নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

When the solution is simple, God is answering.

we need to read and understand the gift given to us, the QUR\'AN and spread the message of ISLAM , The love for your fellow human, the respect for WOMEN, making world a Better Place.

মেলবোর্ন

১. The Qur'an is the Most Influential, Most Powerful, Most Memorized, and Most Followed Book on the planet Earth।Find out why @ LinguisticMiracle.com ২: I believe A little science leads one away from God, a great deal of science leads one back to Him ৩: I will make the most of everything in life, because life is no rehersal... So if i love someone, i will tell them, if im upset with someone, i will forgive them and if anyone chooses to love me in return, i will be most certainly grateful, and show them everyday for as long as i am capable to do so, how much it means to me

মেলবোর্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেমন আছ তুমি :: উস্তাদ নুমান আলী খান

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২

“কেমন আছ” — আমি বোধহয় জীবনে এই প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি শুনেছি। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, চাকুরিক্ষেত্রের সহকর্মীরা — সবাইই প্রতিদিন অজস্রবার এই প্রশ্ন করে। প্রতিটি মানুষেরই কুশল বিনিময়ের প্রথম প্রশ্ন “কেমন আছেন”? ইদানিং পরিচিতজনরা বেশিরভাগই একটা উত্তর দেয় — “এইতো”… কী অদ্ভূত !! এইতো মানে আবার কী? ভালো নাকি খারাপ?





খারাপ বলতেও ‘এইতো বলা’ লোকদের বাঁধে — কেননা তারা সবাইই আসলে অনেক ভালো আছেন। জীবনে প্রাপ্তি তাদের প্রচুর। “খারাপ আছি” — বললেই তাকে জিজ্ঞেস করা হবে — কী হয়েছে? যার উত্তর দিতে পারবেন না। আবার “ভালো আছি” সেটা স্বীকার করলে সম্ভবত নিজের উচ্চাকাংখা প্রকাশ করা হবেনা, তাই সবাইই বলেন — “এইতো”.. ভালো আছি বললে তার আরো অনেক কিছু পেতে হবে, সেইটা আবার প্রশ্নদাতা হয়ত খেয়াল করবেন না, তাকে আরো বেশি মূল্যায়ণ করবেন না, তাই হয়ত বলে — “এইতো”। “ভালো আছি” বলার মানুষ কেন যে এত কম সেটা ভেবেই পাইনা!





ছোটবেলায় আব্বুকে দেখতাম এই প্রশ্নের উত্তরে সবসময়ে “আলহামদুলিল্লাহ” বলতে। অনেকটা ট্রেডিশান হিসেবেই এটা আয়ত্ব করেছিলাম। তারপর একসময় ভুলেও গিয়েছিলাম কৈশোরে। আবার প্রতিদিনের এই নিত্য প্রশ্নের উত্তরটিকে আত্মস্থ করতে চেষ্টা করছিলাম যখন ভার্সিটির হলে থাকতাম। তখন প্রচন্ড বাজে পরীক্ষা হতো হঠাৎ হঠাৎ। পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে দুনিয়ার সব বন্ধু মহলের মতন আমাদেরও কমন প্রশ্ন ছিলো — “কেমন হলো”? আমার রুমমেট ছিলো অসাধারণ চমৎকার একটা ছেলে মাশাআল্লাহ। কেবলমাত্র ওকেই সবাই “কেমন হলো পরীক্ষা” বলে উত্তর পেতো “আলহামদুলিল্লাহ”; একবার তো এক বন্ধু বলেই বসেছিলো — “ওদের দুইজনকে প্রশ্ন করে লাভ নেই, ভালো খারাপ যা-ই হোক, উত্তর হবে একটাই” ; সেদিন যদিও মজা পেয়েছিলাম, কিন্তু আমি জানতাম — অভ্যাস করে ফেলেও আমি একদম হৃদয়ের ভিতর থেকে ফিল করতে পারতাম না সবসময়ে সেই “আলহামদুলিল্লাহ” কথাটা। খচখচ করতো মনটা একটা প্রশ্নের উত্তরের অভাবে।





আলহামদুলিল্লাহ কথাটার অর্থ সেদিন নুমান আলী খানের সূরা ফাতিহার উপরের আলোচনাতে শুনছিলাম।



আরবিতে একটা শব্দ আছে — ‘মাদহু’, যার অর্থ প্রশংসা।আরেকটা শব্দ আছে — ‘শুকরু’ — যার অর্থ কৃতজ্ঞতা।আমাদের এই জীবনে এমন অনেককিছু আছে, যেগুলোর আমরা প্রশংসা করি, এমন অনেক মানবীয় গুণাবলী আছে — যা দেখে আমরা মোহিত হয়ে প্রশংসা করি। যেমন ফুলের সৌন্দর্য্য, খেলোয়াড়ের দারুণ নৈপুণ্য। এইসব মুগ্ধতা আর মোহনীয়তা আমাদের প্রশংসা কুড়ায়, কিন্তু আমরা সেগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞ হইনা।আমার এমনঅনেক মানুষ আছে, যারা আমাদের উপকার করার পর আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ হই, কিন্তু কৃতজ্ঞ হলেই তার প্রশংসা করিনা, বরং তাদের প্রতি শুধুই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।



কিন্তু এই ‘হামদ’ শব্দটিতে কৃতজ্ঞতা আর প্রশংসা দুটোই একসাথে প্রকাশিত হয়। হামদ শব্দটি ব্যবহার করে জুমুআর দিন খতীবরা বলেন — “নাহমাদুহু ওয়া নাসতা’ইনুহু…” এই শব্দ দিয়ে তিনি বলেন যে আমি প্রশংসা করছি… কিন্তু যখন শব্দটির সাথে যখন “আল” যুক্ত হয়ে “আলহামদু” হয়, তখন সেটা যে অর্থ বুঝায় তা হলো সমস্ত প্রশংসা আর কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। আর তাই “আলহামদুলিল্লাহ” শব্দটি দাঁড়ায় সমস্ত প্রশংসা আর কৃতজ্ঞতা কেবলমাত্র আল্লাহর, আর কারো না; এইটা আমার বলা বা না বলার উপর নির্ভর করছেনা বরং সমস্ত প্রশংসা আর কৃতজ্ঞতা পাওয়ার পরম যোগ্যতা কেবলই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার।



কী অদ্ভুত সুন্দর এই কৃতজ্ঞতা ! আমার জীবনের প্রতিটি অনুক্ষণের জন্যই আমি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ। তাঁর অনুপম ভালোবাসায় আমি সিক্ত, আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস আল্লাহ আমার প্রতি কতটা দয়াময় তারই প্রতিচ্ছবি। এই “আলহামদুলিল্লাহ” বলতে কেন আমাদের সংকোচ হবে? হ্যাঁ, নিঃসন্দেহে আমাদের জীবনে আল্লাহ পরীক্ষা নিয়ে থাকেন, কঠিন সময় আসে। সে তো পরীক্ষা বলেই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তো আমাদেরকে বলেই দিয়েছেন যে তিনি ক্ষুধা, ভয়, দারিদ্র্য দিয়ে আমাদের পরীক্ষা নিবেন, আর ধৈর্য্যধারণকারীরা সেই পরীক্ষার ফলাফলের সুসংবাদ পাবে। ক’দিন আগে একটা লেখায় পড়েছিলাম যেই চিন্তাটা আমার পছন্দ হয়েছিলো — ধৈর্য্য বা সবর অর্থ এমন নয় যে কতখানি সময় আমি কষ্টের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করলাম, বরং কষ্ট করার সময়টা আমি কেমন করে পার করেছিলাম — সেটাই সবর। আমি আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টচিত্তে, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে অতিক্রম করলাম, নাকি বিরক্ত হয়ে আর “কেন সব বিপদ আমার উপরেই আসে” টাইপের মূর্খ আচরণে দিনাতিপাত করলাম।



সূরা ফাতিহাতে শিখেছি “আর রাহমানুর রাহিম”.. পরম দয়াময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ আমাকে নিঃসন্দেহে আমার মা-বাবার চাইতেও আমাকে বেশি ভালোবাসেন। তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন এক অপার ভালোবাসায়। তিনি আমার জন্য বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে এই বসবাসের জায়গাটা ঠিক করে রেখেছিলেন অনেক আগেই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমার প্রতিদিনের রিযিক ঠিক করে রেখেছেন, আমার প্রতি আমার বাবা-মা,ভাই-বোনের যেই ভালোবাসা — সেটাও তারই ঠিক করে রাখা রাহমাতের নিদর্শন হিসেবে পাই প্রতিদিন। এই কীবোর্ডের উপর প্রতিটি আঙ্গুলের স্পর্শ দেয়ার সক্ষমতা, সেও তো আল্লাহর দেয়া অপার রাহমাতেরই নিদর্শন। ঠিক এই মূহুর্তে পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ আইসিইউতে শুয়ে আছেন, তাদের চাইতে আমি কতনা ভালো আছি! এখন অনেক যুদ্ধপীড়িত দেশে দারিদ্র্য আর ভয়ে কাটাচ্ছে আমাদেরই ভাইবোনেরা। তাদের তুলনায় আমরা কতই না ভালো আছি। যারা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, তারাও তার ভালোবাসাই পেয়ে যাচ্ছি ক্রমশঃ। আর তো মাত্র ক’টা দিন — তারপরে ইনশাআল্লাহ আমরা সবাই আবার তাঁর কাছেই চলে যাবো। তিনিই তো আমাদের অন্তরতম, প্রেমময় আপনজন।



আমাদের আল্লাহ আমাকে যেমন করে আপন ভালোবাসায় এই জীবন দান করেছেন, তিনিই আমাদের অন্য প্রতিটি ভাইবোনের জীবনেরই অধিকর্তা। এই পৃথিবী-আকাশ-নক্ষত্র — এসব তো কেবলই আমাদের জানা জগত। আল্লাহ আমাদের জানা এবং অজানা সমস্ত জগতেরই ক্ষমতাবান। আমাদের অজানা যে জগত – সেও আল্লাহরই এক সৃষ্টি। আল্লাহ হলেন শ্রেষ্ঠতম বিচারক — যার পৃথিবীর জীবনে একটু বেশি কষ্ট হচ্ছে অন্য সবার তুলনায় — সেই অজানা জগতটায় তার জীবনটা যে দয়াময় আল্লাহ অনেক সহজ করে দেবেন না — সেটা কেউ বলতে পারে না। আল্লাহ হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায়বিচারক যিনি প্রতিটি অণু পরিমাণ কাজের উপর নির্ভর করেই আমাদের ফলাফল দেবেনঃ জান্নাত আর জাহান্নাম।





কিন্তু আমাদের এই একটাই জীবন, সেখানে আমার কৃতজ্ঞ বান্দা হবার জন্য প্রয়োজন এই “আলহামদুলিল্লাহ” নিঃসঙ্কোচে, নির্দ্বিধায় বলে ফেলা। এই কথাটাকে বলে ফেলার অভ্যাস করে ফেলা। যেন প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় উৎফুল্ল হয়ে আমরা বলতে পারি — “আলহামদুলিল্লাহ”.. আমি যে দেখতে পারছি, কানে শুনতে পাচ্ছি, আমার সুস্থ স্বাভাবিক শরীর আছে, আমার আত্মীয়স্বজন আমার চারপাশে, আমার সামাজিকভাবে সম্মান বজায় আছে — এমন অজস্র রাহমাত আমাদের জীবনে আছে যার যেকোন একটি না থাকতে পারতো, আর না থাকলে আমাদের কিছুই করার থাকতো না।





আমার আল্লাহকে স্মরণ করার একটা আত্মা আছে সবকিছুর জন্যই আমি কৃতজ্ঞ আমার আল্লাহর প্রতি। এই আত্মাটা হিদায়াতের খানিক স্পর্শ পেয়েছে বলেই আল্লাহর দেয়া রাহমাতের কথা ভেবে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কথা চিন্তা করতে পারছি। কিন্তু আল্লাহ যেন এই অপার রাহমাতগুলো আমাকে আরো বাড়িয়ে দেন, তিনি যেন আমার উপরে আরো সন্তুষ্ট থাকেন সে আশায় তো আরো চাইতে হবে, আরো কৃতজ্ঞ হতে হবে! কৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে আল্লাহ আরো বেশি বেশি করে দান করেন। রাত জেগে তাহাজ্জুদ আদায় করে পা ফুলিয়ে ফেলার কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একজন সাহাবা প্রশ্ন করলে তিনি বলেছিলেন আমি কি আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না? আমাদের প্রিয় নেতা, সুন্দরতম চরিত্রের শ্রেষ্ঠ এই মানুষটিও চাইতেন তাঁর রব আল্লাহর প্রতি আরো আরো কৃতজ্ঞ হতে। তার অনুসারী হিসেবে আমাদের শিক্ষাও তো সেই অনুপম শিক্ষা — মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কৃতজ্ঞ বান্দা হতে চাওয়া।





আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে আরো আরো কৃতজ্ঞ বান্দা হবার তাওফিক দান করেন। আল্লাহ যেন আমাদের কথার, লেখার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে কবুল করে নেন। আল্লাহ যেন আমাদেরকে এমন বান্দাদের দলে অন্তর্ভুক্ত হবার করে নেন যারা পৃথিবী থেকে বিদায়ের কালে তাঁর উপর সন্তুষ্ট থাকবে এবং তিনিও আমাদের উপরে সন্তুষ্ট থাকবেন।



লিখেছেনঃ স্বপ্নচারী আব্দুল্লাহ



রেফারেন্সঃ



[১] সূরা ফাতিহার উপরে আলোচনা :: উস্তাদ নুমান আলী খান [অডিও]



[২] সূরা ফাতিহা :: Points To Ponder এর প্রথমাংশ :: উস্তাদ নুমান আলী খান [ইউটিউব ভিডিও]

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৫৩

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


সুন্দর পোস্ট। ধন্যবাদ আপনাকে।

০৫ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৯

মেলবোর্ন বলেছেন: মুল ধন্যবাদ প্রাপ্র যিনি বাংলা অনুবাদ লিখেছেনঃ স্বপ্নচারী আব্দুল্লাহ এবং মুল লেকচার যার নোমান আলী খান

২| ০৫ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১২

অন্ধবিন্দু বলেছেন:

আলহামদুলিল্লাহ

০৬ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৮:৩৬

মেলবোর্ন বলেছেন: কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে আলহামদুলিল্লাহ হোক আমাদের মুখে মুখে এবং অন্তর হতে

৩| ১৭ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

আলহামদুলিল্লাহ , ভালো আছি !!

আসসালামুয়ালাইকুম !!

১৭ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪

মেলবোর্ন বলেছেন: ভালো আছেন শুনে ভালো লাগলো ওয়ালাইকুম আসসালাম

৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তার অনুসারী হিসেবে আমাদের শিক্ষাও তো সেই অনুপম শিক্ষা — মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কৃতজ্ঞ বান্দা হতে চাওয়া।


আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে আরো আরো কৃতজ্ঞ বান্দা হবার তাওফিক দান করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.