নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের প্রসঙ্গে আলাদা করে বলার মতো কিছু নেই, ১৬ কোটি শেয়ার হোল্ডারের দেশে আমিও একজন শেয়ার হোল্ডার।

মাহফুজ ইসলাম মেঘ

আত্ম-পরিচয় দেবার মতো এখনো কোন পরিচয় জোগাড় করা হয়নি।

মাহফুজ ইসলাম মেঘ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গাইতে গাইতে গায়েন নাকি জানতে জানতে জানোয়ার?

০৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৫০

******* বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষনীয় পোস্ট *******



[প্রথমেই অনুরোধ রাখছি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য ও ব্যক্তিগতভাবে সচেতন হবার জন্য]



আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে খুব পরিচিত একটি "বানী" আমরা প্রায়ই দেখি। আর তা অনেকটা এরকম,,



"' মহানবী সঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে রোজা/শবে বরাত/শবে কদরের সময় সম্পর্কে অবহিত করবে তার জন্য জাহান্নাম/জাহান্নামের আগুন হারাম।"""


বানীটি এই পর্যন্তই, আর সেখানেই আমার সমস্যা। যেহেতু অনেকের মতেই আমি নাস্তিক,, সহজে কোন জিনিস আমি বিশ্বাস করি না, তাই এ বিষয়টিও আমার বিশ্বাস তালিকাতে শত চেষ্টার পরও স্থান পায়নি। নিচে এর পেছনে কাজ করা কারণগুলো দেবার চেষ্টা করলাম, আশারাখি সেগুলো পড়ে আমার সিদ্ধান্তটি ভুল না সঠিক তা যাচাই করবেন।


১. উক্ত বানীটি মহানবী সঃ এঁর নয়, তা ভাবার মূল এবং প্রথম কারণ হচ্ছে, বানীটির পর এর উত্‍স সম্পর্কিত কোন তথ্য আমি কোন স্থানেই পায়নি। প্রতিটি স্থানেই কেবল বানীটিই দেয়া, এর সাথে নেই কোন বুখারি, মুসলিম, বা অন্য কোন হাদীস শরিফের উল্লেখ।


২.ভার্চুয়াল কিংবা বাস্তব জগতের এমন কোন ইসলামিককে আমি পাইনি যারা এরকম কোন বানী, কোন হাদীস শরীফে পূর্বে পড়েছেন, বরং তাদের কেও কেও সরাসরি একে প্রতারণা বলে উল্লেখ করেছেন।


৩. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি বানীটিকে আমার কাছে অগ্রাহ্য করেছে তা হচ্ছে এর সাথে ইসলামিক মতবাদের সরাসরি বিরোধীতা। বানীটি বিশ্লেষন করলে বোঝা যায়, যে,


যদি কোন ব্যক্তি ( সে যে ধর্মেরই হোক, যে মতেরই হোক,হোক নাস্তিক, মুরতাদ কিংবা কাফের) কোন মুসলমানকে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সময় সম্বন্ধে অবহিত করলে তার জন্য জাহান্নাম হারাম মানে বেহেশত্ নিশ্চিত।


অর্থাত মহান আল্লাহ তা'লা তাকে তার সকল অতীত ও ভবিষ্যত গুনাহ্ ( এর মাঝে কুফরি ও শিরকও পড়ে) মাফ করে দিবেন।(নাউযুবিল্লাহ)


কিন্তু সবচেয়ে মজার ব্যপার হচ্ছে এমন কোন বিষয় সম্বন্ধে পবিত্র কোরআনুল কারিমে একটি শব্দও উচ্চারিত হয়নি যেখানে মহান আল্লাহ্ সামান্য আভাস পর্যন্ত দিয়েছেন যে কেবল একজন মুসলমানকে তার দায়িত্বের সময়সূচি সম্পর্কে অবহিত করলে আল্লাহ তাকে তার সকল গুনাহ্ থেকে মুক্তি দিবেন,, এমনকি সে যদি বংশ পরিচয়ে মুসলমানও হয়ে থাকে সেক্ষেত্রেও সে শিরক কুফরির মতো অন্যায় থেকে মুক্তি পাবে না, যতক্ষণ না সে শুদ্ধ নিয়তে তওবা করছে। বরং সেক্ষেত্রে তার জন্য জান্নাত বা বেহেশতই হারাম হয়ে যায়।


আর মূলত এ কারণটিই এই বানীটিকে আমার কাছে একধরণের মারাত্বক ভাওতা বাজিতে হিসেবে প্রমাণিত করেছে।


এতো গেল আমার অবিশ্বাস করার ব্যাপার, এবার আসা যাক আপনাদের স্বার্থের ব্যপারে। আপনি কি জানেন, যে এটি কি ??


এটি মূলত একটি বিদাত, এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিদাত কি?
ইসলামিক বিশেষজ্ঞদের মতে বিদাত হচ্ছে,,
‘যা কিছু আল্লাহর দ্বীনে নতুন সৃষ্টি করা হয় অথচ এর সমর্থনে কোন ব্যাপক বা বিশেষ দলীল প্রমাণ নেই।’


একটু লক্ষ্য করে দেখবেন, যে বানীটি সম্পর্কে আমি কথা বলছি, তারও বিশেষ কোন দলিল নেই,, অর্থাত এটি নিশ্চিত রূপে একটি বিদ'আত।


অথচ কেবল নিজের লাভের জন্য আমরা এরূপ পোস্ট দিয়ে যাচ্ছি, আর ভাবছি এমন জিনিস প্রচার করতে পারলেই আমাদের বেহেশত্ নিশ্চিত, আমারে আর আটকায় কোন বাপের বেটা!!!


বিষয়টি ঠিক যতোটা লোভনীয়, ঠিক ততোটাই ভয়ংকর।


মহানবী (সঃ) বিদাত সম্পর্কে বলেছেন,,

“নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদের আদর্শ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল (দ্বীনের মধ্যে) নব উদ্ভাবিত বিষয়। আর নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫৩৫ ও সুনান আন-নাসায়ী, হাদীস নং ১৫৬০, হাদীসের শব্দ চয়ন নাসায়ী থেকে]


অর্থাত, বুঝতেই পারছেন,, বিদ'আত বিশ্বাস, আমল ও তা প্রচার কতোটা ভয়ংকর??


যে বিষয়কে আপনি ভাবছেন আপনাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করবে, ঠিক সেটিই আপনাকে জাহান্নামের স্থায়ী বাসিন্দা করে ছাড়বে।


আর তাই এসকল বিষয় সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকা প্রয়োজন।


এ প্রসঙ্গে মহানবী (সঃ) বলেছেন,

“তোমরা (দ্বীনের) নব প্রচলিত বিষয়সমূহ থেকে সতর্ক থাক। কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয় বিদআ‘ত এবং প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা”। (সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৯৯১ ও সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৭৬। তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান ও সহীহ বলেছেন।)

তাই আসুন আমরা সঠিক বিষয় জানি, এবং তার আমল করি, কোন বিষয় সঠিক ভাবে না জেনে তার আমল না করি।

আর মহান আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু, বান্দা তার ভূল বুঝতে পারলে এবং শুদ্ধ মনে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দেন। আর এ ক্ষমা প্রার্থনার একমাত্র উপায় হচ্ছে তাওবা।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
"কিন্তু যারা তওবা করে, নিজেদের অতীত কৃতকর্মের সংশোধন করে ও আল্লাহর কাছে আশ্রয় নেয় এবং আল্লাহর জন্য ধর্মে বিশুদ্ধ হয়, তারা বিশ্বাসীদের সঙ্গে থাকবে। আল্লাহও শিগগিরই মুমিনদের মহাপুরস্কার দেবেন।" [সুরা নিসা: ১৪৬]

তাই আসুন,, বিদ'আত পরিহার করি, প্রতিরোধ করি, এবং আল্লাহর নিকট খাস দিলে, বিদ'আত ত্যাগের তাওবা করি,
এবং পরবর্তী জীবনের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে সত্যিকার ভাবে জান্নাত কে ফরজ ও জাহান্নামকে হারাম করি।
নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল।

ধন্যবাদ।


মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৭

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: আপনার যাচাই করে দেখার মানসিকতা এবং যুক্তি প্রয়োগের চেষ্টাকে সালাম এবং অভিবাদন জানাই। দীর্ঘজীবী হোন।

০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৫১

মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ০৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৯

রিপি বলেছেন:
টাইটেল টা চমৎকার হইছে। যুক্তি দিয়ে লেখা। পড়ে ভালো লেগেছে।
এসব লেখা দিয়ে পোস্ট ফেসবুকে বেশী হচ্ছে। কিছু অসাধু ছোটলোক রা ফেসবুকে নিজের পেজ এর লাইক বাড়াতে মরিয়া হয়ে এসব লিখে দিচ্ছে আর তাতে পড়ছে হাজার হাজার লাইক। শেয়ার ও হচ্ছে হাজার হাজার। এসব লেখা দেখলেই বিরক্ত হই।
এসব বন্ধ করতে হলে আমাদের মত সাধারন মানুষদের কেই আগে সচেতন হতে হবে।

০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৪৯

মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেছেন: একজন অসাধু ব্যক্তি হয়তো তার সাময়িক লাভের জন্য এসব ভুয়া কথা ছড়াচ্ছে, কিন্ত তার সেই ভুয়া কে দোয়া ভেবে বাকিরা নিজেদের চিরস্থায়ী ক্ষতি করে ফেলছে!! সমস্যাটা এই জায়গাতেই।

৩| ০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৪২

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: ফেসবুক পেইজ এর লাইক বাড়ানোর জন্য অনেক কাণ্ডই ঘটাচ্ছে পেইজ এডমিনরা। মজার বিষয় হচ্ছে সেই সকল বিষয়গুলো অনেকে মেনেও নিচ্ছে। আমি দেখার অপেক্ষাই আছি এই সকল পোষ্ট গুলো ওনাদের পেইজের পোষ্টে লাইকের বিনিময়ে সোয়াবের কত নেকী প্রদান করবেন :) তা দেখার জন্য।
এসকল লুভি ধর্মবানরা ধর্মের মূল শত্রু।

সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।

০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৫৮

মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেছেন: তাদের ভাষায় " গোনাহ যতোই হোক, সমস্যা কি?? রাস্তাঘাটে কেউ একজনকে ধরে বলে দিবেন কবে রোযা কবেবে ঈদ, ব্যাস...... সব গুনাহ মাফ!! চাইলে সাথে করে হাতে একটা হিজরি ক্যলেন্ডারও ধরিয়ে দেয়া যেতে পারে!!!"

৪| ০৮ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:১৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাল লিখেছেন।আজকাল মানুষ সঠিক ইবাদতের চেয়ে বিদাত করছে বেশি।

০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:০৮

মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেছেন: হুম....

৫| ০৮ ই মে, ২০১৬ সকাল ১১:৫৬

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
ফেসবুকে অনেক ফাজিল এ অপকর্মটি করে থাকে।

নিজেদের পোস্টের হিট বাড়ানোর জন্য নিজেদের মনগড়া মতো হাদিস তৈরী করে। X(

০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেছেন: হুম। আর কিছু ছাগল সেগুলোর কোন সত্যতা যাচাই না করেই দেধার্সে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌছে দেবার দায়িত্ব নিয়ে নেয়। এরা আরো বেশি বিপজ্জনক!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.