নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মাঝে মিশে থাকতে চাই, তবে কিভাবে শুরু করব তা ভাবতেই অনেক সময় পেরিয়ে যায়। তাই, গান কবিতা এগুলোর আশ্রয় নিয়ে চলি নিজেকে আড়াল করে।

মায়াস্পর্শ

মনের বিপরীতে পার করে এসেছি সহস্রকাল, হঠাৎ এক উদ্ভ্রান্ত অবয়বে বেঁচে থাকি এপার ওপার।

মায়াস্পর্শ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভূতু

০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৮



ভুতের গল্প পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া যায় না খুব একটা। তবে সব সময় ভুতের গল্প জমেও না। দরকার একটা পরিবেশ। কেমন পরিবেশ ? এই ধরেন রাতে হঠাৎ লোড শেডিং হলো , তখন কীভাবে জানি কোনো একজন ভুতের পেঁচাল তুলে, অথবা জোছনা রাতে পরিবারের সিনিয়র কোনো মানুষ থাকলে তাকে সবাই মিলে জেতে ধরে ভুতের গল্প শোনাবার জন্য। সবার জীবনেই মোটামুটি কমবেশি কোনো না কোনো কাহিনি আছেই। যার কোনো কাহিনি নেই সেও হয়ত গল্পের সময় অন্যের কোন ঘটনা বলে সবার কাছে। আমার জীবনেও বেশ কয়েকটি ঘটনা আছে। একদম নিজের সাথে ঘটা। সেখান থেকে আজ একটা ঘটনা বলছি আপনাদের। আসুন শুরু করি।
ঘটনা ২০০১ সালের। তখন আমি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি। আগে আমাদের বাসার বর্ণনাটা বলি কেমন? আমাদের বাসাটা ছিল একটু লম্বা মতো। একপাশ দিয়ে ঘর চারটা আর সামনে উঠোন টা একদম সবুজ দূর্বা ঘাস দিয়ে ভরা।ওয়াশরুম আর টয়লেট বাসার ডানপাশে কোনা। আর বাম পাশে খোলা জায়গায় দুইটি বড়ই গাছ আর বাসার মাঝখানে একটা পেয়ারা গাছ। সেই পেয়ারা গাছটা অনেক বড় আর ঝাপড়া ছিল। সেই গাছ নিয়ে আমার দুষ্টামির একটা গল্প আছে। সেটা অন্যদিন লিখবো।
হুমম, যেটা বলতে চাচ্ছিলাম সেটাই ফিরি এবার। ঘরগুলোর সাথে সামনে পাকা বারান্দা ছিল একটা। মা কেরোসিনের স্টোভে রান্না করতেন বিধায় বারান্দাতে বসেই রান্না বান্না করতেন। পরিবারে তখন আমার চার জন। আমি, বড় আপু, মা আর আব্বু।
মা প্রত্যেকদিন সকালে উঠে বারান্দায় রুটি আর পরোটা বানাতেন, সাথে চা। আমরা বাটির মধ্যে চা ঢেলে নিয়ে চা পরোটা ভিজিয়ে চামচ দিয়ে খেতাম। এটাই আমাদের সকালের নাস্তা ছিল। নাস্তা বানানো শেষে মা আমাদের ডেকে তুলতেন ঘুম থেকে তারপর আমি আর বড় আপু খেতে যেতাম। আব্বু অনেক ভোর বেলা নিজের কাজে যেতেন তাই আমরা তিন জনই সকালে একসাথে নাস্তা করতাম।
প্রতিদিনের মতো সেদিনও মা ডাকতে লাগলেন আমার নাম ধরে।
মা ডাকতে লাগলেন '' তাড়াতাড়ি উঠে আয় , পরোটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।'' আমি মায়ের ডাক শুনে ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে উঠে গিয়ে বারান্দায় বসলাম। দেখি সামনে পরোটার প্লেট রাখা আর চায়ের বাটি। মা সামনে বসে আরো রুটি বানাচ্ছেন। আমি হাত দিয়ে পরোটা নিতে না নিতেই হঠাৎ কে যেন আমায় পেছন থেকে টেনে ধরলো। আমি চমকে পিছনে তাকিয়ে দেখি আব্বু আমাকে ধরে আছে দুইহাত দিয়ে। তারপর সব অন্ধকার। মা বারান্দার বাতি জ্বালিয়ে দিয়ে আমার দিকে এসে বললেন, তুই দরজা খুলেছিস কীভাবে, আর এই রাতের বেলা এখানে বসে কি করছিস? আব্বু তাড়াতাড়ি আমাকে ঘরের ভেতর নিয়ে গেলেন। মা দেখি থরথর করে কাঁপছেন। বারবার বলছেন, আমি কীভাবে দরজা খুললাম? যেটা মা আর আব্বু ছাড়া আমি বা বড় আপুর খুলতে পাড়ার কথা নয়। মা আব্বুকে জিজ্ঞেস করছেন, তিনি রাতে ওয়াশরুম গিয়ে আবার ঘরে এসে ঠিকভাবে উপরের ছিটকিনি লাগিয়েছিলেন কিনা। আব্বু মাকে ধমক দিয়ে বললেন, ওয়াশরুমেই যায়নি তিনি। তারপর আমি বললাম, মা এখন সব অন্ধকার হয়ে গেলো কেন? একটু আগেই তো সকাল হয়েছিল। তুমি আমাকে ডাক দিয়ে বললে পরোটা খেতে, আমি তো বারান্দায় বসে পরোটা খেতে নিয়েছিলাম, সামনে তুমি বসে ছিলে। এই কথা শুনার পর মা আব্বু দুজনেই দুজনের দিকে হা করে চেয়ে ছিলেন। দরজার উপরের ছিটকিনি আমি বা বড় আপু কেউই নাগাল পেতাম না। সেদিন কিভাবে কি হয়েছিল তা জানা নেই কারও। তারপর আবার ভালোমতো দরজা লাগিয়ে সেদিনের মতো ঘুমিয়ে গেলাম আমরা।
পরদিন মা কোথায় থেকে জানি পানি পড়া নিয়ে এসে দিল সেটা খেলাম। দুই তিনদিন আর কিছুই হলো না। চারদিন পর আবার দেখি দুপুর বেলা আমার সেজো খালা পেয়ারা গাছের নিচে বসে আছেন। উনার পরনে একদম গারো হলুদ শাড়ী আর লাল পার। চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া ,কপালে বড় একটা টিপ আর অনেক গারো করে লাল লিপস্টিক দেওয়া। আমি ঘরে শুয়ে আছি। দেখি খালা আমায় ডাকছেন ইশারা করে , আর কি জানি খাচ্ছেন। আমাদের শোবার ঘর থেকে পেয়ারাগাছ একদম বরাবর দেখা যায়। আমি বিছানা থেকে নেমে গেলাম উনার কাছে, আমাকে বললো বস এখানে। আমি বসলাম, আমাকে বললো খাবি ? আমি বললাম কি খাও, বললো তোর খালু মেলা থেকে মিঠাই কিনে এনেছে সেটা খাচ্ছি, এই নে, তোকেও মেলায় নিয়ে যাবো তাই আসছি, চল আমার সাথে। খালার হাত থেকে মিঠাই নিতে গেছি আর দেখি মা আমাকে পিছন থেকে টেনে কোলে তুলে নিয়েছেন। চোখের সামনে সব অন্ধকার। আমার খালা নেই, আমি পেয়ারা গাছের নিচে ঘাসের মধ্যে বসে ছিলাম একা একা। রাত তখন প্রায় আড়াইটা। তাড়াতাড়ি আমাকে ঘরের মধ্যে নিয়ে গেলো মা আর আব্বু। আমি বললাম খালা কোথায় গেলো, সেজো খালা আমায় মেলায় নিতে চাইলো। এবার মা আর আব্বু খুব ভালো রকম ভয় পেয়ে গেলেন। স্বাভাবিক কিছু যে হচ্ছে না এটা বুঝলেন তারা। সেদিন রাতে কোনোরকম কাটিয়ে সকাল বেলা আমাকে নিয়ে গেলেন আমাদের মসজিদের হুজুরের কাছে। বাসায় কী হচ্ছে সব কিছু বললেন। হুজুর সব শুনে তখন ঝাড় ফুঁক দিয়ে উনার পরিচিত আরেকজন হুজুরের ঠিকানা দিলেন। বিকেলে সেই হুজুরের কাছে গিয়ে সব বলার পর উনি কিছু তেল পড়া, তাবিজ এসব দিয়েছিলেন। একবার বাসাতে এসেও বাসায় কিছু রুকাইয়া করে গিয়েছিলেন। এরপর থেকে আমার সাথে এমন কিছু আর ঘটেনি।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সুন্দর লেখেছেন মায়াস্পর্শ ভাল থাবেন

০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

মায়াস্পর্শ বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা ।

২| ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সত্যিই অদ্ভুত তো

জিন ছিল মনে হয়

০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯

মায়াস্পর্শ বলেছেন: জ্বি আপু । এখন মানুষই জিনের বড় আব্বা হয়ে গেছে ।
ধন্যবাদ আপু ।

৩| ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৫

নয়ন বিন বাহার বলেছেন: ব্যাখ্যাতীত অনেক ঘটনা আমাদের চারপাশে ঘটছে। কতকিছুর উত্তর আমাদের জানা নেই।

০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২২

মায়াস্পর্শ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। কত রহস্যময় আমাদের এই জগৎ। ধন্যবাদ পোস্ট পড়ার জন্য।

৪| ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০১

মিরোরডডল বলেছেন:





এরকম আর কি কি গল্প আছে?


১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭

মায়াস্পর্শ বলেছেন: এরকম আর কি কি গল্প আছে?
এগুলো সত্য ঘটনা। আরো অনেক আছে। তবে মানুষ এখন আর ভয় পায়না। ঐ যে লেখার শুরুতেই বললাম এই ঘটনাগুলো বলার জন্য পরিবেশ লাগে। ব্লগে এসব পরে কেউ তেমন একটা ফিল পায়না।

৫| ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫০

মিরোরডডল বলেছেন:




সেটাতো খুব ছোটবেলার কথা।
বড় হবার পর অতিপ্রাকৃত স্টোরি কি আছে?

১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৫

মায়াস্পর্শ বলেছেন: বড় হবার পর অতিপ্রাকৃত স্টোরি কি আছে?

আছে কয়েকটা। বীভৎস, কেউ বিশ্বাস করবে না কিন্তু আমার জন্য ভয়ংকর এবং ক্ষতিকর। তাই সেগুলো নিয়ে বেশি ভাবি না।

৬| ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২

মিরোরডডল বলেছেন:




শেয়ার করবে, পোষ্ট লিখবে সেইসব স্টোরি নিয়ে।

কেমন আছে মার্শ?
মনে হচ্ছে বহু বছর পর কথা হচ্ছে।


১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৯

মায়াস্পর্শ বলেছেন: কেমন আছে মার্শ?
মনে হচ্ছে বহু বছর পর কথা হচ্ছে।

একটা ইস্যুতে ভীষণ চিন্তিত ছিলাম। আল্লাহর রহমতে সেটা পজিটিভ এসেছে।
মনটা ভালো আছে। আগামী মাসে হয়ত ভালো কিছু ঘটবে।
আপনার সাথেও আমার কয়েক আলোকবর্ষ পরে কথা হচ্ছে আজকে ।

৭| ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪

মিরোরডডল বলেছেন:




একটা ইস্যুতে ভীষণ চিন্তিত ছিলাম। আল্লাহর রহমতে সেটা পজিটিভ এসেছে।
মনটা ভালো আছে। আগামী মাসে হয়ত ভালো কিছু ঘটবে।



new job?
or going abroad?

which one?

১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৯

মায়াস্পর্শ বলেছেন: হইলে বলবো, ১০% কাজ এখনো বাকি। নতুন জব।
B-) B-)

৮| ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৪

মিরোরডডল বলেছেন:




I wish you all the very best.

১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

মায়াস্পর্শ বলেছেন: Thank you soooooo much B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.