নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছুই হয়নি মর্মে জানা/ \"জানি জানি\"--তবুও চড়াই গলা/ আমি কত বড় তালকানা!

মাস্টারদা

মানুষ হয়ে জন্মানোর মর্যাদাবোধের খোঁজে,,,,,

মাস্টারদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাত কলেজের ঢাবিয়ান।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:০৯

বেলা যতই পশ্চিমে ছুটবে, মনের সাথে কথা ছিল ভাষার ঝোলা
তেমনি তরতরিয়ে মধ্য গগন দিয়ে উড়ে পেটটা ফুলিয়ে নেবে। অনেকটা কুনো ব্যাঙের মতো হবে দেখতে। তারপর একটু একটু করে নাড়া দেব আর পাকা বরইয়ের মতো ছড়্-ছড়্ করে ঝরে পড়বে কাগজের বুক ভরে। কিন্তু হচ্ছে তার উল্টোটা। জীবন-বেলার উড্ডিনের সাথে সাথে ভাষার-বেলা পাল্লা দিয়ে ছুটেছে অরুণাচলে। আদি অবস্থায়। যেখানে শব্দেরা ঘুরে মরে কুহেলিকার পথে পথে।
তাই খালি বাগ ঝেড়ে-ঝুড়ে যা কিছু গুড়ো-গাড়া ভাঙা-জোড়া পেয়েছি তাই দিয়ে কোন রকমে জোড়া-তালি লাগিয়েছি। যাইহোক শুরু করা যাক...



হারকিউলিস একবার একাই প্রকাণ্ড একটা সিংহ শিকার করেছিল। তারপর সেটার ছাল ছাড়িয়ে মাথার ওপর দিয়ে পিঠের 'পরে ছড়িয়ে রাখত, জামার মতো করে। দেখতেও লাগত বেশ। লোকে তখন বলতে লাগল,

--"বুঝলে মশাই, হারকিউলিস আস্ত একটা সিংহের বাচ্চা। বাপ রে! গায়ে কী বল!"
--"তা যা বলেছেন! হেক্টর-অ্যাসিলিসও তো একটাো সিংহ মারতে পারিনি। আর সিংহের সাইজটাও একবার আন্দাজ করেন দিকি?"

কেউ কেউ তো আগ্ বাড়িয়ে এও বললে,
--"সিংহের মতো কী রে! ও তো সিংহ-ই। একা একা ওই হাতির সমান একটা সিংহ মারা তো আর চাট্টিখানি কথা না!"
--"তাইলে বোঝ!" সম্মিত জানায় সব কথায় 'হুমম' বলা টাইপের একজন।
--"না, আর যাই বল না কেন ভাই এ জিউসের রক্ত না হয়ে পারেই না।" পাশের থেকে আরেকজন যোগ করে। "আল্লা গো আল্লা! মাথায় ওই ছালটা সহ হঠাৎ দেখলে তো বুকের মধ্যে 'ছ্যাঁৎ' করে ওঠে। সিংহ বলে একটুও ভুল হয় না!"

অন্যদিকে ঘটল এক অভাবনীয় ঘটনা। বনের সব সিংহেরা মিলে শিকার-টিকার বাদ দিয়ে ফেসবুকে-টুইটারে-ইন্সটায় তর্ক-বিতর্ক শুরু করল। নিজেদের ইজ্জত নিয়ে টানাটানি বলে কথা! সচেতন কেউ ঘরে বসে থাকতে পারে নাকি?

--"দো'পেয়ে মানুষ হয়ে হারকিউলিস কেন পশুরাজের খেতাব পাবে? সিংহের মতো শক্তি না থেকেও কেন সিংহ পরিচয়ে পরিচিত হবে?"-- জমে ওঠা তক্কে কেউ শান্তভাবে যুক্তি দেখায় তো কেউ প্রতিবাদ করে রক্ত চোখে।

--"সব জায়গায় বলে বেড়ায়; সে নাকি সিংহ। নলির ন-ও নেই সসেআবার সিং--হ! ঢং কতো!"--বিরক্তি নিয়ে কেউ একজন স্ট্যাটাস দেয়।

সহমত ভাইয়ের রিপ্লে--
--"একদম হাচা কতা কইচ মিয়া।"

--"নেড়ি নিজেরে নেকড়েই ভাবে।"--কেউ একজন ব্যাখ্যা দেয়। "ওই যে কে যেন বলেছিল--কুত্তে আপনে গ্যালি মে শের হোতা হে--এই হয়েছে দশা!"

--"তাতে আমাদের মান কমলো কোথায়?"--পাল্টা যুক্তি দেখায় আরেকজন।

রাগের ইমোজি দিয়ে রিপ্লে আসে--
--"আমাদের নাম ব্যবহার করে ফায়দা লুটে। বুকের ছাতি ফোলায়।"

প্যারাগ্রাফে কেউ একজন কমেন্ট করে--
--"মাঝেমধ্যে আমাদের ইমেজ সংকটে পড়তে হয়। সাধারণ লোকে তার থেকে ধোকা খায়। তারপর ভাবে সব সিংহই বুঝি এমন! সেদিন তো এক কাঠুরিয়া আমায় দেখে দাম-ই দিল না! এমনভাবে চাইলে যেন গলির নেড়ি কুত্তা দেখছে।"

সবাই পক্ষে-বিপক্ষে কিছু না কিছু যুক্তি-তর্ক তুলে ধরতে লাগল। তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। নদীর ধারের গোসলের ঘাট থেকে শুরু করে খাবার খাওয়া পর্যন্ত, সবখানেই। শেষে সিদ্ধান্ত হল --এর একটা বিহিত এবার করতেই হবে।
এর মধ্যে কয়েকটা সিংহ এসবের ধার দিয়েও গেল না। সব দেখলে-শুনলে-জানলে তবু কিছুই বললে না। তারা দিব্বি সকাল সকাল শিকারটা মেরে সে-ই জমিয়ে ভূরিভোজ সেরে দুপুরটা ভাত ঘুমে কাটিয়ে দিল।
আর যারা নিজেদের ইমেজ সংকটে ছিল তারা তো পণ করে নেমেছে --"এবার সম্মান ফিরিয়ে তবেই খাবে- নাবে, তার আগে নয়।"
না খেয়ে, সিকি খেয়ে, হাফ খেয়ে, ধীরে ধীরে তারা শক্তি হারাল, পরে দেখা গেল কাজের কাজ তো কিছু হলোই না বরং উল্টো শক্তি কমে যাওয়ায় বুনো কুকুরের দলের কাছে পরাজিত হয়ে তাদের পেটে গেল। অন্যদিকে যারা এসব দেখেও গায়ে মাখেনি, নিজেদের কাজ করে গেছে লোকে আজও সিংহ বলতে কেবল তাদেরকেই বোঝে। তারাই শক্তি-সাহসের প্রতীক হয়ে আজও টিকে আছে।


আরেফিনের সাত কলেজ যেন পুরানোক্ত সেই হারকিউলিস।

কেউ কারো সম্মান কমাতে পারেনা, বাড়াতে পারেনা। যদি কেউ পারে তো সে ব্যক্তির নিজেই। নিজের কর্ম। কর্মই সম্মানিত করে, লাঞ্ছিত করে, ইমেজ তৈরি করে।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১২

রাজীব নুর বলেছেন: পুরো পোষ্টে শেষ কথাটাই মূল্যবান।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫০

মাস্টারদা বলেছেন: ছোটবেলায় দুষ্টুমি করলে কাকা একটা কথা বলত, "ছেলের মতো ছেলে একটাতেই যথেষ্ট, সাতটা-পাঁচটা লাগে না।"
ধন্যবাদ ভাই।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৫

জাহিদ হাসান বলেছেন: আমি ঢাবি অধিভূক্ত সাত কলেজের একজন শিক্ষার্থী। আমি আপনাদের অসভ্য-ইতর বাংলাদেশকেই চার পয়সার দাম দেই না, আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় !


১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১৩

মাস্টারদা বলেছেন: মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১৩

হাবিব বলেছেন: যথার্থই বলেছেন.........

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫১

মাস্টারদা বলেছেন: বুঝলে সবি, না বুঝলে ফাঁকি। ধন্যবাদ @হাবিব ভাই

৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: বেশ শক্তিশালি প্রতিবাদ।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫২

মাস্টারদা বলেছেন: প্রতিবাদ নয়, উপলব্ধি। ধন্যবাদ পদ্মসম মন্তব্যের তরে

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: একটা প্রতিবাদের পোস্টকে রূপক আশ্রিত করতে গিয়ে আমার বেশ জটিল লাগলো। অনুভূতিটা বাস্তব জীবনের হাওয়ায় লজ্জাজনক তবে গল্পটি পড়ে বেশ মজা পেলাম। পোস্টে লাইক।

অফুরান শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জানবেন।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

মাস্টারদা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
জটিলতা আমার মনে হয়নি, নিজের অনুভূতি বলেই হয়তো। তবে পরের বারে সচেতন থাকবো।

ভালোবাসার প্রতিদান ভালোবাসা ছাড়া আর কী হতে পারে?

৬| ১৫ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ছোটবেলায় দুষ্টুমি করলে কাকা একটা কথা বলত, "ছেলের মতো ছেলে একটাতেই যথেষ্ট, সাতটা-পাঁচটা লাগে না।"
ধন্যবাদ ভাই।

ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.