নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ।

মো: রাহাত আলী

Not very special.

মো: রাহাত আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেডিক্যাল প্রশ্ন ফাঁস এবং একটি সর্বনাশ!

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:১২

আশিক আর শাওন এরা দুজন বন্ধু। মেডিক্যাল ভর্তি পরিক্ষা দেবে কদিন পর।
শাওন পড়ালেখায় খুব চতুর, অর্থাৎ পড়ালেখা ছাড়া অন্য কিছুকে তেমন গুরুত্বই দেয়না। আশিক ও পড়ালেখায় কম ছিল না। তবে বন্ধুদের সাথে একটু মিশতো বেশি শাওনের তুলনায়। পরিক্ষার আর মাত্র ৪ দিন পর। হঠাত আশিক তার বন্ধুমহল জিকু,রাশেদ,সুজনের কথা শুনে অবাক! তারা নাকি ডাইরেক্ট মেডিক্যাল ভর্তি পরিক্ষার প্রশ্ন জোগাড় করেছে। আশিক ওদের কথা পাত্তাই দেয়নি। কিন্তু বাসায় এসে তার পড়ায় আর মন বসছেনা। কি করবে? পড়া আরো কিছু বাকি আছে, তবে সব পড়া যেন কোথায় গিলে ফেলেছে। আশিক এই ব্যাপারটা শাওনের রুমে গিয়ে বলে যেখানে আরো কয়েকজন পরিক্ষার্থীও ছিল। তারা সারাদিন বদমাশি আর ফালতু কাজে থাকতো আর শাওনকে পড়তেও দিতোনা তেমন। আশিকের কথা শুনে শাওন আশিককে বুঝালো যে এটি কোনতেই সম্ভব না যে মেডিক্যাল পরিক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে। আশিক তাই শুনলো এবং সবকিছু ভুলে জোরসোরে শুরু করলো পড়া। কিন্তু শাওনের সেই রুমমেট গুলো পড়ার উপর জোর না দিয়ে গেল ফাঁসকৃত প্রশ্ন সংগ্রহ করতে, আর তারা পেয়ে শুরু করলো পরিক্ষার প্রস্তুতি নিজের মত।
সবাই পড়ে যাচ্ছে দিনরাত নিজের মত করে, নেই ঘুম নেই আরাম।
অবশেষে পরিক্ষার দিন আসলো।
পরিক্ষা সবাই ভালো দিল, তবে আশিক আর শাওনের চেয়ে শাওনের রুমমেটদের চেহারায় যেন অন্যরকম শান্তি বিরাজ করছে। আশিক ও শাওন ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি।
অবশেষে পরিক্ষার ফল প্রকাশ হলো, যা দেখে আশিক ও শাওন দুজনই ভেঙ্গে পড়লো।
শাওন টিকেছে তবে আশিক টিকেনি।
আশিক খুব কষ্ট পেলো যে তার এতো কষ্ট সব বৃথা।
আশিক আর শাওন অবাক হলো তার সেসব রুমমেটদের রেজাল্ট দেখে, তারা কিভাবে পাশ করলো?
আশিক আর শাওন এই ভেবে নিজেকে শান্তনা দিলো যে হয়তো তারাও লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তো।
তবে আসল ঘটনা শুনে শাওনের মাথা যেন আকাশ থেকে পড়লো। আশিক যে প্রশ্নের কথা পরিক্ষার আগে বলেছিল, তা আসলেই মেডিক্যাল ভর্তি পরিক্ষার প্রশ্নই ছিল। শাওন ব্যাপারটি আশিকের কাছে শেয়ার করেনি। শাওন একা আকা খুব কাদতো যে তার সামান্য ভুলের কারনে আশিক টিকতে পারেনি। কেন সে আশিককে বারণ করলো প্রশ্নটি অনুসরণ করতে?
আশিকেরও খুব খারাপ দিন যাচ্ছিলো, সে শাওনের সাথে কথা বলতে পারতোনা। এই ভেবে যে সেতো মেডিক্যালে পড়বে আমার সাথে কথা বলার সে সময় পাবে কিনা।
শাওন খুব কষ্টে ছিলো, না সে পাশ হয়ে খুশি থাকতে পারলো না ফেল করে আশিকের কাছের বন্ধু!
শাওন একটি সিদ্ধান্ত নিলো!
একটি চিঠি লিখলো আশিককে যা ঠিক এরকমঃ
"আশিক তুই ফেল করস নাই রে, ফেল আমি করিয়েছি তোকে। সেদিন যদি তোকে আমি বারণ না করতাম তাহলে তুই আমার যায়গায় থাকতি রে! আমি পারছি আর এ যন্ত্রণা সহ্য করতে। কেনো আমি ওদের মত হলাম না। জানি তুই ও আমার থেকে খুব রেগে আছিস, তাই আমার পক্ষে আর থাকাটা সম্ভব হচ্ছেনা। তুই ই একমাত্র বন্ধু ছিলিরে পাগলা আমিতো নিজের পরিবারের সাথে মন খুলে কথা বলতে পারিনা। তুই যখন আমার সাথে আর না ই থাকিস তাহলে আমার এই জগতে থাকার কোন অধিকার নেই। তোর ভবিষ্যত উজ্জ্বল হোক এই কামনা করি, আমার যাওয়াতে তুই একটুও কাদিস নে, এটি আমার অনুরোধ। আর পরবর্তিতে এমন পরিস্থিতিতে আবার আসলে কখনো কাউকে জিজ্ঞেস করবিনা, সোজা ফাঁসকৃত প্রশ্ন নিয়ে পরিক্ষা দিয়ে দিস। তোর জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতার জন্য আমি দায়ী। পারলে ক্ষমা করিস। পরের জনমে দুজনে একসাথে চুরি করে পরিক্ষা দেবোরে, থাকবি তো না?"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.