![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চিত্র:গুগল হতে ডাউনলোডকৃত
গতকাল এশার নামায পড়তে মসজিদে যাচ্ছিলাম। বিপিএল খেলা চলছে তাই রাস্তার চায়ের দোকান থেকে কমেন্ট্রির আওয়াজ আসছে। দোকানদারও ভলিউমটা একটু বাড়িয়ে রেখেছে। এতে একটা ব্যবসায়ীক ফায়দা আছে। আগে চিন্তা করতাম শুধু শুধু টিভি চালিয়ে রেখে লাভ কি? এখন বুঝি যত বেশী টিভির দর্শক হয় সেই দর্শক কাস্টোমারে পরিনত হওয়ার হার তত বেশী হয়। মানুষ একটু ছোঁয়াছে প্রকৃতির। আরেকজনকে চা পান করতে দেখলে নিজের চা তৃষ্ণা পায়। আরেকজনকে সিগারেট ধরাতে দেখলে নিজেরও সিগারেট খেতে ইচ্ছা করে (এটা আমার অনুমান)। আমি দোকানদারের মনের মুচকি হাসিটা ক্ষনিকের জন্য অনুধাবন করতে পারলাম।
তৎক্ষনাৎ মুখে দাঁড়ি এবং মাথায় টুপি পড়া এক বয়ষ্ক ব্যাক্তিকে দোকানের দিকে আসতে দেখলাম। দোকানের ভিতরে বসার জায়গা নেই তাই বাইরে দাঁড়িয়েই "একটা ব্যানসন" দে বলে হাঁক পাড়লেন। আমি সেখানে আর দাঁড়ানোর সময় পেলাম না। দ্রুত এগিয়ে গেলাম মসজিদের দিকে। নামায শেষে আবার সেই দোকানের সামনে দিয়েই আসতে হল। দোকানটা রাস্তার একেবারে পাশেই। ঠিক আগের চিত্রই দেখলাম। কমেন্ট্রির আওয়াজ, চায়ের কাপে চামচ ঘুঁটানোর শব্দ, মাঝেমাঝে হাত তালি, মাঝেমাঝে ইশ! বলে আফসোস সবগুলো শব্দই কানে আসল। তখনও টুপি পড়া সেই মানুষটি টিভির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। এখন অবশ্য টকটকে লাল ঠোঁট দেখতে পাচ্ছি লোকটির। পান খেয়েছে বুঝাই যাচ্ছে।
তখন হঠাৎ নিজের মাথায় থাকা টুপির কথা চিন্তা হল। আমাদের দেশে টুপি, দাঁড়ি এগুলোকে সাধারনত একটি বিশেষ সম্মানীয় ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়। এই ধরনের পোশাক পরিধানকারীদের হুজুর বলা হয়। কোন দাঁড়ি, পাঞ্জাবি, টুপি পড়া লোক দেখলে আমরা তাদের দিকে একটু সম্মানের দৃষ্টিতে তাকাই। তাদের জন্য নিজের সিট ছেঁড়ে দেই। তাদেরকে আমাদের জন্য আল্লাহর নিকট সুপারিশকারী মনে করি। আমরা বিশ্বাস করি এই হুজুর সম্প্রদায় আল্লাহর খুব প্রিয় বান্দাহ। এই চিত্র বহু কাল থেকে চলে আসছে আমাদের দেশে। এই চিত্রের কারণে কিছু সম্প্রদায়ের গাত্রদাহ শুরু হল। তারা বুঝাতে চেষ্টা করল যে, টুপি,দাঁড়ি, পাঞ্জাবী মানে হল জঙ্গী। সব মিডিয়াতেই তারা এই বিষয়টা প্রায় সফলতার সাথে খাওয়াতে শুরু করেছে এবং তারা তাদের লক্ষ্যেও প্রায় সফলতার পর্যায়ে।
যাইহোক ঘটনায় ফিরে আসি। আমি লিফটে করে আমার রুম সাত তলায় উঠছি আর চিন্তা করছি আমিও টুপি পড়েছিলাম, লোকটাও টুপি পড়েছিল। হয়তো তৃতীয় কোন ব্যাক্তি আমার মাথায় এই টুপি দেখলে সেই লোকটির চিত্র তার মাথায় ভেসে উঠবে। হয়তো সে ভাববে আরে টুপি পড়লে কি হবে! এখনই এই টুপি পড়া লোকটাই দোকানে যেয়ে সিগারেট ধরাবে। হা করে টিভির দিকে তাকিয়ে থাকবে আর খসখস করে দাঁড়ি চুলকাবে।
হায়! এই কষ্ট আমি রাখি কোথায়? কত সুন্দর, কোমল একটা চিত্রকে কতটা বাজে একটা চিত্রে রুপান্তরিত করছি আমরা। আমি রেগুলার পাঞ্জাবি পড়ি না বা পড়ার সুযোগ হয় না। আমি অফিসে থাকি রাত প্রায় ৮টা পর্যন্ত। কিন্তু এই পাঞ্জাবি, এই টুপি আমি বড্ড ভালবাসি,বড্ড ভালবাসি। হয়তো আল্লাহ তৌফিক দিলে কিছু দিনের মধ্যেই নিয়মিত পাঞ্জাবি পড়া শুরু করব। তখন কি আমাকে অন্য মানুষের সে ভাবনাগুলোর অংশীদার হতে হবে না? তখন কি অন্য মানুষটা বলবে না যে, এতো এখনই দোকানে যেয়ে সিগারেট ধরাবে? যারা নিয়মিত পাঞ্জাবী, টুপি পড়েন এবং মুখে দাঁড়িও রাখেন সেইসাথে নিজেকে মুসলিম দাবী করেন। তাদের কাছে একটা অনুরোধ রাখব ভাই সুন্দর একটা চিত্র ছিল আমাদের। সম্মানের একটা চিত্র ছিল আমাদের। অনুগ্রহ করে সেই চিত্রে দাগ লাগাবেন না।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:১০
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: জ্বি আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনার সাথে সহমত। আমি চিন্তিত ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমার ছেলে বা আমার মেয়ে হয়তোদাঁড়ি, টুপির উপর একটা বিদ্বেষ নিয়ে বড় হবে। হয়তো সে সমাজ থেকে শিক্ষা নিবে যে, এটা আসলেই জঙ্গীদের পোশাক। দেরীতে উত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত। ভাল থাকবেন।
২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৪
মৃত্যু হবে একদিন বলেছেন: দাড়ী টুপি এটা আমাদের সমাজের একটা অংশ মাত্র। বয়স হলে দাড়ি টুপি রাখতেই হবে এমন মেন্টালিটি আমাদের সমাজে কায়েম আছে।
তাই আমি মনে করি দাড়ি টুপির সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:১২
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: প্রত্যেক সমাজের কিছু ঐতিহ্যগত চিহ্ন থাকে। দাঁড়ি ঠিক একই ভাবে মুসলিমদের ঐতিহ্যগত চিহ্ন। এবং মহানবী (সাঃ) কিন্তু দাঁড়ি রাখতে বলেছেন।
৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০৪
মোহামেেদ বলেছেন: "তখন কি অন্য মানুষটা বলবে না যে, এতো এখনই দোকানে যেয়ে সিগারেট ধরাবে",
যারা এরকম সাধারণীকরণ চর্চা করে তাদের মন্তব্য বা ধারনা বিবেচনা না করাই উত্তম।
পাঞ্জাবি-টুপি রাসূল সঃ কে অনুকরণ করা অথবা ইসলামী ঐতিহ্য পালনের জন্য পড়া
হয় যা একজন ব্যক্তির আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা ও দ্বীনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ
করে তাই আফসোস মানুষ যদি ওই বস্ত্রগুলুকে ওই গন্ডির ভেতর রেখেই বিচার করতো।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:১৪
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: জ্বি আপনার সাথে আমি সহমত। তবে কোন একটা কাজ যদি একটা সম্প্রদায়ের উপর আঙ্গুল তুলে তাহলে সেই ব্যাপারেও সতর্ক থাকা ঊচিৎ।
৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:২৯
শৈবাল আহম্মেদ বলেছেন: ধন্যবাদ,সবকিছু আপেক্ষিক,তেমনি কাপড় চোপড় ও টুপির প্রতি ভালবাসাটাও আপেক্ষিক। এর সাথে অসৎ চরিত্র ভাবা বা ঘৃণার চোখে দেখাটা সঠিক হবে বলে মনে হয় না। যতক্ষন সে অপরাধ ও দুর্নিতি না করবে ততক্ষন তাকে একরকম ভাল বলা যায়।
মানুষ নিজের মনমতো করে ছাড়া ভাবতে পারেনা। এজন্য বেশিরভাগ ধারনাই সঠিক হয় না। তার প্রতি একটা খারাপ ধারনা আসল কোন রকম যুক্তি ছাড়াই-শুধুমাত্র পোষাকের বা টুপির কারনে!!!
খোজ খবর নিয়ে দেখা গেল সেই টুপিপরা লোকটি আপনার চেয়ে সৎ ও ভাল মানুষ। সমাজের মানুষের প্রতি তার ভালবাসা আছে,অনুদান আছে ইত্যাদী। আসলে মানব জাতি সৎ,নিরাপরাধ ও মঙ্গলকামি হওয়াটাই ভাল? নাকি মানব জাতির যেটাই হোক- অদৃশ্য কোন শক্তি যার কোন রকম প্রকাশ আদেশ ও নিষেধের নমুনা-কোন সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষ বা বিজ্ঞান আজো কেউ পায়নি। তার সন্তুষ্টির জন্য নামাজ,রোজা,হ্বজ্ব কর্ম,সেটা সেই আদীম যুগের মানুষের ধারনা নয়তো। দিনে দিনে তাহলে মানুষের জ্ঞান কমে যাচ্ছে নাকি!!!
কিজানি বাপু,দাদা নদীর ওপারে যাওয়ার জন্য নৌকা যোগে যাওয়ার কথা বলত। কিন্তু দাদা মারা যাওয়ার পরে নদীতে ব্রীজ হয়েছে। এখন আমি কি করি,পারাপারের জন্য নৌকাও এখন আর থাকেনা নদীতে। তবে কি সাতার দেব নাকি ব্রীজের উপর দিয়ে পার হব!!!
৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: বর্তমান সমাজে লোক দেখানো নামাজ বেশি পড়া হয়।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:১৯
মামুন রেজওয়ান বলেছেন: আমার কাছে অবশ্য আমার নামায লোক দেখানো কিনা এটা টেস্ট করার একটা পদ্ধতি আছে। আরেকদিন এটা নিয়ে লিখব ইন-শা-আল্লাহ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৩৯
নাহিদ০৯ বলেছেন: আপনার ইচ্ছে যদি হয় আল্লাহ কে খুশি করা (সব কাজেই তাই হউয়া উচিৎ) তাহলে লোকে কি বললো বা ভাবলো তাতে কিছু যায় আসে না।
আল্লাহ রিয়া মুক্ত ইবাদত ই শুধু দেখেন।