নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার উপস্থিতি ও আমার পরিচয়: www.linktr.ee/mhshihab

মাহদী হাসান শিহাব

কৌতুহলী পাঠক ও লেখক

মাহদী হাসান শিহাব › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের জন্য কিছু পরমার্শ

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:০২



হাসিনার তখত নাড়ায় দিয়ে হাসিনাকে দাবড়িয়ে বর্ডার পার করার কাজে বৈছাআ (বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলন) অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, ত্যাগ ও শত শহীদের বিনিময়ে দেশ আওয়ামি ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে।

সমস্যাটা হয়েছে ফ্যাসিস্ট মুক্ত হওয়ার পর অর্থাৎ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর।

মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে দেশকে নিজের দেশ মনে করতেন এবং যারা মুক্তিযোদ্ধা না তাদের গোনায় ধরতেন না, এই যে এটিচিউড এমন এটিচিউড বৈছাআর মধ্যে দেখা গেছে।

তাদের বিভিন্ন সমস্যার চুর-চেরা বিশ্লেষণে আমি এই লেখায় যাবো না। শুধু তারা ঢাকার বাইরের এলাকাগুলোতে তাদের সরকারি সুযোগ সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে ছোটখাটো একটা আলাপ করবো।

.

বৈছাআ এর ভাইয়েরা,

প্রশাসন দুই রকম।

১. কেন্দ্রিয় প্রশাসন
২. মাঠ প্রশাসন

কেন্দ্রিয় প্রশাসন হলো-সচিবালয়, বিভিন্ন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর এর মূল অফিস। কেন্দ্রিয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত দেয়, মাঠ প্রশাসন তা বাস্তবায়ন করে।

মাঠ প্রশাসন হলো বিভাগ, জেলা, উপজেলা।

মাঠ প্রশাসনের কাজ হয় স্থানীয় সরকারের সেট আপে।

স্থানীয় সরকার আবার দুইরকম।
ক. রুরাল লোকাল গভমেন্ট
খ. আরবান লোকাল গভমেন্ট

রুরাল লোকাল গভমেন্ট হলো-
জেলা পরিষদ
উপজেলা পরিষদ
ইউনিয়ন পরিষদ
আরবান লোকাল গভমেন্ট হলো-
সিটি করপোরেশন
পৌরসভা

.
রুরাল লোকাল গভমেন্টের যে তিনটি টায়ার তা নিচেরটা উপরেরটার অধীনে থেকে কাজ করে। যেমন-মন্ত্রণালয় কোন কিছুর বরাদ্দ দেয় ডিসি বরাবর অর্থাৎ জেলা টায়ারে, জেলা সে বরাদ্দ উপজেলায় ভাগ করে দেয়, উপজেলা সেগুলো ইউনিয়নে ডিস্ট্রিবিউট করে।

বরাদ্দ অনেকসময় সরাসরি উপজেলা বা ইউনিয়নেও আসতে পারে। সেক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদকে সাথে নিয়ে উপজেলা পরিষদের সেগুলো বাস্তবায়নের নির্দেশনা থাকে।

উপজেলা পর্যায়ে যে সরকারি অফিসগুলো আছে তার মধ্যে সতেরটা অফিস উপজেলা পরিষদের নিকট অর্পিত বা ভেস্টেড অফিস। যেমন: সমাজসেবা অফিস, একাউন্টস অফিস, মহিলা বিষয়ক অফিস, বিআরডিবি অফিস।

উপজেলা পর্যায়ের কিছু অফিস উপজেলা পরিষদের নিকট অর্পিত বা ভেস্টেড না। যেমন: থানা, ফুড অফিস, সাবরেজিস্টার অফিস।

তবে এ অফিসগুলোও ইউএনও সাহেব সিদ্ধান্ত দিতে পারেন বা ক্ষেত্রবিশেষ তিনি এসব অফিস সংশ্লিষ্ট কয়েকটি কমিটির সভাপতি।
.

আরবান লোকাল গভমেন্টের দুটি টায়ার প্রত্যেকটা স্বাধীন। তারা স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে নিজের মত কাজ করে। এরা সাধারণত সরাসরি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পায়।

.

বৈছাআর যে সব বাচ্চারা বিভিন্ন অফিস থেকে স্টেক নিতে যেয়ে অফিসারদের সাথে রাফ টাফ ব্যবহার করছেন, চাঁদা বা কাজ দাবি করছেন, যেসব সুপারিশ আগে মন্ত্রী এমপিরা করতো সেগুলো আপনারা যারা করছেন- আপনাদের উচিৎ-

লোকাল গভমেন্ট সম্পর্কে আগে জানা।
প্রত্যেকটা অফিসের কাজ সম্পর্কে জানা।
প্রত্যেকটা অফিসের বেসিক অরগানোগ্রাম জানা।
সংশ্লিষ্ট যে কাজ আপনি পেতে চাচ্ছেন বা সুপারিশ করছেন সেটার বেসিক নীতিমালা জানা।
মাঠ পর্যায়ে সরকারের যেসব প্রোগ্রাম নিয়মিত চলে সেগুলোর নীতিমালা সম্পর্কে জেনে মস্তানি করা।
ইন্টারমিডিয়েটের পৌরনীতি ও সুশাসন বইটা আবার পড়া।

বেসিক এই বিষয়গুলো না জেনে প্রশাসন ও অফিসারদের কাছে আপনারা যেসব আবদার করছেন তা ক্ষেত্রবিশেষ অসম্ভব, ভয়ংকর ও হাস্যকর।

আপনারা যদি দেশ পরিচালনায় বা সরকারের কাজে অবদান রাখতে চান তাহলে আপনাদের সংশ্লিষ্ট বিষয় জানা ও পড়ার কোন বিকল্প নেই। গায়ের জোরে ক্ষণিকের জন্য কিছু আদায় হয়ত করতে পারবেন, কিন্তু লং টার্মে কোন অবদান বা ইমপ্যাক্ট রাখতে হলে আপনাকে সিরিয়াসলি সরকারের প্রত্যেকটা টায়ার, তার কর্মপ্রক্রিয়া, নিয়ম কানুন, নীতিমালা, সম্ভব হলে সংবিধান সম্পর্কে বেসিক পড়াশুনা থাকতে হবে।

আর যদি হম্বিতম্বি ও মাস্তানি করে ক্ষমতার ভাগ নিতে চান, ক্ষণিকের জন্য হয়ত কিছু পাবেন; কিন্তু কিছুক্ষণ পরই দেখবেন আপনি এক্সপায়ারড ও ইউজড হয়ে রাস্তায় পড়ে আছেন। আপনাদের মধ্যে যাদের জানাশোনা, পড়াশোনা, নেটওয়ার্ক ও কথার ফ্রেমিং ভালো থাকবে তারা এগিয়ে যাবে।

আশা করি, বিষয়টা আপনারা বিবেচনায় নিবেন।






মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.