নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদিন জীবন শেষ হয়ে যাবে তবুও অনেক কিছু করার সাধ জাগে..............
অহনা বেশ উত্তেজিত। রাতুল তাকে আজ এমন এক জায়গায় নিয়ে যাবে যে সে নাকি চমকে যাবে ? কোথায় নিয়ে যেতে পারে- পার্কে, বাগানে, লেকে, সাগরপারে এরকম আরও অনেক জাগয়ার নাম ভেবেছে অহনা কিন্তু কেন যেন কোনটাই তার মনপুতে হচ্ছে না।
দুপুরে রাতুল আবার ফোন করে অহনাকে বলল- সন্ধ্যায় আমরা যখন জায়গাটিতে যাব তুমি কিন্তু পছন্দমত দুটি চকলেট আনতে ভুলনা। ব্যস কথাটা যেন আগুনে ঘি ঢাললো। অহনা আরও উত্তেজিত হয়ে উঠল। কোথায় যাচ্ছে সে ? রাতুল কি তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে উৎসুক করে তুলছে। নাকি সে নিজেই অনুসন্ধিৎসু হয়ে উঠছে।
টিয়া রঙের শাড়ি পড়ে রাতুলের সাথে শহরের এক গলিতে গিয়ে নেমে সন্ধ্য অড়িং নামক নাস্তার দোকানে ঢুকে মুখোমুখি বসল তখনও সে জানেনা তার জন্য কি অপেক্ষা করছে। চা-নাস্তার কথা বলে নিজেরা আলাপচারিতায় মগ্ন হলো। অহনা চোখ ঘুরিয়ে দোকানটা দেখলো। বেশ গুছানো। দোকানটিতে তিন থেকে টারটা টেবিল। প্রতিটি টেবিলে সুন্দর করে ফুলদানিতে ফুল সাজানো। ফুলগুলো যে কৃত্রিম নয় এটা দেখে সে অবাক হলো। আবাও অবাক হলো- নাস্তা ও চা নিয়ে হাজির হয়েছেন এক তরুণী মা ও তার ফুটফুটে শিশু কন্যা।
রাতুল পরিচয় করিয়ে দিল- এই ছোট্ট তুলতুলে মিষ্টি পরীটা হলো জাফরিন আর উনি হলেন তার মা। জাফরিনের মা বললেন- তুমি নিশ্চয়ই অহনা শারমিন। আমি জয়নব। আমার দোকানে তোমাকে স্বাগতম।অহনা- একটু হেসে বলল ধন্যবাদ আপু।
জাফরিনের মা চলে গেলে অহনা জানতে চায়-তুমি কি করে ওনাকে চিন ? না তেমন কোন সাংঘাতিক কিছু নয় ম্যাডাম। আমি এ দোকানের কাস্টমার আর উনি দোকানের মালিক। সেই সূত্রেই হালকার উপর ঝাপসা কথা চালাচালি তার পর নিজেদের সম্পর্কে
কিছু বলাবলি। কথা শেষ করে হাসলো রাতুল। জাফরিনও হাসছে তার সাথে। হাসি যেন সংক্রামক রোগ মূহুর্তেই ছড়িয়ে গেল অনহনার মুখেও।
হুম। এতক্ষনে বুঝতে পেরেছি মিস্টার এটাই তোমার সেই জায়গা যেখানে আমাকে চমকে দিতে চেয়েছ। কিন্তু আমি অতটা চমকানোর মত এখনো কিছু দেখিনি। অপেক্ষা কর দেখতে পাবে।
জাফরিনকে কোলে তুলে আদর করছে অহনা। কিন্তু জাফরিন মাত্রই কথা বলা শিখেছে। তাই দু’একটার বেশি কথা সে বলছে না। ওর হাসিটা সত্যি চমৎকার। মনে হয় যেন একটা ছোট্ট পরী সামনে দাড়িয়ে আছে। আদর না করে পারা যায় না। একটু পরে একজন কাস্টমার ঢুকলো। সে ফড়িং বালিকা বলে ডাকতেই জাফরিন দৌড়ি গিয়ে তার কোলে ঝাপিয়ে পড়লো।
লোকটি তাকে কোলে নিয়ে বলল- তোমার জন্য কি এনেছি জান ? জাফরিন মাথা দুলিয়ে বলল না সে জানেনা। লোকটি একটা আংটি বের করে ওর আঙ্গুলে পড়িয়ে বলল-এটা তোমার জন্য। আমাকে আজকে কি খাওয়াবে মামনি ? চা খাওয়াবো। না না কফি খাওয়াও।
অহনা বেশ অবাক হয়ে দেখলো এখানে যে কজন কাস্টমারই আসছে সবাই জাফরিনকে কোন না কোন উপহার দিচ্ছে। কেউ তাকে ফড়িং বালিকা কেউ পরী কেউ রাজকন্যা কেউ সোনার পুতুল বলে ডাকছে। সে এর কারণ জানতে চাইলো।
এই শহরে এমন সুন্দর রেস্টুরেন্টিএর মত দোকান দ্বিতীয়টি নেই। এখানের নাস্তার খাবারের তুলনা অতুলনীয়। সবচেয়ে বড় কথা জাফরিনের মত অত ছোট আর সুন্দর সার্ভিস গার্ল বাংলাদেশে বোধ হয় আরও কোথাও নেই। জীবনে সংগ্রামে এই নারী ও তার কন্যা যে দৃষ্টান্ত দেখাচ্ছে তা গল্প উপন্যাসকেও হার মানায়।
পৃথিবীতে ওদের আপনজন বলতে আর কেউ নেই। কেন নেই সে এক ইতিহাস । সে কথা অন্য একদিন বলবো। এই দোকানটা পেতে ও চালিয়ে নিতে যে পরিমাণ কষ্ট করেছেন আর ধৈর্য্য ধরেছেন জয়নব আপু তাও অবাক করার মত।
দোকানে কাজের জন্য কোন ছেলেকে রাখলে তারও নজড় পড়ে জাফরিনের মায়ের ওপর। পাল্টিয়ে অন্য ছেলে রাখলে ওই ছেলেকে হাত করে ওনাকে পটাতে চান কাস্টমাররা আরও কত রকমের উপদ্রব যে আছে তা তুমি বঝবে না। এগুলো নিয়ে পুলিশি ঝামেলা পর্যন্ত হয়েছে । এখন অবশ্য সব ঠিক হয়ে গেছে।
অহনার চোখে একটু জল জমে গেল। তার মাকেওতো কম কস্ট করতে হয়নি তবু ভাগ্য ভাল তার পরিবার - আত্মীয়স্বজন ছিল পাশে। অহনা চকলেট দুটো জাফরিনকে দিল। কিন্তু প্রথমে সে নিতে চায়নি। অহনা কয়েকবার বলার পরেও না। রাতুল বলাতে নিয়েছে। আসলে অপরিচিত মানুষের কাছ থেকে সে হঠাৎ করে কিছু নিতে চায় না। ভালবেসে কাছে আসার পরেই সে কিছু নেয় এজন্যইতো সবাই এত ভালবাসে এই ফড়িং বালিকাকে।
সময় যে কোথা দিয়ে চলে যায় বুঝাই যায় না। প্রায় নটা বেজে যাচ্ছে। সব কাস্টমার বিদায় নিয়েছে। ঠিক নয়টায় দোকান বন্ধ হয়ে যাবে খুলবে আবার পরের দিন সন্ধ্যায়। বিদায় নিয়ে অহনা ও রাতুল যখন রাস্তায় পা রেখেছে জাফরিন তাদেরকে টাটা দিচ্ছে। অহনা-রাতুলও টাটা দিতে ভুললনা।
তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা............গানটা মনের ভিতরে গেয়ে ওঠল অহনার। পথে আর তেমন একটা কথা হলোনা রাতুলের সাথে। সে যেন একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেছে। সন্ধ্যা ফড়িং থেকে এক ফড়িং বালিকা যেন অহনাকে তার অতীতের কিছু রঙিন ছবি ফিরেয়ে দিল। বাবার অস্পষ্ট মুখটা হঠাৎ স্পষ্ট হতে গিয়ে ধীরে ধীরে কুয়াশায় মিলিয়ে যাচ্ছে।
ছবি-নিজের তোলা।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ। ঠিক করে দিয়েছি।
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাহ ! বেশ মিষ্টি গল্প তো ;
সফলতা আসুক সকল সংগ্রামের।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ।
সকল সংগ্রামীরা সফল হোক।
ভাল থাকবেন।
৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩৭
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব সুন্দর। কিছু বানান ভুল আছে । ঠিক করে দাও
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ।
ঠিক করেছি যেগুলো চোখে পড়েছে।
৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫৩
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: শেষের প্যারায় ...। মেঘমালা,
তেমন একটা কথা হলো না রাতুলের সাথে।
৯ নম্বর প্যারায় আমাকে আজ কী খাওয়াবে হবে।
আর এই প্যারার শেষে খাওয়াবো হবে
এর পরের প্যারায় কারণ আর করণ একটা হবে
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
কৃতজ্ঞা।
ভুল ধরতে পারলাম।
ধন্যবাদ।
৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লেগেছে।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ভাললাগায় কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ জনাব।
৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪২
ফয়সাল রকি বলেছেন: সুন্দর।
+++
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৬
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ রকি ভায়া।
ভাল থাকবেন।
৭| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪০
রুমী ইয়াসমীন বলেছেন: সুন্দর গল্প। পড়ে ভালো লাগলো
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:১২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
অনেক অনেক ধন্যবাদ রুমী আপা গল্প পড়ে ভাললাগা জানানোর জন্য।
৮| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:১৭
মুক্তা নীল বলেছেন:
মাইদুল ভাই ,
আপনি তো বেশ চমৎকার গল্প লিখেন আজকে পড়লাম।
গল্পের ভেতরে যে ব্যর্থতার পর সফলতা এটাই তো চাই সবার জীবনে আসুক। শুভেচ্ছা রইলো ।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:২৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
বেশ অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্য।
মাঝে মাঝে গল্প লিখি, কন্টিনিউ করার ইচ্ছে আছে।
ব্যর্থতার পর সফলতা আসবেই এটাই গল্পের মূল বিষয় সাথে মানবিকতাও।
ধন্যবাদ।
৯| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫২
নীল আকাশ বলেছেন: সন্ধ্যা ফড়িং থেকে এক ফড়িং বালিকা যেন অহনাকে তার অতীতের কিছু রঙিন ছবি ফিরেয়ে দিল। বাবার অস্পষ্ট মুখটা হঠাৎ স্পষ্ট হতে গিয়ে ধীরে ধীরে কুয়াশায় মিলিয়ে যাচ্ছে। এই লাইনটার ট্যুইস্ট কয়জন বুঝেছে? সিঙ্গেল মাদার'রা যতটা স্ট্রাগল করে এতটা মনে হয় এই সমাজে আর কেউ করে না।
ধন্যবাদ।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:০০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ নীল ভাই। গল্পের ট্যুইস্ট পাঠক ধরতে না পারলে গল্পটি তার কাছে বিশেষ অর্থপূর্ণ হবেনা।
সত্যি সিঙ্গেল মাদাররা আজীবন লড়ে যান।
১০| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪২
নিভৃতা বলেছেন: খুব সুন্দর। এক রাশ ভালো লাগা।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:০১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আপনার কাছ থেকে কিছুটা আলোচনা/সমালোচনামূলক মতামত আশা করছিলাম।
ধন্যবাদ।
১১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৮
শের শায়রী বলেছেন: গল্পে ভালো লাগা জানবেন মাইদুল ভাই। "তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা" আমারো প্রিয় একটা গান।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর বলেছেন শায়রী ভাই। ভাললাগায় মুগ্ধ হলাম। ধন্যবাদ।
তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা.......... আসলেই গানটা সুন্দর।
১২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: মোঃ মাইদুল সরকার,
ভিন্ন প্রেক্ষাপটে লেখা। একটি সংগ্রামের গল্প, ফুটিয়ে তুলেছেন জাফরান রংয়ে ।
'চমৎকার' বলতেই হবে !
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:০০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
চমৎকার কিছু গল্প লিখতে চাই তারই প্রয়াস এটা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ কবি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: এক জায়গায় রাতুন লিখেছেন। রাতুল হবে।