নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিছু বই মনে হয় পড়েছি

২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:৩২

পাঠ্যবইয়ের বাইরের বই পড়ার প্রতি আমার আকর্ষণটা তৈরি হয় প্রাইমারিতে পড়ার সময়ই। হাইস্কুলে আমাদের বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন আলি এমদাদ স্যার। তিনি আমাদের সিক্স-সেভেনে পড়াতেন। তিনি বঙ্কিমের কপাল কু-ুলার কথা প্রায়ই বলতেন। এটি ছিল তাঁর প্রিয় বই। বইটি অনেক পড়ে যখন আবার পড়ি তখন ভাল লেগেছিল। বঙ্কিমের সব বই পড়েছি। তখন আমার ভাল লাগতো শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়, রোমেনা আফাজ। সুনীল, শংকর, বিমল মিত্র, হুমায়ূন, নিহাররঞ্জন, সমরেশ, নিমাই, কিষাণ চন্দর পড়তে শুরু করি। ক্লাশ সেভেনে উঠে কমল মোদক স্যারের কাছে শুনি দেবি প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের যে গল্পের শেষ নাই এবং যাযাবরের দৃষ্টিপাতের কথা। বইদুটি বাংলাবাজার থেকে কিনিয়ে আনি। এইটে উঠে নূর উল হোসেন স্যার বলেন রাহুল সংকৃত্যায়নের ভলগা থেকে গঙ্গার কথা। এই তিনটি বই আমার চিন্তার জগতে বিশেষ প্রভাব ফেলে। এইচএসসিতে পড়ার সময় ব্যাপকভাবে পড়ি হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলন, আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস, বুদ্ধদেব বসু, শওকত ওসমান, শওকত আলী, সৈয়দ শামসুল হক। এসময় কবিতার প্রতি আকৃষ্ট হই। রফিক আজাদের চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া ও অসম্ভবের পায়ে কাব্যগ্রন্থ দুটি পড়ে মুগ্ধ হই। সুনীল, শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী, নির্মলেন্দু গুণ, আলাউদ্দিন আল আজাদ, আল মাহমুদ, মহাদেব সাহা, জসীম উদ্দীন, সুফিয়া কামাল, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বিনয় মুখোপাধ্যায়, জয় গোস্বামীর কবিতা পড়ার সুযোগ হয়। এই সময় আমাদের ক্লাসিক উপন্যাসিকদের বই পড়ার সুযোগ হয়। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পদ্মানদীর মাঝি ও পুতুল নাচের ইতিকথা, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের পথের পাচালী, অপুর সংসার ও অপরাজিতা, তারাশংকর রায়ের ঠগচাচা ও কবি পড়ার সুযোগ হয়। অনেক পরে পড়ি বিভূতিভূষণের আরণ্যক ও চাঁদের পাহার। এসময় বেশকিছু বিদেশি সাহিত্যের অনুবাদ পড়ার সুযোগ হয়। আরজ আলী মাতুব্বর, আহমদ শরীফ, প্রবীর ঘোষ, ভবানী প্রসাদ সাহু পড়ি। এইচএসসিতে পড়ার চাপ বেশি থাকায় সাহিত্য পাঠ তুলনামূলক কম হয়। এইচএসসি পাশের পরেই মূলত আমি বেশি সাহিত্য পাঠ করি। আমার চিন্তার জগত এই সময়ই বদলে যেতে থাকে। আগে আরজ আলি পড়লেও আমি বদলে যাই নি। ১৯৯৪ সালের আগে হুমায়ুন আজাদ পড়িনি। তার বই পড়ার আগেই আমি বদলে গেছি। বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান, রামায়ন, মহাভারত, বাইবেল পড়ি। কোরআন আরবিতে পড়ি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় কিন্তু বাংলা অনুবাদ পড়ি এসময়। সৈয়দ হকের খেলারাম খেলে যা, শওকত আলীর উত্তরের খেপসহ বাংলাদেশের আলোচিত উপন্যাসগুলো পড়ার সুযোগ হয়। বাংলাসাহিত্যের বৃহৎ উপন্যাসগুলো এসময় পড়া শুরু করি। বিমল মিত্রের সাহেব বিবি গোলাম, কড়ি দিয়ে কিনলাম এবং আসামী হাজির পড়ি। বুদ্ধদেব গুহের মাধুকরী, সমরেশ মজুমদারের উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ এবং সাতকাহন দুই খ- পড়ি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বেশ কয়েকটি বৃহদাকারের বই পড়ি- মানবজমিন, দুরবীণ, পার্থিব, যাওপাখি, চক্র ছাড়াও আরো দুই একটি। শংকরের চৌরঙ্গি একমাত্র মোটা বই। তার ছোট আকৃতির বই পড়েছি অসংখ্য। নিমাইর মেমসাহেব অসাধারণ অন্য বই পড়লেও তার মোটা কোন বই সম্ভবত নেই। সামসুদ্দিন আবুল কালামের একটি মাত্র মোটা বই পদ্মামেঘনাযমুনা পড়েছি। ইমদাদুল হক মিলনের নুরজাহান একসাথে অনেক মোটা বই। এর দুই খ- পড়ার সুযোগ হয়েছে। একসাথে তিন খ- আবারো পড়ার ইচ্ছা আছে। মিলনের অধিবাস, পরবাস, বনমানুষসহ অসংখ্য বই পড়েছি। হুমায়ূন আহমেদের দুই শতাধীক বই পড়েছি। আলোচিত নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার যেমন পড়েছি আবার বড় আকারের মাতাল হাওয়া, মধ্যাহ্ন, বাদশাহ নামদার, লীলাবতি, জ্যোৎ¯œা ও জননীর গল্প পড়েছি। তার হিমু ও মিছির আলি সম্পূর্ণ পড়েছি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়র- ‘পূর্ব-পশ্চিম’, ‘প্রথমআলো’ এবং ‘সেই সময়’ বৃহদাকারের উপন্যাস পড়েছি। তার ছোট ছোট অনেকগুলো উপন্যাস, কবিতাসমগ্র এবং ফ্রান্স ভ্রমণ নিয়ে লেখা ছবির দেশ ও কবিতার দেশ এবং এপার বাংলা ওপার বাংলা পড়েছি। আবুল বাশার ‘কালো আগুন’, ‘রাঙা বউ’ পড়েছি। তার একটি বৃহৎ উপন্যাস ‘অগ্নিবলাকা’। সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায়ের ‘লোটাকম্বল’ পড়ি অনেক পরে। ইন্দ্র মিত্র অন্যরকম একটি বই পড়েছি অনেক বড়, অনেকটা উপন্যাসের ঢঙে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে নিয়ে লেখা, ‘করুণা সাগর বিদ্যাসাগর’। মৈত্রেয় দেবীর লেখা নহণ্যতে এবং তার রোমানীয় প্রেমিকের লেখা না নুই বেঙ্গলি দুটি বই কাছাকাছি সময়ে পড়ি। মহাশ্বেতা দেবীর ছোট একটি বই পড়ে খুব ভাল লেগেছিল, হাজার চুরাশির মা। শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস ও হুমায়ুন আজাদের উপন্যাস ও ছোটগল্প সমগ্র সমগ্র পড়েছি।

গুণ্টারগ্রাসসহ বেশ কয়েকজন কবির কবিতার অনুবাদ পড়ি। তবে অনুবাদ উপন্যাস পড়েছি অসংখ্য। আলোচিত উপন্যাসের মধ্যে দ্য রুটস, এ প্যাসেস টু ইন্ডিয়া, গড অফ স্মল থিংস, মিডনাইট চিলড্রেন, ব্রিকলেন, রিভারগড, দ্য প্লেগ, দ্য আউটসাইডার, মেন এন্ড মাইস, ড. জেকিল এন্ড মিস্টার হাইড, ৮০দিনে বিশ্ব ভ্রমণ, এ টেল অব টু সিটিজ, প্রাইড এন্ড প্রিজুডিস, সোফিজ ওয়ার্ল্ড, নিঃসঙ্গতার একশ বছর, জুয়াড়ি, শয়তান, মা, পিতাপুত্র, ডেভিড কপারফিল্ড, এ্যাডভেঞ্জার অব হাকলবেরি ফিন, টম সয়্যার, আঙ্কল টমস কেবিন, শার্লক হোমস, শাহনামা ইত্যাদি অসংখ্য উপন্যাসের অনুবাদ পড়েছি। সেক্সপ্রিয়র সমগ্র, ইবসেন এর নাটক, অনেক গ্রীক নাটক, হোমার, হাফিজ, ইকবাল ইত্যাদি অনেককে পড়েছি। সেবা, পাঞ্জেরি এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অসংখ্য অনুবাদ পড়েছি। আধুনিক কবিদের কবিতা আমাকে আকৃষ্ট করে। ষাটের পরবর্তী সত্তর, আশির দশকের কবিদের প্রতিষ্ঠিত প্রায় সকলের কবিতাই কমবেশি পড়েছি। বর্তমানে তরুণদের কবিতাও মনোযোগ দিয়ে পড়ি। ত্রিশের প্রধান ৫কবির বাইরে অন্যদের কবিতাও পড়েছি। নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দদাশ, সুকান্ত ভট্টাচার্য, বিনয় মজুমদার, হুমায়ুন আজাদসহ অনেকের কবিতাসমগ্র পড়েছি। শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, পুর্ণেন্দু পৈত্রী, অরুণ মিত্র, রফিক আজাদ, নির্মলেন্দুগুণ, গুণ্টারগ্রাস এবং আরো অনেকের শ্রেষ্ঠ কবিতা সমগ্র পড়েছি। সৈয়দ সামসুল হক, সালমা বাণী, শাহাদুজ্জামান, শহিদুল জহির, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সেলিনা হোসেনসহ এ সময়ের অনেক লেখকের অনেক উপন্যাস পড়েছি। আমাদের সুমন্ত রায়, শ্বাশত স্বপন, সুপ্রিয়া সুবর্ণা সহ তরুণ ঔপন্যাসিকদের অনেক উপন্যাস পড়েছি। বেদুঈন সামাদ এর বেলাশেষে, ধীরাজ কুমার এর যখন পুলিশ ছিলাম, আবু রুশদ এর কারাস্মৃতির মতো একটি করে বই পড়েছি অনেক লেখকের। মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুরের নূহ-উল আলম লেনিন, সরকার মাসুদ, যাকির সাইদ, মাসুদ অর্ণব, ফেরদাউসী কুঈন, উজ্জ্বল দত্ত, মুনমুন মোনায়েমসহ অনেকের কাব্যগ্রন্থ পড়েছি। সান্দ্র মোহন্ত, সুমন ইসলাম, অনু ইসলাম, শহীদ ই হাসান তুহিন, আনমনা আনোয়ার, শাহাদাৎ রানা সহ প্রায় লেখকদের লেখা সম্পর্কে সম্যক ধারণা রয়েছে। শাহজাহান মিয়া এবং আরো অনেকের বিভিন্ন ধরণের বই পড়েছি। বিক্রমপুরের ইতিহাস নিয়ে লেখা সাম্প্রতিক সময়ের ৪টি এবং পূর্ববর্তী সময়ে লেখা কয়েকটি বই পড়েছি। আমার পঠিত বিষয় পদার্থ বিদ্যা, সাবসিডিয়ারি রসায়ন ও গণিত ছাড়াও ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, দর্শন পড়েছি। আব্দুল্লাহ আবু সাইদ, মাইকেল এ্যাডওয়ার্ড সাইদ, ডেল কর্ণেগী, শিব খেরাসহ অনেকের লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত হয়েছি।

এখনো পড়ার আক্ষেপ রয়েছে। এখনো পড়া হয়নি ডাস ক্যাপিটাল এবং আনা কারেনিনা। মৃত্যুর আগে আরো অন্তত এক হাজার বিশ্বসাহিত্যের গরুত্বপূর্ণ বই পড়তে চাই।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.