নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"এরা কি আঁধারেই থেকে যাবে?"

৩১ শে মে, ২০১৬ রাত ৩:৫৯

চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত কিছু অদম্য শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখোরিত এক ক্যাম্পাস।
ক্যাম্পাসের একটা সেবামুলক সংগঠন অনির্বাণ। সেবা কতটা নি:স্বার্থ ভাবে হতে পারে তার জলজ্যান্ত উদাহরন এই সংগঠনটি।
.
এই এলাকায় বিভিন্ন সেবামুলক কর্মসূচির নেপথ্য নায়ক এই সংগঠনের ছেলেগুলো। "মানুষ মানুষের জন্য" উক্তিটিকে বুকে লালন করে এগিয়ে চলেছে সংগঠনটি। মানবিকতার উৎকৃষ্ট উদাহরন পরিলক্ষিত হয় এখানে। অমানবিকতার কড়াল গ্রাসে যেখানে মানুষের জীবন বিভীষিকায় পরিনত হয়েছে, সেখানে ছেলেগুলোর কর্মকান্ড মানুষকে নতুন করে বাঁচার আলো দেখাচ্ছে।
.
যেখানে আজকের দুনিয়ায় বেঁচে থাকার নুন্যতম অধিকার লুন্ঠিত সেখানে অভাবীদের ঘরে শিক্ষার প্রদীপ জ্বেলে চলেছে এরা। অনাহারীর মুখে খাদ্যের ব্যবস্থা করছে। চালিয়ে যাচ্ছে বস্ত্রহীনের বস্ত্রের যোগান। কিভাবে? নিজেকে নি:স্ব করে। নিজের সর্বস্ব তুলে দিয়ে।
.
কখনও কি ভেবে দেখেছেন নিজেকে নি:স্ব করার মধ্যে কতটা আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়? কখনও কি উপলব্ধি করেছেন হৃদয় উজাড় করে দেওয়ার মাঝে কতটা পরিতৃপ্তি? এই সুখানুভূতি দেখা যায় ছেলেগুলোর চোখে। তারা আনন্দ কিনে নেয় নিজেকে নি:স্ব করে অপরের মুখে কৃতজ্ঞতার হাসির বিনিময়ে। তারা স্বর্গীয় অনুভুতি খরিদ করে নিজের সবটুকু ত্যাগ করার বিনিময়ে।
.
তবুও তারা কেন বিশাল ব্যক্তিত্ব না এই প্রশ্ন উঠছে? উত্তর খুব সহজ অন্যের দু:খকে হাসিতে রুপান্তর করতে করতে যাদের দিন শেষ হয়, নিজের পায়ের চটির ক্ষয়ে যাওয়া তলা দেখার সময় কই তাদের?? অনাথ শিশুর মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য যাদের এই ছুটে বেড়ানো, সময় কই তাদের নিজেদের পেটের দিকে তাকানোর। প্রদীপ কি কখনও নিজের তলাটা আলোকিত করতে পারে? তার জন্মই তো অপরের অন্ধকারকে দূর করার জন্য।
.
এরা থাকবে যুগ যুগান্তর ধরে। এরা আজীবন থাকবে দু:খীর মুখে এক টুকরা হাসি দেখার অপেক্ষায়। এরা অন্ধকারে থেকে আপনার দু:খের গল্পটাকে হাসিতে বদলে দিবে, ভুলিয়ে দিবে দু:খ বলে আপনার জীবনে কোন অধ্যায় ছিল। এরা পৃথিবীতে এসেছে আপনার জীবন থেকে দু:খ, কষ্ট, দারিদ্রতা দূর করতে। এবং আজীবন করে যাবে একা হাতে।
.
এক সংঠনের ভাইয়ের কথা মনে পড়ল। পথশিশুদের নিয়ে কাজ করতেন সেই ভাইটি একবার পথশিশুদের ভরন পোষন যোগান দিতে গিয়ে ভীষণ অর্থাভাবে পড়লেন।
তিনি লিখেছিলেন "কেউ আমার বাবুদের ভরন পোষনের জন্য অর্থ যোগান দিতে পারবেন? যদি এই অর্থের বিনিময়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটার মালিক হতে চান তবে তাকে মালিকানা দিয়ে দিব। আমার কোন পদ লাগবে না, আমি বিনা পারিশ্রমিকে শুধুমাত্র আমার বাবুগুলোর জন্য কাজ করে যাব। কেউ কি আছেন??"
.
ভাইয়ের লেখাটা খুব নাড়া দিল।কতটা নি:স্বার্থ হলে নিজের প্রতিষ্ঠা করা সংগঠন বিনা পয়সায় দিয়ে দেওয়া যায়? শুধুমাত্র অনাথ আশ্রয়হীন কিছু বাচ্চাদের জন্য। কতটা মানবিক হলে নিজের শ্রম দিয়ে দেওয়া যায় বিনা পারিশ্রমিকে? আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক আজও প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে ফেরে।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৫২

বিজন রয় বলেছেন: একদিন আঁধার দূর হবে।

০১ লা জুন, ২০১৬ রাত ২:১৭

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: আঁধার দূরকারী ছেলেগুলো অন্যের জীবনকে তো আলোকিত করেই চলেছে কিন্তু নিজেরা কি নিজেদের আঁধার দূর করতে পারবে?? নাকি অন্যের জন্য নিজে অতল গহীনে হারিয়ে যাবে??

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.