নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"একান্ত কিছু অনুভূতি ও শিক্ষা/ ক্ষনিকের ডায়েরী- ০৮"

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:০২

আসসালামু আলাইকুম ওরা রহমতুল্লাহ
কেমন আছেন সবাই? আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দো'আয় ভালই আছি। যেটা বলছিলাম আমাকে হয়তো কেউ মনে রাখেন নি বা হয়তো দুই একজন মনে রেখেছেন সকলকে ধন্যবাদ। এই সামু পরিবারে আমার শেষ লেখা ছিল ২৫শে এপ্রিল মানে আজ থেকে প্রায় ৬/৭ মাস আগে। যাই হোক নিয়মিত এই পরিবারে সংযুক্ত থাকার চেষ্টা থাকবে এখন থেকে ইন-শা-আল্লাহ।

(বিভিন্ন ব্যস্ততার কারনে প্রতি সপ্তাহে লেখা হয়ে উঠছে না ‘ক্ষণিকের ডায়েরী’ ধারাবাহিকটা। আল্লাহর রহমতে আজকে লিখতে পারলাম সকল ব্যস্ততা কাটিয়ে।)
দীর্ঘদিনের একটা বন্ধের পরে ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছিলাম এই মাসের শুরুর দিকে। তারপর হঠাৎ খুব খারাপ লাগতে লাগল মা বাবাকে ছেঁড়ে আসতে কিন্তু আসতে যে হবেই। তারপরেও আবার ১২ তারিখের দিকে সন্ধ্যায় জাস্ট দশ বারটা ঘন্টার জন্য চট্টগ্রামে চলে গেলাম মাকে দেখতে ক্লাস ফেলে। বিকালে রুম থেকে বের হলাম বাস ধরার উদ্দেশ্যে । বাস স্ট্যান্ডে যেতেই আসরের আযান দিয়ে দিল। সেখানে আসরের নামায পড়েই বাসে উঠলাম।

বাসে উঠে পড়েছি ড্রাইভার সাহেবও বাস ছেঁড়ে দিলেন । আল্লাহর নাম নিয়ে সিটে বসে পড়লাম । আমার যাত্রাপথে বাজে অভ্যাস আছে একটা । কানে হেডফোন দিয়ে ওয়াজ বা ইসলামী সঙীত শুনতে শুনতে পুরো রাস্তা যাই । তো সেদিনও কানে হেডফোন গুজে আহম্মদ বুখাতিরের সঙীত শুনছি হঠাৎ কানে গানের কথা অতিক্রম করে মাগরীবের আযান প্রবেশ করল।কন্টাকটারকে ডেকে বললাম, ‘ভাই বাস পাঁচ মিনিটের জন্য সাইড করেন কোন মসজিদের আশেপাশে নামায পড়ব ।’ কন্টাকটার কিছু বলার আগেই আমার পিছনের দিকে তিন চারজন প্যাসেঞ্জার চিৎকার করে উঠল যাতে ড্রাইভার বাস না থামায়। অগত্যা একা কি আর করব? কিভাবে নামায পড়া যায় চিন্তা করতে লাগলাম।

ঠিক তখন অনেক ছোটবেলার একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল । একবার আমরা পরিবারের সবাই চট্টগ্রাম থেকে নাইটকোচে বাড়ি যাচ্ছি । পথিমধ্যে ফযরের আযান দেওয়ায় আব্বু ড্রাইভারকে বলল গাড়ি সাইড করতে । কিন্তু ড্রাইভার গাড়ি সাইড না করায় আব্বু আমাকে সিট থেকে উঠতে বলে সেই সিটেই নামায পড়া শুরু করলেন বসে বসে। আম্মু অবশ্য এভাবে নামায পড়াতে আপত্তি জানাচ্ছিলেন, বলেছিলেন, ‘বাসায় গিয়ে ক্বাজা পড়ে নিতে ।’ আমিও মনে মনে বলছিলাম বাবাটা যেন কেমন? বাসের কেউ নামায পড়ছে না উনার নামায পড়াই লাগবে!! কিন্তু শত বিপত্তি স্বত্ত্বেও বাবা কারও কোন কথা কানে না তুলে সিটে বসেই নামায সারলেন।





ছোটবেলার অতীত থেকে বাস্তবে ফিরে আসলাম । চিন্তা করলাম যেখানে সাহায্য করার কেউ নেই সেখানে আল্লাহ্ আছেন। পিছনের দিকে তাকাতে দুইটা সিট ফাঁকা দেখতে পেলাম । কালক্ষেপণ না করে পিছনে গিয়ে মাগরীবের তিন রাক’আত নামায আদায় করে ফেললাম।
দেখলাম একটা দশ বার বছরের ছেলে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে ।
সম্ভবত তাকে কেউ শিখায়নি যে মহানবী (সাঃ)বলেছেন, "পূর্বপর্তী অন্যান্য নবীদের উপর ছয়টি বিষয়ে আমাকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাকে দেওয়া হয়েছে অল্প শব্দে অনেক অর্থবোধক কথা বলার যোগ্যতা, আমি অনেক দূর থেকে শ্ত্রুবাহিনীর মধ্যে ভয় সৃষ্টির মাধ্যমে বিজয়প্রাপ্ত হই। গণিমত তথা পরাজিত শত্রুবাহিনীর ফেলে যাওয়া সম্পদ আমার জন্য বৈধ করা হয়েছে। আমার জন্য সমগ্র পৃথিবীকে পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম মাসজিদ বানানো হয়েছে। সমগ্র সৃষ্টিকুলের জন্য আমাকে নবী বানানো হয়েছে এবং আমার মাধ্যমেই নবী আগমনের ধারাকে সমাপ্ত করা হয়েছে।" [১]
যার অর্থ যেকোন আবস্থায় মুসলমানের নামায আদায় করতে হয়। আরেকটা বিষয়ে খুব অবাক হলাম যেখানে অন্য সময় বসার জায়গা পাওয়া যায় না সেখানে দুইটা সিট ফাঁকা পেলাম। সবই উপর ওয়ালার ইচ্ছা। সালাম ফিরিয়ে মনে মনে কয়েকবার আলহামদুলিল্লাহ্‌ বললাম। নামায শেষে সিটে বসে বাবার কথা মনে পড়ল খুব বেশী । এই লোকটাকে ধর্মীয় হুকুম পালনের ব্যাপারে কখনও আপোষ করতে দেখি নি । এতে করে জানি আমার বাবাকে ব্যাকডেটেড বলে বিভিন্ন জনের খোঁটা হজম করতে হয়েছে। কিন্তু আমি আল্লাহর কাছে বারবার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি এরকম একটা ব্যাকডেটেড লোকের সন্তান হিসাবে আমাকে প্রেরণের জন্য।
হে মাবুদ! আমাকেও আমার বাবার মত ব্যাকডেটেড হওয়ার তৌফিক দান করুন।

[১] সহীহ মূসলিম,হাদীস ৭১২

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:২৪

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার ক্ষণিকের ডায়েরী।

আশা করি নিয়মিত লিখবেন এখন।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৩৬

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: ইন-শা-আল্লাহ চালিয়ে যাব লেখা। আর ভালো লাগার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৫৪

নীল-দর্পণ বলেছেন: ক্ষণিকের ডায়েরি ভাল লাগল অনেক।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৩৭

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ ভালোলাগার এই অনুভূতি প্রকাশের জন্য।

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫৮

মলাসইলমুইনা বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার লেখা | আপনার লেখায় দেওয়া ফটোটা আমি বছর তিন চারেক বা তার আগে দেখেছিলাম | আপনি শুনে আশ্চর্য হতে পারেন যে ইন্টারনেটে আমি এই ফটোটা গত ক'দিন ধরে খুজছিলাম একটা কাজের জন্য ! আল্লাহ মিলিয়ে দিলেন !

২১ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪৯

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রশংসিত মতামতের জন্য। আর আমী বিশ্বাস করি ভাল কাজের উদ্দেশ্যে কোন পরিশ্রম করা হলে সেই পরিশ্রমের মুল্য আল্লাহ দিয়ে থাকেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.