![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সাধারণ একটি মেয়ে। আমি একজন বাঙালি মুসলিম। আমি রাজনীতিতে জড়িত থাকতে পছন্দ করিনা, ঝগড়া পছন্দ করিনা। এক কথায় শান্তিপ্রিয় একজন মানুষ। সবার সাথে মিশে থাকতে ভালোবাসি।
_____১_____
নীল একা একা ফেসবুকে ঘুরছিল।
হঠাত্ করেই একটা মেসেজ।
আপনি কি জ্যোতিষি?
নিজের অজান্তে হেসে দিলো নীল। রিপ্লাই দিলো হ্যাঁ।
নীলিমা : তাহলে আমার ভাগ্যে কি আছে দেখে দিন।
নীল : আপনি আমাকে কোথায় পেলেন?
নীলিমা : পেয়েছি। আগে আমার ভাগ্য দেখে দিন।
নীল : আচ্ছা দেবোনে। রাতে জানাবো।
(নীল এবার এইচ এস সি পরিক্ষা দিচ্ছে। পরিক্ষার চিন্তায় এফ.বি তে রাতে আর এলোনা।)
রাত ১২টা ১মিনিট
নীলিমা : কি হলো দিন না।
কিছুক্ষণ পরে নীলিমা একটু মন খারাপ করেই চলে গেলো।
_____২_____
সকালে উঠেই নীলিমা ফেসবুকে বসলো।
তারপর নীলকে একটা মেসেজ দিলো।
কোথায় দিলেন না তো?
নীল অনলাইনেই ছিলো,
রিপ্লাই দিলো, আপনার দুই হাতের ছবি দিন।
নীলিমা : এই নিন।
নীল : আরে এভাবে না একটা একটা করে দিন।
নীলিমা : এই নিন
নীল : হাতের রেখা দেখা যায় এমন করে দিন এইযে এভাবে।
নীলিমা : এই নিন
নীল : হুম এবার হয়েছে।
নীলিমা : এবার বলুন
নীল : আপনার পছন্দের রং কি
নীলিমা : লাল আর কালো
নীল : পরিক্ষা আছে রাতে জানাবো
নীলিমা : না এখন ই লাগবে
নীল : আচ্ছা বাবা পরিক্ষা দিয়ে এসে বলছি
নীলিমা : আচ্ছা।
রাতে নীল চ্যাটে এলো
আসতেই নীলিমার মেসেজ, কৈ দিন।
নীল : আমাকে কি দেবেন?
নীলিমা : ৫টাকা দেবো
নীল : আপনি তো খুব কিপ্টা
নীলিমা : না আমি ছোট তো তাই
নীল : কোন ক্লাসে পড়েন?
নীলিমা : দশম
নীল : কোন বিভাগ
নীলিমা : বিঙ্গান। কি হলো দিন না।
নীল : তোমার চরিত্রটা খুব অদ্ভুত।
রহস্যময়তা পছন্দ করো।
নিজের উপর খুব আত্মবিশ্বাস আছে।
কারো আদেশ শুনতে রাজি নও। নিজের মতো কাজ করো।
অল্পতেই রেগে যাও। তোমার এই স্বভাবের কারণে অনেকেই তোমাকে পছন্দ করেনা।
প্রেম ভালোবাসার তেমন মূল্য না দিলেও একেবারে নিরাবেগি নও। তোমার জিবনে দুইজন পুরুষ আসবে মানে দুইজন পুরুষকে তুমি খুব ভালোবাসবে।
যথেষ্ট মেধাবী হলেও ঠিকঠাক লেখাপড়া বেশিদূর করতে পারবেনা।
একা একা কান্না করতে খুব ভালোবাসো।
হুটহাট যে কোনো কাজ করে ফেলো।
নিজের যা মনে হয় তাই করো।
খুব জেদি প্রকৃতির একটা মেয়ে।
গল্প কবিতা ততটা বেশি পছন্দ করনা তবে অপছন্দ ও করনা। খুব বেশি বিষন্নতায় ভোগ।
সব মিলিয়ে তুমি খুব ভালো একটা মেয়ে।
নীলিমা : OMG এটা কি!
নীল : কেনো মিলেনি
নীলিমা : সব মিলে গেছে!
নীল : আমি নিজে ও ভাগ্যে বিশ্বাস করিনা।
নীলিমা: আমার তো সব মিলে গেছে কিন্তু দুই পুরুষের ব্যাপার টা?
নীল : কেউ আছে নাকি?
নীলিমা : আমি কোনো উল্লুক কে ভালোবাসিনা।
_______২_______
শুরু হয় এক নতুন বন্ধুত্ব।
একে অপরের হয়ে উঠে অনেক কাছের বন্ধু।
নীলিমা তার জীবনের গল্প বলে।
ধ্রুব সেনের সাথে তার সম্পর্কের কথা জানায়।
জানায় ধ্রুব কে সে কতোটা ভালোবাসে।
কিন্তু ধ্রুব তার পরিবারের বড় ছেলে এবং ভিন্নধর্মের হয়ায় নিজের পরিবারের জন্য নীলিমাকে স্বার্থপরের মতো ছেড়ে চলে গেছে।
নীল নীলিমাকে মেন্ট্রালি সাপোর্ট দেয়।
একসময় নীলিমাকে তার ভালো লাগতে শুরু করে।
নিজের অজান্তে নীলিমার প্রেমে পড়ে নীল।
কিন্তু নীলিমা তো ধ্রুবকে ভালোবাসে। তার জীবনে ধ্রুব ই সব।
নীল নীলিমাকে একদিন বলেছিল তাকে ভালোবাসা শেখাতে কিন্তু নীলিমা শেখাবে বলে ও শেখায়নি।
আজ নীল ভালবাসা শিখে গেছে আর ভালোবেসেছে সেই নীলিমাকে।
নাহ আর পারা যাচ্ছেনা।
কিন্তু বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে তাই কিছু বলা ও যাচ্ছেনা। নীল ভাবে ওকে এড়িয়ে চলবো।
এড়িয়ে চলতে থাকে।
নীলিমার খুব খারাপ লাগে। কান্না পায় কাছের বন্ধুর এই ব্যাবহারে।
______৩______
নীলের এড়িয়ে চলাকে নীলিমা মেনে নিতে পারেনা।
একদিন হঠাত্ নীল সব বলে দেয় নীলিমাকে।
নীলিমা : কি করো সাহেব?
নীল : আমি কারো সাহেব না।
নীলিমা: আমি কি কিছু করেছি?
নীল : না। তুমি আর আমার সাথে যোগাযোগ রেখো না।
হুমায়ন আহমেদের কথাটা কিন্তু সত্যিই। ছেলে এবং মেয়ে কোনো সময় বন্ধু হয়ে থাকতে পারেনা। একসময় প্রেমে পড়ে যায়। আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি জানি আমার উচিত হয়নি। কারণ তুমি তো ধ্রুবকে চাও।
নীলিমা তার জীবনে আবার ধাক্কা খায়।
আচমকা নীলের প্রোপজাল একসেপ্ট করে বসে।
কিন্তু সেটা শুধুই বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ার ভয়ে।
নীল তখন মেনে নিলেও অভিনয়ে অপটু নীলিমা খুব সহজেই ধরা খেয়ে যায়।
সত্যিটা বলে দেয় নীলকে।
নীলকে রিকুয়েষ্ট করে বন্ধু হয়ে থাকার।
প্রথমে রাজি না হলেও পরে আস্তে আস্তে নীল মেনে নেয়ার অভিনয় করতে থাকে। আবার বন্ধুর মতো আচরণ করতে থাকে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে নিজেকে পোড়াচ্ছে সে।
কিন্তু নীলিমার সবটা জুড়ে শুধুই ধ্রুব।
আর কাওকে কোনদিন মেনে নেয়া সম্ভব নয়।
______৪______
নীলিমা বোঝতে পারে, নীলের কষ্টটা।
কিন্তু কিছু করার নেই ওর।
ও যাকে ভালবাসে তার নাম ধ্রুব।
নীল শুধুই তার ভাল বন্ধু।
আর কিছু না।
সে চায়না তার কারণে তার বন্ধু কষ্ট পাক।
বন্ধুত্ব নষ্ট করতেও চায়না।
কিছুই বোঝতে পারছেনা নীলিমা।
আর নীল নীলিমার কারনে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছেনা।
নীলিমা আর নীল শুধুই বন্ধু হয়ে থাকতে পারে।
যেখানে ভালবাসা একতরফা সেখানে কোনোভাবেই একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারেনা।
নীলিমা এই কথাটাই বোঝাবে নীলকে। মেন্ট্রালি সাপোর্ট দেবে যাতে সব ঠিক হয়ে যায়।
এটাই ভেবে নেয় নীলিমা কোনো না কোনো ভাবে সে নীলকে বোঝাবেই।
______শেষ পর্ব______
এখন হয়তো নীল কষ্ট পাবে।
নীলিমাকে ভুল বোঝতে পারে।
কিন্তু একটা মানুষ একা নিজেকে কতটা মেন্টালি সাপোর্ট দিতে পারে?
নীল নিজেও হয়তো অনেক কষ্ট পাবে।
কিন্তু নীলিমা যদি আজ নীলকে একসেপ্ট করতো কিন্তু মেনে না নিত মন থেকে তাহলে ও কতটা মেন্টালি প্রোবলেমে পড়তো ?
কয়েক বছর পর যদি নীল একথা জানতে পারতো সে কি ভালো থাকতো ?
সেদিন যে কষ্ট পেতো আজকে পাওয়া কষ্টের থেকে সেটা হাজার গুন বেশি।
তাই নীলদের বলছি নীলিমাদের ভুল বোঝনা।
একটা কথা মনে রেখো, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন।
_এই গল্পটি আমার ই লেখা তবে গল্পের নাম এবং গল্পের প্রথম লাইনে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বেচারা নীল এর জন্য মায়া লাগলো । হুমায়ুন অাহমেদের বাণীটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সত্যি! নীলিমা চরিত্রটি ভালোই লাগলো । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমন হয়না । অাপনার জন্য শুভ কামনা রইলো । শুভ ব্লগিং!