![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেদিন বৈশাখী হাওয়া মাতাল করে দিচ্ছিলো প্রকৃতিকে। বৃষ্টি আসার পূর্বমুহূর্ত বিধাতা সৃষ্টি করে রেখেছেন এক অপরুপ মায়া নিয়ে। ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে আকাশে ধূলোর ঝড় দেখছি।
বাতাসের মাতাল হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে রহিম কাকার লুঙ্গি। অদূরের মুদি দোকানে হু হু করে ডুকছে ধুলো। শাহিনের ছোট বোন বেরিয়েছে, কেনো বেরিয়েছে কে জানে। আরেকটু বাতাস বইলে যেনো উড়িয়ে নিয়ে যাবে মিথিকে।মিথি শাহিনের বোন।আমাকে ভালো করেই চিনে সে। মিথিকে উড়িয়ে নিয়েই গেলে হয়তো ভালো হতো। কখনো দেখা হয় নি পরী উড়ছে আকাশে। সে দেখার স্বাদটা না হয় মিটিয়ে নিতাম। তার চুল উড়ছে বাতাসে। এ যেনো ধূলোর মাঝে অপ্সরীর আবর্তন।
বৃষ্টি শুরু হলো। মিথি চলে গেলো। কখনোই কথা হয় নি। ফেসবুকে কেনো জানি আজ তাকে নক দিতে মন চাইলো, দিলাম।
প্রথম ম্যাসেজটা দিলাম এই ভাবে " ধূলোর ঝড়টা তোমার কারণে, পূর্ণতা পেয়েছে "!
সে দিলো, দুটো লজ্জার ইমো। সাথে লিখলো, না গিয়ে উপায় ছিলো না। মোবাইলের রিচার্জ শেষ হয়ে গিয়েছিলো। সেদিন থেকে মিথির সাথে অনেক কথা হতো। তার জীবনের সবকিছু শেয়ার করতো। সুখ দুঃখে আমাকে ফেসবুকে নক দিতো। হয়তো তার অনেক বন্ধু রয়েছে, কিন্তুু তাও সে আমাকে খুঁজে নিতো একজন পাশে থাকার বন্ধু ভেবে। শাহিনের সাথে যখন আড্ডা দিতাম, তখন ভুলেও মিথির সাথে চ্যাট করতাম না। শাহিন কি না কি ভেবে বসে আবার !
একদিন মিথি ফোনে ম্যাসেজ দিলো, আপনি একটু আসতে পারবেন? এক কাপ কফির সাথে না হয় বিকেলটা পার করলাম কিছুটা সময় !
আমি, বললাম TMT তে এসো, আসছি বিকেল ৪টায়,দেখা হবে। গিয়ে দেখলাম আমার আগেই সে উপস্থিত। অনেক কথাই হলো। এক পর্যায়ে বললো, ইদানিং কিছু সমস্যা মোকাবেলা করছি সমস্যাটা দিন দিন মনে হচ্ছে বেড়েই চলেছ।
মিথি তুমি চাইলে বলতে পারো। সে শুরু করলো, ইদানিং খুব বেশী প্রোপোজাল পাচ্ছি। আমি এতে খুব ডিস্টার্ব ফিল করছি। এমনকি রাস্তায়ও ছেলেরা একটু কেমন করে যেনো তাকায় !
স্বাভাবিক ব্যাপার এটা। তুমি এমনিতেই সুন্দর, তারউপর চুল যখন ছেড়ে হাঁটো। তখন মনে হয় রাস্তা দিয়ে কোন পরী হেঁটে যাচ্ছে। মনে হয় এই মাত্র নেমে এলো রুপকথার এক অপ্সরী।
আপনি মজা করছেন ! আমি একটা সল্যুশন চাচ্ছি। এভাবে ভালো লাগছে না থাকতে। ফেসবুকেও ম্যাসেজের উপর ম্যাসেজ আসছে।
আচ্ছা বুঝলাম। আমি তোমাকে একটা সাজেশন দিতে পারি, সেটা হচ্ছে তুমি হিজাব পড়তে পারো। হিজাবে তোমাকে বেশ স্মার্টও লাগবে। আর যদি, সাজেশন ফলোই করো, তাহলে বলবো ড্রেসের সাথে মিল রেখে কিনো।
সে হাসছে আর বলছে, আপনার কথা অনেক ভালো লাগলো। চলুন যাই, মার্কেটে। আজকে যেহেতু নীল ড্রেস পড়লাম, একটা নীল হিজাব কিনা যায় কিনা দেখি !
আমি তো তার কথায় অবাক। সে আরো বলছে প্রতি সপ্তাহে একবার বের হবেন আমার সাথে, আর একটা করে হিজাব কিনবো।
তারপরের কয়েকদিন কথা হয় নি। একদিন নক দিলো ফেসবুকে, আপনার কথায় অনেক কাজ হয়েছে। তাছাড়া বাসা থেকেও বাহবা পাচ্ছি। আমি নাকি অনেকদিন পর ভদ্র হলাম ! ভ্যাইয়া জিগাস করলো, কিরে তোর এতো পরিবর্তন কেনো ! আমি মনে মনে তখন আপনার কথাই ভাবছিলাম। আমি আগে থেকে অনেক শান্তি পাচ্ছি।
আপনাকে একটা দিন ট্রিট দিতে চাই। চলেন নেভাল যাই, সমুদ্রের হাওয়া আর মচমচে পেঁয়াজু খাওয়াবো আপনাকে।
আমি মনে মনে ভাবি, এমন মানুষের কথা কি না রেখে থাকা যায় !
নেভালের ব্লকে বসে, মিথি তার ফেসবুক অন করলো। টুং টাং শব্দে কান ঝালাপালা হওয়ার আগেই, সে মোবাইল সাইলেন্ট করে দিলো। আর বললো, কি এক যন্ত্রণা, মানুষের খাই দাই কাম নাই, শুধু ম্যাসেজ পাঠায়।
আমি হাসছি দেখে জিগাস করলো হাসেন কেনো ! আমি বললাম তুমি চাইলে, এটা থেকেও পরিত্রাণ পেতে পারো ! যদি তোমার ফেসবুকের ছবিগুলা সরিয়ে ফেলো।
সে বললো, কি বলেন এতোগুলা ছবি সরিয়ে ফেলবো ! ছবি দিলে লাইক কমেন্ট অনেক ভালো লাগে।
আমি বললাম, এটা তোমার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার সাজেশন ছিলো আরকি !
তার অনেকদিন খোঁজ নেই। একদিন চা দোকানে চা খাচ্ছি, মিথি কল দিয়ে বললো, বাহিরে আসেন আমি একটু সামনে দাঁড়াই আছি।
গেলাম সাথে সাথে বললো, ধন্যবাদ।
আমি দেখলাম, তার অনেক পরিবর্তন। ড্রেসের সাথে, হিজাব তো মিল করে পড়েছেই সাথে নেকাপও পড়েছে। মিথিকে দেখে এতো ভালো লাগছে, বলতেও পারছি না।
এখন ফেসবুকেও অনেক কম ম্যাসেজ পাই। রাস্তাঘাটে তেমন প্যারা খাই না। আপনি যে কি অসাধারণ সাজেশন দিয়েছেন বলার মতো না। প্রথম দুদিন খারাপ লাগতেছিলো, ছবিগুলা সব লুকিয়ে ফেলবো Only me options এ!
কিন্তুু, ছবি লুকিয়ে এতো ভালো ফলাফল পাবো, ভাবিনি কখনো। তারপর কয়েকদিন পর ফেসবুকে দেখলা ন্যাকাপ পড়া কিছু মডেলের ছবি। দেখে অনেক ভালো লাগলো। তারপর থেকে ন্যাকাপ পড়া শুরু করলাম। আস্তে আস্তে অনেক পরিবর্তন শুরু হলো। অনেক শান্তি লাগে সেটা ফেসবুকে কিংবা রাস্তায় চলাচলে।
যাক মিথি, শুনে ভালো লাগলো, একটা সমস্যা থেকে বের হতে পারলে। সাথে তোমারও অনেক ভালো লাগছে, শান্তি পাচ্ছো। এইটুকু শুনেই মনটা খুশিতে ভরে উঠলো।
চলো তোমাকে বাসায় পৌছে দিয়ে হাসি..
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:২০
রব্বানী রবি বলেছেন: ভালই বলেছেন। আমরা পুরুষরাই আমাদের মেন্টালিটি পরিবর্তন করতে হবে
২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:২৯
নতুন বলেছেন: দুনিয়াতে বেশির ভাগ সমাজেই কিন্তু নারীদের এমন হিজাব পড়ার জন্য তাগাদা দেয় না সমাজ।
অনেক সমাজেই নারীরা ওড়না পরেনা। কিন্তু রাস্তায় তাদের টিজ করেনা। আমাদের দেশের পাবত` অঞ্চলেই গেলে দেখতে পারবেন ওদের নারীরা ওড়না পরেনা কিন্তু ছেলেরা টিজও করেনা।
কারন টা কি?
সমাজের ব্যথ`তাকে নারীর উপরে লম্বা কাপড় দিয়ে ঢাকছি আমরা।
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:০৫
রব্বানী রবি বলেছেন: আপনার সাথে আমি একমত। কিন্তুু, আমাদের সমাজ সে জায়গাটুকু তৈরী করতে এখনো পারে নি
৩| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৬
এ্যান্টনি ফিরিঙ্গী বলেছেন: নতুন ভাইয়ের এই কথাগুলো অনেক পুরোনো।
যাই হোক লেখাটা ভালো লাগলো।
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:০৬
রব্বানী রবি বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫৪
দিলের্ আড্ডা বলেছেন: এমন পরামর্শ আজকাল কজনই বা দেয় মেয়েদের..<
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:০৬
রব্বানী রবি বলেছেন: দিলে, আমরা আজ অনেক এগিয়ে থাকতাম
৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০২
রাজীব নুর বলেছেন: এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য- কঠিন আইন করতে হবে।
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১৯
রব্বানী রবি বলেছেন: ঠিক বলেছেন। তবে আইন কয়জনই বা মানে !
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১২
নতুন বলেছেন: একজন মানুষ সাভাবিক ভাবে জীবন জাপন করতে পারবেনা এই সমাজে? তাকে মুখ ঢেকে চলতে হবে?
সমাজের কিছু দুস্টু মানুষের জন্য সবাই মেয়েদের ঘরে বন্ধি করে ফেলেছে। মানুষ হিসেবে তার মুক্ত নিশ্বাস নেবার অধিকারটুকুও সমাজে দিতে চায় না।