নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাল লাগে এনিম দেখতে। আর তা নিয়ে লেখালেখি করতে।

মোঃ আসিফুল হক

এনিমের ভক্ত, টিভি সিরিজ দেখি, মুভিও দেখি। আর ক্রিকেটের পাগল ভক্ত। ভাল লাগে ঘুরাঘুরি করতেও।

মোঃ আসিফুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

Kingdom – যুদ্ধের গল্প, বীরত্বের গল্প

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২৯



অনেক অনেএএএএক ছোটবেলায় যখন সমাজ বইয়ে বঙ্গদেশের ইতিহাসে পড়তাম “বখতিয়ার খিলজী মাত্র ১৮ জন ঘোড়সওয়ার নিয়ে নদীয়া প্রাসাদ আক্রমণ করে বাংলা বিজয় করেন” তখন মনে হইত, আইসসালা, সিরাম কাবিল লুক তো ! কি সুন্দর সিস্টেমে ১৫-২০ জন নিয়া একটা দেশ গাপ কইরা দিল। তারপর কিছুদিন পরে বিটিভিতে “সোনারগাঁয়ের পথে পথে” নামক একটা ধারাবাহিক নাটক প্রচার হইসিল, ২০০৫-০৬ এর দিকে সম্ভবত। বন্ধু বান্ধবদের পচানি শুনেও নিয়ম করে ওইটা দেখতাম। মোদ্দাকথা হইল, মুখস্ত করার পেইনের না থাকলে আমার ইতিহাস ভাল্লাগে, বিশেষ কইরা যুদ্ধের ইতিহাস, ট্যাক্টিক্সের ইতিহাস। নিজে ভাল রকম ভীতু মানুষ দেইখাই হয়ত – বীরত্বের কাহিনী বড় ভাল্লাগে, সেইটা খিলজী ভাইয়ের চিপা দিয়া বাংলা ঘাপায় নেওয়ার কাহিনী হোক, কিংবা কড়া নিরাপত্তার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের আশেপাশে একটু বুমা টুমা মাইরা আওয়াজ তোলার কমান্ড পাইয়া ক্র্যাক প্লাটুনের একেবারে হোটেলে হামলা করার মতন এপিক কাহিনী হোক।

আসল কিচ্ছায় ফেরত আসি। কিংডম এনিমটা দেখলাম; প্রথম সিজন। ইতিহাস ভিত্তিক একটা সিরিজ, তবে জাপানের না, চায়নার ইতিহাস। পটভুমি ৪৭৫ খ্রিস্টপূর্ব যুদ্ধপ্রবণ চায়না। শিন(Xin/Shin) এবং হিয়ো(Pyou/Hyou) কিন(Qin) রাজ্যের দুই অনাথ শিশু। যুদ্ধে বাবা মা নিহত হবার পর তাদের ঠাই হয় এক বড়লোকের বাড়িতে, দাস হিসেবে। দুজনের মনে স্বপ্ন, একদিন বড় জেনারেল হয়ে নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করার; তাও যে সে জেনারেল না; দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ জেনারেল। তাদের ভাগ্যে কি ঘটল, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র আর যুদ্ধপ্রবণ সময়ে Qin এর রাজা সেই (Zheng) কীভাবে পাহাড়ী লোকজনের সহায়তায় সৎভাই এর হাত থেকে রাজ্য উদ্ধার করলেন, ধীরে ধীরে পরিণত রাজা হয়ে উঠতে লাগলেন – এইরকম বেশ কিছু গল্প নিয়েই তৈরি করা হয়েছে সিরিজটি।



পুরো সিরিজটা বেশ খানিকটাই আপডাউনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। তবে নির্মোহ দৃষ্টিতে দেখলে খারাপ লাগার এলিমেন্টই খুজে পাওয়া যাবে বেশি। একে একে ব্যবচ্ছেদ করা যাক। তবে তার আগে একটা জিনিস পরিষ্কার করে নেওয়া ভাল; আমি শুধু প্রথম সিজন শেষ করেছি। নিচে অনেকগুলো নেগেটিভ দিকের কথা এসেছে; যেগুলোর অনেকটাই নাকি দ্বিতীয় সিজন কাটিয়ে উঠেছে। আর মাঙ্গা নাকি মোটামুটি এপিকের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। নিচের রিয়েকশন শুধু প্রথম সিজনের জন্য প্রযোজ্য হবে।

সিরিজের সবচেয়ে বিরক্তিকর দিক CGI এনিমেশন। বাজেট সঙ্কটের কারণে হোক কিংবা এক্সপেরিমেন্টাল পারপাসে হোক, 3D এনিমেশন দেখলে মনে হয়েছে যেন বহু পুরোনো কোন ভিডিও গেইমের ক্লিপ দেখছি। সব কিছুই কেমন যেন আর্টিফিশিয়াল আর ক্রুড। কিছু কিছু ফাইট সিনে ব্যাপারটা ভাল লাগলেও ওভারওল ভাল রকম বিরক্তি উদ্রেক করেছে সারা সিরিজ জুড়ে।

সাউন্ডট্র্যাক খুবই সাধারণ মানের। দ্বিতীয়বার শোনার বদার করার কথা না কারো।

ভয়েস এক্টিং সিরিজের চমৎকার একটা দিক। শিনের ভয়েস এক্টর ইচিগোর ভয়েস এক্টর, আর সিরিজের ব্যাকগ্রাউন্ড ধারাভাষ্যকার খুব সম্ভবত ওয়ান পিসের জন; সুতরাং ভয়েস এক্টিং নিয়ে আমি বেশ সন্তুষ্ট।



প্রচুর একশন সিন থাক্লেও সবই বেসিক। এবং বেশির ভাগ একশন সিনই জঘন্য CGI এর জন্য বিরক্তির উদ্রেক করেছে। মেইন ক্যারেক্টারগুলোর ফাইটগুলো যথেষ্ট ইলাবোরেট এবং ভাল হলেও সাইড ক্যারেকটারদের মুড়ি মুড়কির মতন উড়ে যাওয়াগুলো ভয়াবহ রকমের আনরিয়েলিস্টিক ছিল। লাখে লাখে সৈনিক যুদ্ধ করলেও এবং মারা যেতে থাকলেও মোটেও সেই ফিলটা আসে নি; খুব সম্ভবত এনিমের টার্গেট অডিয়েন্স ইয়াং টিনএজার ছিল। রেজাল্ট? কিঞ্চিত লেইম ব্যাটেলস। তবে চালায়ে নেওয়া যায়; আহামরি না হলেও এভারেজ মার্ক্স দেওয়া যাবে।

স্টোরি – পুরো সিরিজটা এক নিঃশ্বাসে দেখেছি এবং রিভিউও লিখতে বসেছি – একমাত্র কারণ বোধহয় স্টোরি। প্রায় বাস্তব একটা ইতিহাসের গল্প আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরা খুব চাট্টিখানি কথা না; সেটা বেশ মুন্সিয়ানার সাথেই করতে পেরেছে এই সিরিজ। যুদ্ধের ময়দানে ব্যাবহার করা ট্যাক্টিক্স, মুহূর্তে মুহূর্তে রঙ বদলানো যুদ্ধে কমান্ডিং জেনারেলদের বুদ্ধি, ক্ষমতা আর স্ট্র্যাটেজির খেলা – চমৎকার স্টোরি। যদিও স্টোরির উৎকর্ষতা যুদ্ধের ঘটনার সাথেই শেষ; ক্যারেকটারগুলোর ব্যাক স্টোরি দেখানোর বা তাদেরকে লাইকেবল করার জন্য মোটেও চেষ্টা করা হয় নি সিরিজে। ফলাফল – শিন ছাড়া আর কোন ক্যারেক্টারের ডেভেলপমেন্ট একেবারে শূন্যর ঘরে। বিশেষত ভিলেনগুলো মনে ভীতি বা শ্রদ্ধা এধরণের অনুভুতির বদলে চরম বিরক্তির উদ্রেক করে। এছাড়া যুদ্ধ বা স্ট্যান্ড এলোন ব্যাটলের সময় ক্যারেকটারগুলোর বন্ধু বান্ধবদের লাইন ধরে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ উপভোগ এবং ধারাভাষ্য বর্ণনা – খুব ভাল ইম্প্রেশন ফেলে না।



এখন বার্নিং কোশ্চেন। সিরিজটা দেখা উচিত কি না? I absolutely loved the series; mostly because of its story, war tactics and history. এই জিনিসগুলো সমন্ধে আলাদা করে ইন্টারেস্ট না থাকলে এবং আর্টস্টাইল এবং সাউন্ডট্র্যাক এর মতন বিষয়গুলো নিয়ে নমনীয় না হলে আমার পরামর্শ থাকবে না দেখার জন্য।

এনিম নিয়ে আড্ডা দিতে চাইলে; বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সাজেশন নিতে চাইলে কিংবা এনিম নিয়ে নিজের বিশেষজ্ঞ বা বোকা বোকা - যে কোন ধরণের কথা জানাতে চাইলে; দুর্দান্ত এনিম স্কেচ দেখতে এবং দেখাইতে চাইলে; কুইজ এবং কন্টেস্টে নিয়মিত অংশ নিতে চাইলে জয়েন করতে পারেন এই গ্রুপে। :D


হ্যাপি এনিমিং !!! :)


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫০

Yami No Tenshi বলেছেন: সেনপাই, নাইস দেসু!

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:০১

মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ !! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.