নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেহরিন চৌধুরাণীর blog এ আপনাকে welcome

মেহরিন চৌধুরানী

আমি খুব সাধারণ একটি মেয়ে। আমি একজন বাঙালি মুসলিম। আমি রাজনীতিতে জড়িত থাকতে পছন্দ করিনা, ঝগড়া পছন্দ করিনা। এক কথায় শান্তিপ্রিয় একজন মানুষ। সবার সাথে মিশে থাকতে ভালোবাসি।

মেহরিন চৌধুরানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

"অপেক্ষা" লেখিকাঃ Mehrin Chowdhury

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৫


- দেশ নাকি স্বাধীন হয়েছে! মামার রেডিওতে তাই শুনেছে চারু। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিলো ঝকঝকে আকাশে মুক্ত পাখিরা কিভাবে আজ নির্ভয়ে ডানা মেলে উড়ছে। আজ কোনো গুলির শব্দ নেই। নেই কোন ভয়।

- এইবাড়িতে চারুরা ভাড়া আছে ১২বছর ধরে। চারুর মা মারা যাওয়ার পর পুরনো স্মৃতির কষ্ট থেকে বাঁচতে নিজেদের পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে দিনাজপুরেরর এই বাসাটা ভাড়া নিয়েছিলেন মহেন্দ্র বাবু। তখন চারুর বয়স ছিল মাত্র আট বছর। তিনি চারুলতার বাবা। একজন স্কুল মাস্টার।

- এইবাড়িতে চারুরা ছাড়াও আরও তিন পরিবার থাকে। যুদ্ধের সময় বাড়িওয়ালা করিম সাহেব ছাড়া আর সবাই দেশ ছেড়ে চলে গেলেও যেতে পারেননি মহেন্দ্রবাবু। চারুকে অবশ্য তার মাসির বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে সবার মত চারুলতাকেও বোরকা পরে মুসলিম সেজে থাকতে হয়েছিল। তাতে যদি শেষরক্ষা হয় এই আশায়। মুসলমানদের কিছু দোয়াও শিখতে হয়েছে যাতে ধরা না পড়ে যায়। তারপরও সবাই ভয়ে ছিল, কখন কি হয় বলা তো যায়না।

- দেশ স্বাধীন হয়েছে শুনে মামা আজ চারুকে বাড়ি দিয়ে গেছে। মামা অবশ্য এত তাড়াতাড়ি দিতে চায়নি, চারু-ই জোর করে এসেছে।
কিন্তু এসে দেখছে বাড়ি তালা দেওয়া। একটা চাবি চারুর কাছে ছিল, ঘর খুলে চারু দেখল, মেঝেতে ধুলো জমে আছে। তাহলে বাবা কোথায়?!

- যুদ্ধ চলাকালীনও চারুর খুব একটা ভয় লাগেনি, কিন্তু এই প্রথম বুকটা হুহু করে উঠল। তবে কি বাবা...

- জানালা দিয়ে চারু দেখল, পুকুরে করিম চাচা ওজু করছেন। খুবই নামাজী মানুষ, কোন ওয়াক্ত নামাজ কামাই করেননা। চাচাকে দেখে চারু দৌড়ে গেল পুকুরপাড়ে।

-- একি চারু আম্মাজান, কখন আইলা তুমি? কে আইনা দিল তোমারে?

-- মামার সাথে এসেছি। চাচা, আমার বাবা কোথায়?

-- তা তোমার মামা কই আম্মা?

-- মামা চলে গেছেন, আমার বাবাকে দেখছিনা উনি কোথায় চাচা?

-- মাস্টর সাব তো যুদ্ধে গেছিল আম্মা, এখন ও আসেনাই। কত বারন করলাম শুনলনা তোমার আব্বা। তুমি ঘরে যাও আম্মা, কিছু তো মনেহয় খাওনাই। আমি কিছু একটা ব্যবস্থা করতেছি।

- চারু ঘরে চলে এল। পশ্চিমের জানালায় তাকিয়ে আছে কখন বাবা আসবে।.. বাবা যখন স্কুলে থাকতো তখন চারু এই জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকত বাবার অপেক্ষায়। আজও তাকিয়ে আছে, ভাবছে এই বুঝি বাবা আসবে।
চারুর বাবা যুদ্ধে গিয়ে শহিদ হয়েছে, আর কোনদিন ফিরে আসবেনা। কিন্তু চারুলতা তা জানেনা। জানেনা তার এই অপেক্ষার শেষ কোনদিন হবেনা......

Date: 18-12-2015

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.