নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছুই হয়নি মর্মে জানা/ \"জানি জানি\"--তবুও চড়াই গলা/ আমি কত বড় তালকানা!

মাস্টারদা

মানুষ হয়ে জন্মানোর মর্যাদাবোধের খোঁজে,,,,,

মাস্টারদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ : পৃথিবীর বিপন্নতম প্রাণী

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১২

এ শহরে আর মানুষ নেই, ঈশ্বরের আবাস আজ এখানে।
ঈশ্বর গ্রাম ছেড়েছেন, এখন শুধু মানুষের বাস সেখানে।

ধনঞ্জয় মুভি দেখে দু'দিন আগের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। ঠিক মনে পড়া নয়, দু'দিন ধরে পেটে গুতোচ্ছিল। কিন্তু লিখতে ইচ্ছে করছিল না। ধনঞ্জয় শুধু সেটা উসকে দি'ছে।

আড়াই মাস পর দু'মাসের বকেয়া টিউশনির সালামি নিয়ে নিচে নেমেছি। রাস্তা ক্রস করে আসাদ অ্যাভিন্যুউ ধরে পূবে আসাদগেট যাব। তারপর নীলক্ষেতের বাস; হল। রাত আনুমানিক ন'টা। "জেব্রা-ক্রসিং" দিয়ে রোডের মাঝ বরাবর এসে খেয়াল হল, সম্মুখে স্কুল বাউন্ডারি ঘেঁষে জুবু-থুবু হয়ে কেউ একজন বসে আছে।
হাটা পথে যট্টুকু দেখা যায়, দেখে ক্রস করে চলে এলুম কিছু দূর। মনে হয় কিছু ভিক্ষা চাইছিল অস্পষ্ট স্বরে। ক্ষীণ নয়, লজ্জা-চাপা। খটকা লাগল, ফিরে গেলাম।

--"বুড়িমা, আপনার বাসা কই?"
জেলার নাম বলতে পারে না, উপজেলা জানে। আগে শুনিনি। শব্দ চয়ন আর বলার ঢঙে বুঝলুম, শহরে নতুন।

--"আপনার ছেলে-মেয়ে নেই?"
--"নেই।" মাথা নাড়িয়ে বলল। কিন্তু কথায় স্পষ্ট, --যারা মা'রে দেখে না তারা সন্তান নাকি!)
'পরক্ষণেই যেন নিজের কলিজার ৩২টি নাড়ী-ছেঁড়া যন্ত্রণাকে অস্বীকার করেছেন' মনে পড়ায় বললেন,

--"নিজেরাই চলতে পারে না।"

এই ফাঁকে উনার সম্মুখে দু'/তিনটে দু'/পাঁচ টাকার নোট পড়ে থাকতে দেখে, মনে হয় বুড়ির কাছে এখন সবচেয়ে দামি প্রশ্নটাই এবার করলাম।

--"রাতে খেয়েছেন কিছু?"

উনি আমার কথার উত্তর দেওয়ার সময় ছাড়া মাথা নিচু করে রাখছিলেন। এবার আর মাথা উঁচু হল না। আস্তে করে শুধু ডানে-বায়ে দু'বার নড়ল। মাস-শেষে পকেটের হাহাকার আমার পরিচিত, তাই এই নিঃশব্দের ভার বুঝতে কষ্ট হবার কথা না।

মানিব্যাগ দেখলাম, খুচরো নেই! রাজধানীর বুকে যারা ছেলে-পড়িয়ে পড়ে তারা জানে, টিউশনির টাকায় প্রায় সবটাই আস্ত নোট থাকে।

টাউন হলের দিকে ইশারা করে বুড়িকে বললাম,
--"ওখান থেকে কিছু খেয়ে নিয়েন।"

হাত বাড়িয়ে টাকাটা নিলেন। সোজা হবার আগে দেখলাম, নোটটা দেখে আমার পা'র দিকে একবার চাইলেন। চটিটার একটা ফিতে ছিঁড়ি ছিঁড়ি করছিল।
উনি একবার টাকার দিকে আরেকবার আমার মুখের দিকে চাইলেন। কী যেন একটা পাপবোধে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না, দ্রুত হাটা ধরলাম।

কিছু দূর গিয়ে "কী করে"- ভেবে ফিরে দেখি,
ডান হাতটায় নোটটা ধরে আছে আর বাঁ-হাতটা তার অশ্রু মোছায় ব্যস্ত।



ছবি: ইন্টারনেট

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধনঞ্জয় মুভিটা দেখেছি।
কলকাতার মুভি। সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪

মাস্টারদা বলেছেন: কাল দেখলাম। যুগ যুগ ধরে এমনি হয়ে আসছে।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.