![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাত গ্রামের মানুষ চিনে নদীর তীরে
সাপ বাড়ি,যে বাড়ি টি কে এক ঘরের বাড়ি
বলা হয়,১ যুগ আগে এই বাড়ির বাসিন্দা
আলাদা হয়ে থাকছে নদীর তীরে,বাড়ির
কর্তা ছিল গ্রামে নাম করা চোর,হরিপাল
চোর বলে এখন অবশ্য অনেকে চিনে না,
তবে সবাই এখন তাকে সাঁপুড়ে
হরিপাল নামে চিনে,সে সাপ পোষে সাপ খেলা
দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করে।
.
আমাদের গ্রামের মন্ডল'রা
তাকে গ্রাম হতে চলে যেতে বলেছিল, কিন্তু
সে আর চুরি করবে না বলে এমন প্রতিশ্রুতি
দিয়ে নদীর তীরে একটি বাড়ি করে থাকছে
এক যুগ ধরে,তবে কি তাঁর পরিবারের সকলের
নিষেধ রয়েছে গ্রামের রাস্তায় চলা-চল
করার,হরিপাল নদী পথে চলা-চল করে, নদী
পার হয়ে অন্য গ্রামে গিয়ে সাপ খেলা
দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করে সংসার
চালায়,হরিপালের রয়েছে এক কন্যা সন্তান
তাঁর নাম নন্দা,নন্দা আমার ক্লাসমেট
কিন্তু কখনও নন্দা আমার সাথে হেঁটে বাড়ি
পৌছাতে পারেনি,কারন মন্ডলদের নিষেধ
রয়েছে,নিজ গ্রামে এসে পড়লে নন্দা নৌকা
করে বাড়ি পৌছে।
.
বৃহত্তর নোয়াখালীর ঐতিহাসিক নন্দিয়া
মেলা শুরু হয়েছে কিছু দিন হল মাত্র,আমরা
বন্ধুরা সবাই যাবো বলে ভাবছি,কিন্তু
আমাদের মেলায় যেতে হলে সাথে কিছু
টাকা নিয়ে যেতে হবে তা না হলে আনন্দ
করবো কিভাবে,তাছাড়া পরিবারের কাছে
চাইলে তেমন টাকা দিবে না,তাই বন্ধুরা
সবাই মিলে সিন্ধান্ত নিলাম রাতে
সুপারি চুরি করবো,আর সে সুপারি বিক্রি
করে মেলা দেখতে যাবো,স্কুল জীবনে যদি
কোন ছাত্রের অধ্যায়ে তাল-ডাব-সুপারি চুরির গল্প
জড়িয়ে না থাকে তবে বলবো তাঁর জীবন ষোল
আনা বৃথা।মায়ের কাছে
হরিপালের বাড়ি অনেক গল্প শুনেছি,সে
নাকি অনেক গুলো সাপ পোষে,মানুষের
বাড়ি যদি পোষা কুকুর পাহারা দেয় চোর তাড়ানোর
জন্য, তবে
মনে রাখতে হবে হরিপালের বাড়ি পাহারা
দেয় সাপ।
.
চার দিকে পূর্ণিমা চাঁদের আলো, দীপুর
মোবাইলের আলো
আমাদের সকলের শেষ ভরসা,প্রথমে
আমাদের সুপারি গাছ হতে সুপারি পাড়া
হলো,তাঁরপর দীপুর বাবার গাছ হতে সুপারি
পেড়ে যাত্রা দিলাম তন্ময়দের বাড়ির
দিকে,তন্ময়দের বাড়ড়ি যেতে আমাদের
পাগলা কুকুর তাড়া করলো,আমরা দৌড়ে
পালিয়ে উঠলাম সাপ বাড়িতে কুকুরের কাঁমড় হতে
রক্ষা পাওয়ার জন্য,কিন্তু আমরা
যখন বুঝতে পারলাম সাপ বাড়িতে চলে
এসেছি ঠিক এমন সময় দীপ চিৎকার দিয়ে
নদীতে ঝাপ দিয়ে বলো সাপ-সাপ,তন্ময়
লাপদিয়ে ডালিম গাছে উঠে গেলো আর
আমি দাঁড়িয়ে রইলাম নন্দা'দের বাড়ির
উঠোনে,আমরা ৩ জনে চিৎকার দিতে শুরু
করলাম,আমার চার পাশে ৪ টি সাপ এসে
সোঁ-মেরে বসে আছে এই বুঝি কামঁড় বসালো
আমার পায়ে।
.
আমরা তিন জনে হচ্ছি হরিপালে শত্রুদের
সন্তান,যে মন্ডল'রা হরিপাল কে চুরি দায়ে
এক ঘর করে রেখেছে,আমি-তন্ময়-দীপু আমরা
সে মন্ডলদের সন্তান,হরিপার চাচা ইচ্ছা
করলে আমাদের সাপের কামড় দিয়ে মেরে
পেলতে পারে,আমাদের চিৎকার শুনে
নন্দা'দের পরিবারের সকলে বের হয়ে
এলো,হরিপাল চাচা আমার মুখে লাইট মেরে
জানতে চাইলেন।
:- চোর নাকি?
: চাচা,আমি মতি,নন্দার ক্লাস মেট।
:- তো'বাবা এত রাতে আমার বাড়িতে
কেনো আসলা?
: চাচা,সব কথা পরে হবে আগে আমাকে
বাঁচান সাপ থেকে।
হরিপাল চাচা ঘর হতে বাশিঁ এনে বীন
বাজাতে শুরু করলেন।কিছু সময় পর সাপ ঘুলো
সব নন্দা নিজ হাতে বক্সে রেখে দিলো,
তন্ময় গাছ থেকে নেমে পড়লো,দীপু কে
নদী
হতে উদ্ধার করে নিলাম,জ্যোৎসা রাতে
নদীর তীরের দূশ্য মুগ্ধ করেছে আমায়।
.
হরিপাল চাচা আমাদের চুরি গল্প শুনে তাঁর
অতিত জীবনের গল্প বলতে শুরু করলেন,চাচাও
ছোট বেলায় তাঁর বন্ধুদের সাথে গ্রামের
তালের ডাব নারিকেল সুপারি সে অনেক চুরি
করেছেন,চাচার বন্ধুরা এখন সবাই
প্রতিষ্ঠিত, গ্রামে নাম করা মন্ডলদের
মাঝে ২-১ জন রয়েছে হরিপাল চাচার বাল্য
বন্ধু,কিন্তু চাচা জড়িয়ে গিয়েছিল
নেশায়,আর যা চাচা জন্য কাল
হয়েছে,নেশার অর্থ উপার্জনের জন্য চাচা
হয়ে যান পেশাদার চোর,পরে গ্রামের
মন্ডল'রা চাচা কে মারধর করে গ্রাম হতে
বের হয়ে যেতে বলে,আজ চাচা ইচ্ছা করলে
প্রতিশোধ নিতে পারতো আমাদের কে
সাপের কাঁড়ম দিয়ে মেরে কিন্তু চাচা তা
করলেন না,চাচা প্রমাণ করলেন কুকুর কাঁমড়
দিলেও কুকুর কে কাঁমড় দেয়া যায়
না,নন্দা'দের বাড়ি আজ প্রথম আসলাম বলে
নন্দা আমাদের জন্য চা নিয়ে আসলো,সাথে
চাউল ভাজা,আমরা ভোর না হতে নন্দা'দের
বাড়ি হতে বের হয়ে পড়লাম,খুব ভোরে
নোয়াখালী সুপারি হাটে গিয়ে সুপারি
বিক্রি করে বাড়ি ফিরলাম,আর আজ স্কুরের
নাম করে সেজে বের হওলাম নন্দিয়া
মেলায় যাবো বলে,কিছুতে কাল রাতের সে
দৃশ্য ভুলতে পারছিলাম না,একটু জন্য বুঝি
সাপের কাঁড়ম হতে বাঁচতে পারলাম।
©somewhere in net ltd.