নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দৈনন্দিন পেশাগত বা ব্যক্তিগত জীবনে কাজে লাগে এমন ৭ টি টুলস এখানে শেয়ার করছি। যদিও এগুলো অনেকেই জানেন, তারপরও রিমাইন্ডার হিসাবে আইডিয়াগুলো গোছানো থাক।
১. বাজেট করার নিয়ম: ৫০-৩০-২০ রুল:
নিজের আয়কে তিনভাগে ভাগ করা উচিৎ।
মোট আয়ের ৫০% খরচ করতে হবে “Needs” তথা অতি প্রয়োজনে। যে খরচগুলো প্রতিমাসে করাই লাগে এমন খরচ আসবে এই সেকশনে। যেমন: বাসা ভাড়া, ইউটিলিটি বিল, পরিবহন ব্যয়, মুদি ও কাচাবাজারের ব্যয়।
৩০% খরচ করতে হবে “Wants” সেকশনে। যে খরচগুলো না করলেও চলে বা যে খরচগুলো আমরা রিফ্রেশমেন্ট বা শখের জন্য করি। যেমন: বিনোদন, সিনেমা দেখা, ঘুরে বেড়ানো, বিভিন্ন গ্যাজেট কেনা।
মোট আয়ের ২০% সঞ্চয় করতে হবে। এই সেকশন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এই সঞ্চয় দিয়ে ঋণ থাকলে সেটা পরিশোধ করতে হবে।
ইমার্জেন্সি ফান্ড গঠন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের পরই ইমার্জেন্সি ফান্ড গঠন করাটা গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই বলেন ঋণ করে হলেও আগে ইমারজেন্সি ফান্ড গঠন করা উচিৎ।
ইমারজেন্সি ফান্ড কী?
ছয় মাস চলার জন্য আপনার যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন সেই টাকাটা আলাদা রাখা। অপ্রত্যাশিত কোন বড় বিপদ মোকাবেলায় বা যে কোন কারনে ছয় মাস আয় রোজগার বন্ধ থাকলেই কেবল এই ফান্ডটি খরচ করতে হবে। এই ব্যাপারে খুব ভালো আলোচনা আছে “The Barefoot Investor” বইয়ে।
এই ২০% থেকে রিটায়ারমেন্টের জন্য সঞ্চয় করতে হবে। এবং সঞ্চয় থেকে নূন্যতম ইনভেস্টমেন্ট করতে হবে।
২. নিজের ক্যারিশমা ও গুরুত্ব বাড়ানো: SHR মেথড
তিনটি ধাপে নিজেকে ক্যারিশম্যটিক হিসেবে উপস্থাপন করা যায়।
Seen:
কারো সাথে কথা বলার সময় চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা। যার সাথে কথা বলছেন তার স্পেসিফিক কোন একটা বিষয়ের প্রশংসা করা। খেয়াল করতে হবে প্রশংসা যেন ফ্লার্টিং না হয়। প্রশংসাটা যেন আন্তরিকভাবেই হয়।
Heard:
কথা শোনার সময় আন্তরিকতার সাথেই প্রশ্ন করতে হবে, যদি প্রয়োজন হয়। বিষয়টি জানা ও বোঝার জন্য প্রশ্ন করতে হবে। বক্তাকে আটকানোর জন্য, তাকে বিপদে ফেলার জন্য বা শুধু প্রশ্ন করার জন্যই করার ব্যাপারটা থেকে বিরত থাকতে হবে।
Stephen Covey তার The 7 Habits of Highly Effective People বইয়ে যে সাতটি অভ্যাসের কথা বলেছেন সেখানে পাঁচ নম্বর অভ্যাসটি হলো- Seek first to understand, then to be understood.
প্রথমে বক্তার বক্তব্য পূর্ণ মনযোগে শুনতে হবে, বুঝতে হবে। তারপর নিজের বক্তব্য বলতে হবে।
Remembered:
যে কোন আলোচনার বিষয়বস্তু মনে রাখতে হবে। নোট ও রাখা যেতে পারে। আলোচনাটা যে সিরিয়াসলি নিয়েছেন এবং আন্তরিকতার সাথে শুনেছেন সেটা যেন পরবর্তীতে যে কোন আলোচনার সময় বোঝা যায়।
এ অংশে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে ব্যক্তির সাথে আলোচনা হচ্ছে তার নাম মনে রাখা। যে কোন ব্যক্তির নাম মনে রাখা এবং সে নামে পরবর্তীতে তাকে ডাকা ঐ ব্যক্তিকে কনভিন্স করার জন্য কার্যকরী একটা টুল। নাম মনে রাখা ক্যারিশমাটিক লোকজনের একটি বড় গুণ।
৩. পারফেকশনিজম নিয়ে অতিচিন্তা করার কিছু নেই:
অনেকসময় “পার্ফেক্টলি” কাজ করার অজুহাতে কাজ করতে গড়িমসি করতে দেখা যায়। কিন্তু মূলত উচিৎ হচ্ছে কাজ থাকলে সেটা করে ফেলা। করার সময় অবশ্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই করতে হবে। কাজ করার সময় সে কাজের “পারফেকশনিজম” নিয়ে অভারথিংকিং করার কিছু নাই। কোন রকম গড়িমসি না করেই কাজ করাটা গুরুত্বপূর্ণ।
যে কোন কাজ করার সময় স্বাভাবিকভাবেই সে কাজের ৭০% হয় সাধারণ মানের। ২০% ভাল হয় না। বাকি ১০% খুবই ভালো হয়।
কাজ শুরু করার পর তর তর করে কাজ এগিয়ে যায়।
৪. ফাইনম্যান টেকনিক: যে কোন কিছু শেখার পদ্ধতি
যে কোন বিষয় শেখার একটা ভালো একটা পদ্ধতি এইটা। এই পদ্ধিত অনুযায়ী যে কোন বিষয় শেখার ক্ষেত্রে নিন্মোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করা যায়।
টপিক নির্বাচন করা: শেখার জন্য নির্দিষ্ট একটা বিষয় বা টপিক বা টার্ম নির্বাচন করতে হবে এবং সেটার নাম একটা সাদা কাগজে লিখতে হবে।
কাউকে শেখানো: এখন ধরেন, এইটা আপনি কোন শিশুকে শেখাচ্ছেন এভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। ব্যাখ্যা হবে খুব সহজ ও সাবলীল ভাষায়। শেখাতে গেলে আপনি বুঝতে পারবেন বিষয়টির কোন কোন জায়গাতে আপনার বোঝার বা জানার ঘাটতি আছে।
না জানা বিষয়গুলো চিহ্নিত করা: যে জায়গাগুলোতে প্রাথমিকভাবে জানার ঘাটতি আছে বলে আপনি মনে করছেন সেগুলোর যতদূর সম্ভব একটা তালিকা তৈরী করেন।
পড়েন ও শেখেন: তালিকা ধরে ধরে না-জানা বিষয়গুলো শিখতে থাকেন। শিখে আবার দ্বিতীয় ধাপ তথা শিশুকে শেখানোর ধাঁপে ফিরে যান।
টপিকটি বুঝতে শিশুর বোঝার মত উপমা তৈরী করবেন। যে কোন বিষয় সিম্পলিফাই করতে এটা সহায়ক।
৫. বসকে কোন কিছুর আপডেট দিবেন কীভাবে:
কর্মক্ষেত্রে সিনিয়র কোন কাজ করতে দিলে কাজ শেষে তাকে আপডেট দিতে হয়। প্রায়ই দেখা যায় সিনিয়র কী কী কাজ দিয়েছেন সেটা তার পরবর্তীতে পরিপূর্ণভাবে মনে থাকে না। কার্যকরীভাবে আপডেট দিতে নিচের ফরমেটটি ফলো করা যেতে পারে।
কী কী কাজ দিয়েছিল সেটা তাকে সংক্ষেপে বলা।
সেখান থেকে আপনি কী কী করেছেন সেটা বলা।
যে কাজগুলো করেছেন সেগুলো সম্পর্কে আপনার সংক্ষিপ্ত মতামত জানানো। বিশেষত: কাজ করতে যেয়ে এমন কোন তথ্য এসেছে কিনা যেটা জানা সিনিয়রের প্রয়োজন।
যে কাজ দেওয়া হয়েছে সেটার প্রেক্ষিতে সামনে আর কী কী করা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন সেটা তাকে অবগত করা।
৫. সিদ্ধান্ত নেওয়ার বেলায়:
সিদ্ধান্ত নেওয়ার বেলায় সব সময় “না” কে প্রায়োরিটি দিতে হবে। অথবা কোন সিদ্ধান্তই তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া যাবে না। কারণ যে কোন সিদ্ধান্তে “হ্যাঁ” বললে আপনার প্রায়োরিটি লিস্ট এর কাজগুলো পিছনে পড়ে যেতে পারে।
এজন্য যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বাই ডিফল্ট “না” বলা অথবা সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বেলায় তাৎক্ষণিকভাবে “হ্যাঁ” কোনভাবেই বলা যাবে না। সময় নিতেই হবে। “হ্যাঁ” বা “না” সিদ্ধান্ত যেটাই হোক, সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। এই সময়টা ২ মিনিট ও হতে পারে বা ২ দিন ও হতে পারে। সময় কতটুক নিবেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ না, গুরুত্বপূর্ণ হলো “সময় নেওয়া”-টা।
৬. ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার বিষয়ে:
ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে নিচের প্রশ্নগুলোর সুনির্দিষ্ট উত্তর তৈরী করতে হবে।
কী করতে চেয়েছিলাম?
সেটা করতে যেয়ে কী কী ঘটেছে?
যেগুলো ঘটার কথা না বা প্রাথমিক পরিকল্পনায় যা ছিল না বা কাজ শুরুর আগে ঝুঁকি বিশ্লেষণের সময় যে ঘটনা গুলোর জন্য প্রস্তুতি ছিলো, এমন কোন ঘটনা বাদে অন্য কোন ঘটনা যদি ঘটে সেগুলো কেন ঘটলো বলে আমার মনে হয়?
পরবর্তীতে ভালো আউটকাম পাওয়ার জন্য যে বিষয়গুলো ঘটেছে এগুলো যেন আর না ঘটে এর জন্য আমার করণীয় কী হতে পারে?
ভবিষ্যতের কোন কাজে অবাঞ্চিত ও হঠাৎ কোন চ্যালেঞ্জ আসলে তা মোকাবিলা করার জন্য বর্তমান ঘটনায় হয়ে যাওয়া ভুল থেকে আমি কী কী শিক্ষা নিলাম?
৭. কমিউনিকেশনের নিয়ম
মানুষ আপনার কথা কতটুকু পছন্দ করবে তা শুধু আপনি “কী (কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু)” বলছেন তার উপর নির্ভর করে না।
বক্তব্য পছন্দ বা অপছন্দের ৫৫ শতাংশ নির্ভর করে বডি ল্যাঙ্গুয়েজের উপর।
৩৮ শতাংশ নির্ভর করে মুখের ভঙ্গি এবং গলার স্বরের উপর।
মাত্র ৭ শতাংশ নির্ভর করে বক্তব্যের মূল কনটেন্ট বা বিষয়বস্তুর উপর।
কথা বলার সময় শরীরের অঙ্গভঙ্গি ঠিক করা জরুরি। এক্ষেত্রে বিশদ জানার জন্য Leil Lowndes এর How to Talk to Anyone বইটি পড়া যেতে পারে।
ইফেক্টিভ কমিউনিকেশনের জন্য নিচের বিষয়গুলো খুবই কার্যকরী।
শ্রোতা বা বক্তার সামনে সোজা হয়ে দাঁড়ানো/বসা।
শক্তভাবে করমর্দন করা।
কথা বলা বা শোনার সময় চোখে চোখ রাখা।
পরিষ্কার ভাষায় ধীরে ধীরে কথা বলা।
চলাফেরাই ধীর স্থিরতা অবলম্বন করা। (Walk Slow, Talk Slow)
এ বিষয়গুলো আপনার বক্তব্য বা আপনাকে পছন্দ করার পিছনে বড় ভূমিকা পালন করে।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১১
মাহদী হাসান শিহাব বলেছেন: সুযোগ থাকলে How to Talk to Anyone বইটি পড়ে নিতে পারেন। চমৎকার বই। এই বই নিয়ে সামনে লিখবো ইনশাল্লাহ।
২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:০১
আমি সাজিদ বলেছেন: চমৎকার একটি পোস্ট। অনেকগুলো জায়গা থেকে সংগৃহীত এই পরীক্ষিত টুলস সবাই অ্যাপ্লাই করার চেষ্টা করুক। আপনাকে অনুসরণ করলাম।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:১৬
মাহদী হাসান শিহাব বলেছেন: আমার সাবস্ট্যাক সাইটে এই সিরিজের নাম "কুড়ানো জ্ঞান"।
বিভিন্ন জায়গা থেকে পছন্দের টপিক ও ইনসাইট নিয়ে কম্পাইল করে এই সিরিজের জন্য রাখছি।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবা
আমার সাবস্ট্যাক নিউজলেটার: https://substack.com/@mhshihab
৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: খুবই ভালো-দরকারী একটি বিষয় তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
আর তাই অভাব-অভিযোগ সহ পুরাতন বছরের সকল অপ্রাপ্তি-জরাজীর্ণতাকে পাশে রেখে আপনার জন্য রইলো নতুন বছরের প্রাণঢালা শুভেচছা।
শুভ নববর্ষ ২০২৫।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৬
মাহদী হাসান শিহাব বলেছেন: আপনাকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
৪| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬
মেহবুবা বলেছেন: খুব ভাল বিষয় উপস্থাপন করেছেন। ৭ নম্বরের বিষয়গুলি রপ্ত করতে পারলে উপকার হবে সবার।