নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলিফ, বা, তা........ মানে আরবি হরফ পড়ার শব্দ ভেসে আসছে সাদমানদের ঘর থেকে। খুব সুর করে করে পড়ছে সাদমান ও তার ছোট বোন। নিশ্চয়ই তাদের বাবা তাদেরকে পড়াচ্ছেন। এটা তাদের দৈনিক রুটিন।
সাদমানের বয়স দশ বছর আর তার ছোট বোনের বয়স সাত। যেখানে অন্যান্য পরিবারে বাচ্চাদের সকাল হয় দশটায় অথবা সকালটা শুরু হয় গানের টিচারের কাছে। সেখানে সাদমান এবং সাদিয়াদের পরিবারে সকাল শুরু হয় ফজরের নামায দিয়ে।
.
সাদমানের বাবা মো: রফিকুল ইসলাম নৌ বাহিনীতে কর্মরত আছেন। তাকে অফিসে যেতে হয় সকাল আটটায়। যত কাজই থাকুক না কেন ফজরের নামাযে বাচ্চাদের ঘুম থেকে তোলা আর তাদেরকে কোরআন মাজিদ শিক্ষা দেওয়ার রুটিন কখনও পরিবর্তন হয় না। সাদমান আর সাদিয়া তার বাবার আদর্শকে নিজের ভিতরে লালন করার চেষ্টা করছে সব সময়।
যদিও তারা তাদের বাবাকে ভিষন ভয় পায়। অদ্ভুত এক ভয়। এই ভয়কেই বোধহয় শ্রদ্ধা বলে।
.
১৫ বছর পর............
আজ সাদমানের বিয়ের দিন। সাদমানের হাত মেহেদীতে রাঙানো হয়েছে। মেহেদী লাগিয়ে দিয়েছে তার ছোট বোন সাদিয়া। বিয়েটা হচ্ছে তাদের বাবার পছন্দে। আগে একটা পাত্রী দেখা হয়েছিল কিন্তু সেই পাত্রীকে সাদমান পছন্দ করে নি। এর কারন, পাত্রী সাদমানকে বলেছিল বিয়ের পর আপনি দাঁড়ি রাখতে পারবেন না। এই কথা শোনার সাথে সাথে সাদমান বিয়ের প্রস্তাব নাকোচ করে দেয়। বাবা বুঝানোর চেষ্টা করেছিল আধুনিক যুগের দোহাই দিয়ে কিন্তু ছেলে নাছোড় বান্দা। ছেলের এই সিদ্ধান্তে রফিকুল ইসলাম ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। আর বলেছিলেন এই যুগে এসে মহানবী (সা কে ভালবেসে এত সুন্দরী পাত্রী হাতছাড়া করলে?
সাদমান বলেছিল বাবা দুনিয়ার ক্ষনিকের শান্তির জন্যতো আমি মহানবী (সা এর সুন্নাত ছেড়ে দিতে পারি না। এই উত্তর শোনার পর রফিকুল সাহেব সাথে সাথে আল্লাহর দরবারে সিজদায় লুটিয়ে পড়েন আর কাঁদতে কাঁদতে বলেন হে আল্লাহ! আমার ছেলেটাকে তুমি কখনও কষ্টের পরীক্ষায় ফেল না।
আরেকটা পাত্রী দেখার পর বাবা সাদমানকে ডেকে বললেন....
--সাদমান মেয়ে তো দেখলে তোমার মতামত কি?
--বাবা আপনি যা ভাল বুঝবেন তাই করেন।
--উহু জীবনটা তোমার। আমি শুধু ধর্মীয় নিয়ম অনুসারে আর অভিজ্ঞতার আলোকে পাত্রী পছন্দ করেছি। তোমার যদি পছন্দ না হয়ে থাকে বলতে পার।
--ঐযে আপনি বললেন ধর্মীয় বিধান অনুসারে এটাই আমার জন্য যথেষ্ট বাবা।
--আলহামদুলিল্লাহ। তাহলে কালকেই বিয়ের কথা পাকাপাকি করি?
.
উপরে ঘটনাটার মাধ্যমে শুধুমাত্র বংশ পরম্পরা দেখানো হল। যেভাবে রফিকুল ইসলামের সন্তানরা ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পেরেছে ঠিক একই শিক্ষা কি সাদমানের সন্তানরা পাবে না?? অবশ্যই পাবে। হুম ইসলামি পরিবারগুলো এমনই হওয়া উচিৎ। রফিকুল ইসলাম সাহেবের বিয়েও ঠিক এইভাবেই হয়েছিল। যেখানে মেয়ে দেখার প্রথম শর্ত ছিল মেয়ে পরহেজগার কি না? ঠিক একই পদ্ধতিতে সাদমানের জন্য পাত্রী দেখা হয়েছে। আপনার কি মনে হয় না জান্নাত আসলে এই দুনিয়াতেই তৈরি করা যায়?? যে পরিবার বা মানুষ পরিপুর্ণভাবে আল্লাহর আনুগত্য করে, তাকে আল্লাহ যে রহমত দান করেন তা কি জান্নাতের একটা অংশ না??
©somewhere in net ltd.