নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাল লাগে এনিম দেখতে। আর তা নিয়ে লেখালেখি করতে।

মোঃ আসিফুল হক

এনিমের ভক্ত, টিভি সিরিজ দেখি, মুভিও দেখি। আর ক্রিকেটের পাগল ভক্ত। ভাল লাগে ঘুরাঘুরি করতেও।

মোঃ আসিফুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেঘের পরে বাড়ি : সাজেক ভ্রমণ কথন

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯



যারা গলায় বুকে মাথায় গো-প্রো আর এইটা সেইটা লাগায়ে এক পাহাড়ে চৌদ্দবার নানা ঢঙ্গে উঠে ভিডিও করে কোন একটা জায়গা কতটা enticing সেইটা প্রমাণ করার চেষ্টা করতে থাকে তাদের সবার নামে মামলা ঠুকে দেওয়া উচিত। এম্নিতে তো এদের ভিডিও মিসলিডিং (এই দেশে কোন এক্টা জায়গায় গিয়ে পৌছাইতে কত প্যারা খাওয়া লাগে আর সেইখানে কত প্রকার চুনা খাওয়া লাগে; এইগুলা বেমালুম হাওয়া হয়ে যায়); তার উপরে এরা নিজেরা কি দেখে তার তো কোন ঠিক নাই-ই; এই সেলফি জাতির যন্ত্রণায় কোন একটা জায়গা শান্তিমতন দেখারও উপায় নাই। কংলাক পাহাড়ের উপরে উঠে দেখি একটা বড় পাথরমতন জায়গার চারপাশে ভিন্ন ভিন্ন চারজন দাঁড়ায়ে ছবি তুলতেসে।

কিয়েক্টাবস্থা !



ট্যুরে পাবলিকই তিনজন; তাই চান্দের গাড়ি ভাড়া না করেই সাজেক গিয়ে হাজির হইলাম। প্ল্যান ছিল প্রথমে কোন গ্রুপরে হাতে পায়ে ধরে উঠে যাব; সেইটা না হইলে হয় সিএনজি আর তা-ও না পাইলে তিনটা মোটরসাইকেলে কিচ্ছা খতম। শাপলা চত্বর নাইমা রেস্টুরেন্টে খাইয়া দাইয়া হাত পা ধরার মেন্টাল প্রিপারেশন নিয়ে আয়েশ করতে করতে বের হতেই সামনে পরল সুমন ভাইদের কাফেলা; নয়জনের। আমাদের দেখেই প্রশ্ন - কই যাবেন? এ-তো দেখি মেঘ না চাইতেই জলোচ্ছ্বাস। ৮৫০০ টাকায় দুদিনের জন্য দখল নেওয়া জীপে চড়ে বসলাম।

এই জায়গায় ছোট একটা মিথবাস্টিং করা দরকার। অনেকের 'ধারণা' 'সাজেকের মেইন সৌন্দর্য শুধু আসা যাওয়ার রাস্তা' এবং 'এই রাস্তা চান্দের গাড়ির ছাদে উঠে না গেলে সাজেক যাওয়া-ই বৃথা।' নিতান্তই বোগাস কথা। পুরো দৃশ্যই মোটামুটি রিপিটিভ এবং মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই উৎসাহ নেমে যেতে বাধ্য; তারউপর সিজনভেদে তপ্ত সূর্য আর এইখানে সেইখানে আর্মিদের ঝাড়ি (which is a really good thing IMO) আছেই ! একান্তই ছাদে উঠতে চাইলে লাস্ট ৩০-৪৫ মিনিট যেখানে রাস্তা প্রচুর উঁচু-নিচু সেইখানে এডভেঞ্চারের জন্য উঠা যাইতে পারে। তবে যাওয়ার পথে আমাদের ওভারটেক করা একটা গাড়িরে মোড় ঘুইরাই রাস্তার পাশে এক্সিডেন্ট করে পরে থাকতে দেখসি; সো সাবধানে আর কি ! (আল্লাহর রহমত যে খুব বড় হতাহত দেখি নাই; একজনের মাথা দিয়ে রক্ত পড়তেসিল অবশ্য)



উঠলাম সারা লুসাইয়ে। পুরা কটেজটা একটা রড দিয়ে দূরে মাঠের সাথে বেঁধে রাখার দৃশ্য দেখে বিপুল বিমোহিত হয়ে প্রবেশ করলাম কটেজে। ভিতরে আহামরি কিছু না; আবার খুব খারাপও না। খাট পালঙ্ক আছে; চার্জ দেওয়ার জায়গা আছে; ওয়াশরুমে হাই কমোড আছে - মানুষের বেঁচে থাকার জন্য আর কি লাগে ! :v

দুপুরে খাওয়া দাওয়ার সময় বিপুল প্যারা খেয়ে বুদ্ধিমানের মতন বিকেলবেলা কেয়ারটেকার চানমিয়াকে বলে দেওয়া হল রাতে ব্যাম্বু বিরিয়ানি এবং ব্যাম্বু চিকেন যেন রুমে দিয়ে যায়। সন্ধ্যেবেলা নামলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। এই বৃষ্টির মাঝেই চানমিয়া বিরিয়ানি, চিকেন আর এক লিটারের কোক নিয়ে হাজির হল। বারান্দায় তিনটা চেয়ার পেতে শুরু হল বৃষ্টিবিলাস!



সাজেকে যদি চুড়ান্ত কোন সুন্দরতম কিছু থেকে থাকে সেইটা সুবহে সাদিকের আকাশ। আগের দিন বিকেলে হ্যালিপ্যাডে লাখো মানুষের ঢল দেখে ডিসিশন নেই কটেজের বারান্দা থেকেই সূর্যোদয় দেখব। ভোর ৪.১৫ তে উঠে যে গিয়ে বসলাম বারান্দায়; উঠলাম ৬টা পার করে। মাঝে খবিশ ঘরানার জেনারেটরের কুৎসিত শব্দ মাঝেমাঝে বাগড়া দিলেও আমাদের উৎসাহ দমাতে পারে নাই একদমই।

সাজেকে যতটা শোনা যায় খাওয়া দাওয়ার ততটা প্রব্লেম নাই; অন্তত আমরা ফেইস করি নাই। স্পেসিফিক কিছু সেট মেন্যু সবসময়েই এভেইলেবল; শুধু স্পেশাল কিছু খেতে চাইলে কিছু সময় আগে অর্ডার করে যেতে হয়।

পরদিন শুরু হইল ঝড়তুফান; ঘুরাঘুরির তুফান। এই ঝর্ণায় নামতেসি তো সেই গুহায় ঢুকতেসি; আবার ধুপধাপ চলে যাচ্ছি ঝুলন্ত ব্রিজে - মানে বাদ যাবে না কোন শিশু। এরমধ্যে আলুটিলা গুহায় ঢুকে মোটামুটি যারপরনাই হতাশ। জনগণ মশাল ফশাল ফেলে দিব্যি ফোনের ফ্ল্যাশ জ্বালায়ে বিয়েবাড়ি বানায়ে মৃদু জলে জলকেলি করতেসে রীতিমতন। কি আর করা; এই মিছিলের মধ্যেই 'গুহা জয়' করে এলুম। ;)

ফেরার সময় কি তাজ্জব ব্যাপার; চান্দের গাড়ির ড্রাইভার আলমগীর ভাই রীতিমতন বুকে জড়ায়ে ধরে মাফ টাফ চাইলেন দুইদিনের কোন ভুলত্রুটির জন্য; বাকিরাও একজন আরেকজনের ফোন নাম্বার কালেক্ট করায় ব্যস্ত। মাত্র দুইদিনের ব্যবধানে মানুষ একজন আরেকজনকে কতটা আপন করে নিতে পারে !



মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ভাল লাগলো আপনার ভ্রমন কাহিনী পড়ে ৷ +++

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩০

মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ! :)

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: সাজেক কি খাগড়াছড়িতে না রাঙ্গামাটিতে?

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩০

মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: খাগড়াছড়ি।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৬

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: দারুণ জায়গা।
যাওয়ার খুব ইচ্ছা আছে, সুযোগের অপেক্ষায় আছি।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩১

মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: আজকাল অনেক ট্যুর গ্রুপই প্যাকেজ ট্যুরের আয়োজন করে থাকে; বেশি প্যারা না নিতে চাইলে দু'দিন সময় বের করে টুপ করে তাদের সাথেই ঘুরে আসতে পারেন একদিন।

৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯

মাকার মাহিতা বলেছেন: হাসান জাকির ৭১৭১ তিনার সাথে আমি সহমত পোষন করিলাম।

৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯

রাকু হাসান বলেছেন: বুঝি না এত সুন্দর সুন্দর লোকেশনে বাংলা সিনেমার শুটিং দেখি না । |-)

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩২

মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: কি আর করবেন ভাই ! সবার মন পড়ে থাকে নেপাল ভুটান থাইল্যান্ডে ! :(

৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চমৎকার বর্ননা দিয়েছেন।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৮

মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ! :)

৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৫০

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: আপনার ভ্রমন কাহিনী পড়ে ++

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৯

মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ !

৮| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: মেঘ পাহাড়ের ছবিটা বেশ!

৯| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:১৫

চাঙ্কু বলেছেন: সাজেক? দেখলেই কিরাম বিদেশ বিদেশ মনে হয়!

১০| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২৪

কোলড বলেছেন: It was a nice write up until I saw the mug shot!

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৯:১১

মোঃ আসিফুল হক বলেছেন: হা হা। মাগ শট তো কয়েকটা আছে। কোনটার কথা বলতেসেন? :D

১১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:১৯

ডি মুন বলেছেন: আমি সাজেক যাওয়ার উৎসাহ পাই না। আমার ছোটবোন আর ওর হাসব্যান্ড কিছুদিন আগে ঘুরে এসে ভিডিও দেখাইছে সাজেকের। তারপর থেকে আমার উৎসাহ মরে গেছে।

:(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.