নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনেক কথার কিছু কথা

মালেক চৌধুরী

মালেক চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলাম কি এবং প্রকৃত ইসলামি জীবন- ৫ (ধারাবাহিক আলোচনা)

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:০৯

তকদীর ও কর্মফল –

তকদীর ও কর্মফলের মধ্যে তফাৎ নির্ণয়ে অপারগতা কিংবা ধারনার সীমাবদ্ধতার কারণে অনেকে ইসলাম সম্পর্কে এলোমেলো মন্তব্য করে বসেন।তাঁদের অবগতি ও উপলব্ধির উদ্দেশ্যে বিষয়টি নিয়ে কিছুটা বিস্তারিত আলোচনা আবশ্যক মনে করছি।বিষয়টি অত্যন্ত সুক্ষ্ম ও স্পর্শকাতর,সুতরাং বক্তব্যের গভীরে প্রবেশ না করে শুধুমাত্র তর্কের জন্য তর্ক কিংবা বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে সবিনয় অনুরোধ করছি।যাইহোক,পূর্ববর্তী আলোচনায় তকদীর সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম অর্থাৎ বলেছিলাম তকদীর হলো জীবের জীবনের আল্লাহ নির্ধারিত পথপরিক্রমা বা পূর্বপরিকল্পনা।অর্থাৎ সকল সৃষ্টির জীবনে যাকিছু ঘটবে বা যেসব ঘটাবে তা সবকিছুই আল্লাহ তকদীর হিসেবে লিখে দিয়েছেন।আর কর্মফল হলো ভালো-মন্দ কর্মের ভালো-মন্দ ফলাফল।ইহলোক ও পরলোকে ভালোমন্দ কর্মের উপযুক্ত ফল ভোগ করতে হবে,বেহেস্ত – দুযখ এই কর্মফলের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে। বিষয়টি নিয়ে চিন্থার সীমারেখা যেখানে এলোমেলো প্রশ্নের মাঝে হারিয়ে গিয়ে ভুল পথে পা বাড়ায় তা হলো- “যেহেতু সকল ভালো-মন্দ কাজ আল্লাহর হুকুমে বা তকদীরের নির্ধারিত হওয়ার কারণে ঘটে থাকে,তাহলে পাপ-পূণ্যের কি”।সাধারণ ভাবনাতে এভাবেই মনে হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু ইসলামের সুক্ষ্ম ও গভীর তাত্বিক বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসে যে সত্য তা উপমার আশ্রয় ছাড়া বুঝানো মুশকিল।যেম্ন, ‘মশা’ নামের জীবটি আল্লাহ কেনো সৃষ্টি করেছেন তিনি ভালো জানের;তবে আমরা সাধারণ দৃষ্টিতে আমাদের ক্ষতি করা ছাড়া তার অন্য কোনো কাজ আমরা দেখিনা।আমাদের বা অন্যান্য জীবের রক্ত রিজেক হিসেবে তিনি তার ‘তকদিরে’ নির্ধারন করে দিয়েছেন।তার সকল আচরণ আল্লাহ কর্তৃক ‘তকদীর’হিসেবে নির্ধারিত তাই সেসব কর্ম বা আচরণের জন্য সে পাপীষ্ট হবেনা কারণ সে আল্লাহর ‘সীমা’ লঙ্ঘন করেনি।সে যদি মানুষের রক্ত না খেয়ে ‘মাছ-মাংস’ খাওয়া শুরু করতো তবে সে আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করার জন্য ‘গোনাহগার’ হতো;কিন্তু সে তা করেনি বা করার সাধ্য বা স্বাধিনতা আল্লাহ থাকে দেননি,এইজন্য মানুষ ও জ্বীন ছাড়া অন্য কোনো সৃষ্টি তার কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবেনা কারণ,তারা তাদের তকদীরে নির্ধারিত কর্ম ছাড়া অন্যকিছু করার সাধ্য বা স্বাধিনতা প্রাপ্ত নয় অর্থাৎ তাদের কর্মফল শূন্য।তারা বলতে পারে যা কিছু করেছি ‘তোমার’(আল্লাহ্র) ইচ্ছায়, আমাদের পাপ-পূণ্য হবে কেনো।তা’তো টিক তাইতো তাদের কোনো পাপ-পূণ্য নেই।তবে,তারাও (অন্যান্য জীব-জন্তুরা) রুগে-শোকে কষ্ট পায়,তাদের উপরওতো অবিচার-অনাচার হয়,তবে তা কোন পাপের শাস্তি তারা পায়?অবশ্যই তারা একে অন্যের সাথে তকদীরের অন্তরগত স্বাধিনতা ভোগ করতে যেসব অন্যায় করে সেসবের শাস্তি ভোগ করে কিংবা পুরস্কার প্রাপ্ত হয়।যেমন,বাঘ হরিণ শিকার করেতে গিয়ে যদিও তগদীরকেই অনুসরণ করে তবু হরিণের প্রতি যে অবিচার হয় সেই অন্যায়ের শাস্তি কোনোনা কোনো ভাবে হয়তো বাঘকে ভোগ করতে হয়,তবে এভাবে মৃত্যু হরিণের তকদীর যা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত অর্থাৎ বাঘ ও হরিণের জীবন প্ররিক্রমা বা জীবন পরিকল্পনা এভাবেই আল্লাহ করে রেখেছেন।তাহলে,এই সিদ্ধান্তে কি পৌঁছা যায়না সকল জীবের জীবনের সকল কর্ম কান্ড আল্লাহ কর্তৃক পূর্বপরিকল্পিত ও পরিচালিত?এই সিদ্ধান্তে পৌঁছা যায়না যে,আমরা ততোটুকু করতে পারবো যতটুকু আল্লাহ তকদীর হিসেবে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন?কিন্তু আবার কিছু কিছু কর্মের স্বাধিনতা ও সাধ্য আমাদেরকে দিয়েছেন এবং সেসব কর্মের সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।আর বলে দিয়েছেন সীমা লঙ্ঘন করোনা,যে সীমা লঙ্ঘন করবে তাকে কঠিন শাস্তির সম্মূখিন হতে হবে।তবে,এখানে গোপন(বাতেনে) কথা আছে তাহলো আল্লাহ সেই ‘গাইব’ও জানেন যে,কে তাঁর প্রদত্ব সীমালঙ্ঘন করবে এবং কে তা করবেনা;কিন্তু তিনি তা গোপন রাখতেই পছন্দ করেন।হয়তো তিনি চাননা আর কেউ তা জানুক কারণ তিনিই একমাত্র ‘আলিমুল গাইব’,হয়তো তিনি চান পরিনতির ভয়ে আমরা তার কাছে প্রার্থনা করি কারণ তিনি প্রার্থনাকারীকে পছন্দ করেন এবং তিনিই একমাত্র ‘প্রার্থনা গ্রহনকারী’,তিনি যার ইচ্ছা তার প্রার্থনা কবুল করেন এবং তাঁর দয়া থেকে নিরাশ না হতে পাহাড় সমান পাপে পাপীষ্টকেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন,আর তিনি যা ওয়াদা করেন তা তিনি কখনও ভঙ্গ করেন না।সকল প্রশংসা তাঁরই প্রাপ্য। (চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.