নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ধৈর্য্যের পরীক্ষা"

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৪৮

<
মনসুর ইসলাম এই এলাকার একজন অভাবী
ব্যাক্তি। রিক্সা চালিয়ে জীবন যাপন
করেন। সংসারে খাওয়ার মুখ অনেকগুলো
সেই অনুসারে তার রোজগার খুবই সামান্য।
মনসুরের পরিবার দুপুরে কিছু খেতে
পারলেও রাতে এবং সকালে উপোস করে
কাটাতে হয়। তার স্ত্রী এক শাড়িতে
অনেকগুলো বছর পার করে দিচ্ছেন। কিন্তু
কখনও মুখ ফুটে স্বামীকে কিছু বলেন না।
স্বামী সব কিছুই বুঝে কিন্তু নিরুপায়।
<
একদিনের ঘটনা...
--ওগো হুনছ! জলদি খাইয়া লও। ভাত জুড়ায়
যাইতাছে।
--রহ। পুকুরে একখান ডুব দিয়া আহি।
--জলদি আইবা। ভাত বাইড়া থুইছি।
--একি খালি আমারে দিছ তুমি খাইবা না?
--পোলা মাইয়াগো খাওয়াই লই পরে
খামুনে।
--মনসুর কিছু বলেন না। কারন তিনি জানেন
ঘরে ভাত বেশী নেই। ছেলে মেয়েরা
কোনমতে পারবে খেতে কিন্তু তার স্ত্রীর
খাওয়া হবে না। তাই তিনি আরেকটা
প্লেটে কিছু ভাত তুলে তার স্ত্রীর সামনে
এগিয়ে দেন। এই নাও খাইয়া লও। এমনিতেই
আইজকা আমার পেট ভরা ভরা লাগতাছে।
মনসুরের স্ত্রী নিরবে চোখের পানি
ফেলেন। স্বামী ঠিকই আসল ঘটনা ধরে
ফেলেছে।
<
এভাবে কেটে গেল বেশ কয়েকটা বছর।
মনসুরের বাহুতে আর আগের মত জোর নেই।
তার স্ত্রীর চুলেও পাক ধরেছে। ছেলে
মেয়েগুলোও বড় হয়েছে কিন্তু তাদের
উপার্জন এবং উপার্জক কোনটাই বাড়ে নি।
এখন তো বেঁচে থাকাটাই মুশকিল হয়ে
গেল। কিন্তু তবুও মনসুর আল্লাহর উপর ভরসা
করে আছেন। নিশ্চয়ই উপর ওয়ালা কোন
একটা ব্যবস্থা করবেন।
<
কিছুদিন পর দুইটা ছেলে আসল তাদের
এলাকায়। মনসুরের রিক্সায় চেপে। ছেলে
দুটোর সাথে মনসুরের অনেক কথা হল ।
ছেলেগুলো এসেছিল তাদের যাকাতের
টাকা বন্টন করতে। তারা মনসুরকে কিছু
টাকা না দিয়ে একটা দোকান করে
দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করল। এবং মনসুরের
বাড়ির উঠানেই ছোট খাট একটা চা
বিস্কুটের দোকান খুলে দিল যাকাতের
টাকায়। একটা পরিবারকে তলিয়ে যাওয়ার
হাত থেকে বাঁচাল ছেলে দুইটি।
<
"নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে
থাকেন। "
শত অভাব অনটনে পড়েও মনসুর ধৈর্যহারা হন
নি। আল্লাহর উপর ভরসা করে দিন যাপন
করেছেন। এবং সব সময় মনে করেছেন এটা
একটা পরীক্ষা। আল্লাহ তাকে ধৈর্য্যের
পুরষ্কার দিয়েছেন। একই ভাবে একটা
পরিবারের উপর ধার্য ফরজ বিধান যাকাত,
তারা পালন করল কিনা তারও পরীক্ষা
নিলেন আল্লাহ।
<
কিছু লোকদের প্রশ্ন করতে দেখা যায়
যে, আল্লাহ যদি এতই দয়াবান হবেন তবে
আমি গরীব কেন? তাদেরকে বলা
মুসলমানদের জন্য দুনিয়াটা একটা পরীক্ষা
কেন্দ্র। আপনার গরীব হওয়ার পিছনে
হয়তোবা আপনার ধৈর্য্যের পরীক্ষা চলছে,
নয়তোবা কোন পাপের শাস্তি চলছে।
আল্লাহর উপর সম্পুর্ন আস্থা রেখে
সাহসিকতার সাথে বিপদ আপদ
মোকাবিলা করার নামই ধৈর্য্য।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.