নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পর্কে বলার তেমন কিছুই নেই। সাধারণ একটা ছেলে। অতি সাধারণ একটা মানুষ হয়েই থাকতে চাই..

মো: আব্দুল মোমেন

ভালো লাগে লেখা পড়তে,সামান্য কিছু লিখতে...আমার আমিতে বেশি ভালো থাকি।

মো: আব্দুল মোমেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেকার সমস্যা নিয়ে আমাদের ভাবনা প্রসঙ্গে।

১৫ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯

বরাবর,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ।

বিষয়ঃ বেকার সমস্যা নিয়ে আমাদের ভাবনা প্রসঙ্গে।

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী,
পত্রের শুরুতে এক বুক ভারাক্রান্ত বেকারের আর্তনাতের করুণ জীবনযাপনের শুভেচ্ছা রইল! আমরা বিশ্বাস করি,আপনারা সর্বদাই ভালো থাকেন দেশের জন্য,দশের জন্য।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশ নিয়ে আমাদের থেকে আপনি/আপনাদের বেশি ভাবনা। শুধু দেশ নিয়েই নয় বরং দেশের আপামর জনসাধারণকে নিয়েই আপনারা থাকেন সর্বদা ব্যতিব্যস্ত!

আজকে একজন বেকারের আর্তনাতের কথা বলবো না, বরং দেশের একটা বিরাট অংশের বেকারের কথা এই পত্রালাবে উঠে আসবে!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,কোটা সংস্কার/আন্দোলন কিংবা ছাত্রদের দাবী এসব নিয়ে আমার মোটেও মাথা ব্যথা নেই! কোটা নিয়ে তাই এখানে কোনো মন্তব্যও আমার সমীচীন হবে বলে মনেও করছি না!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা যারা নিম্মমধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে আমাদের জন্মের পরে অন্যের বাড়িতে কাজ করার প্রবণতা থাকে অনেক বেশি! বাবা মা জন্মই দেয় আমাদের অন্যের বাড়িতে কামলা খাটার জন্য! কিন্তু এই কামলা খাটানোর প্রবণতা কমিয়ে এনেছেন আপনারাই! দেশকে শিক্ষিত কিংবা শিক্ষার হার বৃদ্ধির লক্ষে স্বপ্ন দেখিয়েছেন পড়ালেখা করে বড় মানুষ হবার,বড় চাকরি করার।

আমাদের দোষ কোথায় বলুন? আমাদের বাল্যকালের অনেক বন্ধুই তো পড়ালেখা না করে অন্যের বাড়িতে কামলা খেটে আজকে ভালো আছে! বিয়ে-সাদী করে তারা বউ সংসার নিয়ে দিনযাপন করছে! অনেকেই ছোট থেকে পড়ালেখা না করে কাজ করেছে,পাশাপাশি দালানের বাড়ি কিংবা জমি জায়গা কিনে আজকে ভালো খাচ্ছে,ভালোই দিন যাচ্ছে!

অথচ আমাদের চিত্র দেখুন! অনেক স্বপ্ন নিয়ে পড়া লেখা করার জন্য অন্যের বাড়িতে কাজ করা হয়নি! কেউ কেউ কাজ করলেও টাকা জমাতে পারেনি, বরং উপার্জনের টাকা দিয়ে বই কিনেছেন,কলেজে গিয়েছেন। টাকা জমানোর কোনো সুযোগও তারা পায়নি! নিম্মমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরা পড়ালেখা করতে গিয়ে বাবার সীমাহীন কষ্টের উপার্জনটুকুও ব্যয় করেছেন সন্তানের পড়া লেখার পিছনে! শেষ বয়সে এসে সেই বাবা মায়েরা দু'চোখে স্বপ্ন দেখা শুরু করে আমার সন্তান একটা চাকরি করবে! মৃত্যুর পূর্বে সন্তানের চাকরির টাকায় খেয়ে বেঁচে অন্তত নিশ্চিন্তে মৃত্যুবরণ করার একটা আশা তারা করেন!!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এক বুক আশা নিয়ে লক্ষ বেকারের বছরের পর বছর ধরে অধ্যবসায়ের ফসল হিসেবে বেশ কিছু সার্টিফিকেটের মূল্যায়ন আমি চাই না! আমি কিন্তু প্রথম সারির মেধাবীও নই! তবে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে কিংবা শিক্ষিত যুবক হিসেবে আমার একটা চাকরি প্রাপ্ত! এই প্রাপ্তিটা আমি/আমরা দেশের কাছে, একটি স্বাধীন রাষ্টের কাছে পেতেই পারি! কারণ রাষ্ট্রই আমাকে পড়ালেখার প্রতি উদ্ধুদ্ধ করেছে!

আবেগের বর্শভূত হয়ে আমি পড়া লেখা করিনি! সত্যিকার মানুষ হিসেবে নিজেকে এই সমাজের মধ্যে জাহির করার জন্যও আমি পড়ালেখা করিনি! সত্যি বলছি,সমাজ আর এই সমাজের মানুষের কাছে মুখ দেখাতে হলে একটা চাকরি দরকার! একটা চাকরি!!

একজন বৃদ্ধ বাবাকে অন্তত ডাক্তারের চিকিৎসা করানোর জন্য হলেও একটা চাকরি দরকার! মায়ের বহুদিনের শখ পূরণ করার জন্য হলেও একটা চাকরি দরকার! যেই মা নিজের গলার হার,হাতের বালা কিংবা কানের দুল না কিনে বরং ঐ টাকা দিয়ে সন্তানের পিছনে পড়ালেখার ব্যয়ভার বহন করেছে এই ভেবে যে,আমার সন্তান একদিন চাকরি পেয়ে আমাকে হাতের বালা,কানের দুল কিংবা নাকের ফুল কিনে দিবে সেই সন্তান যখন পড়ালেখা শেষ করেও দিনের পর দিন নিজের অসহায়ত্বের কথা বাবা মাকে বলতে পারে না তখন আপনি/আপনারা একটু ভেবে দেখুন তো, এই সন্তানের বুকভরা আর্তনাতের কথা গুলো!!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা ২০/৩০ টাকায় কলেজের হোস্টেলে থেকে খাবার খেতে পারিনি! আমাদের প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে অসহায় বাবার কাছে গুনে গুনে ৩/৫ হাজার করে টাকা নিয়েছি! বাবার খুব শখ ছিল মায়ের জন্য ঈদে কিংবা পূজায় একটা শাড়ী কিনে দিবে! কিন্তু কয়জন বাবা পেরেছেন মায়েদের শাড়ী কিনে দিতে?

আমি আমার বাবাকেই দেখেছি,যিনি লন্ডাবাজারের জামা ছাড়া গায়ে পড়েন না! ২০/৩০ টাকার জামা দিয়ে বাবারা নিজের নতুন জামা কেনার শখ পূরণ করেন! বাবাও হয়ত ভাবেন,আমার ছেলে পড়ালেখা শেষ করে একদিন ব্রান্ডের জামা কিনে দিবেন! এই বাবার বকুভরা আশা আর স্বপ্ন গুলোকে মেরে ফেলার অধিকার তো আমাদের নেই!!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা কর্মসংস্থান পেলে কি শুধু বাবা মা বউ বাচ্চারই চাহিদা পূরণ করবো? নাকি এই দেশের জন্যও কিছু করবো! প্রতিটি মানুষ যাই করুক,সে তার নিজের দেশের জন্যই করে। আমাদের অবশ্য বিদেশে কিংবা সুইস ব্যাংকে কোনো একাউন্টও থাকবে না! কারণ আমাদের আয়ের পরিমাণের থেকে ব্যয়ভার হয় বেশি!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,এই কথা গুলো একারই আমার না! এই অব্যক্ত কথা গুলো লক্ষ লক্ষ বেকারের! আপনারা দেশে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেন,দেশের দুর্নীতির পরিমাণ কমিয়ে আনেন,দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য এই বেকার ছেলে গুলোকে কাজে লাগান দেখবেন একদিন এই বাংলাদেশ হবে বিশ্বের অন্যতম দেশ! আমরা মাথা উচুঁ করে দাড়াতে চাই!

লেখকঃ এম এ মোমেন
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,দিনাজপুর সরকারি কলেজ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
সহমত।

২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:১১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: অতিরিক্ত উচ্চ শিক্ষিতও বেকার সমস্যার একটা কারণ। কেউ অড জব করতে চায় না...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.