পারে না যে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে, তাই আমরা সেই শর্তগুলো আবার নতুন করে বিবেচনা করব,’’
কিংশুক চ্যাটার্জি আরও বলছেন, ‘‘যদি ভারতের একশো কোটি মানুষও বলে কাশ্মির ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, আর কাশ্মিরের মানুষ সে কথা না মানে, তাহলে কিন্তু আইনি পথে বা গণতান্ত্রিক পন্থায় ভারত সরকারের দাবি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। অবশ্য গায়ের জোরে হয়তো সম্ভব।’’
গোটা বিতর্ক নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি সদ্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে বসা নরেন্দ্র মোদি, যদিও কাশ্মিরের নেতারা তার কৈফিয়ত দাবি করেছেন।
মোদি তার অবস্থান স্পষ্ট করলেই বোঝা যাবে, এটা কি শুধুই হাওয়া বোঝার চেষ্টা না কি, তার সরকার ৩৭০ নিয়ে বিতর্কের প্রশ্নে সত্যিই সিরিয়াস।তবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের (পিএমও) প্রতিমন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিংহ এ ধরনের একটি স্পর্শকাতর বিষয়ের অবতারনা প্রধাণমন্ত্রীর অগোচরে করতে পারেন তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।বিশেষ করে যখন প্রকাশ্য এ বিষয়ে ডঃ জিতেন্দ্র সিংহের বক্তব্য সমর্থন করে ওমর আবদুল্লাহর কঠোর সমালোচনা করেছেন বিজেপির নীতিনির্ধারক সংগঠক খোদ আরএসএস।
তবে একথা ঠিক বরাবরই বিজেপি-র কাছে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়। এক সময়ে এই বিশেষ মর্যাদার বিরোধিতা করেই কাশ্মীরে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিজেপি-র পূর্বসূরি জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। শেখ আবদুল্লার সরকারের হাতে বন্দি অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
২| ২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৪৬
মোঃ মাকসুদুর রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৪
দারুচিনির দ্বীপ বলেছেন: ড: চ্যাটার্জি বলেছেন, ‘‘ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাকসেসন-য়ে সই করেছিল কাশ্মির ও ভারতের সরকার, দুটো স্বাধীন স্বতন্ত্র সত্তা – তার মাধ্যমেই কাশ্মির ভারতে সংযুক্ত হয়েছিল।’’
‘‘যে শর্তের ভিত্তিতে সেই চুক্তি সই হয়েছিল, ভারত সরকার একতরফাভাবে বলতে পারে না যে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে, তাই আমরা সেই শর্তগুলো আবার নতুন করে বিবেচনা করব,’’
কিংশুক চ্যাটার্জি আরও বলছেন, ‘‘যদি ভারতের একশো কোটি মানুষও বলে কাশ্মির ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, আর কাশ্মিরের মানুষ সে কথা না মানে, তাহলে কিন্তু আইনি পথে বা গণতান্ত্রিক পন্থায় ভারত সরকারের দাবি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। অবশ্য গায়ের জোরে হয়তো সম্ভব।’’ প্যারাটার সাথে আমি একমত।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫২
কীর্তনখোলা তীরে বলেছেন: মোদি'র সম্মতি ছাড়া এ ধরনের ইস্যুতে কথা বলার সাহস ও এখতিয়ার কোনোটারই জিতেন্দ্র সিংহের নেই।