নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফেসবুকের রিলস, ইউটিউবের শর্টস আর টিকটকের ভিডিও মানবজীবনকে বিরক্তি ও আনপ্রোডাক্টিভিটির এক চরম সীমানায় নিয়ে গেছে।
পাবলিক প্লেসে চলাফেরা ও খেয়াল করলে জিনিসটা খুব ভালোভাবে বোঝা যায়।
এই রিলস, শর্টস যখন ছিলো না তখন ফেসবুকে নরমাল পোস্ট ও ইউটিউবে নরমাল ভিডিও আসতো। সেগুলো এখনকার অ্যলগরিদমের তুলনায় ভালো ছিল। তখন তো ফেসবুকে ভিডিও ছিলো না। ফেসবুকে ঢোকা মানে, শুধু পড়া। তখন বিভিন্ন গল্পের পেজ ছিলো।
ফেসবুক ইউটিউবের সাথে পাল্ল দিতে যেয়ে ভিডিও আনলো, এড দেওয়ার সিস্টেম জারি করলো। এভাবেই রিলস আসলো। আস্তে আস্তে সব পচে গেলো।
মানুষের স্ক্রীনটাইম এভারেজ সারা দুনিয়ায় প্রায় সাড়ে ছয় ঘন্টা। আটঘন্টা চাকরি, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, বাজার-ঘাট সংসার, সামাজিকতা করে বাকি সময় যা পাওয়া যায় সব স্ক্রীনে চলে যায়।
এভাবে জীবন যাপনের ইমপ্যাক্ট কী হচ্ছে এইটা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা নিশ্চয়ই আছে। গবেষণার বিষয়ে না গিয়ে এমনি একটা গল্প আপনাদের বলি।
.
১৯১৮ সালে ম্যাক্স প্লাংক নোবেল পাওয়ার পর সমগ্র জার্মানী ঘুরে তিনি কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর লেকচার দিতে লাগলেন। গেস্ট হিসাবে মানুষজন তারে বিভিন্ন সেমিনারে ডেকে নিয়ে যায়। তিনি সব জায়গায় মোটামুটি একই লেকচার দেন। একই টপিক।
ট্যুরে তার সাথে তার Chauffeur (ড্রাইভার/গাড়ি চালক) যায়। তিনি ও লেকচার শোনেন। শুনতে শুনতে প্লাংকের লেকচার তার মুখস্ত হয়ে গেছে। এখন তার লাগে বিরক্ত।
এমন সময় মিউনিখে বক্তৃতা দিতে যাবেন প্লাংক। তার Chauffeur তাকে বললেন, মিউনিখে আপনার চেহারা কেউ চেনে না, আবার বক্তৃতা আমার মুখস্ত, মিউনিখে বক্তৃতা আমি দিই, আপনি অডিয়েন্সের সামনের সারিতে বসেন।
প্লাংক রাজি হলেন। তার সফার বক্তৃতা দিলেন। বক্তৃতা শেষে দর্শক সারি থেকে ফিজিক্সের এক প্রফেসর উঠে দাড়ায়ে এক প্রশ্ন জিগেস করলেন।
এখন সফারের তো বক্তৃতা মুখস্ত। তিনি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ডানে-বামে কিছু জানেন না। তিনি প্রফেসরের প্রশ্নের জবাবে বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন, মিউনিখের মত এডভান্সড শহরের একজন প্রফেসর এমন একটা সিলি প্রশ্ন করবেন তিনি ভাবতে পারেননি। এ প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য তার সফারই যথেষ্ট। বুঝতেই পারছেন, দর্শক সারিতে সফারস রূপে স্বয়ং ম্যাক্স প্লাংক বসে আছেন।
এই ঘটনা বলেছেন চার্লি মঙ্গার। তার মতে, দুনিয়ায় দুই ধরনের জ্ঞান আছে-
১. একটা হচ্ছে বাস্তব জ্ঞান, যেটা মানুষ দীর্ঘ অধ্যাবসায়, সময় ও শ্রম ব্যয় করে অর্জন করেন।
২. আরেকটা হচ্ছে, Chauffeur's knowledge. যেটা মানুষ ভুংভাং করে কোনমতে শিখে জ্ঞানীর ভাব ধরে। বাস্তবে সে জ্ঞানের সে কিছু জানে না। এদের আবার কনফিডেন্স থাকে বেশি।
ফেসবুক-ইউটিউবের এভেইলিবিলিটি, এগুলোর রিলস, শর্টস, ভিডিও বর্তমান জামানায় সফার্স নলেজ অর্জনের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে।
সবাই সব বিষয়ে গভীর জ্ঞান রাখে!
থ্রিজি পাওয়া দূর গ্রামের দিন মজুর থেকে শুরু করে নিউ ইয়র্কের অনেক শিক্ষিত বাসিন্দাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৬
মাহদী হাসান শিহাব বলেছেন: মোবাইল থেকে ফেসবুক ও ইউটিউব অ্যাপ আনইনস্টল করে আমি মাঝে মাঝে স্ক্রিন টাইম কমায় নিয়ে আসি। প্রয়োজনে অল্প সময় কম্পিউটারের ব্রাউজারে চালাইলে স্ক্রীনটাইম কমে এবং রিলসে ঢোকার সুযোগ থাকে না।
ব্রাউজারে রিলস ভালো দেখা যায় না এটা ভালো দিক।
২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৫৩
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: কিছু দিন আগেও আমার স্ক্রীণটাইম মোটামুটি ৪ ঘন্টার মত ছিলো। এখন সেটা ১-১.৫ ঘন্টায় নেমেছে, যার প্রায় পুরোটাই কল ও হোয়াটস্যাপ (দুইটাই চাকরীর প্রয়োজনে) এ যায়। খুব কম সময় যায় ফেসবুক কিংবা ব্লগে।
আচ্ছা, আপনার কাছে কি কখনও মনে হয়েছে যে আপনার এই লেখাও রিলসের ঐ কাতারেই বা Chauffeur's knowledge এর কাতারে পড়ে!
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৪
মাহদী হাসান শিহাব বলেছেন: পড়তে পারে।
মানুষের রিলস দেখার বা শর্টস দেখার কারণ সম্পর্কে ৩৬০ ডিগ্রি পারসেপশান আমার নেই।
তবে শফার্স নলেজ কী জিনিস এটা জানা থাকলে সতর্ক হওয়া যায়। আমি সতর্ক।
৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: ফেসবুক আর ইউটিউব দেখে বেকুবদের সহজেই চেনা যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:২১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমি ও রিলস, ফেইসবুকের ছাত্র ছিলাম। এখন আর নাই।