নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্ম ১৯৯৬ এর ২৮ ফেব্রুয়ারি । বিএএফ শাহীন কলেজ চট্টগ্রাম ও ঢাকায় স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টে আছি ।

মাহবুব উল হাসান নাফি

লিখতে ভালো লাগে । খুব ভালো লিখতে পারি তা বলবো না, হয়তো অন্যদের আমার লেখা পড়ে তেমন ভালোও লাগে না; কিন্তু আমি নিজের আনন্দের জন্য লিখি—তাই অন্যদের ভালোলাগার দিকে কিছুটা নজর দিলেও খুব বেশি গুরুত্ব দেই না ।

মাহবুব উল হাসান নাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুর শিক্ষার হাতেখড়িতে বাবা-মা বনাম প্রাইভেট টিউটর

০৩ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮

শিশুর শিক্ষাগত যোগ্যতার শুরুটা হওয়া উচিত বাবা-মায়ের কাছে । কিন্তু আজকালকার শিশুদের দেখলে দেখা যায় তারা হাতেখড়ি নেওয়ার পরই ব্যক্তিগত শিক্ষকের (private tutor) এর কাছে ছুটে । এখানে লাভ বা ক্ষতিটা কি হয় জানেন? লাভ কি হয় তা আমার জানা নাই, তবে ক্ষতি যে খুব একটা কম হয় না তা আমি হলফ করে বলতে পারি ।

ব্যক্তিগত শিক্ষক একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে আপনার ছোট্ট বাচ্চাটাকে শুধুমাত্র পাঠ্যবই পড়াচ্ছে । সময় যেহেতু খুবই কম, পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে বাস্তবতার মিল খুঁজে বের করে সামাজিক শিক্ষা দেওয়ার সময়টুকু তারা পান না । ফলে আপনার শিশু পাচ্ছে না সামাজিক শিক্ষা, যোগসাজশ তৈরী করতে পারছে না পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা আর বাস্তব শিক্ষার মধ্যে । এবং মানুষজনের কাছে প্রশ্ন করছে, এসব জিনিস মুখস্থ করে কি হবে? এগুলোর বাস্তব প্রয়োগ কোথায়?

আমার মনে আছে, চট্টগ্রামে থাকাকালীন কোন এক শুক্রবারে আব্বুর পাশে নামায পড়ছিলাম । অন্যান্য অনেক ছোট বাচ্চার মত আমারও অভ্যাস ছিল দাঁড়ানো অবস্থা থেকে সিজদায় যাওয়ার সময় ধুপ করে বসা । তো সেদিন নামায শেষে আব্বু আমাকে বলেছিলেন, এভাবে ধুপ করে বসলে মাটি ব্যথা পায়, আল্লাহর কাছে বিচার দেয় । ছোটবেলায় আমি অনেক ধর্মভীরু ছিলাম (এখন অনেকটা কমে গিয়েছে, বলতে লজ্জা হচ্ছে, তারপরও বলছি – আল্লাহ আমাকে মাফ করুন, আমীন । এখানে উল্লেখ না করলেই নয়, আমার ধর্মভীরুতার পিছনে আমার পরিবারের যথেষ্ট অবদান আছে) । তো আল্লাহর কাছে বিচার দিবে, এই কথা শুনে আমি এতোটাই ভয় পেয়েছিলাম যে এরপর থেকে আমি সিজদায় যাওয়ার সময় এতোটাই আলতোভাবে বসতাম যেন মাটি আমাকে অনুভবই করতে না পারে ! কিন্তু আজ আপনি দেখুন, কয়টা ছেলে-মেয়ে যায় তার বাবার সাথে নামায পড়তে? আমি যদি বাবার সাথে না যেতাম তবে আমি শিখতে পারতাম না ।

আমার প্রাথমিক শিক্ষার স্তরটুকু আমি আমার বাবা-মায়ের কাছেই শিক্ষাগ্রহণ করেছি । খুব সম্ভবত সপ্তম শ্রেণীতে আমি প্রথম ব্যক্তিগত শিক্ষকের কাছে যাই । আমি আজ স্বাবালক হয়ে বুঝি, আমি যেখানে যা কিছু শিখেছি তার অধিকাংশ কৃতিত্ব আমার পরিবারের । এবং এই শিক্ষার সূচনা হয়েছিল সেই সময়ে যখন আমি আমার বাবা-মায়ের কাছে পড়তাম । অর্থাৎ প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে । একটি শিশুর এই মূল্যবান সময়টুকুই আপনারা তুলে দিচ্ছেন ব্যক্তিগত শিক্ষকের কাছে, আর আপনার শিশুকে বিদ্যালয়ে গিয়ে শুনতে হচ্ছে, “এই শিখিয়েছে তোমার পরিবার?” আসলে পরিবার কি কিছু শিখিয়েছে আদৌ? কিছু শেখাতে পেরেছে? আপনার সন্তানের ভবিষ্যত অবকাঠামো আপনার হাতে । তার ভবিষ্যতটাকে হেলাফেলায় নষ্ট করলে তার ভার কিন্তু আপনাকেই নিতে হবে ।

অনেক বাবা-মা মনে করেন, আমরা কত আগে পড়েছি, এখন কি আর পড়াতে পারবো এসব, পড়াশোনা এগিয়ে গেছে কত! ঠিক আছে, আপনার যদি মনে হয় আপনি আপনার সন্তানকে পড়াতে পারবেন না, তাহলে আপনি একজন ব্যক্তিগত শিক্ষক রাখতে পারেন । কিন্তু শিক্ষক রেখেই হাওয়া হয়ে যাবেন না দয়া করে । প্রতিদিন আপনার সন্তানকে নিয়ে বসুন, সে শিক্ষকের কাছে কি পড়ছে তা জানুন, যদি পারেন তাহলে আপনিও শিখে নিন তার পড়াগুলো । বিশ্বাস করুন, এর মাধ্যমে আপনার সন্তান যে শুধু অনেক কিছু শিখতে পারবে তা নয়, বরং আপনার এবং আপনার সন্তানের মধ্যকার সম্পর্কটাও মাত্রাতিরিক্ত রকমের সুন্দর হবে ।

এই কথাগুলো লেখার মূল কারণ হচ্ছে, আমরা বড় হয়েছি, আমাদের অনেক বান্ধবীর বিয়ে হয়েও গেছে ইতিমধ্যে, অনেকের হয়নি, বন্ধুরা হয়তো আরো পরে করবেন – বিয়ের পর ইনশাআল্লাহ আপনাদের ঘর আলো করে ছোট্ট ফুটফুটে শিশু আসবে (আমার এক বান্ধবী, বিয়ে হয়েছে ৬ মাস, তাকে দেখি বাচ্চার জন্য তার জামাইয়ের কাছে কান্নাকাটি করে tongue emoticon ), আমি এবং আমরা সবাই চাই আমাদের সন্তানেরা অনেক সুন্দরভাবে বেঁচে থাকুক পৃথিবীতে – আর এই চাওয়ার বিপরীতে আমাদেরও কিছু করতে হবে অবশ্যই ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.