নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"আমি এবং আমার সকাল/ ক্ষনিকের ডায়েরী-৪"

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১২

(অনেকদিন পর পুরনো ডায়েরীর সিরিজটায় ফিরে আসললাম)

আমাদের হল থেকে মসজিদটা সামান্য
দূরে। হেঁটে যেতে আমার মোটামুটি পাঁচ
মিনিট লাগে। অবশ্য আমার হাঁটার গতি
একটু বেশী। এই হাঁটার জন্য আমার অনেক
বন্ধুই বলে “কিরে তুই কাউকে মারতে
যাচ্ছিস নাকি?” যাই হোক দুই তিনদিন
আগে ফযরের নামাযে যাচ্ছি মসজিদে।
চারপাশে ঘন কুয়াশা ঘিরে রেখেছে। ইটের
রাস্তার ল্যামপোস্টে জ্বলা লাইটের
ঘোলাটে আলো ছাড়া আর কিছুই দেখা
যাচ্ছে না। আম্মুর দেওয়া লাল শালটা
গায়ে জড়িয়ে কাঁপতে কাঁপতে মসজিদে
পৌঁছালাম। নামায শেষে হুজুর অসাধারন
একটা অভ্যাস করার কথা বললেন। বললেন
ফযরের নামাযের পর সবুজ ঘাসের দিকে
অনেকক্ষণ সময় নিয়ে তাকিয়ে থাকতে ।
এতে নাকি চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ে।

নামায শেষে রুমে ফিরছি। রাস্তার পাশে
বিন্দু বিন্দু শিশির জমা ঘাসে খালি
পায়ে হাঁটতে খুব ইচ্ছা করল। স্যান্ডেলটা
খুলে হাতে নিলাম। এরপর খালি পায়ে
শিশির ভেজা ঘাসের উপর আস্তে আস্তে
নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে লাগলাম।
ঠিক সেই মুহুর্তে কিভাবে যেন আমার
ছোটবেলায় চলে গেলাম। তখন খুব ছোট
ছিলাম সম্ভবত আমার বয়স সাত কিংবা আট
ছিল । তখন একবার.........
আমি আমার আব্বুর কোলে চড়ে ফযরের
নামায পড়ে বাসায় ফিরছিলাম সেই
সময়টাও ছিল প্রচন্ড শীতের সময়।
হঠাৎ করে আব্বুর কাছে বায়না ধরলাম আমি
খালি পায়ে শিশির ভেজা ঘাসে হাঁটব।
আব্বুতো কোনমতেই তার কোল থেকে
আমাকে নিচে নামতে দেবেন না। অনেক
জোরাজুরি করার পর শেষে হাঁটার অনুমতি
দিলেন ভেজা ঘাসে।
সেদিনের সেই মুহুর্ত আজকে হঠাৎ মনে পড়ে
গেল। সেদিনের বাবার বলা কথাগুলোও
কানে বেজে উঠল।

সেদিন আব্বুর পাশে আব্বুর হাত ধরে খালি
পায়ে হাঁটছি আর বাবা বলছেন “দেখেছ
বাবা আজকে তুমি কত সুন্দর ঘাস দেখতে
পাচ্ছ, পা শিশিরে ভিজিয়ে হাঁটতে পারছ।
এগুলো কিভাবে সম্ভব হল জানো? এই যে
তুমি আজকে আল্লাহর কথা শুনে ফযরের
নামায পড়তে এসেছ তাই আল্লাহ তোমাকে
তার এই সুন্দর সৃষ্টি উপভোগ করার সুযোগ
দিয়েছেন। যদি তুমি আজকে ফযরের নামায
পড়তে না আসতে তবে কি এই সুন্দর দৃশ্য
দেখতে পেতে? পেতে না। তাই সব সময়
আল্লাহ যা যা করতে বলেছেন সেগুলোই
করবে। তাহলে আল্লাহ তোমাকে তার রহমত
থেকে কখনও বঞ্চিত করবেন না, সারা
জীবন তাঁর রহমতের চাদরে তোমাকে
জড়িয়ে রাখবেন।’’

সেদিন সেই কথাগুলোর মানে বুঝতে পারি
নি। কথাগুলো কেমন যেন খুবই গুরুগম্ভীর
লেগেছিল। শুধু অপলক নয়নে আব্বুর দিকে
তাকিয়ে থেকেছিলাম। আর আব্বুর কাছে
আবদার করেছিলাম যেন আমাকে প্রতিদিন
ফযরের নামাযে নিয়ে আসে। আল্লাহর
রহমত যে এত বেশী হতে পারে সেদিন না
বুঝলেও আজকে বুঝতে পারি। ফযরের
নামাজের পর যখন সবুজ ঘাসের দিকে এক
দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি তখন মনটা শীতল
হয়ে যায় ,মনে হয় আত্মার শান্তি বুঝি
একেই বলে ।
আব্বু দোয়া কর আমার জন্য আমি যেন
তোমার আদর্শ আজীবন এই বুকে লালন করতে
পারি। যেন ঈমান নিয়ে এই পৃথিবীতে শেষ
নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারি।

ক্ষনিকের ডায়েরী
পর্ব-৪

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৮

ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখাটা পড়ে অভিভুত হলাম.,,, অনেক অভিনন্দন
যেন ঈমান নিয়ে এই পৃথিবীতে শেষ
নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারি।
আমসারও একই দোয়া , দুজনের দোয়া যেন কবুল হয়.... সকল মুসলিম নর-নারী যেন ঈমান নিয়ে মৃত্যু বরন করতে পারে সেই দোয়াও করি,,...,,

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৩১

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: আমিন। তাহলে আপনাকে আমার ক্ষনিকের ডায়েরী সিরিজটা পড়ার অগ্রীম আমন্ত্রন থাকল এবং আগের বাকী পর্বগুলো পড়ার অনুরোধ রইল।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৯

ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখাটার জন্য জন্য প্লাস প্লাস+++
ভালো থাকবেন....

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২৮

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: আপনিও ভাল থাকিবেন ইন-শা-আল্লাহ। ধন্যবাদ প্রশংসিত মন্তব্যের জন্য। আর নিজের কথা বলার কারন একটাই মানুষ যাতে কিছুটা হলেও শিখতে পারে।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৬

নিয়াম বলেছেন: অতীব উত্তম। আল্লাহ সবাইকে নেক আমল করার তাওফিক দান করুক।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২৫

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: আমিন ।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১৬

মোহাম্মদ শাহ বলেছেন: বলেছেন: আমি একটা পোস্ট আপলোড করেছি,আজ প্রথম ব্লগে নাম লিখিয়ে।প্রথম পাতায় আসছে না।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৫৭

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: অপেক্ষা করুন মডুরা দুই একদিনের মধ্যে অনুমোদন দিবেন আপনার লেখা সকল পোস্ট এর পাতায়।

৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫১

আলগা কপাল বলেছেন: @মোহাম্মদ শাহঃ আসবে না। আপনি নতুন তো তাই। প্রথম কয়েকটা পোস্ট, মন্তব্য মডুরা দেখবেন। পরে আপনাকে নিরাপদ মনে হলে আপনার পোস্ট সরাসরি প্রথম পাতায় আসবে। সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ লাগতে পারে।
*********************************
লেখাটা পড়ে অভিভূত হলাম। ধন্যবাদ। সিরিজ চালিয়ে যান।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৫৯

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ। ইন-শা-আল্লাহ সিরিজ চালিয়ে যাব আপনারা পাশে থাকলে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.