![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তালিকায় আরো আছেন বড় বিনিয়োগকারী সাংবাদিক ও ভার্সিটি শিক্ষক
শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অর্ধশত রাজনীতিক-ব্যবসায়ীর নাম জড়িয়ে গেছে। তাই তাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এ তালিকায় আরো আছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, বড় বিনিয়োগকারী, বেসরকারি টিভি চ্যানেলের মালিক, সাংবাদিক ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক। ইতোমধ্যে এ কেলেঙ্কারি তদন্তে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা কাজও শুরু করেছেন। কিন্তু বিশেষ এ মহলটি তদন্তকাজ প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির নায়কদের গোয়েন্দা নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে, এটা বুঝতে পেরে কেউ কেউ দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন। গত সোম ও মঙ্গলবার এ রকম দুটো প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়েছেন গোয়েন্দারা। সোমবার চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিতর্কিত ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বাদলকে আর মঙ্গলবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইয়াকুব আলীকে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয়।
উল্লেখ্য, মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। এ সময়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) কিছু পদক্ষেপে বাজার টালমাটাল হয়ে ওঠে। এরপর থেকে দিন যত যাচ্ছে, বাজার ততই পড়ছে আর বিক্ষোভ বাড়ছে। বিনিয়োগকারীদের দাবি, বাজার ধসের জন্য সরকারি এবং বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন রাঘববোয়াল জড়িত। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেন কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। এতে সরকারের টনক নড়ে। তারপর তাকেই প্রধান করে গঠন নজরদারিতে : পৃষ্ঠা ২ কলাম ২
করা হয় শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির তদন্ত কমিটি।
জানা গেছে, শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক নিয়ম হচ্ছে আইপিওর মাধ্যমে প্রাইমারি শেয়ার ক্রয় করে বছরশেষে মুনাফা তুলে নেয়া। এ ক্ষেত্রে কোম্পানির আয় বাড়লে শেয়ারের দামও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বৃদ্ধি পায়। বিনিয়োগকারীরা চাইলে যে কোনো সময় ভালো দরে শেয়ারটি বিক্রি করে দিতে পারেন। এবার অনেক শেয়ার বাজারে আসার আগেই ফিন্যান্সিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। সেটাও সাম্প্রতিক বাজারধসের অন্যতম কারণ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের (২০১০) অক্টোবর-নভেম্বরে বাজারে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার থেকে তিন হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ওই সময়ই মূলত শেয়ার কেলেঙ্কারির নায়করা বাজার থেকে টাকা তুলে নেয়। বাজার ঊর্ধ্বমুখী দেখে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লাভের আশায় প্রচুর শেয়ার কেনেন। কেনা-বেচার এই খেলায় ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে লাভ হয়েছে ৮৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে এসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক সিদ্দিকী বলেন, সাধারণ মানুষ কয়েকটি কারণে এখানে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হয়েছে। প্রথমত, সরকার সঞ্চয়পত্রের সুদ কমিয়ে দিয়েছিল। একই সময়ে ব্যাংক সুদও কমে গিয়েছিল। অন্যদিকে পণ্যমূল্য বেড়ে গিয়েছিল। তার মতে, এ সুযোগে অনেকেই পুঁজিবাজারে হস্তক্ষেপ করেছিল। ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন হয়েছে। এতে বাজার অতিমূল্যায়িত হয়ে যায়। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো সমন্বয় ছিল না।
সূত্র আরো জানায়, ডিসেম্বরে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বুক ক্লোজিং। ফলে এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেহেতু অনুমোদিত অর্থের অতিরিক্ত টাকার শেয়ার কিনেছে, তাই হিসাব মেলাতে ডিসেম্বরের আগেই তারা সেটা বিক্রি করে দেয়। এতেও বাজারে শেয়ারের প্রবাহ বেড়ে যায়। অবস্থা বুঝতে পেরে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো শেয়ার কেনা বন্ধ করে দেয়। তাদের আয়ের অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে (এফডিআর) গচ্ছিত রাখা হয়। এ তালিকায় আছে প্রথম জনতা মিউচুয়াল ফান্ড, আইএফআইসি, ইবিএলসহ বিভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ড। এ অবস্থায় একদিকে শেয়ার বিক্রির চাপ, অন্যদিকে ক্রেতা না থাকায় শেয়ারবাজারে মহামন্দা দেখা দেয়, যা এখন পর্যন্ত সামাল দিতে পারছে না সরকার।
এ বিষয়ে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের। যখন দরপতন শুরু হয়, তখন তাদের উচিত ছিল নিজেদের কাছে থাকা শেয়ার ধরে রাখা। একই সঙ্গে বাজার থেকে শেয়ার কিনে নেয়া। কিন্তু তারা তা করেনি।
এদিকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা প্রাথমিক তদন্তে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালু, আওয়ামী লীগের বিতর্কিত ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বাদল, ইয়াকুব আলী, আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ ব্যবসায়ীসহ প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের অর্ধশতাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে। বলা হয়েছে, গত ২০ জানুয়ারি শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় ধসের নেপথ্য নায়ক তারাই।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নজরদারিতে থাকা অনেকেরই নিজের নামে বিও অ্যাকাউন্ট না থাকলেও বিভিন্ন নামে শত শত অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টে ৫ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৭ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু কোনো শেয়ার কেনা হয়নি। এদের অনেকেই মাত্র বছর দুয়েকের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় কিনেছেন বিলাসবহুল বাড়ি ও ফ্ল্যাট। অ্যাকাউন্ট খুলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এসব টাকা ডলারে পাচার হয়েছে। ফলে ওই সময় ডলারের দামও ছিল চড়া।
একই সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসজুড়েই ডলারের দাম ছিল অস্বাভাবিকভাবে চড়া। ১১ জানুয়ারি ব্যাংক টু গ্রাহক পর্যায়ে ডলারের দাম ছিল ৭৩ টাকা ২৫ পয়সা। আর খোলাবাজারে এই দাম ৮০ টাকার কাছাকাছি চলে যায়।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ডলারের দাম ছিল ৭১ টাকা ৩৫ পয়সা, ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৭৩ টাকা ২৫ পয়সা, ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৬৯ টাকা ৬৫ পয়সা এবং ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৬৯ টাকা ৬০ পয়সা। একটি পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মোসাদ্দেক আলী ফালু ও লুৎফর রহমান বাদলসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন। বছর কয়েক আগেও অপরিচিত লতিফ সিকিউরিটিজের কর্ণধার বাদল বিএনপির সময় ফালু ও বর্তমান সরকারের সময় প্রভাবশালী এক ব্যবসায়ী নেতার হাত ধরে বনে যান দেশের অন্যতম ধনকুবের। দুই বছরে জিএমজি এয়ারলাইন্স, ঢাকা ওয়েস্টিনসহ প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম মালিক হয়েছেন লুৎফর রহমান বাদল। তার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আইএফআইসি ব্যাংক, লতিফ সিকিউরিটিজ, জিএমজি এয়ারলাইন্স, ওয়েস্টিন হোটেল, বিজনেস ক্যাপিটাল শেয়ার ও সিকিউরিটিজ, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, এলআর অ্যাগ্রো ফার্ম, ঢাকা-সাংহাই সিরামিক, এনটিভি, আরটিভি ও নুরানী হিমাগার। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানকেই তিনি শেয়ারবাজারের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। আর ইচ্ছামতো বাজার নিয়ে নাড়াচাড়া করেছেন।
বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, লুৎফর রহমান বাদল বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নানা ধরনের প্রলোভন দিয়ে তাদের শেয়ারবাজারে আনেন। তাদের দাবি, এ সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি টাকা আয় করছে ফালু-বাদলদের এ চক্রটি। আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে তারা এ সুবিধা নিয়েছেন। এদের সঙ্গে আছেন শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট সাবেক এবং বর্তমান কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এ চক্রটি নানাভাবে বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে হুমকি-ধমকি দিয়েও সুবিধা আদায় করে থাকে। মহাজোট সরকার আসার পরপরই তারা চাপ দিয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের চার পরিচালক ইয়াসিন আলী, মুরাদ ইব্রাহিম, তারেক চৌধুরী ও নাসিরউদ্দিনকে পদত্যাগে বাধ্য করেন। এ ঘটনার পরপরই আইএফআইসি ব্যাংকে অমিত ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন লুৎফর রহমান বাদল। কিন্তু সব ক্ষমতা চলে যায় মোসাদ্দেক আলী ফালুর হাতে। এ চক্রের অনেক অবৈধ কর্মকা-ের প্রমাণ এখন গোয়েন্দাদের হাতে। এ নিয়ে আরো খুঁটিনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। যে কোনো সময় এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে। সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, খোদ প্রধানমন্ত্রী এখন বিষয়টি জানেন।
সূত্র জানায়, শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও জড়িত। এদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তিনজনসহ বেশ কয়েকজন জড়িত। তারাও এই বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তিনজনসহ মোট চার কর্মকর্তা ২০১০ সালের ২০ জুন নিজেদের পদবি ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ও ফ্ল্যাট কিনতে একটি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ঋণ গ্রহণের আবেদন করেন। তাদের মধ্যে তিনজনই একই তারিখে একই পরিমাণ অর্থের জন্য একই ভাষায় আবেদন করেন। কিন্তু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক টাকা দিতে না চাইলে পরে তারা আরেকটি আবেদনপত্রে শুধু ফ্ল্যাট কেনার জন্য আবেদন করেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই ব্যাংক তাদের মোট সাত কোটি টাকার 'অ্যানি পারসন লোন' (যে কোনো কিছুর জন্য ঋণ বা ভোক্তা ঋণ) অনুমোদন দেয়।
সূত্র জানায়, সেকেন্ডারি মার্কেটের নিয়ম হচ্ছে যুক্তিসঙ্গত দামে শেয়ার কিনে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করা। কিন্তু যাবতীয় দুশ্চিন্তা একশ্রেণীর 'প্লেয়ার'দের নিয়ে, যাদের এককথায় 'শেয়ার ট্রেডার' বলা যায়। তারা শেয়ার কেনা-বেচা করে দ্রুত মুনাফা করতে চায়। একটা সংগঠিত চক্র বিশেষ কয়েকটি কোম্পানিকে টার্গেট করে কম মূল্যে তাদের যাবতীয় শেয়ার কিনে নেয়। প্লেসমেন্টের মাধ্যমেই এ কাজটি হয় বেশি, তবে বাজার থেকে শেয়ার গুছিয়ে নেয়ার ঘটনাও হয়েছে এবার। 'জেড ক্যাটাগরি'র বা যে প্রতিষ্ঠানের শেয়ার সংখ্যা কম, এ চক্রটি সেসব শেয়ার নিয়েই সক্রিয় থাকে।
ধরা যায়, ২০০ টাকার এক কোটি শেয়ার নিয়ে চক্রটি সক্রিয় হলে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনে তার ভাগ দাঁড়ায় ২০০ কোটি টাকা, সাধারণ সূচকে যার অবদান ৪ শতাংশ। এরপর পরিকল্পিতভাবে প্রতিদিন কোম্পানিগুলোর শেয়ার মুভমেন্ট ঘটিয়ে ধাপে ধাপে দাম বাড়ানো হয়। ২০০ টাকার একটি শেয়ার বাড়তে বাড়তে ২ হাজার টাকা বা তার ওপরও চলে যায়। তখন তাদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন দাঁড়ায় ২ হাজার কোটি টাকা এবং সূচক ১০ গুণ বেড়ে হয় ৪০। মার্কেটে তেজিভাব দেখা দেয়। চক্রটি তাদের শেয়ারের দাম বাড়িয়ে একটা চাঙ্গা অবস্থা তৈরি করে। আর তখনই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা প্ররোচনায় বা লোভে পড়ে সোনাদানা বন্ধক দিয়ে এসব শেয়ার কিনতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় চক্রটি ২০০ টাকার একটি শেয়ার ২ হাজার টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি করতে থাকে। একই সঙ্গে বাজার স্বাভাবিক রাখতে একই দামে নিজেরাও কিছু শেয়ার কিনে নেয়। এতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু চক্রটির সব শেয়ার বিক্রি হওয়ামাত্রই দরপতন ঘটে। এরপর চক্রটি আবার নতুন করে শেয়ার কেনা শুরু করে।
জানা গেছে, শেয়ার কেলেঙ্কারির চক্রটি ১৯৯৬ সালে নিজেদের কোম্পানির শেয়ার দিয়েই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সর্বস্বান্ত করেছিল। তাই ধরাও খেয়েছে হাতেনাতে। কিন্তু এবার চক্রটি চালক হয়ে যাবতীয় 'নয়-ছয়' করেছে অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার নিয়ে। কিন্তু সিডিবিএলের কারণে এবারের শেয়ার লেনদেনের প্রতিটি রেকর্ড কম্পিউটার সার্ভারে রয়ে গেছে। গত দু'বছরের অক্টোবর থেকে ডাটা অ্যানালাইসিস করলেই বের হয়ে আসবে কোন কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে 'খেলা' হয়েছে। দাম বাড়ানোর চক্রান্তে কোন কোন 'বিও অ্যাকাউন্ট' ও 'ব্রোকারেজ হাউস' ব্যবহূত হয়েছে এবং তাদের পেছনে কোন কোন 'মেম্বার' ও 'জালিয়াত চক্র' রয়েছে। তবে এ যাত্রায় প্রতারক চক্র ছাড়াও শেয়ারবাজারে চতুরভাবে টাকা খাটিয়ে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানও ব্যাপক অর্থ কামিয়ে নিয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ২৫২টি কোম্পানির সর্বমোট শেয়ারের 'ফেসভ্যালু' সর্বোচ্চ ক্যাপিটালাইজেশনের ১০ শতাংশ, অর্থাৎ ৩৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও কম। মহাধসের পরও বিনিয়োগকারীদের সামগ্রিক বিনিয়োগের চেয়ে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন এখনো অনেক বেশি আছে। পিকটাইমে লেনদেনের দরের ভিত্তিতে ক্যাপিটালাইজেশন দাঁড়িয়েছিল সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা। কিন্তু ইস্যুকৃত শেয়ারের বেশিরভাগই কোনোদিনই হাতবদল হয়নি। বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশের আশাতেই ইনভেস্ট করেছে। সাধারণত শেয়ারের ট্রেডিং ভ্যালু কমলেও কোম্পানির অ্যাসেট ভ্যালু কখনো কমে না। যাদের কাছে এ শেয়ার থাকবে, তারা আগের মতোই ডিভিডেন্ড পেতে থাকবেন। উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।
Click This Link
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫২
শরীফ উদ্দিন সবুজ বলেছেন: ভােলা িরেপার্ট।