নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মাকসুদুর রহমান

মোঃ মাকসুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুনঃর্জ্জীবিত সঠিক তারিখে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা উচিৎ !!!!

২৩ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৩৪

আওয়ামী লীগ তার ৬৫ বছরের ইতিহাসে এবার প্রথম পরপর দ্বিতীয় বারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে যদিও তা ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেকেই ভোট দিতে হয়নি জনগণ তো ইচ্ছা করেই সরকারের পাতানো নির্বাচন বয়কট করে।।তাই এবার, অনেকটা ভিন্ন আঙ্গিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে দেশের এই অন্যতম রাজনৈতিক দলটি।দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের লেবাসধারী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফেড়িওয়ালা হিসেবে চিহ্নিত আওয়ামী লীগের মুখোশ ক্ষমতার লোভে সম্পুর্ণরূপে খসে পড়েছে। সেখানে এখন শুধুই ক্ষমতার লেলিহান শিখায় বিরোধী দলকে ছারখার করে দেয়ার তীব্র হিংস্রতা শোভা পাচ্ছে।তবে আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু সেটা নয়। আজ ২৩ জুন আওয়ামী লীগ যে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করছে ইতিহাসের আলোকে সেটা কতটা ঠিক তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ভেবে দেখা উচিৎ।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে আত্মপ্রকাশ ঘটে দলটির, প্রায় দুই যুগ পর যে দলটির নেতৃত্বে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ , সেই দলটির গলা টিপে হত্যা করা হয় ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি। আর তাও আবার যে সে নয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নিজের হাতে মাত্র ১১ মিনিটে।১৯৭৫ সালের এই তারিখে এদেশের রাজনীতির ইতিহাসে রচিত হয়েছিল এক কালো অধ্যায়ের। ওইদিন সংসদে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান পেশকৃত চতুর্থ সংশোধনী বিল পাস হয়। এর মাধ্যমে দেশের সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে একদলীয় শাসন তথা বাকশাল গঠনের পথ উন্মুক্ত করা হয়। একইসঙ্গে এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয়। বিল পাসের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতিতে পরিণত হন। এক নজিরবিহীন ন্যূনতম সময়ের মধ্যে (মাত্র ১১ মিনিট) চতুর্থ সংশোধনী বিলটি সংসদে গৃহীত হয় এবং তা আইনে পরিণত হয়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিলটি নিয়ে সংসদে কোনো আলোচনা বা বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়নি। এই বিলের মাধ্যমে প্রশাসন ব্যবস্থায় এক নজিরবিহীন পরিবর্তন সাধন করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান দেশের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধিকারী হন। আওয়ামী লীগ প্রধান হিসেবে তিনি এবং তার আত্মীয়স্বজনরা রাষ্ট্রের সবরকম ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। এ পদক্ষেপকে তিনি তার ‘দ্বিতীয় বিপ্লবে’র সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেন। আর এই দ্বিতীয় বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করতে শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের সব মৌলিক রাজনৈতিক অধিকার হরণ করেন। অবরুদ্ধ করেন মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতা। যদিও এই নেতা ’৭১-এ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে উদাত্ত কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি এদেশের মানুষের অধিকার চাই।’

চতুর্থ সংশোধনী বিল পাসের এক মাস পর অর্থাৎ ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তত্কালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের সব মৌলিক ও রাজনৈতিক অধিকার হরণ করেন। এদিন তিনি সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ (বাকশাল) নামে একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল গঠন করেন। একইসঙ্গে নিজেকে এই দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন। পাশাপাশি দল পরিচালনা এবং দলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও একক ক্ষমতার অধিকারী হন। কয়েকটি দলের মাধ্যমে বাকশাল গঠিত হলেও দলের মধ্যে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের কোনো কর্তৃত্ব ছিল না। এভাবে শেখ মুজিবুর রহমান ওই সময় আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ এবং রাজনৈতিক অঙ্গনের একাধিপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি বাকশালের দর্শন বাস্তবায়নের জন্য ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন দেশের সবক’টি সংবাদপত্র বিলুপ্ত করেন। শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনায় দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ অবজারভার এবং বাংলাদেশ টাইমস—এ চারটি পত্রিকা সাময়িকভাবে প্রকাশনার সুযোগ দেয়া হয়।

তাই ইতিহাসের আলোকে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন যে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিলো তা, খোদ শেখ মুজিব ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি নিজ হাতে গলা টিপে হত্যা করেন এক দলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল কায়েমের মধ্যে দিয়ে। শুনতে খুব খারাপ শোনালেও বর্তমান আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হিসেবে ২৩ জুন পালন করছে, তা কোনোক্রমেই সঠিক নয়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করলে তার আওতায় সকল রাজনৈতিক দল পুনরায় তাদের রাজনীতি করার সুযোগ লাভ করে।তার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগও পু্নর্জন্ম লাভ করে এবং সে ধারাবাহিকতায় আজকে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে আছে।

সুতরাং এ বিষয়টি অত্যন্ত পরিস্কার আজ ২৩ জুন আওয়ামী লীগ যে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করছে তা কোন ক্রমেই সঠিক তারিখ নয়।তাকে অবশ্যই যে তারিখে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ পু্নর্জন্ম লাভ করেছিলো সেই তারিখে বর্তমানে তাদের প্রতিষ্ঠা পালন করতে উচিৎ। অন্যথায় তা নিশ্চিতভাবে ইতিহাসের সাথে লুকোচুরি খেলার সামিল বলে বিবেচিত হবে।

অনেকে আবার মনে করছেন বর্তমানে রাজনৈতিক দল হিসেবে যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করছে তার পু্নর্জন্মে জিয়াউর রহমানের একটি প্রচ্ছন্ন ভুমিকা ছিলো তা এড়িয়ে যেতেই সঠিক তারিখে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করছে না।আর তাও স্বীকার করতে তারা অস্বস্তিবোধ করে তবে তাদের উচিৎ মুসলিম লীগের জন্মদিনে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা।কারণ ইতিহাসের সংঘটিত বিষয়কে তো আওয়ামী লীগ বারবার তাদের খেয়ালখুশী মতো চিহ্নিত করতে পারে না।

তাই আওয়ামী লীগের উচিৎ ইতিহাসের সাথে লুকোচুরি না খেলে সত্য তা যতো তিক্তই হোক না কেনো, তা মেনে নেয়ার সৎ সাহস দেখানো এবং পুনঃর্জ্জীবিত তারিখে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা।অন্যথায় সকলের কাছে এই সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে আওয়ামী লীগ তাদের একমাত্র রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন শেখ মুজিবের আদর্শ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে ,যা আবার শেখ মুজিবকে বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব কতৃক কবর দেয়ার সামিল বলে বিবেচিত হবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৩৪

কীর্তনখোলা তীরে বলেছেন: আমি লেখকের সাথে একমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.