নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিবনটা আসলেই অনেক সুন্দর!এতো বেশি সুন্দর যে, মাঝে মাঝে অসহ্য লাগে।যাহা ভাবি তাহা কেন জানি হয়েও হয় না। স্বপ্ন পূরনে ব্যর্থ হয়ে ঘুরে ফিরি। কবে হবে এর শেষ মরন এলেই বুঝি।

parvaj

ভালোবাসার মানুষ শুধু সে নয়, যে তোমার জিবনে প্রথম এসেছিলো,ভালোবাসার মানুষ তো সে যে তোমার জিবনে ছিলো আছে এবং থাকবে সারা জিবন।

parvaj › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোলা চিঠি

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫২



তারিখঃ ২৮/১১/২০১৭
বরাবর
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

বিষয়ঃ আসন্ন ১২রবিউল আওয়াল পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জসনে জুলুসের অনুমতি নিয়ে প্রশাসনের তাল-বাহানা প্রসঙ্গ।

জনাবা,
বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে যা স্বাধীন হয়। রেইসকোর্স ময়দানে ৭ মার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রায় ১৯ মিনিট বক্তব্যের অন্যতম চেতনার ও ভরসাস্থল ছিল “রক্ত যখন দিয়েছি আরো দেব তবুও বাংলাদেশের মানুষকে মুক্ত করবো ইনশা আল্লাহ”। “ইনশা আল্লাহ” আরবি ও ইসলামী শব্দ, যার অর্থঃ আল্লাহ যদি চান।
আমাদের প্রিয় মাতৃকা বাংলাদেশের ৯২% মানুষ মুসলমান, তারা ধর্ম-কর্ম করতে ভালোবাসেন ও পছন্দ করে। রমজান, শবে কদর, শবে বরাত, শবে মিরাজ, ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (দ.), চারদিনা, চল্লিশা, বড়পীরের ফাতেহায়ে ইয়াজদাহুম, গরীবে নাওয়াজের ফাতেহাসহ যাবতীয় ধর্মীয় বিশেষ দিবস ও রজনীগুলো অনেক গুরুত্ব দিয়ে পালন করে থাকে। বিশেষ করে ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে জসনে জুলুস, আনন্দ শোভাযাত্রা, শুকরিয়া র্র্যালী, আনন্দ মিছিল করে থাকে। এ উপলক্ষে অনাথ-এতিমদের মধ্যে উত্তম খাদ্য বিতরণ করে থাকে।
আগামী ২ডিসেম্বর’১৭ বাংলাদেশে ১২রবিউল আওয়াল তথা ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে সরকারি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যকে ৩০ নভেম্বর তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে আসছে খ্রিস্ট ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। তিনি ২ডিসেম্বর বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।
এ দিকে রাজধানী ঢাকায় ২ ডিসেম্বর জসনে জুলুস উদযাপন করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর কাছে ৬৮’টি সুন্নি দরবার/সংস্থা/সংগঠন/সমিতি আবেদন করেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এখন পর্যন্ত ২ ডিসেম্বরের জন্য একটি জুলুসেরও অনুমতি মিলেনি। পোপের আগমনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার অযুহাতে সকল জুলুসের আবেদনকে “নাকচ” করার কথাও শুনা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, বাংলাদেশে ৯২% মুসলমান আর .৪% খ্রিস্টান তথা প্রতি ১০০০জন মানুষের মধ্যে ৯২০জন মুসলমান আর খ্রিস্টান মাত্র ৪জন। এটা কারোই ভুলে গেলে চলবে না।

অতএব, বিনিত প্রার্থনা এই যে, ১২রবিউল আওয়াল পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জসনে জুলুস বা আনন্দ শোভাযাত্রার অনুমতি প্রদান করে মুসলমানদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশের আবেদন করছি।

নিবেদক
মুহাম্মদ মাসুদ পারভেজ
উত্তর সর্তা, রাউজান
ফোনঃ
E-mail:[email protected]

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৪২

তার ছিড়া আমি বলেছেন: আমার জানামতে ১২ই রবিউল আওয়ালে জশনে জুলুশ, শোভা যাত্রা ইত্যাদি পালন শরীয়ত সম্মত নয়। অতএব অনুমতি না দেয়াই ভালো।

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৩৯

কাউয়ার জাত বলেছেন: পাকিস্তানি পীর নিজ দেশে ভাত পায় না এই দেশে আসে জশনে জুলুস করতে!
পাকিস্তান থেকে আমদানী করা বিদআত এই দেশে করতে না দেয়াই প্রশাসনের কর্তব্য।

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫২

হাঙ্গামা বলেছেন: নবীরে তো খুব পেয়ার করেন দেখা যাইতেছে।
তা জুলুস আর শোভা যাত্রা কোন হাদিসে পাইসেন?
ইস্যু বানাইতে চাইলে তো অভাব নাই, এইসমস্ত ল্যাংড়া খোঁড়া ইস্যু কইত্তে পয়দা হয়?

৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


পোপ বাংলাদেশে পা রাখিলে দেশ অপবিত্র হয়ে যাবে; পোপের আগমণ ঠেকানো হোক।

প্রতিদিন জসনে জুলুস করা হোক

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০৪

কানিজ রিনা বলেছেন: পোপ ধার্মীক লোক ধর্মীয় কোনও অনুষ্ঠান
তার জন্য বাতিল হোক সেটা তিনি চাইবেন না। এবং তিনি রহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য
এগিয়ে এসেছেন। কারন তিনি মুসলিদের ঘৃনা
করেন না। ইহাই ধর্ম গুরুদের মহান শিক্ষা।
খৃষ্টান ধর্মের যীশু আমরা ইশা আঃ বলি ও
সম্মান করি নিশ্চয় পোপ মোহাঃ সাঃ
সম্মান করেন। মোহাঃ সাঃ ওফাত বা জ্ম্মদিন
উজ্জাপন কেউ পছন্দ করে কেউ পছন্দ করেনা কারন ইসলাম দলে বিভক্ত। তাই নিয়ে
হানাহানি কথা চালাচালি আমরা নিজেরা নিজের ক্ষতি করছি। যাহারা আল্লাহকে বিশ্বাস
করে তাহারা বুঝতে হবে আল্লাহ ন্যায় অন্যায়
দেখছেন। তিনি বিচারক। ধন্যবাদ।

৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সমাজে দীর্ঘ কাল ধরে এটাই প্রচলিত যে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) ১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করেছিলেন এবং তিনি ওই একই তারিখে ওফাত লাভ করেন । নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম ও ওফাতের তারিখ কোনোটিই নিশ্চিতভাবে ১২ রবিউল আওয়াল বলা ঠিক নয়। অনেক গবেষকের মতে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) জন্ম হিজরী পূর্ব ৫৩ সালের ৯ই রবিউল আউয়াল সোমবার ও ওফাতের তারিখ ২ রবিউল আউয়াল সোমবার-কে সহীহ বলেছেন)। সধর্মীদের অজ্ঞতা আর বিধর্মীদের চক্রান্তের কবলে পড়ে হয়ত কোন এক ভাবে এই সঠিক ইতিহাসটির বিকৃতি ঘটেছে।
ইসলামী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত “সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ” এর ২য় খণ্ডে বর্ণিত আছে যে “ হযরত রাসূল (সাঃ) ৬৩ বছর বয়সে ১লা রবিউল আওয়াল, সোমবারের সূর্যাস্তের কিছু পূর্বে ইন্তিকাল করেন ।” এই তথ্য দূর-দূরান্তে পৌছাতে সূর্য অস্তমিত হয়ে যায়। যেহেতু চন্দ্র মাসের তারিখ গণনা শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে। তাই দূর-দুরান্তে যখন রাসুল (সাঃ) এর ওফাত লাভের সংবাদ গিয়ে পৌছায় ততক্ষণে ২রা রবিউল আওয়াল পরে গেছে। তাই কেও কেও বর্ণনা করেছেন যে রাসুল (সাঃ) ২রা রবিউল আওয়াল ওফাত লাভ করেছেন। যার ফলে রাসূল (সাঃ) এর ওফাতের তারিখ ১/২ রবিউল আওয়াল হিসেবে প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে চক্রান্তকারীরা ১/২ এর মাঝ থেকে “/” চিহ্নটি তুলে দিয়ে এই তারিখটিকে ১২ তে পরিণত করে।

সে যাই হোক ইসলামে জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন করার কোনো অনুমতি নেই। কোনো সাহাবী, তাবেয়ী, ইমাম, উলামায়ে উম্মাহ কেউ এমনটি করেন নি; বরং করাকে বিদআত বলেছেন। সুতরাং তা পরিত্যাজ্য। আল্লাহ আমাদের সকল প্রকার রসম-রেওয়াজ ও বিদআত থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৭

মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেছেন: ইসলামে জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন করার কোনো অনুমতি নেই। আল্লাহ আমাদের সকল প্রকার বিদআত থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪

আব্দুল মুকিম রিয়ন বলেছেন: ১২ রবিউন নূর শরিফ কেন শোকের দিন নয়?কেন আমরা আনন্দ পালন করে থাকি?
:
১ম ভাগ:
আমাদের সমাজের মধ্যে অনেক বাতিল ফিরকার অনুসারীরা- আমরা যারা ১২ রবিউল আউয়াল শরীফ পবিত্র 'ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)' পালন করে থাকি তাদেরকে বলে থাকে যে, রাসুল পাক (দ.) তো ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন নি, তাহলে তোমরা ১২ রবিউল আউয়াল তা পালন করো কেন?
আমরাও মানি রাসুল পাক বিলাদাত শরিফ নিয়ে মতানৈক্য আছে, কিন্তু উলামায়ে কিরামগণ এবং উম্মতে মুহাম্মাদীর সিংহভাগই ১২ রবিউল আউয়াল এর পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন এবং সহীহ হাদিস শরীফ থেকেও এটা নিশ্চিত প্রমানিত হয়েছে।নিম্নোক্ত হাদিস শরিফদ্বয় লক্ষ করুন:

১। হাফিজে হাদীস হযরত আবু বকর ইবনে আবী শায়বা (রহ্.) থেকে বর্ণিত, যেটা বিশুদ্ধ সনদে হাদীস শরীফে বর্ণনা করেন -
ﻋﻦ ﻋﻔﺎﻥ ﻋﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﻣﻴﻦ ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﻭﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﻭﻟﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻋﺎﻡ ﺍﻟﻔﻴﻞ ﻳﻮﻡ
ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ ﻋﺸﺮ ﻣﻦ ﺷﻬﺮ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻻﻭﻝ
অর্থ : হযরত আফফান (রহ্.) হতে বর্নিত, তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (স.)-এর সাহাবী হযরত জাবির ও হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, হুজুর পাক (স.)-এর বিলাদাত শরিফ হস্তি বাহীনি বর্ষের (যে বছর আবরাহা নিজের হাতি সমূহ ও তার সৈন্য বাহিনী নিয়ে কাবা শরীফ ধ্বংসের করতে গিয়েছিল, তখন আল্লাহর আদেশে ছোট ছোট আবাবীল পাখির পাথরের আঘাতে তারা গোবরের ন্যায় গলিত হয়েছিল।)১২ রবিউল আউয়াল সোমবার দুনিয়াতে তশরিফ আনেন।"
[সূত্র: মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, বুলুগুল্ আমানী শরহিল্ ফাতহুর্ রব্বানী,আল বিদায়া ওয়ান্ নিহায়া]

২। ইবনু হিশাম বলেন, আল্লামা তাবারী ও ইবনু
খালদূনও বলেন ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার দিনে রাসুলুল্লাহ (স.) জন্মগ্রহণ করেন।
[সূত্র: তাহযীবু সীরাতে ইবনু হিশাম্ ৩৬ নং পৃঃ, তারিখুল উমাম্ আলমুলক, ১ম খন্ড, ৫৭১ নং পৃঃ]

অতএব, উপর্যুক্ত সহীহ হাদিস শরীফদ্বয়ের আলোকে এটা স্পষ্ট প্রমানিত হয় যে, রাসুলুল্লাহ (দ.) ১২ রবিউল আউয়াল, সোমবার দিনে (ফজর ওয়াক্তে) বিলাদাত শরিফ লাভ করেন।
:
২য় ভাগ:
আমরা মদিনাওয়ালার রাসূলুল্লাহ্ (দ.)-এর আশেক, তাঁর পাগল গোলামেরা ১২ রবিউল আউয়াল রাহমাতুল্লিল আলামিন নবীজি (দ.)-এর শুভাগমনে খুশি হয়ে জাশনে জুলুস ও ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে থাকি।কিন্তু রাসুল বিদ্বেষী একদল মুনাফেক মুসলমান বলে থাকে ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে তো রাসুল (দ.) মারা গেছেন!(নাউজুবিল্লাহ)
তাহলে খুশি প্রকাশ কর কেন? এই দিন শোক প্রকাশ করোনা কেন?

এটা একটা শয়তানি যুক্তি মাত্র।আসুন তাদের এই শয়তানি যুক্তির জবাব আমরা কুরআন ও সুন্নাহর দলিল দিয়েই দেবো ইনশাহ আল্লাহুল আজিজ।কেউ যদি আপনাকে বলে নবীজি মারা গেছেন, এটা নবীজির শানে চরম বেয়াদবী এবং জঘন্য কুফরী।কেননা নবীজি (দ.) হলেন,
'হায়াতুন নাবী'।আজ থেকে ১৪৫০ বছর পূর্বে নবী করিম (দ.) কিছু সময়ের জন্য মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেছিলেন মাত্র, কিন্তু আমাদের মত মারা যাননি।মারা যাওয়ার অর্থ হলো দেহ থেকে রূহ স্থায়ীভাবে পৃথক হয়ে যাওয়া।কিন্তু রাসুলুল্লাহ (স.)-এর রূহ সাময়িক সময়ের জন্য পৃথক হয়েছিল মাত্র।

১। হাদিসে কুদসীতে এসেছে "সুম্মা রাদ্দাল্লাহু
রুহুয়াহু সুবা রুহুয়াহু", অর্থাৎ নবীজির মৃত্যুর পর উনার রূহ মুবারক সাথে সাথেই আল্লাহ তায়ালা উনার দেহ মুবারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।"
আবু দাউদের হাদিস হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা ২য় খন্ডের, ৭৭ নং পৃষ্ঠায় এসেছে, আল্লাহর হাবিব ইরশাদ করেন, "এই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যখনি কোন লোক আমাকে সালাম দেয়, আল্লাহ আমার রুহ তার নবীর দেহে ফিরিয়ে দেন আমি রাসুল নিজের মুখে আমার উম্মতের সালামের জবাব দেই।"

২। সুনান বাগজারে সহি সনদে বর্ণিত হাদিস, আল্লাহর হাবিব ইরশাদ করেন উনার সাহাবিদেরকে, "আমার ওফাতের পর তোমরা বিলাপ করে কেঁদোনা। কেননা আমি রাসুল সবার মত মারা যাবোনা। আমি রাসুল রওজা শরিফ হতে তোমাদের আমল দেখতে পাবো।যখন দেখবো যে, তোমরা ভালো কাজ করছো তখন আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবো আর যখন দেখবো তোমরা খারাপ কাজ করছো তখন আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবো।"

৩। আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন,
ﻭَﻻَ ﺗَﻘُﻮﻟُﻮﺍْ ﻟِﻤَﻦْ ﻳُﻘْﺘَﻞُ ﻓِﻲ ﺳَﺒﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻣْﻮَﺍﺕٌ ﺑَﻞْ ﺃَﺣْﻴَﺎﺀ
ﻭَﻟَﻜِﻦ ﻻَّ ﺗَﺸْﻌُﺮُﻭﻥَ ‏( ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ 154 - )
"আল্লাহর পথে যারা শহিদ হয় তাদের তোমরা মৃত বল না। বরং তারা জীবিত। তবে তা তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না। [সূরা বাকারা-১৫৪]
উক্ত আয়াতের স্পষ্ট ভাষ্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, শহিদগণ কবরে জীবিত।
আর ইংগিতের সাথে একথাও বুঝাচ্ছে যে, শুধু আমাদের নবী নয় বরং নবীগণও (আ.) কবরে জীবিত। কেননা নবীগণের মর্যাদা শহীদদের তুলনায় অনেক উর্দ্বে, বহু উচ্চ তাদের মর্যাদা। সুতরাং শহীদগণ যদি কবরে জীবিত থাকেন, তাহলে নবীগণ (আ.) কেন হবেন মৃত? তারা অবশ্যই জীবিত।

ﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲ ؛ ﺃَﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ :
ﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ ﺃﺣﻴﺎﺀ ﻓﻲ ﻗﺒﻮﺭﻫﻢ ﻳﺼﻠﻮﻥ ‏( ﻣﺴﻨﺪ ﺍﻟﺒﺰﺍﺭ - ﻣﺴﻨﺪ
ﺃﺑﻲ ﺣﻤﺰﺓ ﺃﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ

৪। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুললুল্লাহ্ (স.) ইরশাদ করেছেন,-"নবীরা কবরে জীবিত। আর তারা সেখানে নামায পড়েন (সেই জায়গাও)।
[সূত্র: মুসনাদুল্ বাজ্জার, হাদীস নং-৬৮৮৮, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৩৪২৫, সহীহ কুনুযুস সুন্নাতির্ নববিয়্যাহ, হাদীস]
হায়াতুন্নাব্বী প্রসঙ্গে কুরআন ও হাদিসে শত শত দলিল রয়েছে।অতএব, রাসুলুল্লাহ (স.) মারা গেছেন বলা মানে কুরআন ও হাদিস অস্বীকার করা আর কুরআন ও হাদিস অস্বীকার করা মানে কাফির হয়ে যাওয়া।

৫। হযরত আবু সাঈদ আল খুদুরী (রা.) বর্ণনা করেন -"আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন আমরা কোন ওফাত প্রাপ্তের উপর তিন দিনের পর আর যেন শোক প্রকাশ না করি, কিন্তু স্বামীর জন্য ৪ মাস ১০ দিন পর্যন্ত শুধু
স্ত্রী শোক প্রকাশ করতে পারে।"
[সূত্র: বুখারী শরীফঃ ২য় খন্ড, ৮০৪ নং পৃঃ, মুসলীম শরীফঃ ১ম খন্ড, ৮৮৬-৮৮৮ নং পৃঃ, তিরমিযি শরীফ, আবু দাউদ শরীফ ইত্যাদি]
এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, তিন দিনের পর
ওফাতের শোক প্রকাশ করা বৈধ নয়।
:
অতএব, কুরআন মাজিদ ও হাদিস প্রমান করে আমার নবীজি (দ.) 'হায়াতুন্নাবী';তাই উনাকে আমরা মৃত ভাবি না। আর উনাকে যারা মৃত ভাবে বা মৃত বলে তারা চরম পর্যায়ের গাফেল, বেয়াদব এবং আক্বিদাগত ভাবে কুফরী করে।আর তাদের কথায় তারাই মুর্খ তা প্রমান করে।কেননা এরা হাদিস পড়েনি, আর মিথ্যা ফতুয়াবাজি করে।আর নবীজি বলছেন উনার জন্য শোক প্রকাশ না করার জন্য এবং যেকোনো মৃতের জন্য তিন দিনের বেশি শোকপ্রকাশ না করার জন্য।

সুতরাং, আমরা রাসুলুল্লাহ (দ.)-এর হাদিস মানি বলেই এই দিন শোক প্রকাশ করিনা।এখন যারা রাসুল (দ.)-কে মৃত বলে বা এইদিন শোকপ্রকাশ করে তারা কি মুমিন হতে পারে?এরা কি হাদিস শরিফের অনুসরণ করে?এরা কি মুর্খ-মুনাফেক নয়?

কৃতিত্ব: কাজী শাহানারা সাহিন আল ক্বাদেরী আশরাফী

৯| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৬

আব্দুল মুকিম রিয়ন বলেছেন: নবিজীকে পেয়ে আমরা যে জাশনে জুলুস বা
খুশি হয়ে মিছিল বা র্যালি করে থাকি, তাও কিন্তু নতুন
কিছু নয়।বরং এটাও সাহাবীদের সুন্নত।মুসলিম
শরীফের ২য় খণ্ডের ৪১৯ পৃষ্ঠায় হাদিসে বর্ণিত
আছে, "রাসূল স্বাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যেদিন হিজরত করে মদিনা শরীফে আগমন
করেছেন, ওইদিন মদিনাবাসী আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা
সাহাবীগন রাসূল স্বাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
আগমনের শুকরিয়া হিসেবে আনন্দ মিছিল
করেছিলেন এবং 'তালায়াল বাদরু আলাইনা...' এই নাত
পাঠ করেছিলেন।কেউ কেউ বাড়ির ছাদের উপর
আরোহন করেছিলেন, আবার অনেকে রাস্তায়
ছড়িয়ে পড়েছিলেন এবং 'ইয়া রাসূলাল্লাহ স্বাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম' শ্লোগান দিয়ে আনন্দ প্রকাশ
করেছিলেন।হ্যাঁ, এটাইতো আমরাও করে থাকি---
সাহাবিদের দেখানো পথে হেটে, তাঁদের
সুন্নতের ওপর আমল করে।আর এই খুশি উদযাপন
করতে বলেছেন আল্লাহ সূরা ইউনুস-এর ৫৮
আয়াতে।আলহামদুলিল্লাহ।

এছাড়াও উমার (রা.)-এর ইসলাম গ্রহণের প্রসিদ্ধ ঘটনা
যা আমরা সকলেই জানি এবং যা ইবনে ইসহাক্বের
সিরাহ সহ অসংখ্য সিরাতের কিতাবে পেয়ে থাকি
যে, উমার (রা.) ইসলাম গ্রহন করলে সাহাবিগন
রাসুলে আরাবি স্বাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
কাছে আবেদন জানান যে, তাঁরা ইসলামের সুমহান
বানী ও উমার (রা.)-এর ইসলাম গ্রহণের কথা পুরো
মক্কায় প্রকাশ্যে ছড়িয়ে দিতে চান মিছিলের
মাধ্যমে [কেননা উমার (রা.)-এর মুসলমান হওয়ার
আগে ইসলাম প্রচার চুপি চুপি করে করা হত,
কুফফারে মক্কার অত্যাচারের ভয়ে]। রাসুল
স্বাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের অনুমতি দিলে
তাঁরা ৪০ জন সাহাবি একে অপরের হাত ধরে মক্কার
অলি-গলিতে 'লাইলাহা ইল্লাল্লাহ' স্লোগান দিয়ে
মিছিল করেছিলেন।আলহামদুলিল্লাহ।

সাহাবিগন উমারকে (রা.)-কে পেয়ে খুশিতে মিছিল
করতে পারলে আমরা কি উমার (রা.) এর নবি, সমস্ত
নবিদের সর্দার, শাফায়াতের কাণ্ডারী, আমাদের
ঈমান-জান কে পেয়ে খুশিতে মিছিল করতে
পারিনা?

লিখেছেন: ডক্টর আল্লামা সৈয়দ ইরশাদ আহমেদ
আল বুখারী

১০| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৮

আব্দুল মুকিম রিয়ন বলেছেন: তোমরা যারা মিলাদুন্নবী (দরুদপাঠ)-কে বিদআত বল...

[উপর্যুক্ত কমেন্টদ্বয় দেখ]

১১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:১৬

মাসুম রৌদ্র বলেছেন: আব্দুল মুকিম রিয়ন, আপনি বলেছেন "আমরা মদিনাওয়ালার রাসূলুল্লাহ্ (দ.)-এর আশেক, তাঁর পাগল গোলামেরা " । আপনি শিরক করেছেন। আমরা রাসুলের গোলাম না আল্লাহর গোলাম ।
আপনি বলেছেন ""হাদিসে কুদসীতে এসেছে "সুম্মা রাদ্দাল্লাহু
রুহুয়াহু সুবা রুহুয়াহু", অর্থাৎ নবীজির মৃত্যুর পর উনার রূহ মুবারক সাথে সাথেই আল্লাহ তায়ালা উনার দেহ মুবারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।"
সেটার তথ্য দেননি রাসুলের মৃত্যুর পর সেটা কিভাবে আপনার কাছে পৌছাল । উল্লেখ্য এখানে মৃত্যু উল্লেখ করা হয়েছে ।

আপনি লিখেছেন ""আবু দাউদের হাদিস হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা ২য় খন্ডের, ৭৭ নং পৃষ্ঠায় এসেছে, আল্লাহর হাবিব ইরশাদ করেন, "এই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যখনি কোন লোক আমাকে সালাম দেয়, আল্লাহ আমার রুহ তার নবীর দেহে ফিরিয়ে দেন আমি রাসুল নিজের মুখে আমার উম্মতের সালামের জবাব দেই।" এটা যদি হাদিস হয় তবে রাসুলের জীবিত অবস্থার কথা বলা হয়েছে
"আল্লাহর পথে যারা শহিদ হয় তাদের তোমরা মৃত বল না। বরং তারা জীবিত। তবে তা তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না। [সূরা বাকারা-১৫৪] এই আয়াতে শারীরিক জীবিতের কথা বলা হয় নি, রুহ বা কর্মের বেঁচে থাকার কথা বলা হয়েছে । আল্লাহ বলেছেন কুল্লি নাফসিন যায়েকাতুল মঊত। প্রত্যেক প্রানীই মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করবে ।
আল কুরআনের কোন আয়াত বা কোন হাদীস দ্বারা কারো জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালনের কোনই প্রমাণ পাওয়া যায় না।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে যাঁর সবচেয়ে বেশী ভালোবাসতেন সে সব সাহাবাগণ বিশ্বনবী (সাঃ) এর জীবিতকালে অথবা তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর জন্ম বা মৃত্যু বার্ষিকী পালন করেননি। এমনকি রাসূল (সাঃ) এর একমাত্র পূত্র ইবরাহীম ছাড়া বাকী পুত্রগণ তাদের জন্মের এক বছরের মধ্যেই মারা যায়। শুধু মাত্র ইবরাহীম ষোল মাস বয়সে মারা যায়। এজন্য নাবী (সাঃ) এতই দুঃখিত হন যে, তাঁর চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত) কিন্তু এই আদরের ছেলেটির জন্মের দ্বিতীয় বছরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার “মৃত্যু” অথবা “জন্মোৎসব পালন করেননি।

ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম দিবস,মৃত্যু দিবস পালন করা এবং এ উপলক্ষে যে সমস্ত আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয় তা হারাম এবং বিদআত। জন্ম দিবস এবং মৃত্যু দিবস পালনের কোন প্রমাণ কিংবা চর্চা রাসুল সা. কিংবা তাঁর সাহাবী (রাঃ) দের মাধ্যমে হয়েছিল বলে কোন প্রমাণ নাই।
ইসলামে সকল হুকুম আহকাম, আচার-অনুষ্ঠান সুনির্ধারিত ও কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস দ্বারা প্রমাণিত।কিন্তু নবী কারীম সা.এর জন্ম দিবস,মৃত্যু দিবস পালনের কথা কোথাও নেই। এমনকি নবী প্রেমের নজীরবিহীর দৃষ্টান স্থাপনকারি সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুমদের কেহ এ ধরনের কাজ করেছেন বলে কোন প্রমাণ নেই।

লাদ ও ঈদে মীলাদুন্নবীর অর্থঃ আরবী ‘মীলাদ’ শব্দের অর্থ জন্মের সময়।

(আল-কামূস ১ম খন্ড, ২১৫ পৃঃ, নওলকিশোর ছাপা, মিসবা-হুল লুগা-ত ৯৫৪ পৃঃ, ৫ম খন্ড সংস্করণ, দিল্লী ছাপা)।

এবং ঈদে মীলাদুন্নবীর অর্থ হচ্ছে নাবীর জন্মদিনের আনন্দোৎসব। বর্তমানে ১২ই রবিউল আউয়ালকে ঈদে মীলাদুন্নবী অর্থাৎ নাবী (সাঃ) এর জন্মের আনন্দ উৎসব দিবস বলে জোর প্রচার করা হচ্ছে। যদিও রাসূল (সাঃ) এর জন্ম দিবস নিয়ে বিভিন্ন রকম মত আছে তার মধ্যে ১২ই রবিউল আউয়ালের মত হচ্ছে অন্যান্য মতের তুলনায় দুর্বল। এ সম্পর্কে সামনে আলোচনা করা হয়েছে।

মীলাদ ও মীলাদুন্নবীর ইতিহাসঃ নাবী (সাঃ) এর সময়, খুলাফায়ে রাশেদীনদের সময় বা উমাইয়া খলিফাদের যুগে এগুলো ছিল না। এর বীজ বপন করে আব্বাসীয় খলিফাদের যুগে জনৈক মহিলা। মাদীনাহ শরীফে প্রিয় নাবী (সাঃ) এর রওযা মোবারক যিয়ারত করার ও সেখানে দু’আ করার যে ব্যবস্থা রয়েছে ঠিক সেভাবে আল্লাহর নাবী (সাঃ) মক্কায় যে ঘরে ভূমিষ্ট হয়েছিলেন সেই ঘরটির যিয়ারত ও সেখানে দু’আ করার প্রথা সর্বপ্রথম চালু করেন বাদশাহ হারুনুর রশিদের মা খায়যুরান বিবি (মৃত্যু ১৭৩ হিজরী ৭৮৯ ঈসায়ী) পরবর্তীকালে ১২ই রবিউল আউয়ালকে আল্লাহর নাবী (সাঃ) এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস ধরে নিয়ে তীর্থ যাত্রীগন ঐ ঘরে এসে দু’আ করা ছাড়াও বারকাতের আশায় ভূমিষ্ট হওয়ার স্থানটি স্পর্শ ও চুম্বন করতো।

(ইবনু জুবায়ের ১১৪, ৬৩ পৃঃ ও আল-বাতালুনী ৩৪ পৃঃ)

এখানে ব্যক্তিগত যিয়ারত ছাড়াও একটি উৎসব অনুষ্ঠিত হতো। তা ইবনু জুবাইরের (মৃত্যু ৬১৪ হিঃ) গ্রন্থের ১১৪ ও ১১৫ পৃষ্ঠায় প্রথম জানা যায়।

অতঃপর হিজরীয় চতুর্থ শতকে উবাইদ নামে এক ইয়াহুদী ইসলাম গ্রহণ করে। তার নাম রাখা হয় উবাইদুল্লাহ। তিনি নিজেকে ফা-তিমাহ (রাঃ) এর সম্ভ্রান্ত বংশধর বলে দাবী করেন এবং মাহদী উপাধি ধারণ করেন। এঁরই প্রপৌত্র (পৌত্রের ছেলে) মুয়িব লিদীনিল্লাহ ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের জন্মবার্ষিকীর অনুকরণে ছয় রকম জন্মবার্ষিকী ইসলামে আমদানী করেন এবং মিশরের ফাতিমী শিয়া শাসকরা মুসলিমদের মধ্যে জন্মবার্ষিকী পালনের রীতি চালু করেন। এই ফাতিমী শিয়া খিলাফতের প্রতিষ্ঠাতা আবূ মুহাম্মাদ এবাইদুল্লাহ ইবনু মায়মূন প্রথমে ইহূদী ছিলেন-

(আল বিদা-য়াহ আননিহাইয়া একাদশ ১৭২ পৃঃ)

কারো মতে তিনি ছিলেন অগ্নিপূজারী-

(মাকরিজীর আল খুতাত আল আ-সার ১ম খন্ড ৪৮ পৃঃ)

ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, মিশরের ফিরআউন জন্মোৎসব পালন করতেন-

(ফাতা-ওয়া নাযীরিয়্যাহ ১ম খন্ড, ১৯৯ পৃঃ)

ফিরআউন ছিল ইয়াহুদী। তারপর ঐ ইয়হুদী রীতি খৃষ্টানদের মধ্যেও সংক্রমিত হয়। ফলে তারা তাদের নাবী ঈসা (আঃ)- এর পন্মবার্ষিকী ‘ক্রিসমাস ডে’ পালন করতে থাকে।

মুসলিমদের মাঝে এই জন্মবার্ষিকী রীতি চালু হওযার একশ তিন বছর পর অর্থাৎ ৪৬৫ হিজরীতে আফজাল ইবনু আমীরুল জাইশ মিশরের ক্ষমতা দখল করে রাসূল (সাঃ), আলী (রাঃ), ফাতিমাহ (রাঃ), হাসান (রাঃ), হোসেন (রাঃ)- এর নাম সহ প্রচলিত ছয়টি জন্মবার্ষিকী পালনের রীতি বাতিল করে দেন।

(মিশরের মুফতী শায়খ মুহাম্মাদ রচিত আহসানউল কালা-ম ফী মাইয়্যাতা আল্লাকু বিস সুন্নাতি অল বিদআ’তী মিনাল আহকাম, ৪৪-৪৫ পৃঃ বরাতে তাম্মিহু উলিল আবসা-রা ইলা কামা লিদ্দিন আমা ফিল বিদআ’য়ী মিনাল আখতা-র ২৩০পৃঃ)

এর পর ত্রিশ বছর বন্ধ থাকার পর ফাতিমী শিয়া খলিফা আমির বি-আহকা-মিল্লা-হ পুনরায় এই প্রথা চালু করেন। তখন থেকেই জন্মবার্ষিকী পালনের রীতি চালূ হয়ে এখনও চলছে।

(ঐ ২৩০-২৩১ পৃঃ)

ঐতিহাসিক অন্যান্য বর্ণনা থেকে জানা জায়, জন্মবার্ষিকী পালনের এই রীতি ঐ মীলাদ প্রথা খালিফা মুস্তালি বিল্লাহর প্রধান মন্ত্রী বদল আল জামালী বাতিল করে দেয়। এবং তার মৃত্যুর পর পুনরায় চালূ হলে পরবর্তীতে কুরআন-হাদীসের অনুসারী সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ূবী এই সব জন্মবার্ষিকী ও মীলাদ প্রথা বাতিল করে দেন। কিন্তু সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ূবীর ভগ্নিপতি আরবিলের শাসনকর্তা মুজাফফরউদ্দিন ছাড়া কেউ এর বিরোধিতা করেন নাই। ঐতিহাসিকরা বলেন যে, বাদশাহ মোজাফফারউদ্দিনের মীলাদ মাহফিল গুলোতে নামধারী সুফীরা উপস্থিত হন এবং এই মাহফিল ফজর থেকে যোহর পর্যন্ত চলত। বাদশাহ এই মীলাদের জন্য তিনলক্ষ স্বর্ণমুদ্রারও অধিক বেশী খরচ করতেন।

(মাকরিজীর আল খুতাত ১ম খন্ড ৪৯০ পৃঃ, মিরআতুয জামা-ন ফী তা-রিখীল আ’ইয়্যান ৮ম খন্ড ৩১০ পৃঃ, পূর্বোক্ত তানবিহু উলিল আবসা-র ৩২ পৃঃ)

সুন্নীদের মাঝেও মীলাদুন্নবী ঢুকে প্রড়। তাই শাইখ ওমার ইবনু মুহাম্মাদ মোল্লা নামে এক প্রসিদ্ধ সৎব্যক্তি মুসিলে মীলাদুন্নবী করে ফেলেন এরই অনুসরণ করেন ইরবিলের শাসনকর্তা মুজাফফরউদ্দিন-

(কিতাবুল বা-য়িস আলা ইনকা-রিল-বিদায়ী আল হাওয়া-দিস ৯৬ পৃঃ)

মোল্লা ওমার ইবনু মুহাম্মাদ মুসিলের বাসিন্দা ছিলেন। আর ইরবিল মুসিলেরই নিকটবর্তী এলাকা ছিল। তাই আনুমানিক ৬০৪ হিজরীতে সুন্নীদের মধ্যে মীলাদুন্নবীর সূত্রপাত হয়। অতঃপর ইরবিলের শাসনকর্তা মুজাফফর উদ্দিন তা ধূমধামের সাথে মানতে থাকে। এমন সময় স্পেনের এক ইসলামী বিদ্বান আবুল খাত্তা-ব ওমার ইবনুল হাসান ইবনু দিহইয়াহ মরক্কো ও আফ্রিকা, শিসর ও সিরিয়া, ইরাক ও খোরাসান প্রভৃতি দেশ ঘুরতে ঘুরতে ৬০৪ হিজরীতে ইরবিলে প্রবেশ করেন এবং বাদশাহ মুজাফফার উদ্দিনকে মীলাদুন্নবী পালনের ভক্ত হিসাবে দেখতে পান। তাই তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মীলাদ সম্পর্কে একটি বই লেখেন- ‘কিতাবুত তানভীল ফি মাওলিদিস সিরাজিল মুনীর’ নামে। অতঃপর তিনি এটাকে ৬২৬ হিজরীতে ছ’টি মাসলিসে বাদশাহ মুজাফফর উদ্দিীনের নিকট পড়ে শোনান। বাদশাহ তাতে সন্তুষ্ট হতে তাঁকে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা দান করেন-

(আফাইয়া-তুল আ’য়া-ন ৩য় খন্ড, ১২২ পৃঃ)

ফলে মুসীম জাহানের বিভিন্ন দেশে জন্মবার্ষিকী পালনের রীতি ছড়িয়ে পড়ে। তাই মরক্কোবাসীরা এই মীলাদের নাম দিয়েছেন ‘মাওসম’ আলজেরিয়াবাসিীরা এর নাম দিয়েছে ‘যারদাহ’ মিশর ও মধ্যপ্রাচ্য বাসীরা এর নাম দেয় ‘মাওলিদ’। (আলইনসা-ফ ফীমা কীলা ফিল মাওলিদ মিনাল গুলুয়ে আলইজহা-ফ ২৭ পৃঃ)
আর ভারতীয় উপমহাদেশে মীলাদুন্নবী আমদানীকারীরা ছিল শিয়া। যেমন ইসলামের মধ্যে প্রথম মীলাদ আমদানীকারক ছিল শিয়া খলীফা মুয়ীয লিদীনিল্লাহ।

ভারতের মোঘল সম্রাটদের কিছু মন্ত্রী ও পরামর্শদাতা ছিল শিয়া।যেমন মোঘল সম্রাট হুমায়ূন ও সম্রাট আকবরের মা শিয়া ছিল। আকবরের অভিভাবক বৈরাম খাঁ কট্টর শিয়া ছিরেন। সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাষ্ট্রদূত শিয়া ছিলেন। বাদশাহ বাহদুর শাহ শিয়া ছিলেন। তাঁরাই এই উপমহাদেশে সুন্নীদের মধ্যে মীলাদুন্নবীর চলন করে দেন। ফলে ফিয়া- মীলাদুন্নবীর আনুষঙ্গিক ব্যাপারগুলো সুন্নীদের মধ্যে প্রচলিত হয়ে পড়ে। যেমন- আলোকসজ্জা ও মিছিল প্রভৃতি।

(শায়খ আইনুল বারী আলিয়াবীর কর্তৃক রচিত ‘মীলাদুন্নবী ও বিভিন্ন বার্ষিকী’ পুস্তকের ৩৩ পৃঃ)

অন্য র্বনা থেকে জানা যায় যে, মীলদ পাঠের নিয়ম ৫৯০ হিজরী সনে বরকুক সুলতান ফরাহ ইবনু নসরের যুগে প্রচলিত হয়। তিনি খুব আরামপ্রিয় সুলতান ছিলেন। শরীআ’তের কড়াকড়ি নির্দেশ তিনি মেনে চলতেন না। সামান্য কাজে কিভাবে বেশী সাওয়াব পাওয়া যায় তিনি এরূপ কাজের অনুসন্ধান করতেন। অবশেষে শাফিঈ মাযহাবের এক বিদআ’তী পীর প্রচলিত মীলাদ পাঠের পদ্ধতি আবিস্কার করে সুলতানকে উপহার দেন। সুলতান বড় সাওয়াবের কাজ মনে করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ধর্ম পালনের নামে মীলাদ পাঠের ব্যবস্থা চালূ করেন। সেখান থেকেই প্রচলিত মীলাদের উদ্ভব ঘটে।

এই মীলাদের পূর্ণ বিবরণ পরবর্তীকালে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনু খাল্লিকান (৬৮১ হিজরী) তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। তারপর জালালুদ্দীন আস-সয়ূতী (মৃত্যু ৯১১ হিজরী) তাঁর হুসনুল মুহাযরা ফী ‘আমালিল মাওয়ালীদ গ্রন্থে ইবনু খাল্লিকানের লেখার উপর নির্ভর করে মীলাদের বিবরণ পেশ করেছেন। সুলতান মুজাফফরউদ্দীন যে মীলাদ চালু করেছিলেন তাতে যথেষ্ট খৃস্টীয় প্রভাব বিদ্যমান ছিল। কারণ সে সময় ক্রুসেড যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ সৈন্য সিরিয়া, জেরুজালেম প্রভৃতি এলাকায় আগমণ করেছিল। তারা যীশুখৃষ্টের জন্মদিন পালন করতো। এসব দেখে শুনে সুলতান মুজাফফরউদ্দীনের মনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জন্ম দিবস তথা মীলাদের অনুষ্ঠান করার প্রেরণা পেগে উঠে। সুফীদের সাথে যোযোগ রেখে তিনি ৪টি খানকাহ নির্মাণ করেন।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ইনতে কালের প্রায় ৪০০ বছর পর খৃস্টানদের মধ্যস্থতায় প্লাটিনাসের নূরের মতবাদ ইসলামের হিকামাতুল ইরাব বা ফালাসাফাতুল ইসলাহ নামে ইসলামী লেবাসে প্রথমে সুফিদের মধ্যে ও পরে মীলাদের মাধ্যমে ইসলামে প্রবেশ লাভ করে।

এছাড়াও মীলদের ইতিহাস সম্পর্কে প্রখ্যাত হানাফী আলিম ও বহু গ্রন্থের প্রণেতা মরহুম মাওলানা আঃ রহীম তার সুন্নত ও বিদআ’ত বইয়ের ২২৬ পৃষ্ঠায় লিখেছেনঃ

মীলাদের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস হলোঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর মৃত্যুর ২০০ বছর পর এমন এক বাদশাহ প্রচলন করেন যাকে ইতিহাসে ফাসিক ব্যক্তি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

জামে আজহারের শিক্ষক ডঃ আহমদ শারবাকী লিখেছেনঃ

৪০০ হিজরীতে ফাতিমী শাসকরা মিশরে এর প্রচলন করেন। একথাও বলা হয় যে শাইখ ইবনু মুহাম্মদ নামক এক ব্যক্তি ইরাকের মুসিল শহরে এর প্রচলন করেছেন। পরে আল মুজাফফর আবূ সাঈদ বাদশা ইরাকের ইরবিল শহরে মীলাদ চালু করেন। ইবনু দাহইয়া এ বিষয়ে একখানা কিতাব লিখে তাকে দেন। বাদশাহ তাকে এক হাজার দীনার পুরস্কার দেন-

( ইয়াস আলুনাকা আনিদ-দীনি ওয়াল হায়া-হ ১ম খন্ড ৪৭১ পৃঃ)

এই মীলাদুন্নবী ও মীলাদ-এর ইতিহাস থেকে জানা যাচ্ছে যে এগুলো কুরআন ও হাদীস সমর্থিত নয় বরং ইয়াহুদী, খৃষ্টা ও অগ্নিপূজকদের রীতি অনুকরণ ও অনুসরণ। আর অন্য জাতীর সাদৃশ্য গ্রহণ সম্পর্কে বিশ্বনাবী (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তার দলভূক্ত হয়ে থাকে। (আবূ দাউদ ২ং খন্ড ২৩০ পৃঃ, মুসনাদে আহমাদ ২য় খন্ড ৫০ ও ৯২ পৃঃ, মিশকাত ৩৭৫ পৃঃ)

অন্যান্য বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, সে আমাদের দলের নয় যে ব্যক্তি আমাদের ছাড়া অণ্যের সাদৃশ্য গ্রহণ করে। তোমরা ইয়াহুদীদের সাদৃশ্য গ্রহণ কর না এবং খৃষ্টানদেরও না। (তিরমিযী ২য় খন্ড ৫৪ পৃঃ, মিশকাত ৩৯৯ পৃঃ)

অতএব মহানবী (সাঃ) এর প্রতি যদি সত্যই কারো ভালোবাসা থেকে থাকে তাহলে তাঁর উক্ত হাদীস দুটি জানার পর ইহুদী-খৃষ্টান ও অগ্নিপূজারীদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে কোন মু’মিন মুসলিম মীলাদুন্নবী, জন্মবাষিকী ও আলোকসজ্জা প্রভৃতি অনৈসলামিক কাজ করতে পারে না এবং এই ধরনের বিদআ’তি কাজ কারার জন্য যারা উৎসাহ ও প্ররচনা দিয়ে থাকে তারা কেউই সহীহ হাদীস পেশ করতে পারেন না।

কেহ বা বলে থাকেন কোরআনে অনেক ঈদ করার কথা বলা আছে যা ঈদে মীলাদুন্নবীর ইঙ্গিত। এগুলো হচ্ছে সরল মুসলিমদের ধোকা দিয়ে তাদের ঘোর অন্ধকারে রাখা এবং জনমত সৃষ্টি করা। এক কথায় দল ভারী করা এবং ভারী দল দেখিয়ে বলা যে “আমরা এতোগুলো মানুষ কি ভুল করছি?” সর্বদা মনে রাখতে হবে যে সত্য যদি একজনও বলে সেটা সব সময়ের জন্যই সত্য।

ঐতিহাসিকভাবে রাসুলূল্লাহ (সাঃ) এর জন্ম তারিখ কোনটি?

ঐতিহাসিক বর্ণনাগুলোর ভিত্তিতে অধিকাংশের মতে মহানবী (সাঃ) এর জন্ম মাস রবিউল আউয়াল মাস। আল্লামা ইবনুল জওযী বলেন, অধিকাংশ বিদ্বানের ঐক্যমতে রাসূল (সাঃ) এর জন্ম রবিউল আউয়াল মাসে- (সীরাতুল মুস্তফা ১ খন্ড, ৫১ পৃঃ ২নং টীকা) তবে জন্ম তারিখের ব্যাপারে মতভেদ আছে যেমন এ ব্যাপারে আটটি উক্তি আছে।

যথা-
(১) ২, ৮,১০, ১২ ও ১৩ ই রবিউল আউয়াল।

(সিফাতুস সফঅহ ১ম খন্ড, ১৪ পৃঃ, আলঅফা বি-আহওয়া-লিল মুস্তফার উর্দু তর্জমা সীরাতে সাইয়িদুল আম্বিয়া ১১৭ পৃঃ)

(২) মুসান্নাফ ইবনু শাইবায় জাবির ও ইবনু আব্বাস থেকে বর্ণিত ১৮ই রবিউল আউয়াল। (আল বিদা-য়াহ আননিহা-য়াহ ২য় খন্ড ২৪২ পৃঃ)

(৩) ১ লা রবিউল আউয়াল। (আলইস্তীআ-ব ১৩ পৃঃ)

(৪) ইবনু হিশাম বলেন, আল্লামা তাবারী ও ইবনু খালদূনও বলেন ১২ই রবিউল আউয়াল। (তাহযীবু সীরাতে ইবনু হিশাম ৩৬ পৃঃ) (তারিখুল উমাম অলমুলক ১ম খন্ড, ৫৭১ পৃঃ,)

(৫) আল্লামা ইবনু আব্দিল বার ২রা রবিউল আউয়াল বলা সত্বেও বলেন যে, ঐতিহাসিকগণ ৮ই রবিউল আউয়ালের সোমবারকেই সঠিক বলেছেন। (আলইস্তীআ-ব ১৪ পৃঃ)

(৬) ইবনু সা’দ বলেন, আবূ জা’ফর মুহাম্মাদ ইবনু আলীর মতে ১০ই রবিউল আউয়াল এবং আবূ মা’শার নাজীহ মাদানীর মতে ২রা রবিউল আউয়াল সোমবার। (তাবাকাতে ইবনু সা’দ ১ম খন্ড ৮০, ৮১ পৃঃ)

(৭) কনষ্টান্টিনোপলের বিখ্যাত জোতির্বিদ মাহমূদ পাশা তাঁর যুগ থেকে মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যন্ত ক্যালেন্ডার ঘেটে প্রমাণ করেছেন “সোমবার” দিনটি ১২ই রবিউল আউয়ালে কোন মতেই পড়ে না। বরং তা ৯ই রবিউল আউয়ালেই সঠিক হয়। এজন্য সঠিক বর্ণনা ও জ্যোতির্বিদদের গণনা হতে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর জন্ম দিনের নির্ভর যোগ্য তারিখ ৯ই রবিউল আউয়াল। (কাসাসুল কুরআন ৪র্থ খন্ড, ২৫৩-২৫৪ পৃঃ)

(৮) হাদীস ও ইতিহাসের বহু মহাবিদ্বান- যেমন আল্লামা হুমাইদী, ইমাম ইবনু হাযম, ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ, ইবনুল কাইয়িম, ইবনু কাসীর, ইবনু হাজার আসকালানী ও বাদরুদ্দীন আইনি প্রমুখের মতে ৯ই রবিউল আউয়াল সোমবার রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জন্ম দিন। (কাসাসুল কুরআন ৪র্থ খন্ড, ২৫৩ পৃষ্ঠা) সমস্ত বর্ণনা প্রমান করে যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জন্ম ক্ষন, জন্ম তারিখ, জন্মসন এসবেই মতভেদ আছে। কেবল একটা ব্যপারে সবাই একমত যে, তাঁর জন্মদিনটি ছিল সোমবার। (মুসলিম ১ম খন্ড, ৩৬৮পৃঃ)
এবং প্রায় সবাই একমত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মৃত্যু হয়েছিল রবিউল আউয়াল মাসে।

এ সম্পর্কে যদি তর্কের খাতিরে মেনে নেয়া হয় যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জন্ম ও মৃত্যু হয়েছিল ১২ই রবিউল আউয়ালে তাহলে ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের অনুকরণে ১২ই রবিউল আউয়ালে ঈদে মীলাদুন্নবী তথা নাবী (সাঃ) এর জন্মবার্ষিকী খুশী মানানো হয় অথচ ঐ দিনেই নাবীজীর ইন্তেকালের শোক পালন করা হয় না কেন? এ কথায় সবাই একমত যে, একই আনন্দ ও দুঃখ একত্রিত হলে দুঃখের মধ্যে আনন্দ ম্লান হয়ে যায়। তাই ১২ই রবিউল আউয়াল মীলাদুন্নবীর উৎসব পালন না করে নাবীর মৃত্যু শোক পালনক করাই যুক্তিযুক্ত হতো।

আল্লাহকে খুশী করার জন্য আল্লাহর নাবী (সাঃ) আমাদের যে সকল বিধান দিয়েছেন তা পালন করাই যথেষ্ট, নতুন করে কিছু আবিষ্কার করার অবকাশ কোথায়?

আল্লাহ পাক আমাদের সহীহ হাদীস অনুসারে চলার তৌফিক দান করুন। আমীন…..

১২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:২৫

মাসুম রৌদ্র বলেছেন: জন্মোৎসব র আগমন উৎসব কে আপনি মিলিয়ে ফেলেছেন। দুটা এক জিনিস নয় । দুটা কে এককরে দেখানোটা হচ্ছে গোজামিল দেয়ার চেষ্টা ।

১৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

আব্দুল মুকিম রিয়ন বলেছেন: মাসুম রৌদ্র, প্রথম দিকে আপনার শিরকের বিষয়টা দেখে আপনার লেখাটা পড়ার ইচ্ছা উধাও হয়ে গেছে।শিরক মানে কী আপনি নিশ্চয় জানেন না।শিরক মূলত আল্লাহ তা'আলাকে অন্য কারো সাথে তুলনা করা।"আমি রসুল (দ.)-এর গোলাম", এটা কেন শিরক বুঝাবেন দয়া করে।সম্ভব হলে এই বিষয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিকের বক্তব্য পেশ করবেন আশা করছি।এটা তো 'শিরক সুপার সপ' না যে, চাইলে শিরক পাওয়া যায়।
আর নিচের দিকে যে বলেছেন, মৃত্যুর শোক! এই বিষয়ে আগের কমেন্টগুলোতে উল্লেখ আছে, মৃত্যুর শোক ৩ দিনের বেশি নয়।
আর নবী রসুলরা শারীরিকভাবে মৃত --- আপনার এই কথায় বেয়াদবি বিদ্যমান।রসুল (দ.)-এর প্রতি প্রকৃত ভালবাসা ও শ্রদ্ধা শিখুন।ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.