নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাহীন ভাবনাগুলো

মাহের ইসলাম

মাহের ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ম্লিটা ( Where Land Speaks to Heaven)

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০০



পটাপট ছবি তুলতে দেখে, আব্দুল্লাহ আমাকে ভদ্রভাবে বলল যে, শিয়া এলাকা পার হওয়ার সময় যেন ক্যামেরা লুকিয়ে ফেলি, আর ভুলেও কোন ছবি না তুলি।
কারণ আমার জানাই ছিল, তবে এখনো বৈরুতের শিয়া এলাকা চিনি না।
তাই, তাঁকে অনুরোধ করলাম যেন শিয়া এলাকায় প্রবেশের আগেই আমাকে মনে করিয়ে দেয়।

একটা মোড়ে গাড়ী একটু স্লো হতেই এক্কেবারে পুতুলের মত অসাধারণ সুন্দর চেহারার ছোট মেয়ে এসে হাত বাড়িয়ে ধরল।
আমি তার চেহারার সাথে পোষাকের চরম বৈপরীত্য দেখে হতচকিত হয়ে খেয়াল করলাম, প্রায় মাঝবয়সী এক মহিলা জীর্ণ শীর্ণ পোষাকে রাস্তার পাশে বসে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।
আমি বুঝে উঠে কিছু করার আগেই গাড়ি চলতে শুরু করেছে, ততক্ষণে।

- আমি সিরীয়দের ঘৃণা করি। আব্দুল্লাহর কথায় সম্বিত ফিরে পেলাম। প্রায় সাথে সাথেই সে জুড়ে দিল,
- অবশ্য, আমার এই বউটি ছাড়া।

কথাটা শুনে আবার চোখ গেল আব্দুল্লাহ পাশে বসা সুন্দরী তরুনীর দিকে; যার বয়স আবুল্লাহর চেয়ে নিদেনপক্ষে বিশ বছর কম হবে।
আব্দুল্লাহ নিজেই তার সেডান কারটি ড্রাইভ করছে, আমি পিছনের সীটে বসেছি।
কারণ, তার পাশের সীটে তার দ্বিতীয় স্ত্রী বসে আছে।
জিন্স, সাদা শার্ট, আর সাথে প্রিন্টেড স্কার্ফ দিয়ে মোড়ানোর পরেও তার দৈহিক সৌন্দর্য বুঝতে মোটেও কষ্ট হচ্ছে না, আমার।
প্রথম বাক্যটির প্রতিক্রিয়া তার ফর্সা মুখে দ্রুত এমনভাবেই ফুটে উঠেছে যে, আব্দুলাহর পরের বাক্যটি তাঁকে খুব একটা সন্তুষ্ট করেছে বলে মনে হলো না।

আব্দুল্লাহ নিজেই বলতে শুরু করল। সিরিয়ার চলমান সংঘাত শুরুর পর থেকেই বৈরুতের রাস্তায় সিরীয় শরণার্থীদের সংখ্যা এমন হারে বেড়েছে যে, তাদের প্রতি অনেক লেবানীজের আর আগের মত সহানুভূতি দেখানোর পথ খোলা নেই। ফিলিস্তিন শরণার্থী নিয়ে এমনিতেই তাদের রাজনৈতিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। তাই সিরীয়দের নিয়ে তারা আরো বেশি শংকিত। এর মধ্যেও অনেক লেবানীজ এই সকল শরণার্থীদের মধ্য থেকে স্ত্রী বেছে নিয়েছেন। বাস্তবতার তাগিদে, কোনো কোনো শরণার্থী তরুণী বেমানান বরের দ্বিতীয় স্ত্রী হতেও দ্বিধা করেনি। তবে, আব্দুল্লাহ তার এই স্ত্রীকে যথেষ্ট ভালোবাসে। শ্রেফ করুণা করে তাঁকে বিয়ে করেনি। আর তাই, এই স্ত্রীকে সে বেশি সময় দেয়, প্রথম স্ত্রী আর সন্তানদের সাথে সপ্তাহে মাত্র দুইদিন কাটায়।

আমি আবার তাকালাম।
ফর্সা গালের সাথে লাল লিপস্টিক মাখানো ঠোঁটের অধিকারিণীর চেহারায় স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছে বলেই মনে হলো।
তবে কেন জানি মনে হল, রাস্তায় ক্ষুধার্ত এবং অনিশ্চিত জীবন যাপনের চেয়ে ভরা পেটে নিরাপদ ঘরে দিন পার করা বুদ্ধিমানের কাছে শ্রেয়, নাকি ভুক্তভোগীর একমাত্র উপায় – সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে।
কিন্তু এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই যে, এই ধরনের অপমানজনক কথাবার্তার চেয়েও অনেক বেশি যন্ত্রণা তার এই স্বল্প জীবনে ইতোমধ্যেই পার হয়ে এসেছে এই সিরীয় তরুণী।

আমাদের গন্তব্যস্থল বৈরুত থেকে প্রায় ৮২ কিলোমিটার দক্ষিনে নাবাতিহ এলাকার এক দুর্গম পাহাড়, যার নাম ম্লিটা (Mleeta)। যে পাহাড়টি আজ 'পৃথিবী যেখানে জান্নাতে কথা বলে' (‘the place where Earth talks to Paradise’) হিসাবে পরিচিত। অবশ্য এর আরো কিছু পরিচিতি আছে, যেমন – প্রতিরোধের পর্যটক ল্যান্ডমার্ক, প্রতিরোধের পর্যটন যাদুঘর, হিজবুল্লাহর ডিজনিল্যান্ড, সন্ত্রাসী পর্যটন ট্র্যাপ, হিজবুল্লাহ ল্যান্ড ইত্যাদি। বলাই বাহুল্য, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে কোন পক্ষের প্রতি সহানুভূতি কেমন, ম্লিটা পাহাড়ের নামকরনের মাধ্যমে তা কিছুটা হলেও প্রকাশ পেয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদপত্রে।

সকাল সকাল রওয়ানা দেয়ার কথা থাকলেও পারিনি। দাউরাতে (ঢাকার গুলিস্থানের সাথে তুলনীয়) ইসমাইল ভাইয়ের দোকানের সামনে বসে বেশ বড় সড় একটা শর্মা শেষ করে যখন কফি খেতে খেতে অপেক্ষা করছিলাম আব্দুল্লাহর আগমনের জন্যে, তখন আমার সামনে বৈরুতের সকালের ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা সত্বেও দৃস্টি নিয়ন্ত্রণে একের পর এক ব্যর্থতার আনন্দ উপভোগ করছিলাম। আব্দুল্লাহ যখন এসে পৌছালো তখন বেলা প্রায় দুপুর।

গাড়িতে উঠতে উঠতেই দেখি ইসমাইল ভাই দুইটা প্যাকেট নিয়ে হাজির, বললেন রাস্তায় খাওয়ার জন্যে থেমে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। শ্রদ্ধায় মাথা নিচু হয়ে গেল, আপনাআপনি ; উনার দূরদৃষ্টির জন্য নয় বরং আন্তরিকতা আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসায়। যে কয়টা দিন বৈরুতে ছিলাম, চট্টগ্রামের এই মানুষটির আন্তরিকতা এবং মানুষের প্রতি বিশ্বাস আমাকে বেশ কয়েকটি ঘটনায় মুগ্ধ করেছে।

শিয়া এলাকায় গাড়ী প্রবেশ করার আগেই আমি নিজেই বুঝতে পারলাম।
সবুজ আর হলুদ রঙয়ের কলেমা লেখা পতাকা আর শহীদদের ছবি দূর থেকেই আমার চোখে পড়ল।
ক্যামেরা লুকাতে দেখে, আব্দুল্লাহও আর কিছু বলল না আমাকে।

শহর পার হতে বেশিক্ষন লাগল না।
এয়ারপোর্টের পরে হালকা ট্রাফিক জ্যামে পরে বাংলাদেশের কথা মনে পরে গেল। একটা মিলিটারি কনভয় দেখিয়ে আব্দুল্লাহ নিজে থেকেই ব্যাখ্যা করল, সম্ভবত এটাই জ্যামের কারণ। সে আরো জানালো, উইকেন্ডের কারনেও অনেক লোক আজ শহর থেকে বেরিয়ে পড়ছে। ধীরে ধীরে গাড়ি এগুনোর মধ্যেই আমাদের গাড়ীর পাশে একটা এসইউভি দাঁড়িয়েছে, চালাচ্ছে এক তরুণী, পাশের সীটে এবং পিছনে সবাই তরুণী। মাথা নাড়ানো দেখে আন্দাজ করলাম, কোন প্রিয় গান শুনছে, হয়ত ভলিউম একটু বাড়িয়ে দিয়েই।

আমাদের গাড়ী এখন সোজা একটা রাস্তা ধরে এগিয়ে চলছে, ঠিক সমদ্রের কোল ঘেঁষে।
সমূদের ছবি তুলতে গিয়ে ভালো ছবি তুলতে পারলাম না, সূর্যের বিরোধিতায়।
হঠাৎ গাড়ীর গতি কমতে দেখে সামনে তাকালাম। একটা মিলিটারি চেক পয়েন্টে একটা একটা করে গাড়ী চেক করছে।
আব্দুল্লাহ আমাকে জিজ্ঞেস করল, আমার পাসপোর্ট আর অন্যান্য কাগজ পত্র ঠিক আছে কিনা। তাঁকে আশ্বস্ত করতে না করতেই আমাদের গাড়ীর কাছে চলে এল এক সৈনিক। কথাবার্তা কিছুই বুঝলাম না। দেখি, আমাদের গাড়ী ছেড়ে দিল, যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে অনেক তাড়াতাড়ি।
অজন্তেই একটা বড় শ্বাস ছাড়তে গিয়ে বুঝলাম, এতক্ষণ কতটা টেনশনে ছিলাম।

আরো কিছুদুর চলে এসেছি।
রাস্তার পাশ ঘেঁষে গড়ে উঠা গিঞ্জি একটা এলাকা দেখিয়ে আব্দুল্লাহ জানালো যে, ফিলিস্তিন শরণার্থীরা এখানে থাকে, এটা একটা রিফিউজি ক্যাম্প।
দেখামাত্রই মোহাম্মদপুরের বিহারী পল্লী আর উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরের দৃশ্য আমার চোখের সামনে চোখের সামনে ভেসে উঠল।
সময়ের ব্যবধানকে যদি মাপকাঠি ধরে নেয়া হয়, তাহলে বিহারী পল্লী আগামী ত্রিশ বছর পরে কিংবা রোহিঙ্গা শিবির আগামী পঞ্চাশ বছর পরে যেমন কল্পনা করবেন, বৈরুতের এই রিফিউজি ক্যাম্পটাও বাইরে থেকে আমার কাছে তেমন মনে হচ্ছিল।

সাঈদা শহরে যখন আমাদের গাড়ী ঢুকছে, তখন বিল্ডিঙয়ের ছায়া দীর্ঘ হতে শুরু করেছে।
রাস্তা অচেনা বলে শহরের কয়েকটা জায়গায় গাড়ি থামিয়ে আব্দুল্লাহ ম্লিটা যাওয়ার রাস্তা জেনে নিল।
একটা ছোট এবং ছিমছাম শহর মনে হল আমার কাছে, লোকজন বেশি নেই।
অবশ্য, বাংলাদেশ থেকে যেই এখানে আসবে, লোকজন তার কাছে কম বলেই বিবেচিত হবে।

শহরের অলিগলি পার হয়েই আমরা একটা হাইওয়েতে উঠে পড়লাম।
ধীরে ধীরে আমাদের গাড়ি উঁচুতে উঠতে শুরু করেছে। একটু পরেই বাতাস ঠাণ্ডা হতে শুরু করল।
শহর পার হয়ে বুঝলাম, অনেক উপরে উঠে এসেছি।
এতক্ষণ রাস্তার দু’পাশেই বাড়িঘর থাকাতে পাহাড়ের উচ্চতা বুঝতে পারছিলাম না।

কিছুদুর এগুনোর পরে রাস্তার দু’পাশের কয়েকটি পরিত্যক্ত বিল্ডিং দেখিয়ে আব্দুল্লাহ জানালো কিভাবে সিরীয়রা ইসরাইলের আক্রমণ প্রতিহত করেছে।
বিল্ডিঙের দেয়ালে অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন এখনো স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এই এলাকাটা বিগত প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যে রয়েছে।
উল্লেখ না করলেই নয় যে, বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে শহীদদের বড় বড় ছবি টানিয়ে রাখা এই অঞ্চলের একটা রীতি, যা আমি প্রচুর দেখেছি এখানে। অর্থাৎ, এখানকার মায়েরা অনেক দেশপ্রেমিক শহীদের জন্মদাত্রী।


রাস্তায় গাড়ি থেকেই তোলা আরো কিছু ছবি।









আশে পাশের জনবসতি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে, এক পর্যায়ে প্রায় নাই হয়ে গেল।
আমরা কিছুটা উৎকণ্ঠিত এই ভেবে যে পথ ভুল করে ফেলেছি কিনা। টেনশন নিয়ে চলতে চলতেই একটা ছোট লোকালয়ে পৌঁছে গেলাম।
আমি গ্রাম বলতে পারছি না, কারণ তিন চারটা ছাড়া বাকী সবই একতলা পাকা বাড়ি।
বাড়ির সামনে লতানো গাছ, মনে হয় আঙ্গুর গাছ হবে। তবে সব মিলিয়ে গোটা পঞ্চাশেকের বেশি বাড়ি আছে বলে মনে হল না।
বিস্মিত হলাম এই দেখে যে, বাচ্চা বয়সের কিছু ছেলে দেখলেও কোন পুরুষ চোখে পড়ছিল না। মহিলাতো নয়ই।
মনে হচ্ছিল, হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মত কেউ একজন এসে এলাকার মানুষদের যেন ধরে নিয়ে গেছে। কাউকে জিজ্ঞেস করায় আশায়, আশে পাশে খুঁজতে খুঁজতে, ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে লাগল, আব্দুল্লাহ।
হঠাৎ একজন বয়স্ক লোকের দেখা মিলল।
গাড়ি থামিয়ে কুশল বিনিময় করে, আমাদের গন্তব্যস্থল জানিয়ে পথ জিজ্ঞেস করল সে।
তিনি আমাদেরকে বাড়িঘরের শেষ প্রান্তে এনে দূরে মেঘে ঢাকা এক পাহাড় চুড়া দেখিয়ে যাওয়ার রাস্তা বাতলে দিলেন।



আমরা এবার বাড়িঘরের দেয়াল লাগোয়া রাস্তা ধরে নামছি।
এক বাড়ির উঠোন আরেক বাড়ির ছাদ হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেখেছি, সিনেমায়।
এখন পাথুরে রাস্তা ধরে নামতে নামতে, এই বিদেশ বিভূঁইয়ে সেই দৃশ্য বাস্তবে দেখলাম।
আরো অনেকদুর এগিয়ে আসার পরে দূর পাহাড়ের উঁচুতে এক পতাকা উড়তে দেখলাম।
আব্দুল্লাহর দৃস্টি আকর্ষণ করতেই সে জানালো, ঐ পাহাড়ই আমাদের গন্তব্যস্থান।



মুহূর্তেই মনটা ভালো লাগায় ভরে গেল।
শেষ পর্যন্ত যা খুঁজছি, তার দেখা মিলতে চলছে, আর কিছুক্ষনের মধ্যেই পৌঁছে যাব।
এক পাহাড় নামা শেষ করে এবার আরেক পাহাড়ে উঠতে শুরু করলাম।
কিছুক্ষনের মধ্যেই বুঝতে পারলাম, আমরা এখন হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একেবারে কেন্দ্রের মধ্যে চলে এসেছি।

Party of God এর অসংখ্য হলুদ পতাকা আমার চোখের সামনে, রাস্তার পাশে সারি সারি।
রাস্তায় রোড সাইন দেখে আরো নিশ্চিত হলাম, আমরা সঠিক রাস্তাতেই আছি।
অদ্ভুত এক শিহরণ অনুভব করছি। আরো কিছুটা উপরে উঠতেই দোকানপাট চোখে পড়ল।
এক জায়গায় একটা রোড ব্যারিয়ার রাস্তার সাইডে রেখে দেয়া।
একটু দুরেই দুই তরুন, পাশে একটা মটর সাইকেল।
একজনের কোমড়ে ঝুলানো ওয়াকিটকি যে কারো নজরে পড়বে অতি সহজেই।
রীতিমত ভয় পাচ্ছি এখন। অজানা এক আশঙ্কায় নিজেই নিজেকে মনে মনে গালি দিচ্ছি – কি দরকার ছিল এখানে আসার, বেড়ানোর জায়গা দুনিয়াতে কম পড়ছে নাকি।



পাহাড়ের প্রায় অর্ধেক উঠার পরে রাস্তাটা কিছুদুর সমতল হয়ে চলেছে।
দু পাশে সারি সারি হলুদ পতাকা আর শহীদদের বড় বড় ছবির ভীড়ে ঘ্র-বাড়ী প্রায় ঢাকা পড়ে গেছে।
অনেক নিচের ভ্যালির দৃশ্য অপূর্ব সুন্দর।
ছবি তোলার সাহস হলোনা।
হিজবুল্লাহ মিলিশিয়াদের অনেক লোমহর্ষক গল্প শুনেছি। আমি সেই গল্পের অংশ হতে চাই না।

সমতল রাস্তার শেষে গাড়ী ডানে মোড় নিয়ে উপরে উঠতে শুরু করল; এখন অনেক খাঁড়া হয়ে উঠেছে রাস্তা।
একটু এগুতেই চোখে পড়ল ম্লিটার সাইনবোর্ড। আরবী লেখা না বুঝতে পারলেও এটুকু বুঝলাম যে,আমরা এখন ম্লিটা পাহাড়ের চুড়ায় উঠার রাস্তায় উঠে পড়েছি। বেশিক্ষন লাগলো না, উপরে উঠে আসতে। এগিয়ে ডানে মোড় নিতেই চোখে পড়ল, এই থিম পার্কের প্রবেশস্থল।

পার্কিং-এ গাড়ী রেখে দ্রুত ছুটলাম গেটের দিকে।
ততক্ষণে প্রায় বিকেল হয়ে এসেছে, এটা আবার সন্ধ্যায় বন্ধ হয়ে যায়।
টিকেট কেটে ভিতরে ঢুকতেই, মাঝ বয়সী এক ভদ্রলোক এগিয়ে এসে পরিচিত হলেন।
নিজে থেকেই জানালেন, তিনি আমাদের গাইড হিসেবে আমাদের সহযোগিতা করবেন, ঘুরে বেড়াতে এবং বিভিন্ন তথ্য জানাতে।
জিজ্ঞাসার উত্তরে জানালেন, ইচ্ছেমত ছবি তোলা যাবে।
কথা বলতে বলতেই সামনে এগুতে থাকলাম। দুপাশের ফুল আর গাছ ছাপিয়ে চোখে পড়ল বিশাল এক কাল পতাকা, পতপত করে উড়ছে।


@ ছবিঃ লেখক।
ম্লিটা ( Where Land Speaks to Heaven) - শেষ পর্ব

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:২৫

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনাকে দেখে খুশি হলাম।
অনেক ধন্যবাদ, উতসাহিত করার জন্যে।

শুভ কামনা রইল।

২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৩৭

সনেট কবি বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:২৮

মাহের ইসলাম বলেছেন: সকাল সকাল আপনাকে দেখে অসম্ভব ভালো লাগলো।
আপনার ছোট একটি কথায় কী পরিমাণ যে অনুপ্রাণিত হয়েছি, তা বলে বোঝাতে পারবো না।

ভালো থাকবেন, অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।

৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:৩২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভ সকাল প্রিয় মাহেরভাই,

মাহেরভাই মানেই অজানাকে জানার ,অদেখাকে দেখার বিরাট সুযোগ। বরাবরের মত সুন্দর পোস্ট। Party of God বা স্মিটা পাহাড় সম্পর্ক জেনে ভীষণ খুশি হলাম। পোস্টে প্লাস++++

শুভকামনা ও ভালোবাসা প্রিয় মাহের ভাইকে।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:৪০

মাহের ইসলাম বলেছেন: সকাল সকাল আপনাকে দেখেও যারপরনাই খুশী হলাম।
আপনার প্রতিও শুভ সকালের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

অনেক দিন ধরেই লিখবো লিখবো করেও শুরু করতে পারছিলাম না। তাই, এবার এক প্রকার জোর করেই লিখে ফেলা, আর কি।
আপনার মন্তব্য আমাকে সব সময়ই বাড়তি প্রেরণা দেয়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইল।

৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:১৯

আখেনাটেন বলেছেন: বিশ্ব অপরাজনীতি সেখানের মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রাগুলোকে কন্টকময় করে তুলেছে। অথচ একসময় দলে দলে মানুষ বৈরুতে অবকাশ যাপনে যেত।

আপনার বর্ণনা বেশ মসৃন ও নিটল। মনে হচ্ছিল আমিও গাড়িতে আপনার পাশের সিটেই বসে শুনছি এসব।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৯

মাহের ইসলাম বলেছেন: সহযাত্রী হিসেবে আপনাকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
এরকম একটা জার্নিতে আমাকে সঙ্গ দেয়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার ছোট মন্তব্যে অনেক অনুপ্রানিতবোধ করছি।

ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইল।

৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৯

জুন বলেছেন: লেখাটি প্রকাশের সাথে সাথেই পড়েছিলাম, সাথে ভালোলাগা চিনহটিও দিয়ে গিয়েছিলাম মাহের ইসলাম। তবে মন্তব্য করা হয়নি।
চমতকার লেখনীতে দক্ষিন লেবাননের হেজবুল্লাহ শাসিত ম্লিটা যাত্রার অসাধারণ বর্ননা পড়লাম এই কিস্তিতে। পাহাড় বেষ্টিত প্রাকৃতিক যাদুঘর, যেখানে মুজাহিদীনরা ইসরাইলী সৈন্যদের প্রতিহত করেছিল সেই ইতিহাস বর্ননা করবেন আগামী পর্বে সেই প্রত্যাশায় রইলাম।.
অনেক ভালোলাগা রইলো লেখাটিতে।
+

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৫

মাহের ইসলাম বলেছেন: লেখাটি ভালো লেগেছে এবং তা চিহ্নিত করতে দেরী করেননি জেনে আমারও খুব ভালো লাগল।
খুব খুশী হয়েছি। অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার কথা শুনেই বুঝেছি, আপনি এই জাদুঘর/থিম পার্ক অথবা যুদ্ধ ক্ষেত্র সম্পর্কে জানেন। আসলে, আমি শুধু ঐখানের বর্ণনা দিতে চেয়েছিলাম। তবে লেখা শুরু করে দেখলাম, যাত্রার বর্ণনা অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে, তাই আলাদা পর্ব করতে বাধ্য হয়েছি।
বলতে দ্বিধা নেই, আমি হিজবুল্লাহর এই প্রাকৃতিক জাদুঘর দেখে যতটা না মুগ্ধ হয়েছি, তার চেয়ে বিস্মিত হয়েছি অনেক বেশি।

আশা করছি, সেই বর্ণনা নিয়ে হাজির হয়ে যাবো, শীগগিরই।

আপনার প্রতি অনেক শুভ কামনা রইল, ভালো থাকবেন।

৬| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০২

ওমেরা বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন ।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:১৯

মাহের ইসলাম বলেছেন: অনেক দিন পর আপনাকে দেখে খুশী হলাম।

অসংখ্য ধন্যবাদ।
শুভ কামনা রইল। ভালো থাকবেন।

৭| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৫৩

রাকু হাসান বলেছেন:

সাবলীল বর্ণনা ভালো লেগেছে । আপনার দোজখের দরজায় (A Trip to Mt Nyiragongo )পোস্টটি মনে থাকবে অনেক দিন আমার । ++

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:১৬

মাহের ইসলাম বলেছেন: রাকু ভাই,
আপনাকে দেখে কেন জানি শ্রদ্ধা চলে আসে মনের মধ্যে।
প্রোফাইল পিকের কোন রোল এখানে আছে কিনা জানি না।

যাকগে, আপনাকে দেখে ভালো লাগল। ছোট করে হলেও খুবই অনুপ্রেরনাদায়ি একটা কথা বলেছেন। সেই সাথে আরেকটা লেখার যে প্রশ্নংসা করেছেন, একজন লেখক হিসেবে এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার বা পাওয়ার থাকতে পারে না। আমি সম্মানিতবোধ করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা রইল। ভালো থাকবেন।

৮| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:১০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার ভ্রমণ লেখা !
ছবি গুলো ও ভাললেগেছে।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:১৫

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনাকে দেখে অনেক ভালো লাগল।
অনুপ্রাণিত করার জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইল।

৯| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০৭

করুণাধারা বলেছেন: লেবাননে কাউকে যেতে শুনিনি, লেবানন ভ্রমণ কাহিনী এই প্রথম পড়লাম। আপনার বর্ণনা এবং ছবি ভালো হয়েছে। আপনার বর্ণিত ইসমাইল ভাই সেখানে কি স্থায়ীভাবে থাকেন? মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে বাঙালি স্থায়ীভাবে থাকতে শুনেছি কিন্তু লেবাননে কোন বাঙালি থাকেন, জানা ছিল না।

আশা করি পরের পর্বে নতুন কিছু মানুষ আর প্রকৃতির বর্ণনা পাবো। অপেক্ষায় রইলাম।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫০

মাহের ইসলাম বলেছেন: খুশী হয়েছি, আপনাকে এখানে পেয়ে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।

লেবাননে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছে, এমনকি পুরুষদের পাশাপাশি কিছু মহিলাও রয়েছে।
তন্মধ্যে ইসমাইল ভাই একজন। একজন বন্ধুবৎসল এবং অতিথিপরায়ন ব্যক্তি। তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন, তবে স্থায়ী বলা যাবে না।
বাংলাদেশে লেবাননের দুতাবাস নেই, তাই ভিসা জটিলতায় বেড়ানোর লোক আসলেই লেবাননে কম যায়। তবে, বিদেশীদের কাছে লেবানন কিন্তু একটি জনপ্রিয় বেড়ানোর দেশ।

ব্যস্ততার কারণে পরের পর্বে হাত দিতে পারিনি। আপনার কথা মাথায় রেখে মানুষ আর প্রকৃতির বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করব।

ভালো থাকবেন, অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।

১০| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:৩৩

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল পোস্ট।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:১৮

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ, আমাকে উৎসাহিত করার জন্যে।
ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইল।

১১| ০১ লা মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:২৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় মাহেরভাই,

আপনার বইটি পেয়েছি। ব্লগিং সমস্যার জন্য সেদিন জানাতে পারিনি। কি বলে যে আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাবো সে ভাষা আমার জানা নেই। ভীষণ ভীষণ খুশি হয়েছি। পাশাপাশি ব্লগিংএ আরো অনুপ্রেরণা পেলাম। আপনার স্থান মম অন্তরে।
অনিঃশেষ শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানবেন।

০২ রা মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:১৭

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনি বইটি পেয়েছেন জেনে ভালো লাগল।

আপনার প্রতি আলাদা একটা শ্রদ্ধা এবং আন্তরিকতা অনুভব করি। তাই, নিজের প্রথম বইটি পাঠাতে উদ্যোগী হয়েছিলাম। প্রচন্ড ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কিছুটা দেরীতে পৌঁছেছে, তবে আপনি পেয়েছেন। নিজের কাছেই অনেক ভালো লাগছে।

সামু'তে নিয়মিত হতে পারছি না। লগ ইন করতেও সমস্যা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই অনেক মিস করছি।

শুভ কামনা রইল, ভালো থাকবেন।

১২| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:২২

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: খুব সুন্দর উপস্থাপন।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৮:৪৭

মাহের ইসলাম বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনুপ্রাণিত হলাম।

শুভ কামনা রইল, ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.