![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
..পড়া টেবিলে কেউ একজন পড়ছে! তা আমি স্পষ্ট ভাবে শুনতে পাচ্ছি,শুধু পড়ছে না সাথে লিখছে,পড়ার টেবিলের উপর একটি মোবাইল বাতির আলো আমি দেখতে পাচ্ছি! হ্যা প্রতিছবি দেখছি,তবে মানুষ টি মুখ দেখছি না দেহ! দেখছি না,তবে এমন গভীর রাতে কে আমার পড়ার টেবিলে?
.
আমি রুমের লাইট/বাতির সুইস দিয়ে দেখতে পেলাম,কেউ নেই আমার রুমে,আমি লাইট নিভিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম,একটু পর আবার সে মানুষ টি প্রতিছবি আমার টেবিলে পড়া শুরু করলো, খুব অল্প সাউন্ডে মিট-মিট করে পড়ছে,মা কে জাগানো কি এখন উচিৎ হবে? মা এখন ঘুমাছেন একটু পর তাহজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য উঠবেন,আমি আবার লাইটি দিয়ে দেখলাম,আমার পড়ার টেবিল টি যে স্থানে একটু আগে ছিল, সে স্থান হতে ১ ফুঁট দূরে পড়ে রইলো টেবিল,আমি অবাক হলাম,আমি ভয় পেতে শুরু করলাম,কিন্তু না আমাকে ভয় পেলে-তো হবে না,আমায় শক্ত হতে হবে।
.
ব্যাপার টি সানজিদার সাথে শেয়ার করা জন্য,আমি কল দিচ্ছি কিন্তু সানজিদা আমার ফোন রিসিভ করছে না,এখন অনেক রাত সে গভীর ঘুমে,সানজিার ফোনে আমার নাম সেভ করা রয়েছে # Moti_Miya , আমি ঘুমিয়ে পড়বো ভাবছি,দেখতে চাইলাম দরজার খিল ঠিক মত আছে নাকি? ওমা! এই দেখি আমার রুমের দরজা খোলা! তবে কে এসেছিল আমার ঘরে,তবে কে চলে গেল? না চোর আসেনি! চোর আসলে আমার মোবাইল টি নিয়ে যেতো,কিন্তু আমি তো নিজ হাতে দরজা লাগিয়ে ছিলাম,তবে কে দরজা খুলো? আমি বাসা হতে বেরিয়ে পড়লাম দেখতে চাইলাম আশে পাশে কেউ আছে নাকি,আমার ফোনে সানজিদার নাম সেভ করেছি # Chad লিখে,আজ আকাশে চাঁদ উঠেছে সাথে কিছু তাঁরা,আমি মধ্য রাতে কিছু সময় জোৎসা উপভোগ করলাম,এমন সময় সানজিদার শূন্যতা আমার মাঝে বিরাজ করছে,না আমার ঘুমানো সময় হয়েছে, চোখ দু'টি বার-বার বন্ধ হয়ে আসছে,তবে আমি চিন্তিতো কে এসেছিল আমার ঘরে? কে মিটি-মিট করে বই পড়েছে? আমার ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না,রহস্য উন্মোচনের খায়েস হয়েছে,আমার মাঝে খুব ভয় লাগছে,কিন্তু না আমার চোখ রাজী হচ্ছে না জাগরতো থাকতে,তাই আমি ঘুমিয়ে পড়লাম,তবে আমার ঘরে কে এসেছি? মানব নাকি মানবী অথবা ছোট বেলায় যে গল্প শুনতাম মধ্য রাতে আকাশ হতে লাল-নীল পরী এসে থাকে,তবে কি আমার ঘরে পরীর আগমন ঘটেছিল?
.
#খ
.
... সানজিদা কল করেছে আমায়,আমি ফোন রিসিভ করতে পারছি না বলে,মোবাইল অফ করে দিলাম,মা তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে উঠেছেন,মা যদি টের পায়,আমি মধ্য রাতে কোন মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলছি,ব্যাপার টি এতটা সহজ ভাবে মা নিবেন না,আমি মা কে শুধু ভয় করি এমন না,আমি মা কে শ্রদ্ধা করি,আমি মা কে খুব ভালোবাসি।
.
আমি খেয়াল করলাম,আমার পড়ার টেবিলে সে মানুষ! টি বসে আছে। এবার মানুষ টি কিছু একটি লিখার খুব চেষ্টা করছে,আমি চোখে চশমা লাগিয়ে মানুষ টি কে দেখতে পাচ্ছি,রক্তাক্ত শরীল! লোক টির,আমি আরও ভালো ভাবে দেখার জন্য লাইট এর সুইস দিয়ে দেখি কেউ নেই টেবিলে,আমি হতভম্ভ হয়ে গেলাম,আমি ভয় পেতে শুরু করলাম,আমি লাইট নিভিয়ে দেওয়া মাত্র মানুষ টি আবার দেখতে পাচ্ছি টেবিলে বসে আছে,লোক টির মুখ ভর্তি কেশ,মাথা ভর্তি চুল,এই দেখি আমাদের টিপু! গত বছর বাইক/হোন্ডা দূর্ঘটনায় টিপু মারা যায়,আমি নিজ হাতে টিপু কে কবর! দিয়ে এসেছি,তবে কি টিপু ভূত হয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে?
.
টিপু! আমায় কিছু একটা বলার জন্য খুব চেষ্টা করছে কিন্তু পাচ্ছে না,লিখেও দেখাতে পারছে না,আমার কলমের কালি শেষ বলে,টিপু শরীল হতে অনেক রক্ত পড়ছে দেখে আমি এগিয়ে যাচ্ছি টিপু দিকে,কিন্তু না,আমি এক পা এগিয়ে গেলে টিপু আমার কাছ থেকে দু'পা পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়,আমি আর টিপু কে ধরার চেষ্টা করছি না,বুঝার চেষ্ট করছি টিপু আমায় কি বলতে চাচ্ছে? টিপু তার রক্ত দিয়ে দেওয়ালে কিছু একটা লিখেছে, আমি তা দেখতে পাচ্ছি,টিপু লিখেছে "অল্প বয়সের (১৫-১৯ বছরের বালক) ছেলেদের যেনো কোন পরিবার বাইক/হোন্ডা কিনে না দেয়,আর যেনো কোন ছেলে অকালে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যেতে না হয়।" আমি টিপুর এমন টি লিখার অর্থ/ব্যাখা বুঝতে পেরেছি।
টিপু নবম শ্রেনী পাস করে দশম শ্রেনীতে ভর্তি হয়ে, বয়না ধরেছিল একটি বাইক/হোন্ডা,পিতা-মাতার এক মাত্র আদরের সন্তান হওয়াতে,টিপুর বাবা তাকে একটি বাইক/হোন্ডা কিনে দিয়ে ছিল,সে বাইক টি টিপু জন্য কাল হয়ে দাড়িয়ে ছিল,অকালে মৃত্যু হল টিপুর সড়ক-দূর্ঘটনায়,টিপু ঠিক করে বাইক চালানো শিখার আগে খুব দ্রুত গামি বাইক চালেতে গিয়ে দূর্ঘটনা শিকার হয়,শুধু টিপু কথা বলে ভুল হবে আমাদের দেশে টিপুর মত অল্প বয়সী অনেক ছেলে বাইক দূর্ঘটনা কবলে পড়ে অকালে প্রাণ/মৃত্য বরণ করছে।
টিপু আমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে,আমি টিপু কে বিদায় দিতে চাচ্ছিনা,আমি চাচ্ছি টিপু আমার অন্ধকার ঘরটিতে আবদ্ধ থাকুক,টিপুর কাছ হতে আমার অনেক কথা জানা বাকি রয়ে গেল।টিপু মহুর্তে অদৃশ্য হয়ে গেল।টিপু বিদায় না নিয়ে চলে গেল।
©somewhere in net ltd.