নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Maahathir

Maahathir › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেলা শেষে

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ২:১০

বাবা তুমি বিকম পড় ব্যাংকের বড় অফিসার হতে হবে। ইন্টারমিডিয়েট করবার পর এই কথা ছিল আমার মায়ের৷

কর্মচারী হইয়ো না কর্মকর্তা হও এটা ছিল আমার বাবার কথা।

চাচা ছিলেন exen.বিস্তর সন্মান তার, আলাদা ভাব নিয়ে চলতেন বুয়েট বিদ্যা সাথে তার। মামা ছিলেন গ্রিন্ডলেজ ব্যাঙ্কের বড় কর্মকর্তা । বাড়ীর সামনে সকাল বেলা গাড়ি , ড্রাইভার কুদ্দুস ভাই দরজা খুলে মোঘল সালাম, আর মামা তার সভাবজাত স্টাইলে প্রস্থান করতেন। আর এ দুজনের লাইফ স্টাইল আমার বাবা মার ইন্সপেরেসন। আমাদের কাছে সেই ছিল পৃথিবীর আদর্শ মডেল। তার রেখে দেয়া টাই দিয়েই নট বাধা শিখি। সে যে ভাবে চলে, কথা বলে, সবই অনুকরণ করি৷ আর ওই সময় হতে সপ্ন বাধা বাসে আমিও মামার মত হব।
একদিন মামা বলেছিলেন আমাদের কাউকে ব্যাংকে চাকুরি করতে দিবেনা। তখন বুঝিনি চাকরি কি জিনিস তবে এখন বুঝি চাকর কি জিনিস আর চাকরি কি। যদিও ব্যাংকে চাকরি করিনি তবে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে কত ভাল থাকা যায় তা অনেকটা এই রকম:

মাঝে মাঝে মনে হয় আমি এক ৩০ টাকার পতিতা ২০ তেই যে বুড়ি শুরুতেই যার শেষ। মাঝে মাঝে এর চেয়েও নিকৃষ্ট অবস্থান অর্যন করি। তখন পরিবারের ইজ্জতের ভাবনায় কষ্টের হাসি দিয়ে বলতে হয় দেখেছ আমি কত বড় বেহায়া । আসলে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে মধ্যে বিত্তে সংসারে জন্ম নেয়া শিশুটি শুধু শুধুই আসে। জিবন বলতে তার কিছু কি আছে , ৪ বছরেই যার স্কুল শুরু আর মৃত্যু পর্যন্ত তার কোন বিরাম নেই। ছুটছে ত ছুটছেই, কখন সকাল হল আর কখন যে রাত এসে গেছে কিছুই তার মনে নেই, মাঝখানেতে চারটি দশক গত হয়েছে৷ সেই স্কুল প্রাঙ্গনে আবার আমি হাত ধরা ৪ বছরের ছেলে, চেনা খেলার মাঠ, চেনা ঘন্টা চেনা শিরিশ গাছটি অভিমানের ভংগিতে ঠাঁই দাড়িয়ে, মুখ গুলো সব নতুন। এক পলকেই মনের দরজা খুলে গেল দেখতে পেলাম ৩৮ বছর আগে এইখানেতই আমি বাবার হাত শক্ত করে ধরা , ইশত নিচু হয়ে বলছে আমায় ভয় কে জয় করতে হবে সব ঠিক করে উত্তর দিবে৷ এর মাঝেই কত ঘটনা ঘটে গেছে, শৈশবের দিন, কিশোর বেলার মাঠ, বৃষ্টির রাতে পুকুরের ভেষে যাওয়া মাছ, কলেজ প্রাঙ্গন মিছিলের শব্দ জয় বাংলা, প্রথম গাঁজার সাধ প্রথম বড়দের গলপ প্রথম ভালবাসা প্রথম কেউ চিরতরে চলে যাওয়া থেমে থেমে বলি সব সব সব হারিয়ে গেছে৷ এখন অন্য রকম আমি, মানুষের ভিতর মানুষ, সবখানেতেই বেচে থাকার লড়াই, টাকার বিনিময়ে জীবন ঘড়ী বিক্রি করেছি আমার বেতন ৪০০০ টাকা; বড় লোকের ছোট বাচ্চাগুলি শাষকের ভুমিকায়৷ কাজ আর কাজ, সত্যের সাথে আপষ, তোষামুদি, ভয় , অধিকারহিন জিবন আর চামচামি মিলে মিশে একাকার বেতন আট ঘরের নামতা, এই মূহুর্তে আমি বড় পরিশ্রান্ত মাগো তোমার কোলে একটু ঘুমাতে চাই এরপর লম্বা ঘুম, আবার দেখা হবে সেই স্কুল প্রাঙ্গনে নতুন ভাবে, মুছে যাবে চির তরে একজন লড়ে যাওয়া মানুষের নাম৷

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৫৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: তাহলে আপনি কি বলবেন সব চাকরিজীবি মানুষই অসুখী।
যারা বড় চাকরি করে মানে বেশি বেতন পায় আমার তো মনে হয় তারা সুখী।
চাকরি করেই গাড়ি বাড়ি বানিয়ে ফেলছে।
ছোট চাকরিজীবিদের কোন সুখ নেই। দিন আনি দিন খাই এই অবস্থা।

২| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৪৫

Maahathir বলেছেন: ভাই চাকরি করি অনেক বছর। আপনার কথা হয়ত ঠিক অনেকেই সুখি তাদের চাকরি নিয়ে। একজন আপাদমস্তক সুখি মানুষ আমি, এটাই আমার বাউন্ডারির মানুষ গুলির অভিমত। আসলে কি তাই? এ প্রশ্ন সুধুই আমার- আমারি কাছে। উত্তর দিব সেই আমি - আমারি কাছে। ধন্যবাদ ভাই আমার লিখা লিখির কোন ধারনা নাই তবে আপনি পড়েছেন লেখাটি আবার কমেন্ট করেছেন সত্যিই ভাললাগল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.