![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদিন জীবন শেষ হয়ে যাবে তবুও অনেক কিছু করার সাধ জাগে..............
সামহোয়্যার ইন ব্লগের পরিচিত মুখ রূপক বিধৌত সাধু। এবারের ২০২৫ বই মেলায় রুপকদার প্রথম গল্পগ্রন্থ-কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় প্রকাশিত হয়েছে। বই প্রকাশের জন্য প্রথমেই অভিনন্দন, শুভেচ্ছা ও সাধুবাদ জানাই।
একজন লেখক এর স্বপ্ন থাকে একদিন তার নিজের বই হবে, তার লেখা ছড়িয়ে পড়বে, দেশের মানুষ জন তাকে জানবে, বুঝবে ,পড়বে। পরিচিত ও নিয়মিত ব্লগের ব্লগার হিসেবে এই গল্পের বইটি সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। একটি মাত্র বই একজন লেখক কে বাঁচিয়ে রাখে হাজার বছর কিংবা তারও অধিক সময়।
যদিও এটি গল্পগ্রন্থ এর প্রতিটি গল্পই লেখকের নিজের সাথে ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা। পড়তে পড়তে মনে হবে - কি আশা নিয়েই না একজন মানুষ বেঁচে থাকে ? না পাওয়ার কষ্ট আর হাহাকার কত তীব্র আর মর্মভেদী হতে পারে গল্পগ্রন্থটি না পড়লে বুঝা যাবেনা।
গল্পের শুরুতেই আমরা দেখতে পাই ময়মনসিংহ জেলায় জন্ম নেওয়া রূপক বিধৌত সাধুর জীবনের প্রথম দিনগুলোর ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। জন্মের পর থেকে যে সংগ্রাম তা যেন উত্তরাধিকার সূত্রেই পাওয়া গল্পের সহজ সরল বয়ান সহজেই মনকে প্রভাবিত করে।
শৌশব, কৌশর আর যৌবনে কতটা সংগ্রাম করলে জীবনে প্রতিষ্টা পাওয়া যায় ? প্রতিটি গল্পই এরকম প্রশ্ন তৈরী করে দেবে আপনাকে। সর্বোচ্চ চেষ্টার পরেও ভাগ্য যদি সহায় না হয় তাহলে সফল হওয়া যায় না। সাফল্য এবং টিকে থাকা সত্যি আলাদা ব্যাপার হলেও কেউ এগিয়ে যায় আর কেউ পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়। টিউশন করে টিকে থাকা দায় যেখানে সেখানে কোচিং করিয়ে বা ছাত্র পরিয়ে কেউ কেউ বাড়ি গাড়ী করে ফেললেও সেখানে ময়মনসিংহ কিংবা ঢাকা শহরে সাধুর বেঁচে থেকে থাকা পড়ার ভালো মতন সংস্থা হয় না। বারবার চেষ্টা বারবার হোচট খাওয়া আর নতুন স্বপ্ন নিয়ে নতুন কাজের সংস্থান করা এই যেন ছিল জীবনের প্রত্যাহিক ঘটনা।
অবহেলা আর অযত্নে যেমন একদিন পরিত্যাক্ত বাড়িতে কাঁটালতা উঠে ঠিক তেমনি অবহেলা আর অবজ্ঞায় একজন মানুষ হয়ে পড়ে চরম অধৈর্য যা তার মন মানসিকতা কে প্রত্যাশিত প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্মকে ব্যাহত করে। ছাত্র পড়ানো কিংবা কোচিং এ চাকরি করে স্বচ্ছলতা কঠিন এবং তার চেয়ে কঠিন এই লাইনে টিকে থাকা । কারণ মানুষ মাত্রই কারো উন্নতী ও সৌন্দর্য সহ্য করতে পারে না।আর এক্ষেতে আমরা বাঙালিরা এক ধাপ এগিয়ে।
প্রতিটি গল্প দেখতে পাই স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা। আর সেই বেদনায় নীল হয়ে গল্পের নাম দেওয়া হয়েছে- ছিল মর্ম বেদনা ঘন অন্ধকারে কোচিং এর গল্প। এত প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও অনার্স মাস্টার্স শেষ করা কম কথা নয়। এ ক্ষেত্রে সাধুর প্রশংসা করতেই হয়।
আমাদের দেশে এক শ্রেণীর মানুষের কাজ প্রতারণা করা। আরেক শ্রেণীর মানুষ খুব সহজেই প্রতারিত হয় যারা বেকার, চাকরি বাকরি পাচ্ছেনা তারা। তাইতো লেখক গল্পের নাম দিয়েছেন-বজ্রে তোলা আগুন করে আমার যত কালো: জৈনিক বেকারের প্রতারিত হওয়ার কেচ্ছা। করোনা কালে সবারই টিকে থাকা দায় ছিল বিশেষ করে যারা বেসরকারি চাকরি বা কোচিং লাইনে ছিলেন। তাইতো ঝরা বকুলের কান্নার মতন গল্প তৈরি হয়েছে রূপক সাধুর জীবনে। যেখানে ভগ্নিপতি পা ভেঙ্গে বাসায় বসে আছে বোনের পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে ফার্মেসিতে বসে ভাগ্নের সাথে বসে কাজ করছে নিজে কিন্তু এ লাইনে অভিজ্ঞতা না থাকায় চোখের সামনে ওষুধে থেকেও রোগীদের ঔষধ দিতে না পারার যে কাহিনী দুঃখের মাঝেও তো হাসিয়ে তোলে।
সংসার জীবনে হাজার রকমের আনন্দ বেদনার স্মৃতি থাকে। সেই সব স্মৃতির প্রকৃত দৃশ্য দেখতে পাই আমার বড় বোন ও বাপ মেয়ের দ্বৈরথ গল্পে। যেখানে বোনেরা ভাইকে স্নেহ করে, ভালবাসে। যেখানে ভাই বোনদের প্রতিদান দিতে পারে না আরে না পড়ার কষ্টের আগুনে পুড়ে ছাই হতে হয় অসহায় ভাইদের।
কতটা মর্ম বেদনা হলে একজন মানুষকে আত্মহত্যার কথা ভাবতে হয়, লিখতে হয় কতরাত না খেয়ে ছিলাম সত্যি চোখে জল এসে যায় পড়তে গিয়ে। গল্পের মাঝে দেখতে পাই কোন এক অনুষ্ঠানে বেড়াতে গিয়ে গলা দিয়ে মাংস না নামার ঘটনা কতটা কষ্টে থাকলে একজন মানুষের না খেতে খেতে এরকম অবস্থা হয়। কেন এত কষ্ট এক জীবনে মানুষকে সইতে হয় ?
বাড়ির কাছে আরশিনগর গল্পে দেখতে পাই জীবন সংগ্রামে এক লড়াকু সৈনিক যখন উপলব্ধি করে এই জগত সংসারে আপন বলতে কেউ নেই, খোঁজখবর নেয়ার মত কেউ নেই। সে কেমন আছে এটা জিজ্ঞেস করার মত একটা মানুষ নেই, তখন মনে হবে এই মানুষটির জন্য যদি একটু ভালোবাসা দিতে পারতাম একটু বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে পারতাম তাহলে বেশ হতো।
এভাবে প্রতিটি গল্প ছুয়ে যাবে পাঠকের মন। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো গল্পগুলো আর বড় ও চরিত্রগুলো আরেকটু গভীর হলে খুব সহজেই পাঠকের মনে স্থান করে নিতে পারতো।
যারা এখনও বইটি পড়েন নি তারা রকমারি থেকে অথবা ব্লগ বা ফেসবুকে, ফোনে সাধু ভাইকে নক দিয়ে সংগ্রহ করতে পারেন।
ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন গল্প, কবিতার বই পাব সেই আশা ব্যক্ত করছি। লেখকের ব্যক্তিগত জীবন যেন সুখ ও স্বাচ্ছন্দের হয় সে কামনা করছি।
১০ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:১২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ধন্যবাদ । ভালো থাকুন। আশা করছি পরের বইগুলো আরও গুছানো ও সুন্দর হবে।
২| ১০ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:১৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: বইটি আমিও সংগ্রহ করেছি। কিছু কিছু গল্প মনে হয় এর আগে এ ব্লগেও প্রকাশিত হয়েছিল, যার মধ্যে আমি কয়েকটা পড়েছি।
রিভিউ সুন্দর হয়েছে, মনযোগী পঠনের পরিচয় দিচ্ছে। তবে বেশ কিছু বানান বিভ্রাট এ রিভিউয়ে রয়ে গেছে, যা এখনও সম্পাদনা করা যায়।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:০৬
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বোঝা যাচ্ছে খুব গভীরভাবে পড়েছেন গল্পগুলো। গল্পগুলো বড় করা আর চরিত্রগুলো গভীর করার বিষয়ে আপনার পরামর্শ মনে রাখব পরবর্তীতে। আসলে উপর্যুক্ত গল্পগুলো লেখার সময় অস্থির সময় ছিল, সে সময়ে ধীরেসুস্থে লেখার সুযোগ ছিল না।