![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্যক্তিগত জীবনে আমি এমন কোনো বিখ্যাত মানুষ নই যে আমাকে কোনো বিষয় নিয়ে বিব্রতবোধ হতে হবে । কিন্তু আমি আজকের একটি ঘটনা তা থেকে আমাকে মুক্তি দিচ্ছে না। একটু খোলাসা করে না বললে সবার ধোয়াশা লাগতে পারে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক কতৃক এক ছাত্রীর উপর যৌন হয়রানির সংবাদ দেখে আমি আঁতকে উঠি, কারণ অভিযুক্ত শিক্ষককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি ।এবং বলা যায় বেশ কিছুটা সময় তার সাথে আমার ঘনিষ্টতাও ছিল। যদিও আমার সীমাবদ্ধতার কারণে হয়তবা (নিজের সম্পর্কে আমার তাই ধারণা ) তাকে আমি পছন্দ করতাম না । তবে ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের একটা পেশার সাথে জড়িত দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ( বিশেষভাবে শিক্ষকতা পেশার সাথে যারা দায়িত্বরত) যখন যৌন হয়রানির মতো ঘৃণিত কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে তখন সাধারণভাবে আমি আমার ঘৃণা মিশ্রিত মতামত প্রকাশ করি । কিন্তু আজকের সারাদিন ভেবেও আমি এ বিষয়ে ঘৃণা মিশ্রিত মতামত প্রকাশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি । বারবার আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি আমি কি রাগ অনুরাগ বা আবেগ দ্বারা তাড়িত হচ্ছি ? কারণ তার সাথে আমার এক সময়ের ঘনিষ্টতা ছিলো,তাই আবেগতাড়িত হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই এ বিষয়ে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করতে আমি বিব্রতবোধ করছি।
এখন আমি আর একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করতে চাই।৯০সালে ছাত্রজনতার উত্তাল আন্দোলনের এক পর্যায়ে স্বৈরশাসক এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।তার পরের ইতিহাস তো আমাদের সবার জানা । অত্যন্ত সংগত কারণে এই স্বৈরশাসক ভুরি ভুরি মামলার আসামী হন। তখন তার মামলা পরিচালনার জন্য তিনি বাংলাদেশের আইনের ইতিহাসের অন্যতম সেরা একজন আইনজীবী ও বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট সিরাজুল হকের দ্বারস্থ হন। পেশাগত কারণে সিরাজুল হক সাহেব মামলা পরিচালনা করতে রাজী হন। কিন্তু যে বিষয় আজো তাঁর মামলা পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার ক্ষেত্রে স্মরণীয় তা হচ্ছে , তিনি ঐ সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন। তাই তিনি পেশাগত কারণে মামলা নিতে রাজী হলেও বিবেকের তাড়নায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেন। এটাই তার প্রতি একজন স্বৈরশাসকের মামলা নেয়া সত্ত্বেও আমার শ্রদ্ধাবোধের কারণ। অবশ্যই একজন মানুষ তাঁর স্বাধীন মত প্রকাশ করতে পারেন কিন্তু আপনি যদি একটি রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ ফোরামের দায়িত্বে থাকেন তবে আপনাকে দলের স্বার্থ চিন্তা করতে হবে। আপনার এমন কোনো আচরণ , কথা বার্তা ,লেখার মাধ্যমে স্বীয় দলের স্বার্থ যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয় তবে তা আপনি নীতিগতভাবে করতে পারেন না। দলের কোনো সিদ্ধান্ত যদি আপনার মনপুতঃ না হয় তবে আপনি প্রথম দলের ফোরামে আলোচনা করতে পারেন ।তারপরও যদি দল সংশোধিত হলো না অথচ আপনি চান এই অসংগতিগুলো ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বই আকারে লিখে রেখে বিবেকের কাছে পরিস্কার থাকতে। সেক্ষেত্রে আপনার উচিৎ হবে প্রথমই বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে দল থেকে পদত্যগ করা,তারপর আপনার চিন্তাভাবনা যা আপনি সত্য বলে বিশ্বাস করেন তা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা। যে বিষয়টি বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব মওদুদ সাহেব করেননি। সম্প্রতি আপনি আপনার লেখা একটি বইয়ে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন তা আমরা সত্যি বলে ধরে নিলেও বিএনপি’র সর্বোচ্চ নেতৃত্বে থেকে আপনি এটা করতে পারেন না ।আমরা অত্যন্ত বিণয়ের সাথে বলতে চাই ,আপনার অবশ্যই স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করার পুর্ণ অধিকার ও স্বাধীনতা রয়েছে কিন্তু আপনার বক্তব্য যদি দলের স্বার্থবিরোধী হয় তবে আপনি নিশ্চিতভাবে দলের দায়িত্বে থেকে এসব বক্তব্য কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারেন না । আপনার উচিৎ ছিলো আপনার অগ্রজ আইনজীবী সিরাজুল হক সাহেবের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা। প্রথমে দল থেকে পদত্যগ তারপর স্বাধীনভাবে দলের ত্রুটি বিচ্যুতি লেখার মাধ্যমে তুলে ধরা।আপনার মতো শিক্ষিত রাজনীতিবিদের নিকট থেকে জাতি এটাই প্রত্যাশা করে। এখানে যুক্তির কোনো জায়গা নেই , আইনের কোনো মারপ্যাচ নেই , এখানে শুধুই বিবেকের দ্বারা তাড়িত হবে।
পূণশ্চঃ আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নির্যাতনে জড়িত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি।আমরা ইতিপুর্বে কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই অপরাধের অভিযোগ উঠতে দেখেছি সেই অপরাধের বিচার যদি হত তাহলে আজকের আর একজন ছাত্রীকে হয়ত নির্যাতিত হতে হতো না।
দ্বিতীয়তঃ বর্তমানে দায়িত্বরত বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ সাহেবের সমালোচনা করতে গিয়ে দলের একজন জুনিয়র নেতা যে ভাষায় কথা বলেছেন তা আমি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করতে পারি না , কারণ এটা রাজনীতির নামে এক ধরনের বাজে দৃষ্টান্ত ।একজন সিনিয়র নেতার সমালোচনা করতে হলে অবশ্যি রাজনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রাখতে হবে। মওদুদ সাহেব যেভাবে দলের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত আবেগ তাড়িত হয়ে বই লিখেছেন ,আপনিও ঠিক একই ভাবে ব্যক্তিগত আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন ।একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে আপনাদের এসব আচরণ আমাদেরকে ব্যপকভাবে ব্যথিত করে , বিব্রত করে
©somewhere in net ltd.