নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরব্য উপন্যাসের সেই মরুচারী যে সত্যান্বেষণে জীবন উৎসর্গ করে। সেই উপন্যাসের চরিত্র নিজের ভিতরে লালন পালন ও প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই পথচলা।

মামুন রেজওয়ান

মামুন রেজওয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"মশাল বহনকারীর গল্প"

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৬

নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে.......

আলহামদুলিল্লাহ আমার ক্যাম্পাসে আমি মানবতার সেবায় নিয়োজিত একটি সংগঠন অনির্বাণের সাথে সরাসরি সংযুক্ত আছি।সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে মানবিকতা কতটা নিঃস্বার্থ হতে পারে তা আমি এই সংগঠনে এসে শিখতে পেরেছি। যেখানে অধিকাংশ সংগঠনই মানবতার বুলি কপচিয়ে নিজের দায়িত্বের লাগাম টেনে ধরে সেখানে আমার ক্যাম্পাসের এই সংগঠনটি এগিয়ে চলেছে মানবতার সেবার সর্বোত্তম উদাহরণ হিসাবে।
সত্যি বলতে গেলে সুনামের বিচারে 'অনির্বাণ' নামটা 'চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ' নাম অপেক্ষা অধিক বেশী সুপরিচিত বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে। নামটা কিন্তু একদিনে ছড়িয়ে পড়েনি। নামটাকে দীর্ঘ একটা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে বিভিন্ন যোগ্য সওয়ারির কাঁধে চড়ে। অন্তর্নিহিত অর্থপূর্ণ অনির্বাণ নামটিকে 'নিঃস্বার্থ মানবতার সেবায় নিয়োজিত বৈশিষ্ট্যে' রুপান্তরিত করতে নিখাদ ভালবাসা সমৃদ্ধ কিছু মানুষের অবদান অনস্বীকার্য।




ছবিঃ- চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের লোগো।



এই নিখাদ ভালবাসায় মোড়ানো মানুষগুলো কেমন হতে পারে ভেবে দেখেছেন। এই মানুষগুলোর প্রত্যেকে চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের গর্বিত শিক্ষার্থী। অন্তত তাদের হৃদয়টা অন্যের প্রতি ভালবাসার মাপকাঠিতে পরিমাপ করতে চাইলে একশতে একশ পাবে।
এদের ভিতর অনেক শিক্ষার্থীই আছে যারা পরিবারের খুব আদুরে পরিবেশ থেকে এই ক্যাম্পাসে এসেছে। অনেকেই আছে যাদের হাতে একটা পিঁপড়া কামড় দিলে মা, বাবা, ভাই, বোন ছুটে এসেছে স্যাভলন লাগিয়ে দিতে। কিন্তু চিন্তা করে দেখেছেন এই ছেলেগুলোই অপরিচিত কারও রক্তের প্রয়োজন হলে নিজের চামরায় মোটা একটা সুঁই ঢুকিয়ে পুরো এক ব্যাগ রক্ত শরীর থেকে বের করে দিচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী নিজের একটি মাত্র কম্বল শীতার্ত শিশুকে দিয়ে দিতে কার্পণ্য করছে না। শিক্ষা উপকরণ, শীত বস্ত্র বিতরণের লক্ষ্যে ছুটে গিয়েছে কুঁড়িগ্রাম, যশোর,জয়দেবপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে।


ছবিঃ- অনির্বাণের লোগো



এবার নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। প্রথমবার যখন রক্ত দেই তখন খুব শংকিত ছিলাম। কতটুকু ব্যাথা পাব সেই ভয়ে না, বরং বাসায় জানতে পারলে নির্ঘাত আম্মুর ঝাড়ি খেতে হবে এই ভয়ে। যাইহোক প্রথমবার পরিবার থেকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে রক্ত দিলাম। কিন্তু বিপত্তি ঘটল দ্বিতীয়বার। রক্ত যেদিন সকালে দিয়েছি সেদিন বিকালেই বাসায় গিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত হাতের ব্যান্ডেজ খুলতে ভুলে গেছি। এরপর ফলাফল যা হওয়ার তাই হল। আম্মুর জোরাজুরিতে সত্য কথা বলতেই হল। আর শুনতে হল, "তুই এত চিকন একটা ছেলে, তোর শরীরে তো একটা মুরগীর সমানও রক্ত নেই। তুই কেন রক্ত দিস?।' আম্মু সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল, আমাকে আর রক্ত দিতে দিবে না। অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে বলার পরও যখন কাজ হচ্ছে
না তখন বললাম, "রক্ত দিলে আমারতো কোন ক্ষতি হচ্ছে না বরং আমার সামান্য রক্তের জন্য একজন বেঁচে যাচ্ছে। একটু চিন্তা করে দেখ আমার রক্ত আরেকজনের শরীরে বইছে যাকে আমি চিনিই না। কেমন একটা অদ্ভুত ভালোলাগার অনুভূতি কাজ করে না? এই অনুভূতি কি কোটি টাকায় পাওয়া যাবে? যে সেবায় প্রতিদানের কোন সম্ভানবা নেই সে সেবাই তো উত্তম সেবা।"
আর আলহামদুলিল্লাহ আমি এখন অনির্বাণসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের ৪টি সংঠনের সাথে জড়িত। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার উদ্দেশ্য আরেকজনকে উৎসাহিত করা।

হয়তোবা অনির্বাণের সদস্যরা ভালবাসার মূল্যায়ন পায় না ঠিকমত। কিন্তু প্রতিদান পাওয়ার উদ্দেশ্যে যে সেবা সেটায় কি পরিপূর্ণতা পাওয়া যায়? আমি রক্ত দেওয়ার পর রোগীর আত্মীয়ের মুখে যে কৃতজ্ঞতার হাসি দেখে আত্মতৃপ্তি পেয়েছি তা আজীবন বুকের বামপকেটে হার্টের নিকট রেখে দিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলে কোন আফসোস থাকবে না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৬

মামুন রেজওয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.