নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের ভিতর একটা বাক্য মনে প্রানে বিশ্বাস করার খুব প্রবনতা আছে তা হল "কাজটা এত সহজ না,তুমি এটা পারবা না"। আবার এই প্রবনতাকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য আছে আরও কিছু কার্যকলাপ। কয়েকটা ঘটনা দেখলেই বুঝতে পারবেন:-
.
ঘটনা ১:-
বরিশালের পটুয়াখালির একটা নদীতে নৌকা চরে আটকে গেছে।কালাম, রুবেল ,মুসা,সোহেল মোটকথা নৌকায় যারা যারা ছিল সবাই চরে নেমে গেছে নৌকা চর থেকে ছুটানোর জন্য।কিন্তু সবার বড় ভাই রাশেদ ভাই নৌকার পাটাতনে চোখ বন্ধ করে লম্বা হয়ে শুয়ে আছেন।সোহেল বলল ভাই নিচে নেমে একটু হাত লাগালেই নৌকাটা চর থেকে ছুটে যাবে।রাশেদ ভাইয়ের উত্তর এভাবে ধাক্কাধাক্কি করে লাভ হবে না আমাকে চিন্তা করতে দে কিভাবে সহজ উপায়ে নৌকা সরানো যায়।তিনি ভাবতেই থাকলেন এদিকে তিনি ভাবতে ভাবতেই বাকী সবার নৌকা সরানো শেষ।
.
ঘটনা ২:-
ঢাকা চট্টগ্রাম ট্র্যাংক রোডে এক গাড়ি থেকে গাছের গুঁড়ি পড়ে যাওয়ায় রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।এর ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।আসলাম চাচা সেই যানজটে আটকা পড়া একটা বাসের যাত্রী।সবাই পুলিশের ক্রেন আসার অপেক্ষা করছে।কিন্তু আসলাম চাচা পুলিশের অপেক্ষায় না থেকে বাসের কতগুলো যুবক ছেলেকে নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়লেন গাছের গুঁড়ি সরানোর জন্য। অনেকেই বলল পারবেন না সরাতে অনেক ভারী এগুলো, আর ক্রেন ছাড়া সরানো সম্ভব না।আসলাম চাচা ঠিকই পুলিশের ক্রেন আসার আগে গাছের গুঁড়ি সরাতে সক্ষম হলেন।
.
আমরা যুক্তিপ্রিয় মানুষ।ঘটনা দুইটি লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন আমরা কতটা যুক্তি পছন্দ করি।
প্রথম ঘটনায় রাশেদ ভাই যুক্তি দিলেন নৌকা সরাতে এত কষ্ট করতে হয় না,একটু চিন্তা করলে সহজেই নৌকা সরানো যায়।
আর দ্বীতিয় ঘটনায় সবার যুক্তি ছিল কাঠের গুঁড়ি অত্যন্ত ভারী বিধায় ক্রেন ছাড়া সরানো সম্ভব না।
.
এখন আসি মুল কথায়।এগুলোকে আপনি কি বলবেন,যুক্তি??তাহলে একটু ভুল আছে এগুলো আসলে যুক্তি না,এগুলো কুযুক্তি। রানা ভাই,আর বাসের অন্যান্য লোকজন তাদের অলসতা ঢাকার জন্য ঢাল হিসাবে এই কুযুক্তি ব্যবহার করেছে। আর আমরা অহরহ এই কাজটা করছি।
কথায় আছে "বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদুর"।তাই বলে আপনি অন্ধের মত সব বিশ্বাস করবেন ব্যাপারটা এরকম না।প্রথমেই আপনার চিন্তা ভাবনা,
আপনার বিশ্বাস পজেটিভ হতে হবে।যখনইই আপনার চিন্তাভাবনা,বিশ্বাস নেগেটিভ হবে ঠিক তখনই সেই নেগেটিভ বিশ্বাস, চিন্তাভাবনা গুলোকে সত্যে রুপান্তর করার জন্য আপনাকে যুক্তির আশ্রয় নিতে হবে। আর এক্ষেত্রেই আপনার যুক্তিগুলো হবে কুযুক্তি।মনে রাখবেন যে যুক্তি আপনাকে থামিয়ে দিবে সেটা কখনও সঠিক যুক্তি হতে পারে না।
.
একটা উদাহরন দিয়ে শেষ করব।
ড.হুমায়ন আহম্মদ নর্থ ডাকোটা ইউনিভারসিটির পি এইচ ডি কোর্সে কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রিতে প্রথম পরীক্ষায় একশতে শুন্য মার্কস পেলেন।কিন্তু তারই অন্ধ সহপাঠী এ গ্রেড পেল।
তিনি তখন যুক্তি দেখালেন একটা অন্ধ ছেলে এ গ্রেড পেতে পারলে আমি সুস্থ্য মানুষ কেন তার চেয়ে বেশী পাব না??
যথারীতি বিশ্বাস পজিটিভ ফলে যুক্তিও পজিটিভ। আর এর সমন্বয়ে রেজাল্টও পজিটিভ।তিনিই একশতে একশ মার্ক পেলেন আর তার যুক্তিকে সঠিক হিসাবে প্রমান করলেন।
এটাই হল সঠিক যুক্তি।তিনি ভাগ্যের দোষ দিতে পারতেন।নিজের মেধা ভাল না এই কথা বলতে পারতেন।কিন্তু তিনি এগুলো কিছুই করেন নি।
.
তাই নিজের অলসতা ঢাকার জন্য কুযুক্তির ব্যবহার বন্ধ করুন।কারন আপনি তলানিতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত কুযুক্তি আপনাকে সাহায্য করবে। কখনও শীর্ষ ছুঁতে পারবেন না কুযুক্তিকে সঙী করে।
১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:০২
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: নিজের অলসতাকে ঢাকার জন্য এই ধরনের ছল চাতুরী আমরা অহরহ করে থাকি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:২৫
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: হুম। আমরা যুক্তি আর ছল ছাতুরীতে উস্তাদ।