![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকাল থেকে আনমনে বসে আছে নীলা। আজ মনটা তার খুব খারাপ। অবশ্য এটা নতুন নয়, প্রায় প্রতিদিনই তাকে এরকম অত্যাচারের মধ্যে যেতে হচ্ছে। তার স্বামী আজকেও তার গলা টিপে ধরেছিল; বলে গেছে- বিয়ের সময় তার বাপের বাড়ী থেকে যে ১ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল,তা যেন একসাপ্তাহর মধ্যে দিয়ে দেয়। অথচ নীলা নিরুপায়, সে তার বাবাকে বলতে পারবে না। তাকে বিয়ে দিতে গিয়ে এমনিতে তার বাপের ঘাড়ে ঋনের বোঝা চেপেছে; কি দেয় নি মানুষটা মেয়ের জামাইকে! পুরো পাঁচ পদের ফার্নিচার, জামাইকে সোনার আংটি আর মোটরসাইকেল,সাথে বর যাত্রী বাবদ ৫০০০০ টাকা। এত কিছু দিতে গিয়ে তিনি এখন একেবারেই নিঃস্ব। নীলা ভাবছে, সে সত্যিই তার বাপের জন্য বোঝা হয়ে গেছে। তার বাপকে সে আর বোঝা দিতে চায় না। কলতলায় বসে যখন সে এসব ভাবছে, তখন তার হাতে একটা খোলা শিশি। একটা কঠিন সিদ্ধান্ত সে আজ নিতে চলেছে।।
পারভীনের ছেলে আজ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জি পি এ ফাইভ পেয়েছে। তাই সবাইকে পারভীন আজ মিষ্টিমুখ করাচ্ছে।আজ সে সবচেয়ে খুশি। এই খুশির দিনেও মনটা তার বিষন্ন হয়ে গেল; মনে পড়ে গেল সেই বিশ বছর আগের কথা। যে দিন তার বিয়ে হয়েছিল। মনের মধ্যে অনেক আশা নিয়েই সে স্বামীর ঘরে এসেছিল। কিন্তু শুরুতেই শশুর বাড়ির লোকজন তাকে অপয়া তকমা দিয়ে দেয়। তার স্বামীর চাকরি ছিল না, দিনে দিনে পারভীনের উপর অত্যাচার বাড়তে থাকল। বিয়ের একবছরের মাথায় পারভীনের ঘরে একটা ফুটফুটে সন্তান আসে। কিন্তু অত্যাচার কমে নি। একরাতে তো তারা পারভীনকে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করেছিল, শেষমেষ ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে বেঁচে ছিল পারভীন। এরপর সে আর শশুরবাড়ি ফিরে যায় নি;আবার বৃদ্ধ বাপের বোঝা হয়েও থাকে নি। প্রথম আলোয় লেখালেখি করে তার সংসারের খরচ মিটিয়েছে, ছেলেকে পড়ালেখা করিয়েছে।।
মনে মনে ভাবল, সেদিন যদি একটু সাহসী না হতো... তবে আজ তার ভাগ্যটা এমন হত না।
©somewhere in net ltd.