![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চোখে কাজল আর কপালে কালো বড় টিপ... শাড়ির সাথে বেশ মানিয়েছে রাণীকে।ইদানিং মেকাপের চল আসায় হালকা মেকাপের আচটাও দিয়েছে সে।রীতিমত কামনাময়ী যাকে বলে।তাকে মানিয়েছেও চমৎকার।
এখন চুল বাধার কাজটা শেষ হলেই পুরোপুরি তৈরী ।চুল বাধতে গিয়ে হঠাৎ করে তার মেয়েবেলার কথা মনে পড়ে গেল।এই চুল না বাধার কারণে তার মায়ের কাছ থেকে কতশত বকঝকা শুনতে হয়েছে।মাইয়াদের চুল খোলা রাখতে অয় না ভুতপেতে আছর করে।এ কথাটা মায়ের মুখ থেকে চিবিয়ে চিবিয়ে বলাটা প্রায়ই শুনতে হতো তার ।মা যদি এখন জানতো তাকে সত্যি সত্যিই ভুতপেতে আছড় করে প্রতিরাতে।সেটা মানুষরূপী ভূতপেত ।
পপিরাণীর শৈশব টা অন্য সবার মতোই ছিল দূরন্তপনা চূরান্তের।হইহুল্লর নদী সাঁতরানো থেকে শুরু করে পরের গাছের আম চুরি পুকুরে মাছ চুরি সব সবকিছু।চাঞ্চল্যতা বেহায়াপনা রীতিমত অনিষ্ট করে রাখতো গ্রামের সবাইকে। কিন্তু সবকিছু উল্টেপাল্টে দিয়েছে তার যৌবনকাল।
মা বাবার ভনিবানা হওয়ার পর পপিরানী বড় হয়েছে তার মায়ের কাছে।তার মা অন্যের বাড়ি কাজ করে যা পেতো তা দিয়ে কোরকম সংসার চালাত।ওর উপর নির্ভর করে পপিরাণী ও তার মায়ের পোষাক আশাক খাওয়া দাওয়া চলতো।পপিরাণীর সবেমাত্র যৌবনে পা দিয়েছে বয়সও তেমন না ১৪ বা ১৫।আর ঐ সময়টাই ঘটে বিপত্তি।তার অন্ধেরষষ্ঠী মা ইন্তেকাল করেন।পপিরাণী বেকায়দায় পড়ে যায়।তাকে দেখার মতো কেউ নাই।তার নানী যে পর্যন্ত বেচে ছিল মাঝে মাঝে তাদের দেখতো তার মামারা নাকও ঘেষতো না ।
পপিরাণী যেন অথৈই জলে পড়লো।দেখার তো কেউ নেইই খেতেও পারছে না ঠিকমতো।একবেলা খেতে পারে তো আরেকবেলা না।তার মা যে বাড়িতে কাজ করতো সে বাড়িতে গেলে বাড়িআলা ভ্রু কাপিয়ে কু দৃষ্টিতে তাকায় ।পপিরাণীর কাছে বাড়িআলার ভাবভঙ্গি ভালো ঠেকে না।পেটের দায়ে ঐ বাড়িতে যেতে তা না হলে ঐ বাড়ির দিকে পথভুল করেও যেত না।
তার দূর সম্পর্কের মামা আচমকা একদিন এসে পপিরাণীকে বলে
ঢাহা যাবি নাকিরে পপি ঐহানে খাইতে পারবি ভালো পরতে পারবি নালনীল বাত্তি দেখবি যাবিনী
পপিরাণীর গায়ের এরকম অসহনীয় জীবন আর ভাললাগেনা।অসহ্যের চূরন্ত পর্যায়ে মনে হয়েছে গ্রামের পরিবেশ।
পপি তার দূরসম্পর্কের মামার সাথে হুট করে একদিন ঢাকা চলে আসে।সে এখন ভালো খেতে পরতে নালনীল বাত্তি দেখতে পারে তবে অন্যভাবে অন্যচোখে।তার কাজ এখন রাতের বেলা।শহরে নালনীল বাত্তি জালানোর পর তার কাজ শুরু হয়।
এতক্ষণ সময় নিয়ে সে সাজছে ভালো খদ্দের খুজতে।সুন্দর করে কামনময়ী ভাবে না সাজলে খদ্দের কাছে ঘেষতেও চায় না ভালো বকশিশও পাওয়া যায় না।গতকাল সে একটা নতুন পারফিউমও কিনে।বেশ ঝাঁঝালো।গায়ে মাখলে শরীর মন এমনিতেই চাঙ্গা হয়ে যায়।সে লালনীল বাতির মধ্য দিয়ে হাটছে ওভার ব্রীজ আর ফুটপাত দিয়ে।এইমাত্র তার সামনে একটা প্রাডো গাড়ি ব্রেক কষতে দেখা গেল।সে অবলিলায় গাড়িতে উঠে গেল।তার শূন্যস্থান পূরণ করে তার মতো আরেক পপির আগমন ঘটলো।
এই পপির মতো দারিদ্রের কষাঘাতে অসহায় অনাথরা অনেকেই এভাবে এই ঘৃণ্য জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়।প্রথমে পেটের দায়ে পরে বিভিন্ন বেড়াজালে পরে পরিশেষে পেশা হিসেবে বেছে নেয়।এর জন্য মূলত সমাজ কিংবা রাষ্ট্র ব্যবস্থাই দায়ী।সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের বিৎঘুটে ব্যবস্থা দিন দিন অসহনীয় নাল-নীল বাত্তির ন্যায় বিবেকহীন আলো জালিয়ে অন্ধকার ডাকতে চেষ্টা করছে।
২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:২১
মাকসুদ আলম মিলন বলেছেন: থিম একই হলেও কে কিভাবে উপস্থাপন করছে সেটাই মূল উপপাদ্য বিষয়
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮
নেয়ামুল নাহিদ বলেছেন: ভালো হয়েছে
তবে এইরকম থিম নিয়ে অনেকেই লিখছে দেখছি 