![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সাধারণ একটি মেয়ে। আমি একজন বাঙালি মুসলিম। আমি রাজনীতিতে জড়িত থাকতে পছন্দ করিনা, ঝগড়া পছন্দ করিনা। এক কথায় শান্তিপ্রিয় একজন মানুষ। সবার সাথে মিশে থাকতে ভালোবাসি।
- এই
- হুম
- রিধিতার বাবু যে কিউট।
- হুম
- আমারও লাগবে
- কি?
- বাবু
- হুম
- কি খালি হুম হুম কর?
- হুম
- (কেঁদে ফেলে তিশা) আমার একটা বাবুর অনেক শখ।
- জানি
- জানি মানে? বিয়ের আগে তুমি বলেছিলে বিয়ের পরে আমাদের একটা বাবু থাকবে, তুমি এখন আমাকে এত কষ্ট দিচ্ছ? কি দোষ করেছি আমি?
- দেব তো, বলেছি নাকি দেবনা। তুমি বিয়ের পর বড্ড ছিঁচকাঁদুনী হয়ে গেছো তিশা।
- কি আমি ছিঁচকাঁদুনী?
- না না তুমি তো আমার লক্ষ্মী বউ।
খুনসুটি চলতেই আছে এভাবে শাওন আর তিশার। পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হয়েছে ৩বছর। একটা বাবুর খুব শখ ছিল তিশার।
বিয়ের দিন ফেরার পথে এক্সিডেন্টে মারাত্মকভাবে পেটে আঘাত লাগে তিশার। বাসররাত টা কাটাতে হয়েছে হাসপাতালে।
ডাক্তার জানায় হয়তোবা কোনদিন আর মা হতে পারবেনা তিশা। তিশার মা হওয়ার চান্স মাত্র ২০%।
শাওন এটা কাউকেই জানায়নি, এমনকি তিশাকেও না। এমনিতেই শাওনের মা বিয়ের দিন এক্সিডেন্ট হয়ার কারনে তিশাকে অলক্ষ্মী মনে করেন, তার উপর যদি এটা জানতে পারেন তাহলে এবাড়িতে আর যায়গাই হবেনা তিশার।
সকালে উঠে তিশাকে নিয়ে মার্কেটে যাবে কাল তাদের চতুর্থ বিবাহবার্ষিকী। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লো শাওন।
সকালে ঘুম ভাঙল সবার চেঁচামেচি তে।
উঠে জানতে পারলো, তিশা মাথা ঘুরে পড়ে গেছিল।
শাওন উঠে গিয়ে দেখলো ডাক্তার সাহেব তিশাকে দেখছেন।
চিন্তিত ভাবে পাশে দাঁড়িয়ে আছে বাড়ির সবাই।
ডাক্তার মুখ তুলে মুচকি হেসে বললেন, মিষ্টি নিয়ে আসুন বাড়িতে নতুন অতিথি আসছে।
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেনা শাওন, তবে বিধাতা তাদের ডাক শুনলেন? এত অপেক্ষা শেষ কি তবে হল আজ।
সবাই চলে যেতেই শাওন তিশার কাছে এসে মাথায় হাত রাখল। খুকি খুকি চেহারার মেয়েটাকে আজ মা মা লাগছে।
চোখ খুলল তিশা।
- কি মহারানি এবার খুশি তো?
- হুম (মুচকি হেসে)
- আজ তুমি হুম হুম করছো?
- তোমাকে কপি করছি।
- তাইরে দুষ্টু মেয়ে আজ তোমাকে আমি....
- এই না না বাবুর লেগে যাবে!
- আচ্ছা যাও বাবুর জন্য বেচে গেলে। আজ আমাদের অপেক্ষার শেষ হল তাইনা তিশা?
- নাহ, আমাদের বাবুটা যখন আমার দুইহাতের মাঝে থাকবে তখনই আমাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে।
৮মাস পর.............
হাসপাতালের কেবিনের বাইরে অস্থিরভাবে হাটছে শাওন। ভিতরে আছে তার তিশা।
হঠাত করে কান্নার আওয়াজে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গেল শাওন, একজন নারস একটু মুখ বের করে বললেন জমজ দুই ছেলে হয়েছে, মা ও তার বাচ্চারা ভালো আছে।
-আমি কি এখন ভেতরে আসতে পারবো?
- জি না, একঘণ্টা পর রোগীকে অন্য কেবিনে শিফট করা হবে তখন দেখতে পারবেন।
২ঘন্টা পর......
৩২৪ নাম্বার কেবিনে ঢুকল শাওন।
- বাবুর শখ মিটলো মহারানী?
- হিহিহিহি
- নাম ঠিক করেছো তোমার রাজপুত্রদের?
- শ্রাবন আর তিতির কেমন হবে?
- ভালোই তো লাগছে। আচ্ছা তবে এগুলোই থাক।
খুব খুশি আজ শাওন আর তিশা। আজ তাদের বহুদিনের অপেক্ষার প্রহর শেষ হল। দুজনের ই চোখ গড়িয়ে পড়ছে গরম জল, নাহ কষ্টের নয়। এ হল আনন্দ অশ্রু।
©somewhere in net ltd.