![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হংকার একজন মানুষের পতনের অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করে কথাটি আমরা শৈশবকাল থেকে শুনে আসছি। প্রশ্ন হচ্ছে, একজন মানুষের পতনের পিছনে অহংকার কি ধরনের ভূমিকা রাখে এ বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ হচ্ছে অহংকারের ফলে একজন মানুষ তার আশেপাশের সকল শুভানূধ্যায়ীদের কাছ থেকে নিজেকে ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ফলস্বরুপ অহংকারী ব্যক্তি একসময় এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বসবাস করতে শুরু করে।তখন তার নেয়া যেকোনো সিদ্ধান্তই নিজের কাছে সর্বোৎকৃষ্ট মনে হয়।এ ধারাবাহিকতায় অহংকারী ব্যক্তিবর্গ একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে। যার খেসারাত তাকে দিতে হয় চরমতম পরিণতির মধ্যে দিয়ে। ঠিক তেমনি একটি রাজনৈতিক দল যখন ক্ষমতার দম্ভে অহংকারী হয়ে ওঠে তার পরিণতি হয় দেশ , জনগণ ও দলের সবার জন্য ভহাবহ।কারণ দলটি তখন ধীরে ধীরে স্বৈরশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কোনো কোনো সময় এইসব দলসমূহ দেশের উন্নয়নের আফিমের মিথে জনগণকে আচ্ছন্ন করে একদলীয় শাসক হিসেবে আবির্ভুত হয়। আর একদলীয় শাসনব্যবস্থা কার্যকর করার অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে দেশের মধ্যে বিভক্তি রেখা গড়ে তোলা। প্রতিনিয়ত জনগণকে কোনো না কোনো ইস্যুতে ব্যতিব্যস্ত রাখা।
তবে পৃথিবীতে অনেক দেশে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু রেখেও কিছু দিন বেশ জনপ্রিয় থাকে।তখন তারা চেষ্টা করে কিছু জনকল্যাণমূলক কাজ করতে । যা আমরা দেখেছি পাকিস্তান আমলে স্বৈরশাসক আইয়ুব খাঁনের শাসনকালে। কিন্তু সমস্য হচ্ছে খুব বেশি দিন জনগণ স্বৈরশাসকদের উন্নয়নের আফিম পান করে ঘুমিয়ে থাকতে পছন্দ করে না। একথা স্বৈরশাসকরা খুব ভালোভাবে অনুধাবন করতে পয়ারে । তাই স্বৈরাচার বা গণবিচ্ছিন্ন একদলীয় শাসকগোষ্ঠী তখন স্পর্শকাতর ইস্যুতে জনগণের মধ্যে বিভক্তি রেখা তৈরির অপচেষ্টা চালায়। যার পরিণাম হয় দেশের জন্যে অত্যন্ত মর্মান্তিক।স্বৈরাচার আইয়ুব খাঁ থেকে শুরু করে এরশাদ থেকে সর্বশেষ স্বঘোষিত নির্বাচিত বর্তমান সরকার সবাই একই ঘৃণ্য পথ অবলম্বণ করে যাচ্ছে। যদিও অপশাসকগোষ্ঠী জেনে শুনেই পরিকল্পিতভাবেই যুদ্ধের এই ভয়ংকর ফ্রন্ট খোলে। যাতে করে দেশ এক নিরবচ্ছিন্ন অস্থিরতার মধ্যে পতিত হয়। পক্ষান্তরে গণবিচ্ছিন্ন শাসকগোষ্ঠী তার ক্ষমতার সময়সীমা প্রলম্বিত করতে পারে।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন সরকারের জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে কবর সরানোর রাজনীতি শুরু করার প্রবণতা দেখে সেই অপরাজনীতির কথাই সকলকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। প্রশ্নটা সবার মনে বেশি উদ্রেক করার কারণ হচ্ছে ,যে আটটি কবর স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে দেশের অন্যতম প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের। তাই অত্যন্ত সংগত কারণেই এ ইস্যুতে দেশে নতুন করে এক রাজনৈতিক বিভক্তির সৃষ্টি হবে তাতে কোনোই সন্দেহ নেই।যার সাথে আবার ধর্মীয় স্পর্শকাতরতা যুক্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।সুতরাং এটা ভাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেয়ার অংশ হিসেবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে লুই কানের ডিজাইন নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি শুরু করেছে। যেকোনো বিবেকবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিকমাত্রই প্রত্যাশা করে লুই কানের ডিজাইন সর্বাত্মকভাবে অনুসরণ করা হোক । দেশের কারো এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই, দ্বিমত থাকার কথাও নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার যদি লুই কানের ডিজাইন পুংখানূপুঙ্খ অনুসরণ করতে সত্যিই আগ্রহী থাকে বা তার প্রতি এতটা সদিচ্ছা প্রদর্শন করেন তাহলে কেন চলমান মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এর ব্যতায় ঘটানো হল? সেখানেও অবশ্যই লুই কানের ডিজাইন পুরোপুরি অনুসরণ করা উচিৎ ছিলো।। তাছাড়া যেহেতু পুরো ডিজাইন অনুসারে সংসদ ভবন এলাকাকে সাজাতে হলে বর্তমানের অনেক স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবে। যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ব্যপার। তাছাড়া এর সাথে কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের আবেগ-অনুভুতি জড়িত। তাই সরকারের উচিৎ হবে অবশ্যই ঐসব দলের সাথে আলোচনা করা এবং প্রয়োজনবোধে তাদেরকে আস্থায় নিয়ে লুই কানের ডিজাইনমত সংসদ ভবন এলাকাকে ঢেলে সাজানোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়া। তাতে যদি কিছুটা অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয় তবুও সেই সুযোগ গ্রহণ করা । অন্যথায় এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত পুরো দেশবাসীর কাছে হঠকারী হিসেবে চিহ্নিত হবে। এবং এ সিদ্ধান্ত দেশকে এক দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যেয়ের দিকে ঠেলে দেবে।
নাগরিক হিসেবে আমরা প্রত্যাশা সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা ভয়াবহ সামাজিক ও রাজনৈতিক বিপর্যেয়ের হাত থেকে দেশকে নিরাপদ রাখতে সচেষ্ট থাকবে।
©somewhere in net ltd.