![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দক্ষিণাধুনিক লিখোক- মীর্জা সুলতানুদ্দিন আখুঞ্জি
একবার ময়না দ্বীপে গেসিলাম। যাইয়া দেহি, ও খোদা- ময়না দ্বীপে কুনো ময়না নাই। গয়না আছে। চরের এইহানে ঐহানে গয়না গুলার চঢ়ান ছিডান। একডা দোররা কাউয়া ঝিমাইয়া ঝিমাইয়া গয়না পায়েরা দেতাছে। মাজে মাজে কাউয়াডা কু কু কইরা চিক্কুর পাড়তাছে। মহা ফ্যাসাদ।
হাউস আছিল, হোসেন মিয়ার লগে দেহা করুম। হ্যার নাম হুনছি। বড়ো বংশের মানূষ। চউক্ষে দেহি নাই। তার গান হুনছি-
কই যাওরে
পদ্মার ঢেউ আমার কথা শুইন্যা যা রে....
হোসেন মিয়ার দেহা নাই ময়নাদ্বীপে। দেহা পাইলাম লম্বা চওড়া এক ব্যাডার। মুহে প্রেন্জ কাট দাড়ি। ছিঃনেমার ভিলেন ঢিপজলের লাহান আর কি। ডুব্যা ডুব্যা ময়নাদ্বীপের জল খাইতাছে। আর দুধমধু চাডতাছে।
ব্যাডায় এক পুলারে বাগের গলায় বোলায় কইল, তর নাম কি?
হুইনা পুলাডা ভড়কাইয়া গেলু। নীল পাঞ্জাবী পিন্দানো শরীলে। একদুম শাকিব খান। মনে করছে, হ্যায় বুজি বুল শুনতাছে। বা অন্য কেউরে বোলাইতেছে। কুনো উত্তোর দিলু না।
অমনি লুকডা পোলাডার গালে মারলু এক থাপ্পুড়। কইল, কি জিগাই শুনছোস না? তর কানে কাউয়া না কুকিল ঢুকছে?
- আপনি আমাকে মারিলেন কেন ভ্রাতা? গালে হাত বুলাইতে বুলাইতে পোলাডা জিগাইল।
আরেকটা থাপ্পড় দিলু আরেকগালে।
- কী করতাছেন? আপনে মারতেছেন ক্যান?
এবার কন ধইরা একডা মলন।
- আমি প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা। কলেজের প্রফেসর। কার গায়ে হাত তুলছে- খেয়াল রাখো?
আর একটা চাপ্পড়।
-জানিস, আমি কবি। পণ্ডিত। গালিবাল...
এবার চুলের মুঠি ধইরা দিলু ঝাকানি। দূরে ছিডকাইয়া পড়লু এই কভি পোলা। গর গর কইরা গালি পাড়লু- হারামজাদা। তর গুষ্টি কিলাই। হালা, বানচো...(লাকে লাকে গালিগালাজ ছাইড়তে লাগলু এই পুণ্ডিত কভি। আমি খুব শরমিন্দা হৈলাম। বাপের জম্মে এইরহম গালি হুনিনি।)
এইবার লুকডা এই কভি পুন্ডিতরে ধুলা হৈতে উডাইল। কইল, সাবাস। এইতো চাই। তুই পারবি। তর দিয়েই হবে। তরে আমাগো দরকার। চিন্তা করিস না। তোর কভিতা আমগো প্রথমালেতে ছাপামো। তরে বর্ষসেরা লেখক বানামু। তুই শুধু মোগো চোঙ্গা ফুকাবি। বলবি- সেখ্যুলাররা হৈল- ফেসবাদি। ওগো গালি দিয়া অগো গুষ্টি উদ্ধার করবি। তর লগে থাকপে- কভি দীনু ওরপে সুম, কভি ঠুকু...। আইজ থেইক্যা নাম গালিবাল নহে- গালিবাজ পুণ্ডিত। রাজী?
রাজী। রাজী। রাজী। পুলাডা ময়না দ্বীপের গয়না আর একহান চোঙ্গা লৈয়া নিরিত্ত করতে করতে চইল্যা গেলু।
এইবার মোর পালা। মোর দিকে চাইয়া লুকডা কইল, তুই কেডা?
-তর বাপে। দিলাম এক থাপ্পুড় লুকডার গালে। বুইড়া হৈছি। জোর কমছে। থাপ্পড় খাইয়া লুকডা ছেডকাইয়া পড়লু।
কইলাম, তর নাম কি?
-বজ্জাত শ্রীপ। মিউ মিউ কইরা লুকটা উত্তোর দিলু।
- ব্যাডা, তুই পোলাপাইনগো মাতায় ডুহাইতিছিস- ময়না দ্বীপের গয়না তত্তো? কইতি চাস, ছেক্যুলারগো রাষ্ট্র হৈল ময়না দ্বীপের লাহান-যেহানে ধর্ম টর্ম বাদ। সবাই হৈল ট্যাহা পয়সা গয়নাগাটির দাস! এইসব মিছা কথা লাগহানোর ধান্দা করতিছিস!! ব্যাডা ভন্ড। যা ভাগ। কেডা না জানে ছেক্যুলারিজম হৈল- ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। হোন ব্যাডা। সবাই অই গালিবাজ পোলার মতোর ছাগোল না যে তুই যা কইবি তাই তর কথা মতো হক্কলের সামনে উগরাইয়া দিমু। তর দিন শ্যাষ।
অই ব্যাডার মুহে ময়না দ্বীপের একখান গিল্টি করা গয়না ডুকাইয়া দিলাম। গো গো কইরা পালানোর পত খুজতি ছুডল। পদ্মার ডেউ অরে ভাসাইয়া লৈয়া গেলু। দেহি, পায়রাদার দোররা কাউয়াই নাই। হাওয়া।
হুনলাম, কে জানি হোসেন মিয়ার গান গাইতাছে-
...আণ্ধার রাইতে মাঝ দরিয়ায়
বাইতে আছি নাও।
মিয়া কতো ঘুমাইবা...
©somewhere in net ltd.